ইসলামী জলসায় অংশ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সিরাজগঞ্জ-১ (কাজীপুর ও সদরের একাংশ) আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত এমপি প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা শাহীনুর আলমের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সেলিম রেজার উপরে।

হামলার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা জামায়াতের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা জামায়াত অফিসে শেষ হয়। এসময় হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানায় তারা।

এর আগে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে কাজীপুর উপজেলার সোনামুখী বাজার এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানায়, সোনামুখী বাজার এলাকায় একটি ইসলামী জলসায় অংশ নেন মাওলানা শাহীনুর আলম ও তার সমর্থকরা। এই জলসা থেকে রাত সাড়ে ১১টার দিকে জামায়াতের এমপি প্রার্থী বাড়ি ফেরার পথে সোনামুখী বাজার এলাকায় পৌঁছালে তার গাড়িবহরে বিএনপির লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। 

এসময় সন্ত্রাসীদের হাত থেকে মাওলানা শাহীনুর আলমকে বাঁচাতে গিয়ে জামায়াতের অন্তত ১০-১২ জন নেতাকর্মী আহত হন। পরে সোনামুখী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি নজরুল ইসলাম, কর্মী ওমর ফারুক ও আব্দুল আওয়ালকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন বলেন, “বিএনপি মনোনীত এমপি প্রার্থী সেলিম রেজার নেতৃত্বে জামায়াতের প্রার্থীর উপরে তিন দফায় হামলার ঘটনা ঘটে। এতে তিনজন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এ ঘটনায় তারা মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।”

হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সেলিম রেজা বলেন, “বিএনপির কেউ জামায়াতের প্রার্থী ও তার লোকজনের ওপর হামলা করেনি। এটি মিথ্যা গুজব ছড়ানো হচ্ছে।”

কাজীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েতুর রহমান বলেন, “জামায়াতের প্রার্থীর ওপর হামলার কথাটি সত্য নয়, মূলত জামায়াত ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। তবে এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি।”

ঢাকা/অদিত্য/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র মন ন ত ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে পিএন কম্পোজিট কারখানা বন্ধের নোটিশ, শ্রমিকদের বিক্ষোভ

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থানাধীন আমবাগ এলাকায় পিএন কম্পোজিট নামে একটি পোশাক তৈরি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নোটিশে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে কারখানার প্রধান ফটকে জড়ো হয়ে কারখানা খুলে দেওয়া এবং তাদের কিছু দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে শ্রমিকরা। 

কারখানার শ্রমিক ও শিল্পপুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই এলাকার পিএন কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার এক শ্রমিক গত ৭ ডিসেম্বর জরুরি কাজে কারখানা থেকে বের হয়ে বাইরে যান। যখন তিনি কাজ শেষ করে ফিরে আসেন, তখন কারখানার কিছু কর্মকর্তা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। 

ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরদিন সোমবার (৮ ডিসেম্বর) শ্রমিকরা কয়েকজন কর্মকর্তার প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। সারাদিন শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ। বিকেল বেলা শ্রমিকরা চলে গেলে কর্তৃপক্ষ রাতেই সিদ্ধান্ত নিয়ে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে। বন্ধের নোটিশ কারখানার প্রধান ফটকে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়।

নোটিশে লেখা রয়েছে, এতদ্বারা পিএন কম্পোজিট লি. এর সংশিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, ৭ ডিসেম্বর হতে কারখানার শ্রমিকগণ কিছু অযৌক্তিক দাবি উত্থাপন করে, অবৈধভাবে কারখানাতে সংঘবদ্ধ হয়ে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ করে। চরম বিশৃঙ্খলা ও অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করে এবং অবৈধ ধর্মঘটে লিপ্ত হয়, যা অদ্যবধি চলমান। 

যার ফলশ্রুতিতে কারখানার অভ্যন্তরে আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটে। এছাড়াও কারখানার নির্ধারিত রপ্তানী কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার কারণে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

নোটিশে আরো লেখা রয়েছে, কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের আহ্বান জানায় যে, যেকোন প্রকার দাবি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব এবং সকলকে উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু শ্রমিকগণ কাজে যোগদান হতে বিরত থাকে, ফলে কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। শ্রমিকদের এই আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী বে-আইনী ধর্মঘট হিসেবে গণ্য হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কারখানার কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। 

এমতাবস্থায় কারখানা কর্তৃপক্ষ অত্র কারখানার শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেও সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩ (১) ধারা মোতাবেক মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরবর্তীতে কারখানা চালু করার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে খোলার তারিখ নোটিশের মাধ্যমে অবহিত করা হবে।

এদিকে, মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে গিয়ে জানতে পারেন কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। খবর পেয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশ ও কোনাবাড়ি থানা পুলিশ শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন।

এ ব্যাপারে কথা বলতে কারখানার কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে দেওয়া একাধিক নম্বরে যোগাযোগ করা হলেও কারো সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। 

কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জালাল উদ্দিন মাহমুদ জানান, শ্রমিক এবং কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি কীভাবে সমাধান করা যায় সেই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

ঢাকা/রেজাউল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ