নিজেদের ভূখণ্ড থেকে কম্বোডিয়ার বাহিনীকে সরিয়ে দিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে থাইল্যান্ড
Published: 9th, December 2025 GMT
থাইল্যান্ড বলেছে, নিজেদের ভূখণ্ড থেকে কম্বোডীয় বাহিনীকে সরিয়ে দিতে তারা আজ মঙ্গলবার পদক্ষেপ নিচ্ছে। থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার বিরোধপূর্ণ সীমান্ত অঞ্চলজুড়ে নতুন করে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার পর এমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
প্রত্যেক পক্ষই সংঘর্ষের জন্য একে অপরকে দায়ী করছে। এ সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যকার অস্ত্রবিরতি ভেঙে গেছে। গত জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া অস্ত্রবিরতি চুক্তি সে সময় দুদেশের মধ্যকার পাঁচ দিনের লড়াইয়ের অবসান ঘটিয়েছিল।
আজ কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, রাতভর সংঘর্ষে তাদের আরও দুই বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এতে নতুন সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে কম্বোডিয়ায় নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ৬–এ দাঁড়িয়েছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক থাই সেনাও নিহত হয়েছেন।
এদিকে আজ সকালে এক বিবৃতিতে থাইল্যান্ডের নৌবাহিনী বলেছে, থাই উপকূলীয় প্রদেশ ত্রাতের ভেতর কম্বোডীয় বাহিনীর উপস্থিতি দেখা গেছে। তাদের সরিয়ে দিতে সামরিক অভিযান শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে আর কোনো বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়নি।
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত গতকাল সোমবার রাতে বলেন, ‘থাইল্যান্ড যেন নিজেদের সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধারের অজুহাতে বেসামরিক গ্রামগুলোর ওপর সামরিক শক্তি প্রয়োগ না করে।’
এর আগে কম্বোডিয়া বলেছিল, তাদের নিজেদের বাহিনী টানা হামলার শিকার হলেও পাল্টা হামলা চালায়নি।
থাইল্যান্ডের নৌবাহিনী বলেছে, কম্বোডীয় বাহিনী সীমান্ত এলাকায় তাদের উপস্থিতি বাড়াচ্ছে, স্নাইপার ও ভারী অস্ত্র মোতায়েন করছে, বাংকার শক্তিশালী করছে এবং নতুন পরিখা খনন করছে। নৌবাহিনী বলেছে, এ কর্মকাণ্ডগুলো তারা থাইল্যান্ডের সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি ও গুরুতর হুমকি হিসেবে দেখছে।
আরও পড়ুনশত বছরের বৈরিতা অবসানে ট্রাম্পের উপস্থিতিতে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া শান্তিচুক্তি সই২৬ অক্টোবর ২০২৫গত জুলাইয়ে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে টানা পাঁচ দিন ধরে সংঘর্ষ চলে। দুই দেশই একে অপরকে লক্ষ্য করে রকেট হামলা ও ভারী গোলাবর্ষণ করে। ওই সংঘাতে কমপক্ষে ৪৮ জন নিহত এবং ৩ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হন। পরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে অস্ত্রবিরতি হয়। গতকাল হওয়া সংঘর্ষের মাত্রা ছিল জুলাই সংঘর্ষের পর সবচেয়ে তীব্র।
ইতিমধ্যে, থাইল্যান্ড তাদের সীমান্তবর্তী পাঁচটি প্রদেশ থেকে ৪ লাখ ৩৮ হাজার বেসামরিক মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে। কম্বোডিয়া কর্তৃপক্ষও বলেছে, লক্ষাধিক মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনথাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘাতে বাস্তুচ্যুত ১ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ২৬ জুলাই ২০২৫থাই সেনাবাহিনী বলেছে, তাদের ১৮ সেনা আহত হয়েছেন আর কম্বোডীয় সরকার বলেছে, দেশটির ৯ বেসামরিক লোক আহত হয়েছেন।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ৮১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ স্থলসীমান্ত রয়েছে। এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে তাদের মধ্যে সীমানার অনির্ধারিত অংশগুলোর সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিরোধ চলছে।
গত মে মাসে সংঘর্ষে এক কম্বোডীয় সেনা নিহত হওয়ার পর দুই দেশের উত্তেজনা বেড়ে যায়। এ ঘটনার পর সীমান্তে ব্যাপক সেনা মোতায়েন করা হয়। এতে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কম ব ড য় র স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন করে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তে সংঘর্ষ
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের তালেবান বাহিনীর মধ্যে আবারো সীমান্তে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। উভয় পক্ষই একে অপরকে ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করছে। শনিবার বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
আফগানিস্তানের স্পিন বোলদাক শহর থেকে শুক্রবার রাতে বাসিন্দারা পালিয়ে যান। এই এলাকাটি দুই দেশের সীমান্তের ২ হাজার৬০০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত।
কান্দাহার শহরের একজন চিকিৎসা কর্মী বিবিসি পশতুকে জানিয়েছেন, স্থানীয় হাসপাতালে চারটি মৃতদেহ আনা হয়েছে। আরো চারজন আহত হয়েছেন। পাকিস্তানে তিনজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুই দেশের মধ্যে বিক্ষিপ্ত লড়াই চলছে। অন্যদিকে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারও পাকিস্তানকে দেশের অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালানোর জন্য অভিযুক্ত করেছে।
উভয় পক্ষই জানিয়েছে, তারা শুক্রবার রাতভর গুলি বিনিময় করেছে। চার ঘন্টা ধরে চলা এই যুদ্ধের জন্য তারা একে অপরকে দায়ী করেছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের মুখপাত্র মোশাররফ জাইদি তালেবানদের ‘বিনা উস্কানিতে গুলি চালানোর’ জন্য অভিযুক্ত করেছেন।
জাইদি বিবৃতিতে বলেছেন, “আমাদের সশস্ত্র বাহিনী তাৎক্ষণিক, উপযুক্ত এবং তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। পাকিস্তান তার আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ সতর্ক ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
এদিকে, একজন তালেবান মুখপাত্র বলেছেন, পাকিস্তান ‘আবারো আক্রমণ শুরু করেছে।’ এ কারণে তারা ‘প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হয়েছে।’
সীমান্তের আফগান দিকের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে গুলি বিনিময় শুরু হয়।
এলাকা থেকে প্রাপ্ত ফুটেজে দেখা গেছে, বিপুল সংখ্যক আফগান পায়ে হেঁটে এবং যানবাহনে পালিয়ে যাচ্ছে।
কান্দাহারের তথ্য বিভাগের প্রধান আলী মোহাম্মদ হকমাল জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বাহিনী ‘হালকা ও ভারী কামান’ দিয়ে আক্রমণ করেছে এবং বেসামরিক বাড়িঘর মর্টার হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ঢাকা/শাহেদ