আবারও সেমিফাইনালে ফারইস্ট, পারল না চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়
Published: 7th, December 2025 GMT
প্রথমার্ধে কোনো গোল হয়নি। ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির মধ্যে সমানতালে লড়াই চলছিল। কিন্তু শেষ দিকে আর তাল মেলাতে পারেনি প্রিমিয়ার। ম্যাচের শেষ ১০ মিনিটে ২ গোল করে ইস্পাহানি-প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবলের তৃতীয় আসরের সেমিফাইনালে উঠেছে ফারইস্ট। টুর্নামেন্টের প্রথম আসরে তারা খেলেছিল ফাইনালে, গতবার উঠেছিল সেমিফাইনালে।
চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় শেষ পর্যন্ত হার মানলেও চট্টগ্রামের আরেক দল চমক দেখিয়েছে। আজ দিনের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে চিটাগাং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি টাইব্রেকারে ৭-৬ ব্যবধানে টুর্নামেন্টের প্রথম আসরের সেমিফাইনালিস্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠে। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচটি ছিল ১-১ ড্র।
সাভারের বিরুলিয়ায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মাঠে দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে ফারইস্ট জিতলেও নিজেদের সেরাটা খেলতে পারেনি। ফারইস্ট এ ম্যাচে পায়নি বাংলাদেশ লিগের দুই খেলোয়াড় আবাহনীর গোলকিপার পাপ্পু হোসেন ও ফকিরেরপুলের ফরোয়ার্ড স্বাধীন হোসেনকে।
আরও পড়ুনগ্লাভস হাতে নিয়েও পারলেন না কিরণ, সেমিফাইনালে চিটাগং ইনডিপেনডেন্ট৩ ঘণ্টা আগেতবে পেয়েছে বাংলাদেশ লিগের তিন ফুটবলার পুলিশ এফসির মিডফিল্ডার এম এস বাবলু, ব্রাদার্স ইউনিয়নের ফরোয়ার্ড মেরাজ প্রধান এবং আবাহনীর ফরোয়ার্ড আসাদুল মোল্লাকে। পেশাদার খেলোয়াড় থাকায় শেষ দিকে ম্যাচ বের করে নিতে সমস্যা হয়নি ফারইস্টের।
ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির খেলোয়াড়দের গোল উদ্যাপন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউন ভ র স ট স ম ফ ইন ল ব শ বব দ য ফ রইস ট প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় পার্টির ভবিষ্যৎ কী
প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো যখন প্রার্থী ঘোষণা করে মাঠে নেমে গেছে, জাতীয় পার্টি (জাপা) তখনো নিশ্চিত নয় যে তারা আদৌ আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না। এ প্রশ্নে অন্তর্বর্তী সরকার শেষ পর্যন্ত কী অবস্থান নেয়, সেটিও দলটির কাছে স্পষ্ট নয়। এর সঙ্গে রয়েছে জি এম কাদের ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বে বিভক্ত জাতীয় পার্টির দুই অংশের পরস্পরবিরোধী তৎপরতা। এসব কারণে দলটির ভবিষ্যৎ কী—সে আলোচনাও সামনে এসেছে।
গত ১৪ মাসে জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক অবস্থান অনেকটাই কোণঠাসা। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলের সভা-সমাবেশে পুলিশের বাধা, কার্যালয়ে হামলা এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকার মতো ঘটনাগুলো এতে বড় ভূমিকা রেখেছে। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন দল ইতিমধ্যে দলীয় মনোনয়ন প্রায় চূড়ান্ত করে নির্বাচনী প্রচারে নেমে গেছে।
তিন নির্বাচনের ‘দোসর’–বিতর্কবিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪) জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী বা ফ্যাসিবাদের ‘দোসর’ হিসেবে সমালোচিত। এ দায় তারা এড়াতে পারছে না। ফলে ফ্যাসিবাদের ‘দোসর’, এই তকমা দলটির রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এ সুযোগে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন ও গণ-অধিকার পরিষদ প্রকাশ্যেই চাচ্ছে, জাতীয় পার্টি যেন নির্বাচন করার সুযোগ না পায়।
যদিও তিনটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় জাতীয় পাটিকে ফ্যাসিবাদের ‘দোসর’ বলার বিষয়ে দলটির নেতাদের ভিন্ন ব্যাখ্যা আছে। তাঁদের দাবি, ভোটে গিয়ে জাতীয় পার্টি কোনো অন্যায় করেনি। তাঁরা সংসদের ভেতরে–বাইরে আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যায়-অপরাধের যথাযথ সমালোচনা করেছেন। এর মধ্যে জি এম কাদের ‘দোসর’ পরিচয়ের দায় নিতে শুরু থেকেই অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছেন।
এ ছাড়া আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. মুজিবুল হক (চুন্নু) প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০২৪ সালের নির্বাচনে নৈতিকভাবে না যাওয়া উচিত ছিল। তবে নির্বাচনে গিয়ে আমরা আইনগতভাবে কোনো অন্যায় করিনি। এ জন্য আমাদের স্বৈরাচারের দোসর বলা হচ্ছে। আমরা যদি দোসর হই, এর বিচারটা জনগণের হাতে দেওয়াই তো ভালো।’
নির্বাচন করতে প্রস্তুত দুই পক্ষইবিভক্ত জাতীয় পার্টির দুই অংশের উচ্চপর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে যে ধারণা পাওয়া গেছে, সেটি হলো তাঁরা এখন পর্যন্ত মনে করতে পারছেন না যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারবে।
তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতি অনুকূল বা প্রতিকূল যা-ই হোক, দলটির উভয় অংশই নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। এ ক্ষেত্রে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন অংশটি এককভাবে আর আনিসুল ইসলামের অংশটি জোটগত ভোটে বেশি আগ্রহী।
এ বিষয়ে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কিছু সমমনা দলের সঙ্গে কথা বলছি। এটা এখনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর মতো কিছু হয়নি। দেখা যাক, কী হয়।’
তবে এখন পর্যন্ত জাতীয় পার্টির জন্য যে পরিবেশ-পরিস্থিতি, তাতে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ কতটা পাবে, তা নিয়ে নেতাদের মধ্যে বেশ সংশয় আছে।
এ বিষয়ে জি এম কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরিস্থিতি যা-ই হোক, আমাদের হয় নির্বাচন করতে হবে, না হয় ঠেকানোর চেষ্টা করতে হবে। আমরা এককভাবে নির্বাচন করার চেষ্টা করব। কারও সঙ্গে মৌখিক সমঝোতাও করতে পারি।’
জানা গেছে, পরিস্থিতি নজরে রেখে জাতীয় পার্টির দুই পক্ষই ভোটে থাকার জুতসই উপায় খুঁজছে। নেতাদের ধারণা, জোটের মাধ্যমে ভোটে গেলে তাঁদের আসন-সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে। তবে এসব সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক পরিবেশ কতটা স্থিতিশীল হয়, তার ওপর।
প্রতীক নিয়ে সংকটজাতীয় পার্টি লোগো