আপাতত ঢাকায় রেখে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলবে
Published: 9th, December 2025 GMT
উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত তাঁর শারীরিক অবস্থা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়ার উপযুক্ত নয়। বিশেষ করে খালেদা জিয়ার হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা বেশ জটিল পর্যায়ে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুসসহ অন্য সমস্যাগুলো অপরিবর্তিত রয়েছে। তাঁকে ঢাকায় রেখেই চিকিৎসা করা হবে। প্রতিদিনই তাঁর ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে গতকাল সোমবার খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার বিষয়ে বিএনপি ও খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে নতুন কোনো উদ্যোগের কথা জানা যায়নি। কাতার আমিরের পক্ষ থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর যে প্রক্রিয়া চলছিল, সেটি স্থগিত রাখা হয়েছে।
এদিকে খালেদা জিয়াকে দেখতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান প্রতিদিনই রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে যাওয়া-আসা করছেন। গতকাল বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তিনি হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসার তদারকি করেন।
বিশেষ করে খালেদা জিয়ার হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা বেশ জটিল পর্যায়ে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুসসহ অন্য সমস্যাগুলো অপরিবর্তিত রয়েছে। তাঁকে ঢাকায় রেখেই চিকিৎসা করা হবে। প্রতিদিনই তাঁর ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছে।বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) চিকিৎসার মেডিকেল বোর্ডের সদস্য হিসেবে ডা.
চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করা হয়েছে, সেটি এখনই আসছে না। গতকাল পর্যন্ত বিএনপির পক্ষ থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় আসার জন্য বলা হয়নি। কারণ, খালেদা জিয়া লন্ডনে যেতে পারবেন কি না, সেটি পুরোই নির্ভর করছে তাঁর শারীরিক অবস্থা এবং মেডিকেল বোর্ডের সম্মতির ওপর।
ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) চিকিৎসার মেডিকেল বোর্ডের সদস্য হিসেবে ডা. জুবাইদা রহমান চিকিৎসক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ম্যাডামের চিকিৎসার দেখভাল করছেন।বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও চিকিৎসক রফিকুল ইসলামখালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার জন্য কাতার আমিরের পক্ষ থেকে জার্মানভিত্তিক এয়ারলাইনস এফএআই এভিয়েশন গ্রুপ একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে। নিয়ম অনুযায়ী এফএআই এভিয়েশন গত শনিবার ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ ও উড্ডয়নের জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতির জন্য আবেদন করে। সে অনুযায়ী, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি বিমানবন্দরে নামার অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু এ সূচির পরিবর্তন হয়েছে।
আরও পড়ুন‘ভিভিআইপি’ হিসেবে কী কী সুবিধা পাবেন খালেদা জিয়া, কাদের ঘোষণা করা হয়?০৩ ডিসেম্বর ২০২৫বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সূত্র জানায়, গত শনিবার এফএআই এভিয়েশন গ্রুপ যে আবেদন করেছিল, তাতে মঙ্গলবার ঢাকায় অবতরণ এবং পরদিন বুধবার লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ার সূচি চাওয়া হয়েছিল।
চিকিৎসকেরা এখনো খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থাকে ‘গুরুতর’ হিসেবে বিবেচনা করছেন। তাঁদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, আগামী কয়েকটি দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিডনি কার্যক্ষমতায় স্থিতিশীলতা ছাড়া তাঁর সামগ্রিক শারীরিক অবস্থায় স্থায়ী উন্নতি আসা কঠিন।৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গত ২৩ নভেম্বর দ্রুত তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। মেডিকেল বোর্ডের দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা চলছে।
আরও পড়ুনখালেদা জিয়া ‘ফ্লাই’ করতে পারবেন কি না, সে সিদ্ধান্ত চিকিৎসকদের: মির্জা ফখরুল০৫ ডিসেম্বর ২০২৫চিকিৎসকেরা এখনো খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থাকে ‘গুরুতর’ হিসেবে বিবেচনা করছেন। তাঁদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, আগামী কয়েকটি দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিডনি কার্যক্ষমতায় স্থিতিশীলতা ছাড়া তাঁর সামগ্রিক শারীরিক অবস্থায় স্থায়ী উন্নতি আসা কঠিন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ র র ক অবস থ চ ক ৎসক র ব এনপ র র জন য রহম ন করছ ন গতক ল সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসছে আগামীকাল সকালে
চিকিৎসার জন্য বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করা হয়েছে, সেটি আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার অনুমতি পেয়েছে। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস এম রাগীব সামাদ আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান।
এস এম রাগীব সামাদ বলেন, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি জার্মানভিত্তিক এয়ারলাইনস এফএআই এভিয়েশন গ্রুপের। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আগামীকাল সকাল ৮টা ২০ মিনিটে শাহজালাল বিমানবন্দরে নামবে। সেটি চাইলে সেদিন রাত ৯টায় ঢাকা ত্যাগ করতে পারবে।
এদিকে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সূত্র জানায়, গত শনিবার এফএআই এভিয়েশন গ্রুপ যে আবেদন করেছিল, তাতে মঙ্গলবার ঢাকায় অবতরণ এবং পরদিন বুধবার লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ার সূচি চাওয়া হয়েছিল।
তবে খালেদা জিয়া লন্ডনে যেতে পারবেন কি না, সেটি পুরোই নির্ভর করছে তাঁর শারীরিক অবস্থার ওপর। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জে এম জাহিদ হোসেনও গত শনিবার জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতির ওপরই নির্ভর করছে তাঁর বাইরে যাওয়া।
দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও বিদেশযাত্রা-সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে জড়িত একটি সূত্র গতকাল রোববার রাতে বলেছে, চিকিৎসকেরা খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে বিদেশ পাঠানোর সময় আরও দুই দিন পিছিয়েছেন। দীর্ঘ যাত্রার ঝুঁকি বিবেচনায় নেওয়া এই সিদ্ধান্ত এখন পুরোপুরি নির্ভর করছে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় তাঁর শারীরিক অবস্থার পরিবর্তনের ওপর। সূত্রের মতে, গতকাল রাত পর্যন্ত প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী তাঁর অবস্থায় নতুন কোনো উন্নতি বা অবনতি—কোনোটিই লক্ষণীয় নয়; সবকিছু অনেকটা অপরিবর্তিত রয়েছে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, তাঁর ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুসের সমস্যা কিছু সময় নিয়ন্ত্রণে থাকলেও হঠাৎ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এ কারণে তাঁর সার্বিক অবস্থা স্থিতিশীল বলা যাচ্ছে না। সর্বশেষ পরীক্ষায় কিডনি ও ফুসফুসের অবস্থার কিছুটা অগ্রগতি দেখা গেছে। তবে এসব উন্নতি সামগ্রিক ঝুঁকি কমাতে যথেষ্ট নয়; তিনি এখনো আশঙ্কামুক্ত নন বলেই চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
এই অনিশ্চিত অবস্থার কারণে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর সম্ভাব্য তারিখ বারবার পরিবর্তিত হচ্ছে। শুরুতে বিএনপি জানিয়েছিল, খালেদা জিয়াকে শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) ভোরে লন্ডনে নেওয়া হবে। পরে শুক্রবার সকালে নতুন তারিখ দেওয়া হয় ৭ ডিসেম্বর। রাতে আবার জানানো হয়, সম্ভাব্য যাত্রার তারিখ পিছিয়ে ৯ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।