সিলেট বিভাগে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে, বেশি হবিগঞ্জে
Published: 7th, December 2025 GMT
সিলেট বিভাগে চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আজ ৭ ডিসেম্বর (রোববার) পর্যন্ত সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৫০৩ জন।
বিভাগের ৪ জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৪২ জন আক্রান্ত হয়েছেন হবিগঞ্জ জেলায়। এ ছাড়া চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দুজন মারা গেছেন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সিলেট জেলার একজন এবং সুনামগঞ্জ জেলার একজন রয়েছেন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আজকের পরীক্ষায় ছয়জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সিলেট জেলায় তিনজন, সুনামগঞ্জ জেলায় দুজন ও হবিগঞ্জ জেলায় একজন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত সিলেট জেলায় ৮২ জন, সুনামগঞ্জে ৮১ জন, মৌলভীবাজারে ৯৮ জন এবং হবিগঞ্জে ২৪২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ৯ জন, হবিগঞ্জ জেলায় ২ জন ও সুনামগঞ্জ জেলায় ৬ জন রয়েছেন।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মো.
সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন জন্মেজয় দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, আগে দেখা যেত বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেশি দেখা যেত, তবে এখন সেটি পরিবর্তন হয়েছে। আলাদা করে মৌসুম বলতে গেলে নেই। বর্ষার আগে, বর্ষার সময় এবং বর্ষার পরে আক্রান্ত হচ্ছেন। ডেঙ্গুর প্রধান বাহক এডিস মশা। স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন, উপজেলা পরিষদের সঙ্গে সমন্বয় করে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ববিদ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় মশার লার্ভা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। এতে সিলেটের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে।
ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষার জন্য মশারি ব্যবহার, বাড়িতে পানি জমিয়ে না রাখার ব্যাপারে গুরুত্ব দেন ডেপুটি সিভিল সার্জন। তিনি বলেন, উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতেও এখন আরডিটি (র্যাপিড ডায়াগনস্টিক টেস্ট) সরবরাহ করা হয়েছে। এ জন্য জ্বর কিংবা ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষা করিয়ে চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুনডেঙ্গু সংক্রমণের সময় বদলাচ্ছে, বেড়েছে নভেম্বরে, কারণ কী ০৮ নভেম্বর ২০২৫এদিকে বিভাগের মধ্যে হবিগঞ্জ জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণ জানাতে চাইলে হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন রত্নদীপ বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, জেলার মধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত বেশি হচ্ছেন লাখাই উপজেলার লোকজন। মূলত লাখাই উপজেলার বাসিন্দাদের অধিকাংশ ঢাকায় বিভিন্ন কাজে রয়েছেন। ঢাকায় আক্রান্ত হয়ে এলাকায় ফিরে আসছেন আর এর মাধ্যমে এডিস মশার কামড়ে রোগটি একজন থেকে আরেকজনে ছড়িয়ে পড়ছে। এ জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে এডিস মশার বিষয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুনডেঙ্গু বাড়ছে, সরকার নির্বিকার ২১ অক্টোবর ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ভ ল স র জন স ন মগঞ জ পর ক ষ ত হয় ছ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
একীভূত ৫ ব্যাংকের গ্রাহকেরা কীভাবে টাকা ফেরত পাবেন
একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ইসলামি ব্যাংকের আমানতকারীরা তাঁদের টাকা ফেরত পাবেন। চলতি সপ্তাহ থেকে তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়া শুরু হতে পারে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
একজন আমানতকারী তাঁদের ব্যাংক হিসাবে জমা ২ লাখ টাকা পর্যন্ত পাবেন। বাংলাদেশের ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় আমানত বিমা তহবিল থেকে এই টাকা দেওয়া হবে।
সমস্যাগ্রস্ত ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক একীভূত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ‘সম্মিলিত ইসলামি ব্যাংক পিএলসি’র চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। ব্যাংকটি সমস্যাগ্রস্ত ওই পাঁচ ইসলামি ব্যাংককে অধিগ্রহণ করবে।
কীভাবে টাকা পাবেন
কী প্রক্রিয়ায় এই টাকা ফেরত দেওয়া হবে ও কারা কারা এই টাকা ফেরত পাবেন, তা নিয়ে একটি স্কিম প্রণয়নের কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। টাকা ফেরতের আগে এই স্কিম প্রকাশ করা হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, যেসব গ্রাহকের হিসাবে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত আছে, তাঁরা চাইলে পুরো টাকা উঠিয়ে নিতে পারবেন। যাঁদের হিসাবে দুই লাখ টাকার বেশি টাকা আছে, তাঁরা সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পাবেন। বাকি টাকার বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই গ্রাহকের আমানতের বাকি টাকার ওপর মুনাফার হার নতুন করে নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
এর মানে হলো, ৫ ব্যাংকে থাকা ৭৫ লাখ আমানতকারীর সবাই সব টাকা ফেরত পাবেন না। আপাতত দুই লাখ টাকা পর্যন্ত পেলেও পরে চাইলে পুরো টাকা তুলতে পারবেন গ্রাহকেরা। মূলত ছোট গ্রাহকদের আতঙ্ক ও অতীব জরুরি প্রয়োজন মেটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
টাকা পেতে নিয়ম কী
নিজেদের টাকা গ্রাহকদের জন্য কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো:
১. একজন নাগরিকের এক ব্যাংকে একাধিক হিসাব থাকলেও শুধু একটি হিসাবের বিপরীতে টাকা পাবেন। এ জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে তাঁর নামে হিসাব থাকতে হবে।
২. যাঁদের হিসাব বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে খোলা হয়েছে, শুধু তাঁরাই টাকা পাবেন।
৩. একজন নাগরিকের পাঁচ ব্যাংকের পাঁচটি হিসাব থাকলে প্রতিটির বিপরীতে টাকা পাবেন।
৪. সংশ্লিষ্ট আমানতের বিপরীতে ঋণ থাকলে টাকা পাবেন না। ঋণ সমন্বয় করার পর টাকা ফেরতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
৫. বাকি টাকার ওপর সুদের হার নতুন করে নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
খরচ ১২ হাজার কোটি টাকা
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রাথমিক হিসাব করে দেখেছে, গ্রাহকদের টাকা দিতে সব মিলিয়ে ১২ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে।
সম্মিলিত ইসলামি ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ঠিক করা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২০ হাজার কোটি এবং আমানত বিমা তহবিল থেকে দেওয়া হবে ১৫ হাজার কোটি টাকা। অনুমোদিত মূলধন ঠিক করা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি।
ইতিমধ্যে সরকারের মূলধনের ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড় করা হয়েছে। বাকি টাকা মূলধন হিসেবে ব্যাংককে দেওয়া হবে।
একীভূত ব্যাংকটির ভিত্তি শক্তিশালী কর নানা উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর মধ্যে থাকবে ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ শীর্ষ পর্যায়ে দক্ষ, অভিজ্ঞ ও সৎ কর্মকর্তা নিয়োগ, ব্যাংকটির পরিচালনার নীতিমালা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করে গ্রাহক আস্থা তৈরি করা হবে।
রাজধানীর মতিঝিলের সেনাকল্যাণ ভবনে নতুন ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় খোলা হয়েছে। ইতিমধ্যে ব্যাংকটিতে চেয়ারম্যানসহ পরিচালনা পর্ষদ নিয়োগ দিয়েছে সরকার। পর্ষদের সবাই সরকারের সাবেক ও বর্তমান আমলা। সামনে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিয়ে পর্ষদকে আরও যোগ্য করে গড়ে তোলা হবে।