বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে প্রথম জাতীয় আইন সম্মেলন অনুষ্ঠিত
Published: 7th, December 2025 GMT
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে (বিইউ) প্রথমবারের মতো জাতীয় আইন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘গ্লোবাল সাউথে আইন, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এই আয়োজন গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মো.
অধ্যাপক ফারহানা হেলাল মেহতাব বলেন, দেশে অধিকাংশ মানুষ আইন মানতে অনীহা দেখান, যা পরিবর্তনে সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যাবশ্যক। তিনি বলেন, মানবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা বজায়ে বিভিন্ন আইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গ্লোবাল সাউথে রাজনৈতিক প্রভাব, দুর্নীতি, ধীরবিচার প্রক্রিয়া এবং জবাবদিহির অভাব আইনের শাসনকে দুর্বল করে তুলছে। তারপরও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও মানবাধিকার সংস্থার উদ্যোগে ইতিবাচক পরিবর্তনের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন। আইন, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারকে শক্তিশালী করেই টেকসই উন্নয়ন অর্জন সম্ভব বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দেশের অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে জাতীয় আইন সম্মেলন ভবিষ্যতে দেশ, জাতি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
বিকেলে অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন লন্ডন কলেজ অব লিগ্যাল স্টাডিজ সার্ভিসের আইন বিভাগের প্রধান ও প্রতিষ্ঠাতা এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী খালেদ হামিদ চৌধুরী।
সমাপনী বক্তব্যে বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী বলেন, সভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে মানবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আইনের প্রয়োজন আরও স্পষ্ট হয়েছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই মানবাধিকারসহ সব নাগরিক অধিকার সুরক্ষিত করা সম্ভব।
দিনব্যাপী এই সম্মেলনের ২টি টেকনিক্যাল সেশনে মোট ১১টি বিষয় নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের বিশিষ্ট আইনজীবী, গবেষক এবং শিক্ষকবৃন্দ আলোচনায় অংশ নেন। শিক্ষার্থীদের গবেষণামূলক চিন্তাভাবনা, বিশ্লেষণী দক্ষতা ও একাডেমিক আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে এ আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আয়োজকেরা আশা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং আইন বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল দ শ ইউন ভ র স ট ইউন ভ র স ট র ম নব ধ ক র অন ষ ঠ ত ন অন ষ আইন র র আইন
এছাড়াও পড়ুন:
পুরোনো হাতিয়ার ব্যবহার করে কি নতুন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে, প্রশ্ন সারা হোসেনের
পুরোনো হাতিয়ার ব্যবহার করে নতুন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যাবে কি না—প্রশ্ন তুলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী সারা হোসেন। তিনি বলেন, ‘যারা ‘ইয়ার্কির’ (e-আরকি, ব্যঙ্গবিদ্রূপভিত্তিক ওয়েবসাইট) বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, তাঁরা তো দাবি করছেন যে তাঁরা নতুন করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছেন। তো সেই কাজগুলো কি এইভাবেই হবে? পুরোনো সব হাতিয়ার ব্যবহার করে? পুরোনো সব আইন ব্যবহার করে?’
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘স্যাটায়ার, মিম ও কার্টুন: মতপ্রকাশ নাকি মর্যাদাহানি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সারা হোসেন এ কথা বলেন।
সভাটি আয়োজন করে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ‘নাগরিক কোয়ালিশন’ ও ফান ম্যাগাজিন ‘e-আরকি’। সভায় স্যাটায়ারিস্ট, কার্টুনিস্ট, সাংবাদিক, আইনজীবী, মানবাধিকারকর্মী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
বিগত সরকারের আমলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বিষয়টি টেনে সারা হোসেন বলেন, সে সময় বলা হয়েছিল যে কেউ যদি কোনোভাবে সংবিধান পরিবর্তন করার চেষ্টা করে, সেটাকেও রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে দেখা হবে। সেটার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। কথা বলার জন্য শাস্তির পাওয়ার সেই চর্চা থেকে সবাই বের হয়ে আসতে চাইছে।
সারা হোসেন বলেন, মিম ও কার্টুনের গুরুত্ব হলো তামাশার মাধ্যমে ক্ষমতাশালীদের প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়। এখনকার সময়ে এগুলো সাধারণ মানুষের সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করে। সে জন্য এসবের সামাজিক আর রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক। এগুলোর একটি স্পেস রাখা দরকার। সেই স্পেসটাকেই মামলা দিয়ে সংকীর্ণ করার চেষ্টা হচ্ছে।
অনলাইনে ‘অপপ্রচার’ ও নারী নেত্রীদের সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগে কয়েকটি ফেসবুক পেজ ও আইডির বিরুদ্ধে গত ২ ডিসেম্বর মামলা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) আবু সাদিক কায়েম। মামলা করার পর তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা সাইবার সাপোর্ট ইউনিটের সঙ্গে ফলপ্রসূ মিটিং করেছি। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার স্বরাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। একই সঙ্গে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে। আজকে আমরা এখানে লিখিতভাবে আমাদের অভিযোগগুলো দিয়েছি।’
‘স্যাটায়ার, মিম ও কার্টুন: মতপ্রকাশ নাকি মর্যাদাহানি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় অতিথি ও আলোচকেরা। আজ শনিবার সকালে, রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে