রপ্তানিতে চার শিল্পপ্রতিষ্ঠান পেল এইচএসবিসি সম্মাননা
Published: 7th, December 2025 GMT
রপ্তানি বাণিজ্য ও টেকসই উন্নয়নে অবদানের জন্য ‘এইচএসবিসি এক্সপোর্ট এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে দেশের চার শিল্পপ্রতিষ্ঠান। বহুজাতিক দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন বা এইচএসবিসি নবমবারের মতো সেরা রপ্তানিকারকের এই সম্মাননা দিয়েছে। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সম্মাননাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ব্যক্তিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
এ বছর মোট চারটি শ্রেণিতে এই চার প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেওয়া হয়। সম্মাননা পাওয়া সব প্রতিষ্ঠানকে রপ্তানি খাতে অবদানের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হয়। পোশাক খাতের জন্য এক্সপোর্ট এক্সিলেন্স পদক পেয়েছে ডিবিএল গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ফ্লামিংগো ফ্যাশনস। বছরে রপ্তানি আয় ১০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি, এমন শ্রেণিতে এই পদক দেওয়া হয়েছে। রপ্তানি আয় বছরে ৫ কোটি ডলারের বেশি, তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতের এমন সংযোগ শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে পদক পেয়েছে এনজেড টেক্স গ্রুপ।
এ ছাড়া রপ্তানি আয় বছরে এক কোটি ডলারের বেশি, উৎপাদনশীল শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উদীয়মান ও অসনাতন প্রতিষ্ঠান হিসেবে পদক পেয়েছে আকিজবশির গ্রুপের প্রতিষ্ঠান জনতা জুট মিলস ও সাদাত জুট ইন্ডাস্ট্রিজ। সেবা খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রপ্তানি খাতে উদীয়মান প্রতিষ্ঠান হিসেবে পদক পেয়েছে উল্কাসেমি প্রাইভেট লিমিটেড। এ শ্রেণিতে আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ছিল ৫০ লাখ ডলার।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ফ্লামিংগো ফ্যাশন রপ্তানিনির্ভর প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের ৫০টি দেশের প্রধান ব্র্যান্ডগুলোর কাছে পোশাক সরবরাহ করে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে ১১৮ উৎপাদন লাইন। ফ্লামিংগো ফ্যাশনের ৬০ শতাংশ কাঁচামাল স্বনির্ভর। ফ্লামিংগো বছরে ৪ কোটি ৪০ লাখ পিস পোশাক সরবরাহ করে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পানির পুনর্ব্যবহারসহ নানা টেকসই উদ্যোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।
এনজেড টেক্স গ্রুপ বৈশ্বিক পোশাক ব্র্যান্ডগুলোর জন্য উচ্চমানের সুতা এবং কাপড় সরবরাহ করে থাকে। গ্রুপটি বছরে ৫২ হাজার টন সুতা উৎপাদন করে।
আকিজবশির গ্রুপের প্রতিষ্ঠান জনতা জুট মিলস ও সাদাত জুট ইন্ডাস্ট্রিজ প্রচলিত পাটপণ্য থেকে সরে এসে উচ্চমূল্যের বৈচিত্র্যময় পণ্যের দিকে প্রসারিত হয়েছে। প্রায় ৯০টি দেশে পাটপণ্য রপ্তানি করছে প্রতিষ্ঠান দুটি।
উল্কাসেমি প্রাইভেট লিমিটেড প্রযুক্তিভিত্তিক পরিষেবানির্ভর একটি প্রতিষ্ঠান। ঢাকায় অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠান বিশ্বমানের সেমিকন্ডাক্টরের নকশা সরবরাহ করে। প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্র, চীন, তাইওয়ান ও ভারতের শীর্ষস্থানীয় গ্রাহকদের কাছে উন্নত নকশা পরিষেবা দেয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ও বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের উদ্যোক্তারা সময়ের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারেন। আমরা উদ্যোক্তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তাঁদের পাশে আছি আমরা।’
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘এ দেশের উদ্যোক্তাদের রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণে কাজ করতে হবে। আমাদের অনেক সুযোগ আছে।’
এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো.
যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, যুক্তরাজ্য দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের সাফল্যের অন্যতম বিশ্বস্ত অংশীদার—অর্থনীতি, ফ্যাশন, জ্বালানি, শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে এই অংশীদারি রয়েছে। ব্যবসা সহজীকরণে যুক্তরাজ্য বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত উদ্যাক্তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয় এখন কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। জবাবে হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভুয়া মামলা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। প্রতিদিন কিছু ব্যক্তি মামলা করছেন, সেখানে ব্যবসায়ীদের আসামি করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে বেসরকারি ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকার বলেন, নির্বাচন হলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। নির্বাচনই এখন আমাদের একমাত্র চাওয়া।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উদ য ক ত দ র য ক তর জ য এইচএসব স পদক প য় ছ অন ষ ঠ ন আম দ র র জন য ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
যৌনকর্মীদের কাছে কনডম নেই, এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি
যশোরের বাবুবাজার যৌনপল্লিতে প্রায় ১৫ বছর ধরে আছেন যৌনকর্মী আশা (ছদ্মনাম)। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কনডমের ব্যবহার সম্পর্কে তাঁর স্পষ্ট ধারণা আছে। তবে ধারণা থাকলে কী হবে, সেই সুরক্ষাসামগ্রী এখন আর বিনা পয়সায় পাচ্ছেন না তিনি। বছর দুয়েক হলো এ সমস্যা। এখন কনডমের সংকট চরমে, জানান আশা।
যৌনপল্লিতে এখন খদ্দের অনেক কম বলে জানান তিনি। এরপর শুরু হয়েছে কনডমের সংকট। আশার কথা, ‘নিজির টাকায় কনডম কিনতি হয় বাইরের দোকান থেইকে। অনেক দাম দিতি হয়। কাস্টমারের বেশির ভাগই কনডম আনে না। আর আমার ঘরে কনডম না থাকলি কাস্টমার চলি যায়। কী আর করব, খাবার জোটাই মুশকিল। এখন কনডম কিনতি খরচ বেশি।’
খদ্দেরদের কাছে যদি কনডম না থাকে তখন এটা ছাড়াই যৌনকাজ করতে হয় বলে জানান আশা।
আশার মতো দেশের লক্ষাধিক যৌনকর্মী সুরক্ষা বা কনডমের স্বল্পতায় ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন। এদিকে দেশে প্রতিবছর যৌনবাহিত রোগ এইডসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এই বাবুবাজার যৌনপল্লিতেই চলতি বছর একাধিক যৌনরোগবাহিত নারী যৌনকর্মীর সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার এক স্বাস্থ্যকর্মী।
গত সোমবার (১ ডিসেম্বর) পালিত হয়েছে বিশ্ব এইডস দিবস। চলতি বছর দিনটির প্রতিপাদ্য ছিল, ‘চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে, নতুনভাবে এইডস প্রতিরোধ গড়ে তোলা।’
নতুনভাবে এইডসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা বললেও, সুরক্ষাসামগ্রীর অভাব এই রোগের ঝুঁকিতে থাকা লক্ষাধিক যৌনকর্মীকে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। যৌনকর্মী, বিভিন্ন সংগঠন এবং বিশেষজ্ঞদের কথা, যৌনপল্লি এবং ভাসমান যৌনকর্মীদের সুরক্ষাসামগ্রী দেওয়ার কাজটি মূলত বেসরকারি সংগঠনগুলোই করত। মূলত এইচআইভি থেকে সুরক্ষায় এই কনডম দেওয়া হতো। এখন এ খাতে বিশেষত বৈদেশিক সহযোগিতা একেবারেই কমে গেছে। আর তাতে বাড়ছে এই নারীদের ঝুঁকি।
বাড়ছে এইডস রোগ
চলতি বছর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে ১ হাজার ৮৯১ জন এইডস রোগের ভাইরাস এইচআইভিতে সংক্রমিত হয়েছেন। একই সময়ে দেশে এইডসে মারা গেছেন ২১৯ জন। গতকাল বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় এইডস ও এসটিডি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানা যায়।
এ সময় আরও বলা হয়, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে এ বছর ২১৭ জন এইচআইভিতে সংক্রমিত হয়েছেন। আর দেশে এখন এইচআইভিতে সংক্রমিত ব্যক্তির মোট অনুমিত সংখ্যা ১৭ হাজার ৪৮০। বাংলাদেশে ১৯৮৯ সালে প্রথম এইচআইভি (এইডসের ভাইরাস) পজিটিভ ব্যক্তি শনাক্ত হন। এরপর প্রতিবছর এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তি পাওয়া গেছে। দু-এক বছর এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা কমে গেলেও বেড়ে যাওয়ার প্রবণতাই ছিল বেশি। গত বছর (২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের অক্টোবর পর্যন্ত) ১ হাজার ৪৩৮ জন নতুন করে সংক্রমিত হন। এ সময় এইডসে মারা যান ১৯৫ জন।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত এক বছরে আক্রান্তদের মধ্যে ৫২ শতাংশের বেশি বিবাহিত। আক্রান্তদের মধ্যে ৮১ শতাংশ পুরুষ।
দেশের সবচেয়ে বড় যৌনপল্লি রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায়। সেখানকার যৌনকর্মী মালিহা (ছদ্মনাম) দুই বছর ধরে এ পাড়ায় আছেন। এখানে আসার পর বিনা মূল্যে কনডম পেলেও এখন একেবারেই সেই সরবরাহ নেই বলে জানান তিনি।যৌন রোগ বাড়ছে
যশোরের বাবুবাজার যৌনপল্লিতে পিএসটিসি নামের একটি সংগঠন যৌনকর্মীদের স্বাস্থ্য সহায়তা দেয়। তবে তাঁদের কনডম দেওয়ার কর্মসূচি এখন আর নেই। এ সংগঠনের কর্মী সালমা খাতুন জানিয়েছেন, যৌনকর্মীদের মধ্যে কনডম বিতরণের কর্মসূচি এখন প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নানা ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এতে মেয়েরা নানা রোগ এবং গর্ভধারণের শিকার হচ্ছে।
চলতি বছর এ যৌনপল্লিতে ছয়জন নারী সিফিলিসে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানান সালমা। গর্ভধারণ ও গর্ভপাতের সংখ্যা ছয়। তিনি বলেন, ‘আগের বছর এ রকম কেস পাইনি। তবে এ বছর রোগ বাড়তিছে মেয়েদের মধ্যে।’
আগে পাড়াগুলোতে এনজিওদের কাজ ছিল। এখন তো কোনো কাজই নেই। মেয়েগুলো অসহায়। কনডম না থাকার কারণে বড় ঝুঁকি আছে।মোর্চা সেক্স ওয়ার্কার্স নেটওয়ার্কের সভাপতি নূর নাহারদেশের সবচেয়ে বড় যৌনপল্লি রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায়। সেখানকার যৌনকর্মী মালিহা (ছদ্মনাম) দুই বছর ধরে এ পাড়ায় আছেন। এখানে আসার পর বিনা মূল্যে কনডম পেলেও এখন একেবারেই সেই সরবরাহ নেই বলে জানান তিনি।
দেশের যৌনকর্মীদের সংগঠনগুলোর মোর্চা সেক্স ওয়ার্কার্স নেটওয়ার্কের হিসাব অনুযায়ী, দেশের ১১টি যৌনপল্লিতে ৪ হাজার ৫৩১ জন যৌনকর্মী আছেন। নেটওয়ার্কের সভাপতি নূর নাহার (রানু)। প্রথম আলোকে বলছিলেন, ‘আগে পাড়াগুলোতে এনজিওদের কাজ ছিল। এখন তো কোনো কাজই নেই। মেয়েগুলো অসহায়। কনডম না থাকার কারণে বড় ঝুঁকি আছে।’
ভাসমান যৌনকর্মীদের নিয়ে বড় ঝুঁকি
সেক্স ওয়ার্কার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি যৌনকর্মী আছে ভাসমান। কনডমের সরবরাহ কমে যাওয়ায় যৌনপল্লিগুলোর চেয়ে এই ভাসমান যৌনকর্মীরা অনেক বেশি ঝুঁকিতে আছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কনডম সরবরাহের হার এখন অনেক কমে গেছে। এখন হাতে গোনা কিছু প্রতিষ্ঠান সরবরাহ দেয়। আগে যেখানে মেয়েরা ১০টি কনডম পেত, সেখানে এখন বড়জোর ৩টি পায়।কল্যাণময়ী নারী সংঘের সভাপতি রীনা বেগমরাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় যৌনকাজ করেন মর্জিনা (ছদ্মনাম)। তিনি বলছিলেন, ‘এখন চেয়েচিন্তে কনডম নেওয়া লাগে। রাস্তার লোক তো কনডম রাহে না। আমাদেরই রাকতে অয়। কিন্তু আমরা কিনে কিনে কত দিন চালাব?’
ঢাকার ভাসমান যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করে কল্যাণময়ী নারী সংঘ। এ সংগঠনের সভাপতি রীনা বেগম বলছিলেন, ‘কনডম সরবরাহের হার এখন অনেক কমে গেছে। এখন হাতে গোনা কিছু প্রতিষ্ঠান সরবরাহ দেয়। আগে যেখানে মেয়েরা ১০টি কনডম পেত, সেখানে এখন বড়জোর ৩টি পায়।’
এইচআইভি থেকে সুরক্ষায় কমছে সহায়তা
জাতীয় পর্যায়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ সামগ্রিকভাবে এখনো নিম্ন বিস্তৃতির দেশ হলেও গত কয়েক বছরে নতুন সংক্রমণ বাড়ছে। ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী—যার একটি অংশ যৌনকর্মী ও তাঁদের খদ্দের—তাঁদের মধ্যে সুরক্ষাহীন যৌন সম্পর্কই সংক্রমণ বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। এইচআইভি বাড়লেও এ খাতে দেশে দাতাদের সহায়তা কমছে ব্যাপক হারে। এ চিত্র শুধু বাংলাদেশের না।
বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে ইউএনএইডসের ‘ওভারকামিং ডিসরাপশন: ট্রান্সফরমিং দ্য এইডস রেসপন্স’ নামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক স্তরে এইচআইভি খাতে সহায়তা কমে যাওয়ায় মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। জাতীয় এইডস ব্যয় মূল্যায়ন সম্পন্ন করা আটটি দেশের (বাংলাদেশ, বেলিজ, বেনিন, কোত দিভোয়ার, মোজাম্বিক, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, পাপুয়া নিউগিনি) তথ্য বলছে—বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন এ খাতে ৯৯ শতাংশ অর্থসহায়তা পায় দাতাদের কাছে থেকে। দেশের নিজস্ব উৎস থেকে পাওয়া সহায়তা মোট ব্যয়ের শূন্য দশমিক ১ শতাংশেরও কম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক জুবাইদা নাসরিন বলেন, ‘যৌনপল্লিগুলোতে কনডম সরবরাহ কমে গেছে, তা জানি। এর মূল কারণ ইউএসএইডসহ দাতারা এ খাতে যে অর্থ দিতেন তা কমে গেছে। আমরা কিছু দাতা সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি এ খাতে এগিয়ে আসতে।’
সরকারের পক্ষ থেকে কনডম বা লুব্রিকেন্টের যে সরবরাহ তাতে ঘাটতি নেই। যৌনপল্লি বা ভাসমানদের মধ্যে কনডমের সংকটের কথাটা শুনলাম।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এইচআইভি/এসটিডি) মো. খায়রুজ্জমানস্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়, দেশের ৩১টি ড্রপ-ইন সেন্টার থেকে নিয়মিত কনডমসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা হয়। তারা যৌনপল্লিতে সরবরাহের কাজ করে না। এটা কখনোই করা হতো না বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এইচআইভি/এসটিডি) মো. খায়রুজ্জমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে কনডম বা লুব্রিকেন্টের যে সরবরাহ তাতে ঘাটতি নেই। যৌনপল্লি বা ভাসমানদের মধ্যে কনডমের সংকটের কথাটা শুনলাম।
এইচআইভি ও এইডস প্রতিরোধে বৈশ্বিক সহায়তা কমে যাওয়ার কারণেই যৌনকর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি অনেক বেশি উপক্ষিত এখন। এ ক্ষেত্রে সরকারের মনোযোগী হওয়াটা দরকার বলে মনে করেন গবেষক ডি এম অহিদুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এইচআইভি–সংক্রান্ত কাজে গুরুত্ব ও অর্থায়ন নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। তরুণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন সংক্রমণ বাড়ায় বাংলাদেশকে তার প্রতিরোধ ও চিকিৎসা কৌশল পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে।