ফতুল্লার ইসদাইরে রাজ্জাক বাহিনীর সদস্যরা গত দেড় মাসের ব্যবধানে মোবারক হোসেন (৩২) ও নজরুল ওরফে বগল (২০)  নামের দুই যুবক কে অপহরণ ও গুম করেছে বলেছে জানা গেছে। পুলিশ দুই যুবকের অপহরণ ও  গুমের ঘটনায় ছোট সাজু সহ  চার  জনকে গ্রেফতার করলেও অপহৃতদের উদ্ধার করতে পারেনি। 

অপহরন ও গুমের ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় পৃথক পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে মোবারক হোসেন ও নজরুল ওরফে বগলের  পরিবার।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায় চলতি বছরের ১২ অক্টোবর  ফতুল্লার ইসদাইরস্থ ভাড়া বাসা থেকে রাত দুইটার দিকে লেগুনা নজরুল  ওরফে বগল কে ডেকে নিয়ে যায় ওয়াসিম ও তার সহোযোগিরা।

কিন্ত রাত শেষ হয়ে দিন অতিবাহিত হলেও নজরুল ওরফ বগল ফিরে আসায় পরিবারের  সদস্যরা ওয়াসিমের বাবা রাজ্জাক সহ অপর অভিযুক্তদের নিকট যায়।

সেখানে তারা নজরুল ওরফে বগলের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলে যে তাদের নিকট আছে। এ বিষয়ে বেশী কথা বললে বা আইনের আশ্রয় নিলে তাদেরকে হত্যা করার হুমকি প্রদান করে।

বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজিঁ করে না পেয়ে নজরুল ওরফে বগলের বাবা হরমুজ মুন্সি ৫ ডিসেম্বর ফতুল্লা মডেল থানায় ওয়াসিম(২০),জসিম(২৩) তাদের পিতা রাজ্জাক(৫০), ফরিদ(৪৮) ও আলী (৪৮) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জনকে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় অপহরন এবং গুমের অভিযোগ এনে একটি   মামলা দায়ের করেন।

অপরদিকে এই একই চক্রের হাতে ১৮ নভেম্বর রাত একটার দিকে  ইসদাইর নতুন বাজার মসিজদ সংলগ্ন রাস্তা থেকে মোবারক হোসেন নামের অপর এক যুবক অপহৃত হয়। এঘটনায় মোবারক হোসেনের বাবা খলিল বাদী হয়ে ঘটনার ৫ দিন পর ২৩ ডিসেম্বর ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। 

মামলায় উল্লেখ্য করা হয় ১৮ নভেম্বর রাত ১ টার দিকে চাষাড়া বালুর মাঠ থেকে বাসায় ফেরার পথে ইসদাইর নতুন বাজার মসজিদের সামনে আসা মাত্র লিটন আলীর নেতৃত্বে ৮/১০ সন্ত্রাসী মেবারক হোসেন কে অপহরন করে।

পরবর্তীতে ২৩ নভেম্বর অপহৃত যুবক মোবারকের বাবা  মোঃ খলিল বাদী হয়ে লিটন আলী, জাকির হোসেন, জসিম, বুলু ও রাজ্জাক সহ অজ্ঞাত নামা আরো ৪/৫ জনকে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরর পর লিটন আলী ওরফে সোর্স লিটন সহ তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। 

দেড় মাসের ব্যবধানে মোবারক হোসেন ও নজরুল ওরফে বগল নামের দু যুবক অপহরন ও গুমের ঘটনায় স্থানীয়বাসীর মাঝে আতংক ছড়িয়ে পরেছে।

এদিকে অপহৃত যুবক মেবারক হোসেন কে উদ্ধার সহ অভিযুক্ত আসামীদের গ্রেফতারে দাবীতে রোববার জেলা আদালত চত্ত্বরে মানব বন্ধন করেছে অপহৃতের পরিবারের সদস্য সহ স্থানীয় এলাকাবাসী।

স্থানীয় একাধিক নির্ভরযোগ্য তথ্য মতে,অপহৃত দুই যুবক মোবারক হোসেন ও নজরুল ওরফে বগল অভিযুক্ত রাজ্জাকের হয়ে কাজ করতো। হয়তো মাদক ব্যবসা নিয়ে কোন্দলের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক সার্কেল) হাসিনুজ্জামান জানান, দু যুবকের অপহরনের ঘটনায় পুলিশ প্রথমে লিটনসহ তিনজন কে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে গতকাল (শনিবার) ছোট সাজু কে পুলিশ গ্রেফতার করে। তবে অপহৃত মোবারক ও নজরুলের বিষয়ে তারা কোন সন্ধান পায়নি।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: য বক য বক ন র য়ণগঞ জ অপহরণ ও নজর ল ওরফ ম ব রক হ স ন দ ই য বক দ য় র কর র ঘটন য় ত র কর অপহ ত

এছাড়াও পড়ুন:

‘বিত্তশালী’ ভেবে অপহরণ, এরপর যা হলো

চট্টগ্রামে সড়কে গাড়ির গতিরোধ করে ‘বিত্তশালী’ ভেবে এক ব্যক্তিকে অপহরণের পর দাবি করা হয় সাড়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ। কিন্তু যাঁকে অপহরণ করা হয়েছে তাঁর দাবি, তিনি পেশায় দিনমজুর। মুক্তিপণের টাকা দিতে পারছিলেন না। বিষয়টি জানার পর অভিযানে নামে র‍্যাব।

অবশেষে র‍্যাবের অভিযানে ধরা পড়ে দুই অপহরণকারী। গতকাল বৃহস্পতিবার জেলার হাটহাজারীর নজুমিয়া হাট এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তাঁরা হলেন মো. আজম ও আবু সামা। উদ্ধার করা হয় অপহরণের শিকার দিনমজুর নাজিম উদ্দিনকে। আজ শুক্রবার বিকেলে র‌্যাব বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানায়।

র‌্যাব–৭ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) এ আর এম মোজাফফর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, অপহৃতকে অন্যত্র স্থানান্তর করার সময় একটি কারের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় ঘটনায় জড়িত দুজনকে। জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

র‌্যাব ও পুলিশ সূত্র জানায়, নোয়াখালীর সেনবাগের বাসিন্দা নাজিম উদ্দিন জীবিকার জন্য নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার মোহাম্মদনগর এলাকায় বসবাস করেন পরিবার নিয়ে। গত রোববার প্রতিদিনের মতো কাজের সন্ধানে বাসা থেকে বেরিয়ে জেলার ফটিকছড়ির মাইজভান্ডার দরবার শরিফে যান। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১২টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় শহরের বাসায় ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা হন। গাড়িতে তিনি ছাড়া আর কেউ ছিলেন না।

হাটহাজারীর সরকার হাট বাজারে পৌঁছালে গ্রেপ্তার আজম ও তাঁর সহযোগীরা গাড়ি থেকে নামিয়ে তাঁকে অপহরণ করে। এরপর সরকার হাট বাজারের পাশে একটি কক্ষে নিয়ে নির্যাতন করেন। এগুলোর ছবি নাজিমের স্ত্রীর মুঠোফোনে ইমোতে দেন। সাড়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এ ঘটনায় নাজিমের স্ত্রী নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

বিষয়টি র‌্যাব জানতে পেরে অপহরণকারীদের খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে গতকাল অপহৃতকে সরকার হাট থেকে নজুমিয়া হাট এলাকা দিয়ে অন্যত্র রাখার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় র‌্যাব হাতেনাতে ধরে ফেলে। আসামিদের হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপহৃত নাজিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘অটোরিকশা থেকে তাঁকে নামানোর সঙ্গে সঙ্গে আমি চিৎকার দিই। তখন অপহরণকারীরা গাড়িচোর বলে আমাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়। প্রথমে আমার কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আমার পেশা দিনমজুর বলা হলেও তারা বিশ্বাস করেনি। দিনমজুর বলার পর মারধরের পরিমাণও বেড়ে যায়। তারা মনে করেছিল আমি ব্যবসায়ী, টাকাওয়ালা।’

র‌্যাব জানায়, এ ঘটনায় এজাহার মিয়া নামের আরেকজন জড়িত। বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর সহযোগী হিসেবে তিনি পরিচিত। তাঁকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামে ৭ বছরের শিশুর নামে মামলা নিল পুলিশ, তিন দিনেও মেলেনি মুক্তি
  • ‘বিত্তশালী’ ভেবে অপহরণ, এরপর যা হলো