আগামী জাতীয় নির্বাচনে যে দল বা জোট বিজয়ী হোক না কেন, জাতি হিসেবে সবাই মিলে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে—এমন মন্তব্য করেছেন সড়ক ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেছেন, নির্বাচন যেন একটি উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় এবং মানুষ নির্বিঘ্নে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন—এটাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রত্যাশা।

আজ রোববার দুপুরে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় আড়িয়াল খাঁ নদের ওপর নির্মাণাধীন মীরগঞ্জ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘আমাদের চাওয়া একটাই—নির্বাচন যেন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখরভাবে অনুষ্ঠিত হয়। মানুষ যাতে ভয়ভীতি ছাড়া ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। আগের মতো কেউ যেন ভোটকেন্দ্র দখল করতে না পারে, সে বিষয়ে কঠোর থাকতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, নির্বাচন আয়োজন ও ব্যবস্থাপনা পুরোপুরি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার। অন্তর্বর্তী সরকার কেবল নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবে, যাতে তারা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে পারে।

মীরগঞ্জ সেতু প্রসঙ্গে সড়ক ও সেতু উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন সময় নানা কোন্দল ও জটিলতার কারণে এই সেতুর বাস্তবায়ন দেরি হয়েছে। এর ফলে প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়েছে। এখন এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি সময়মতো ও গুণগত মান বজায় রেখে বাস্তবায়নের জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ফাওজুল কবির খান আশাবাদ জানিয়ে বলেন, মীরগঞ্জ সেতু নির্মিত হলে এ অঞ্চলের অর্থনীতির পুনর্জাগরণ ঘটবে, মানুষের মধ্যে যোগাযোগ ও সৌহার্দ্য বাড়বে, পাশাপাশি শিল্প, বাণিজ্য ও কৃষির বিকাশে নতুন গতি আসবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, মীরগঞ্জ সেতু নির্মিত হলে এ অঞ্চলের মানুষ ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে। তবে নির্মাণকাজে কোনো ধরনের অনিয়ম, পুকুর চুরি বা নদী চুরি যেন না হয়, সে বিষয়ে স্থানীয়দের নজরদারি রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘এটি জনগণের আমানত। সেই আমানত রক্ষা করে সেতুর কাজ করতে হবে। অনেক সময় প্রকল্পের কাজ ও সুযোগ পাওয়া নিয়ে স্থানীয়ভাবে সমস্যার সৃষ্টি হয়, যা কাজের মান ও নির্মাণের সময়সীমার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এসব বিষয়ে সবাইকে সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে।’

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বরিশাল বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্থানীয় পর্যায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

১ হাজার ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য মীরগঞ্জ সেতুটি আড়িয়াল খাঁ নদে তৃতীয় সেতু হতে যাচ্ছে। এর আগে এই নদীর ওপর ঢাকা-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের শিবচর এবং চাঁদপুর-শরীয়তপুর-মাদারীপুর মহাসড়কে দুটি সেতু নির্মিত হয়েছে। মীরগঞ্জ সেতু নির্মিত হলে এটি মুলাদি ও হিজলা উপজেলাকে সরাসরি বরিশাল নগর এবং জাতীয় মহাসড়ক নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করবে। একই সঙ্গে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা হবে আরও সহজ ও নির্বিঘ্ন।

১ হাজার ৪৮৪ মিটার দীর্ঘ মীরগঞ্জ সেতুটি চট্টগ্রামের দ্বিতীয় কর্ণফুলী সেতু ও বরিশালের পায়রা সেতুর আদলে নির্মিত হবে। এতে থাকবে দুটি অ্যাবাটমেন্ট, ১৭৫ মিটারের দুটি এবং ৯৭ মিটারের দুটি পিয়ারসহ ৫৪৪ মিটার মূল সেতু অংশ। এ ছাড়া ৯৪০ মিটার দীর্ঘ ভায়াডাক্ট যুক্ত থাকবে। সেতু ও ভায়াডাক্ট মিলিয়ে মোট পিয়ারের সংখ্যা হবে ৩০।

সেতুর দুই পাশে প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে। টোল প্লাজাসংলগ্ন অংশে রিজিড পেভমেন্ট এবং অবশিষ্ট ৩ হাজার ৯৭৩ মিটার অংশে ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম রগঞ জ স ত উপদ ষ ট অন ষ ঠ বর শ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আড্ডা আর গানে চুয়েটে ‘জয়ধ্বনির’ উৎসবমুখর আয়োজন

মঞ্চে দাঁড়িয়ে কেউ গাইছেন গান, কেউ গিটারের তারে তুলছেন সুর। দর্শকেরাও সেই সুর মোহিত হয়ে উপভোগ করছেন। কেউ দিচ্ছেন করতালি, কেউবা মুঠোফোনের ফ্ল্যাশ জ্বেলে শিল্পীদের উৎসাহ দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে মঞ্চের আলোকসজ্জা তো আছেই।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) বাস্কেটবল মাঠে গিয়ে দেখা যায় এ দৃশ্য। উৎসবমুখর এ পরিবেশের আয়োজন করেছিল চুয়েটের সাংস্কৃতিক সংগঠন জয়ধ্বনি। সংগঠনটির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ আয়োজন করা হয়।

সংগঠনটির দুই দিনব্যাপী এ উৎসবে দেশের সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়া সংগঠনটির সাবেক ও বর্তমান সদস্যরাও রয়েছেন। গতকাল শুক্রবার রাতে এ উৎসব শেষ হয়েছে। এ উৎসব ঘিরে মাঠের চারপাশে বসে বিভিন্ন ধরনের স্টল। এতে ছিল নানা পণ্য, খাবার ও শীতের পিঠা।

উৎসবের সহযোগিতায় রয়েছে প্রথম আলো, পৃষ্ঠপোষকতায় ইলেকট্রনিক কোম্পানি ‘হ্যাভিট’, খাদ্যসহায়তায় ‘পাহাড়িকা কিচেন’ আর বেভারেজ সহায়তায় মোজো।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ উৎসব। এরপর পর্যায়ক্রমে মঞ্চে গান পরিবেশন করেন চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিল্পীরা। বিরতির পর রাত নয়টায় আবার শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। একে একে মঞ্চে গান পরিবেশন করেন আহ্‌ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে পরিবেশকদের সম্মাননা দিয়ে প্রথম দিনের উৎসব শেষ হয়।

দুই দিনব্যাপী উৎসবের এ আয়োজন দেখতে ভিড় করেন হাজারো শিক্ষার্থী। গত বৃহস্পতিবার রাতে চুয়েটের বাস্কেটবল মাঠে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আড্ডা আর গানে চুয়েটে ‘জয়ধ্বনির’ উৎসবমুখর আয়োজন