যশোরের কেশবপুর উপজেলা যুবদলের সদস্য উজ্জ্বল বিশ্বাসের জানাজায় অংশ নিয়ে বিএনপি নেতারা স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি দাবি করেছেন। তাঁরা বলেছেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং এমন মৃত্যু বন্ধে রাষ্ট্রকে উদ্যোগ নিতে হবে।

আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে কেশবপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে উজ্জ্বল বিশ্বাসের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শত শত নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ এতে অংশ নেন।

জানাজার আগে বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ। তিনি বলেন, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা যদি এখনো অব্যাহত থাকে, তাহলে জুলাই আন্দোলন নস্যাৎ হয়ে যাবে। আমরা আর কোনো মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হোক, তা চাই না।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রচলিত আইন আছে। কেউ অপরাধ করলে বিচারের মাধ্যমে শাস্তি হোক। উজ্জ্বলকে যেভাবে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেটা কারও কাম্য নয়।’

বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী কাজী রওনাকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই। কী কারণে তাঁকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করল, তা জানতে চাই।’ উজ্জ্বলের মৃত্যুর ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে সত্য উদ্‌ঘাটনের দাবি করেন তিনি।

এ সময় আরও বক্তব্য দেন কেশবপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র আবদুস সামাদ বিশ্বাস, বিএনপির সাবেক উপজেলা আহ্বায়ক মশিউর রহমান, কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আলাউদ্দিন, জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী মোক্তার আলী ও জামায়াত নেতা অজিয়ার রহমান।

জানাজায় উপস্থিত উজ্জ্বল বিশ্বাসের ভাই কেশবপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আফজল হোসেন বলেন, তাঁর ভাই যদি অপরাধ করে থাকেন, তবে আইনগতভাবে শাস্তি হতে পারত। কিন্তু তাঁকে নির্মমভাবে পিটিয়ে কেন মারা হলো, তা জানতে চান।

শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে উজ্জ্বল বিশ্বাসের লাশ তাঁর আলতাপোলের বাড়িতে পৌঁছালে পরিবার ও এলাকাবাসী কান্নায় ভেঙে পড়েন। সেখানে দেখা যায়, তাঁর মা রাবেয়া বেগম (৬২) অঝোরে কাঁদছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেকে কেন পিটিয়ে হত্যা করা হলো, তা আমি জানতে চাই।’ স্ট্রোকজনিত অসুস্থতায় শয্যাশায়ী উজ্জ্বলের বাবা নির্বাক ছিলেন। তিন বছরের একটি শিশুসন্তান ও স্ত্রীকে রেখে গেছেন উজ্জ্বল।

কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, উজ্জ্বল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে থানায় ৯টি মামলা ছিল এবং শুক্রবার আরেকটি মামলা হওয়ায় সংখ্যা দাঁড়ায় ১০।

থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে কেশবপুরের ভোগতী গ্রামের পলাশ (৩৫), আলমগীর হোসেন (৪০), মূলগ্রামের রাসেল (২৩) ও আলতাপোল গ্রামের উজ্জ্বল বিশ্বাসকে (৩৯) গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, দেশি অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর উজ্জ্বল বিশ্বাসকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হলে শুক্রবার রাতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুনযশোরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার যুবদল নেতার মৃত্যু, চিকিৎসাপত্রে লেখা ‘পাবলিক অ্যাসল্ট’০৬ ডিসেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র স ক শবপ র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

গ্রিসে অভিবাসীদের বহনকারী নৌযান থেকে ১৭ মরদেহ উদ্ধার

গ্রিসের ক্রিট দ্বীপের উপকূলে গত শনিবার অভিবাসীদের বহনকারী একটি নৌযান পানিতে ভেসে গেলে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। কোস্টগার্ডের এক নারী মুখপাত্র এএফপিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পানিতে ভেসে থাকা ওই ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নৌকাটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত থাকার কারণে এর ভেতরে পানি ঢুকেছিল।

এ ঘটনায় মুমূর্ষু অবস্থায় দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে ওই মুখপাত্র জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘নৌযানটিতে পানি উঠে ভেসে যাওয়ার কারণ না জানা যাওয়ায় মৃত ব্যক্তিদের ময়নাতদন্ত করা হবে।’

গ্রিসের রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল ইআরটি জানিয়েছে, নৌযানটির ভেতর থেকে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।

ক্রিট দ্বীপের ইয়েরাপেত্রা বন্দরের মেয়র মানোলিস ফ্রাঙ্গুলিস সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মৃত ব্যক্তিদের সবাই কম বয়সী ছিলেন।

ইআরটি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাদের ধারণা, পানিশূন্যতায় অভিবাসীদের মৃত্যু হয়েছে।

ক্রিট দ্বীপ থেকে ২৬ নটিক্যাল মাইল (৪৮ কিলোমিটার) দক্ষিণ–পশ্চিমে নৌযানটি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন গ্রিসের কর্মকর্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ