সালমান এফ রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে কোটি টাকার প্রতারণা মামলা
Published: 7th, December 2025 GMT
বেতন ও পাওনা ভাতা বাবদ ১ কোটি ২০ লাখ টাকার বেশি অর্থ না দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তাঁর ভাই এ এস এফ রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তারের আদালতে পৃথক তিনটি মামলা করেন বেক্সিমকো এভিয়েশন লিমিটেডের সাবেক তিন পাইলট।
মামলার তিন বাদী হলেন ক্যাপ্টেন মো.
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. তরিকুল ইসলাম জানান, আদালত বাদীদের জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। একই সঙ্গে অভিযোগটি তদন্ত করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন বেক্সিমকো এভিয়েশনের পরিচালক আবদুল্লাহ খান মজলিশ, তাঁর ভাই ইমরান খান মজলিশ, গুলজার হোসাইন ও সৈয়দ সামিউল ওয়াদুদ ওরফে সামি ওয়াদুদ।
মামলার অভিযোগে বাদীরা উল্লেখ করেন, তাঁরা সালমান এফ রহমানের কোম্পানি বেক্সিমকো এভিয়েশন লিমিটেডে পাইলট হিসেবে চাকরি নিয়েছিলেন।
তাঁরা জানান, সালমান এফ রহমান দেশের বিভিন্ন জায়গাতে হেলিকপ্টারে করে যাওয়া–আসা করতেন।
অভিযোগে বাদীদের আরও বলেন, ‘এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁদের বেতন বকেয়া রেখে চাকরিচ্যুত করা হয়। ওই সময় জানানো হয়েছিল, তাঁদের বেতন ও ভাতা পরে পরিশোধ করা হবে। কিন্তু পরে কয়েকবার যোগাযোগ করেও বেতন দেওয়া হয়নি, প্রতারণা করা হয়েছে।’
তিনটি মামলায় মোট ১ কোটি ২০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেট বিভাগে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে, বেশি হবিগঞ্জে
সিলেট বিভাগে চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আজ ৭ ডিসেম্বর (রোববার) পর্যন্ত সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৫০৩ জন।
বিভাগের ৪ জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৪২ জন আক্রান্ত হয়েছেন হবিগঞ্জ জেলায়। এ ছাড়া চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দুজন মারা গেছেন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সিলেট জেলার একজন এবং সুনামগঞ্জ জেলার একজন রয়েছেন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আজকের পরীক্ষায় ছয়জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সিলেট জেলায় তিনজন, সুনামগঞ্জ জেলায় দুজন ও হবিগঞ্জ জেলায় একজন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত সিলেট জেলায় ৮২ জন, সুনামগঞ্জে ৮১ জন, মৌলভীবাজারে ৯৮ জন এবং হবিগঞ্জে ২৪২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ৯ জন, হবিগঞ্জ জেলায় ২ জন ও সুনামগঞ্জ জেলায় ৬ জন রয়েছেন।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মো. কামরুজ্জামান জানান, হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড রয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালে ডেঙ্গুর উপসর্গ নিয়ে যাঁরা চিকিৎসা নিতে আসেন, তাঁদের পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত ছয়জন চিকিৎসাধীন।
সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন জন্মেজয় দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, আগে দেখা যেত বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেশি দেখা যেত, তবে এখন সেটি পরিবর্তন হয়েছে। আলাদা করে মৌসুম বলতে গেলে নেই। বর্ষার আগে, বর্ষার সময় এবং বর্ষার পরে আক্রান্ত হচ্ছেন। ডেঙ্গুর প্রধান বাহক এডিস মশা। স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন, উপজেলা পরিষদের সঙ্গে সমন্বয় করে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ববিদ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় মশার লার্ভা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। এতে সিলেটের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে।
ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষার জন্য মশারি ব্যবহার, বাড়িতে পানি জমিয়ে না রাখার ব্যাপারে গুরুত্ব দেন ডেপুটি সিভিল সার্জন। তিনি বলেন, উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতেও এখন আরডিটি (র্যাপিড ডায়াগনস্টিক টেস্ট) সরবরাহ করা হয়েছে। এ জন্য জ্বর কিংবা ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষা করিয়ে চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুনডেঙ্গু সংক্রমণের সময় বদলাচ্ছে, বেড়েছে নভেম্বরে, কারণ কী ০৮ নভেম্বর ২০২৫এদিকে বিভাগের মধ্যে হবিগঞ্জ জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণ জানাতে চাইলে হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন রত্নদীপ বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, জেলার মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত বেশি হচ্ছেন লাখাই উপজেলার লোকজন। মূলত লাখাই উপজেলার বাসিন্দাদের অধিকাংশ ঢাকায় বিভিন্ন কাজে রয়েছেন। ঢাকায় আক্রান্ত হয়ে এলাকায় ফিরে আসছেন আর এর মাধ্যমে এডিস মশার কামড়ে রোগটি একজন থেকে আরেকজনে ছড়িয়ে পড়ছে। এ জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে এডিস মশার বিষয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুনডেঙ্গু বাড়ছে, সরকার নির্বিকার ২১ অক্টোবর ২০২৫