বাংলাদেশের আদালতে গত সোমবার ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের দোষী সাব্যস্ত হওয়াটা যুক্তরাজ্যে একটি বড় খবর ছিল।

বেলা একটায় বিবিসি রেডিও ৪-এর প্রধান সংবাদ বুলেটিনে এটি দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ হিসেবে প্রচার করা হয়। অন্য গণমাধ্যমেও বিষয়টি বড় খবর হিসেবে উঠে আসে।

রায়ের ঠিক এক সপ্তাহ আগে আরেকটি খবর প্রকাশিত হয়েছিল। খবরটি ছিল লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে পাঠানো একটি চিঠি নিয়ে।

এ চিঠি টিউলিপ সিদ্দিকের নিয়োগ করা জ্যেষ্ঠ ব্রিটিশ আইনজীবীরা লিখেছিলেন। দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, চিঠিটিতে মূলত আইনি ‘ডিউ প্রসেস’ বা ন্যায্য বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

ডিউ প্রসেস বলতে কোনো মামলা যে আইনি কাঠামো ও নিয়মের মধ্যে পরিচালিত হয় এবং বিচার হয়, সেই প্রক্রিয়াকে বোঝায়।

এটি মামলার মূল যুক্তি বা প্রমাণের বিষয় নয়; বরং কোন নিয়মে সেই বিচার হচ্ছে, সেটিই এর প্রধান বিষয়।

যথাযথ আইনজীবীর সহায়তা পাওয়া বা না–পাওয়া, এটিও ডিউ প্রসেসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

আরও পড়ুনটিউলিপ যেভাবে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনলেন১৬ জানুয়ারি ২০২৫

বাংলাদেশে অনেক বিশ্লেষক ও মন্তব্যকারী টিউলিপ সিদ্দিক আদৌ ন্যায্য বিচারপ্রক্রিয়া পেয়েছেন কি না, তা নিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু এখানে আমি সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করছি না।

আদালতে কে কী যুক্তি দিয়েছেন বা কোন পক্ষের যুক্তি কতটা শক্ত, সেটিও আমি বিবেচনায় আনছি না। তার বদলে আমি এমন একটি দিকের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি, যেটি খুব কম আলোচিত হয়েছে।

সেটি হলো যুক্তরাজ্যের জনপরিসর ও গণমাধ্যমে আলোচিত এ বিষয়কে বাংলাদেশ সরকার যেভাবে সামলেছে, তাকে আসলে গণমাধ্যম ব্যবস্থাপনার বড় বিপর্যয় বলা যেতে পারে।

এ ছাড়া পুরো ঘটনার সবচেয়ে বড় ও দীর্ঘমেয়াদি গুরুত্ব কী হতে পারে, সেটিও আমি বিবেচনা করছি।

বাংলাদেশের বাইরে, বিশেষ করে যুক্তরাজ্যসহ বিদেশে থাকা যেকোনো ব্যক্তির কাছ থেকে সম্পদ উদ্ধার করার যে প্রচেষ্টা বাংলাদেশ করছে, এ ঘটনা সেই প্রচেষ্টার ওপর কী ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, সেটিও আমি বিবেচনা করছি।

সোমবার ব্রিটিশ গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরগুলো পর্যালোচনা করে স্পষ্টভাবে বোঝা গেছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে কোনো শক্ত পাল্টা বর্ণনা বা ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

এর ফলে টিউলিপ সিদ্দিক ও তাঁর জনসংযোগ বা মিডিয়া টিমের জন্য মাঠটা পুরো খালি হয়ে যায়। অন্তর্বর্তী সরকার আদৌ কোনো পাল্টা বক্তব্য দেওয়ার চেষ্টা করেছিল কি না, সেটিও স্পষ্ট নয়।

দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপের আইনজীবীদের চিঠিটিতে মূলত আইনি ‘ডিউ প্রসেস’ বা ন্যায্য বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট উল প স দ দ ক ড উ প রস স প রক র য় প রক শ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পুরোনো হাতিয়ার ব্যবহার করে কি নতুন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে, প্রশ্ন সারা হোসেনের

পুরোনো হাতিয়ার ব্যবহার করে নতুন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে কি না—প্রশ্ন তুলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী সারা হোসেন। তিনি বলেন, ‘যারা ‘ইয়ার্কির’ (e-আরকি, ব্যঙ্গবিদ্রূপভিত্তিক ওয়েবসাইট) বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, তাঁরা তো দাবি করছেন যে তাঁরা নতুন করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছেন। তো সেই কাজগুলো কি এইভাবেই হবে? পুরোনো সব হাতিয়ার ব্যবহার করে? পুরোনো সব আইন ব্যবহার করে?’

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘স্যাটায়ার, মিম ও কার্টুন: মতপ্রকাশ নাকি মর্যাদাহানি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সারা হোসেন এ কথা বলেন।

সভাটি আয়োজন করে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ‘নাগরিক কোয়ালিশন’ ও ফান ম্যাগাজিন ‘e-আরকি’। সভায় স্যাটায়ারিস্ট, কার্টুনিস্ট, সাংবাদিক, আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

বিগত সরকারের আমলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বিষয়টি টেনে সারা হোসেন বলেন, সে সময় বলা হয়েছিল যে কেউ যদি কোনোভাবে সংবিধান পরিবর্তন করার চেষ্টা করে, সেটাকেও রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে দেখা হবে। সেটার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। কথা বলার জন্য শাস্তির পাওয়ার সেই চর্চা থেকে সবাই বের হয়ে আসতে চাইছে।

সারা হোসেন বলেন, মিম ও কার্টুনের গুরুত্ব হলো তামাশার মাধ্যমে ক্ষমতাশালীদের প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়। এখনকার সময়ে এগুলো সাধারণ মানুষের সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করে। সে জন্য এসবের সামাজিক আর রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক। এগুলোর একটি স্পেস রাখা দরকার। সেই স্পেসটাকেই মামলা দিয়ে সংকীর্ণ করার চেষ্টা হচ্ছে।

অনলাইনে ‘অপপ্রচার’ ও নারী নেত্রীদের সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগে কয়েকটি ফেসবুক পেজ ও আইডির বিরুদ্ধে গত ২ ডিসেম্বর মামলা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) আবু সাদিক কায়েম। মামলা করার পর তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা সাইবার সাপোর্ট ইউনিটের সঙ্গে ফলপ্রসূ মিটিং করেছি। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার স্বরাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। একই সঙ্গে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে। আজকে আমরা এখানে লিখিতভাবে আমাদের অভিযোগগুলো দিয়েছি।’

‘স্যাটায়ার, মিম ও কার্টুন: মতপ্রকাশ নাকি মর্যাদাহানি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় অতিথি ও আলোচকেরা। আজ শনিবার সকালে, রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পুরোটাই বাতিল হওয়া উচিত: আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া
  • বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে প্রথম জাতীয় আইন সম্মেলন অনুষ্ঠিত
  • ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে শিশির মনিরের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন, তদন্তে ডিবি
  • পুরোনো হাতিয়ার ব্যবহার করে কি নতুন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে, প্রশ্ন সারা হোসেনের
  • সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশের মাধ্যমে দ্বৈত প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতা দূর হয়েছে: প্রধান বিচারপতি