দেশের মানুষ ১৯৭১ সালে তাদের দেখেছে: তারেক
Published: 7th, December 2025 GMT
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, কিছু কিছু মানুষ বা কোনো কোনো গোষ্ঠীকে বলতে শোনা যায়, ক্ষমতায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দলকে দেখা হয়েছে। এবার অমুককে (জামায়াতে ইসলামী) দেখুন। এই অমুককে দেশের মানুষ ১৯৭১ সালে দেখেছে কীভাবে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘কিছু কিছু মানুষ বা কোনো কোনো গোষ্ঠী ইদানীং বলতে শুনেছি বা বিভিন্ন জায়গায় কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় বলে যে, অমুককে দেখলাম, তমুককে দেখলাম, তমুককে দেখলাম, এবার অমুককে দেখুন। যাদের কথা বলে অমুককে দেখুন, তাদের তো দেশের মানুষ ১৯৭১ সালেই দেখেছে। ১৯৭১ সালে তারা তাদের নিজেদের স্বার্থে রক্ষার্থে কীভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে। ঠিক যেভাবে পতিত স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার আগে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছিল ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য। এই যাদের কেউ কেউ বলে যে, একবার দেখুন না এদের। তাদের দেশের মানুষ ১৯৭১ সালেই দেখেছে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘লক্ষ লক্ষ মানুষকে শুধু হত্যাই করেনি, তাদের সহকর্মীরা কীভাবে মা-বোনদের ইজ্জত পর্যন্ত লুট করেছিল, এই কথাটি আমাদের মনে রাখতে হবে।’
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটের খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। বিজয়ের মাস উপলক্ষে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি। এতে ছাত্রদলের সারা দেশের জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন ইউনিটের হাজারের বেশি নেতা অংশ নেয়।
কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে জামায়াতে ইসলামীকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, একটি রাজনৈতিক দলের কিছু ব্যক্তি বা বেশ কিছু ব্যক্তি বিভিন্ন জিনিসের টিকিট বিক্রি করে বেড়াচ্ছেন। বিভিন্ন জিনিসের কনফারমেশন (নিশ্চয়তা) দিয়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘দোজখ, বেহেশত, দুনিয়া সবকিছুর মালিক আল্লাহ। যেটার মালিক আল্লাহ, যেটার কথা একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই বলতে পারেন, সেখানে যদি আমি কিছু বলতে চাই, আমার নরমাল দৃষ্টিকোণ থেকে আমি বুঝি যে, সেটি হচ্ছে শিরক। সেটি হচ্ছে শিরকের পর্যায়ে পড়ে।'
আরও পড়ুনজামায়াতের টিকিট কাটলে জান্নাতের টিকিট কাটা হবে, কোথায় আছে বলুক তারা: মির্জা ফখরুল২২ নভেম্বর ২০২৫অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছাত্রদলের নেতাদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষকে বোঝাতে হবে যারা এসব কথা বলে, তারা শিরক করছে। যারা শুনবেন, তাঁরাও শিরকের পর্যায়ে পড়ে যাবেন।
এর আগে সকালে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সঞ্চালনা করেন আরেক যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান (সোহেল)।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ শ র ম ন ষ ১৯৭১ স ল ত র ক রহম ন অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর বাংলাদেশ প্রীতি
আর্জেন্টিনার একজন প্রভাবশালী বুদ্ধিজীবী, লেখিকা ও নারীবাদী নেত্রী ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের কারণে তিনি বাংলাভাষী মানুষের কাছে বিশেষভাবে আলোচিত ও সমাদৃত। বলা হয়ে থাকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর কাব্যিক ও আত্মীক সম্পর্ক ছিলো। ওকাম্পো শুধু রবীন্দ্রনাথকেই ভালোবাসতেন তা কিন্তু নয়, না, তিনি ভালোবাসতেন বাংলা ভাষা ও বাঙালিকেও। ভিক্টোরিয়া সেই প্রমাণ রাখেন একাত্তুরে। সেই কারণেই বাংলাদেশের সঙ্গে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবেই গুরুত্ববহ।
১৯৭১-এ ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ না নিলেও তিনি ছিলেন হয়ে উঠেছিলেন একজন শুভাকাঙ্ক্ষী ও সমর্থক। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ওকাম্পোর বয়স ছিল ৮১ বছর। বয়সের ভারে তিনি তখন দুর্বল, কিন্তু এরপরেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে তিনি পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।পাকিস্তানিদের দ্বারা সংঘটিত নৃশংস গণহত্যার প্রতিবাদে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসে একটি মিছিলের আয়োজন করেছিলেন, শুধু তাই না ওকাম্পো ছিলেন মিছিলের পুরোভাগে। সেদিনের সেই মিছিলেন ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো ছাড়াও আরও ছিলেন— হোর্হে লুইস বোর্হেস, এদুয়ার্দো সাবাতো, এদোলফো ওবোইতাসহ আরও অনেকে।
আরো পড়ুন:
আজ শত্রুমুক্ত ফেনীতে প্রথম উড়েছিল লাল সবুজের পতাকা
বাংলাদেশের এক পাগলাটে বন্ধু জঁ ক্যা
একাত্তরের ১১ জুন আর্জেন্টাইন লেখক, বুদ্ধিজীবী, মানবতাবাদী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের শরণার্থীদের প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইস মারিয়া ডি পাবলো পারডোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে একটি স্মারকলিপি দেন। সেই দাবিনামায় যারা স্বাক্ষর করেছিলেন, তাদের মধ্যে প্রথমেই ছিল ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর নাম।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানি গণহত্যার প্রতিবাদে আর্জেন্টাইন সরকারের কাছে তিনি আবেদন জানান এবং বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখেন।
ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো শুধু প্রতিবাদ করেই থেমে থাকেননি, বরং নিজের প্রভাব খাটিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত তৈরিতে সহায়তা করেন। তার সম্পাদিত বিখ্যাত সাহিত্য পত্রিকা ‘সুর’-এর মাধ্যমে তিনি বিশ্ব সাহিত্য অঙ্গনে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যার খবর তুলে ধরেন, যা ছিল তার সমর্থনেরই একটি প্রকাশ।
ঢাকা/লিপি