ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুরে উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া একাধিক গণমাধ্যম কর্মীর ওপর হামলা ও ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার আলমনগরে সেটেলমেন্ট কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্তরা হলেন- পেশকার মো.

শফিক, উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম ও সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার সোহেল আহমেদ।

লিখিত অভিযোগে দেশ টিভির ক্যামেরা পার্সন মো. জাহিদুল ইসলাম খান জানান, সেটেলমেন্ট অফিসে দালাল সিন্ডিকেট, ঘোষ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে যান তিনি ও অন্য গণমাধ্যমকর্মীরা। ঠিক সেই সময় অফিসে কর্মরত দুই কর্মকর্তাসহ একদল দালাল ও অজ্ঞাত ১৫-২০ জন আকস্মিকভাবে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।

এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যায়, দেশ টিভির সাংবাদিক ওই পেশকারের কাছে বক্তব্য চাইলে একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি তার কাঠের চেয়ার ওই সাংবাদিকের দিকে ছুঁড়ে মারতে উদ্যত হন। আশপাশের লোকজন তাকে নিবৃত্ত করেন। পরবর্তীতে ওই সাংবাদিক কার্যালয়ের বাইরে এলে সেখানেও তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন অপর এক কর্মকর্তা।

জাহিদুল বলেন, “হামলাকারীরা দলবদ্ধভাবে সাংবাদিকদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং ভাঙচুরেরও চেষ্টা চালায়। দুর্নীতির বিষয়ে প্রশ্ন করায় হামলাকারীরা ‘মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া’ ও ‘চাকরি খাওয়ার’ও হুমকি দেয় বলেও দাবি করেন তিনি।”

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরমান আলী বলেন, “সাংবাদিকের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বসহ দেখে পরবর্তী প্রক্রিয়া নেওয়া হবে।”

এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বক্তব্য পেতে ফোন করলেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে টেলিভিশন রিপোর্টার্স ক্লাব (টিআরসি)। অবিলম্বে পেশকার সাইফুল ও পেশকার শফিকসহ সংশ্লিষ্ট সকল হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও আইনগত ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।

ঢাকা/সাব্বির/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

জাপানের হামলার সময় যুক্তরাষ্ট্র কি ইচ্ছা করেই পার্ল হারবার অরক্ষিত রেখেছিল

১৯৪১ সালের ৭ ডিসেম্বর। দিনটি ছিল রোববার। সকাল ৭টা ৫৫ মিনিট। সবাই ছুটির মেজাজে। কেউ কেউ তখন ধর্মীয় প্রার্থনায় যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এর মধ্যেই একের পর এক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল ওয়াহু দ্বীপের পার্ল হারবার। উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের এই পার্ল হারবারে ছিল ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় নৌঘাঁটি।

পার্ল হারবারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরের যুদ্ধজাহাজের সারি লক্ষ্য করে যুদ্ধবিমান থেকে একের পর টর্পেডো ছোড়া হচ্ছিল জাপানি যুদ্ধবিমান থেকে। সেই সঙ্গে চলে প্রচণ্ড বোমা হামলা ও মেশিনগান থেকে গুলিবর্ষণ। হামলা চালানো হয় সেখানকার বিমানঘাঁটিতেও।

দুই ধাপে এ হামলায় অংশ নেয় জাপানের ৩৫৩টি যুদ্ধবিমান। দুই ঘণ্টার মধ্যেই পাঁচটি যুদ্ধজাহাজ ডুবে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরও ১৬টি। ধ্বংস হয়ে যায় মার্কিন বাহিনীর ১৮৮টি যুদ্ধবিমান। জাপানের এই হামলায় নিহত হন ২ হাজার ৪০০ জন সামরিক ও বেসামরিক নাগরিক। আহত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল প্রায় ১ হাজার ২০০।

অতর্কিত আক্রমণে নৌঘাঁটির সদস্যরা হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিলেন। পাল্টা আক্রমণ করা দূরের কথা, আক্রমণ প্রতিহত করাই তাঁদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছিল। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই মার্কিন বাহিনী আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টা করে। সকাল ১০টার মধ্যে জাপানি বাহিনী আক্রমণ শেষ করে জাহাজে ফিরে যাওয়ার আগেই মার্কিন বাহিনী তাদের ২৯টি বিমান ও পাঁচটি ছোট ডুবোজাহাজ ধ্বংস করতে সক্ষম হয়। মার্কিন পাল্টা হামলায় নিহত হন ৬৪ জাপানি সেনা।

আসলেই কি সেদিন যুক্তরাষ্ট্র হামলা ঠেকাতে এতটাই অপ্রস্তুত ছিল? নাকি এর পেছনে লুকিয়ে আছে অন্য কিছু। এ নিয়ে রয়েছে ইতিহাসবিদদের নানা মত ও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব। যেমন, হামলার সময় যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিমানবাহী রণতরির একটিও সেদিন পার্ল হারবারে ছিল না। সেগুলো অন্যত্র মোতায়েন ছিল। সাধারণত এই রণতরিগুলো পার্ল হারবারে থাকত। পরবর্তী সময়ে জাপানি বাহিনীকে এসব রণতরি দিয়েই কাবু করেছিল মার্কিন বাহিনী।

এ ছাড়া পার্ল হারবারে হামলায় জাপানের প্রস্তুতির বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনকে আগেই সতর্ক করেছিল জাপানস্থ দেশটির দূতাবাস। ছিল গোয়েন্দাদের সতর্কবার্তাও। কেন মার্কিন প্রশাসন তা উপেক্ষা করেছিল। তাহলে এর পেছনে কি ছিল অন্য কোনো হিসাব–নিকাশ।

উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের পার্ল হারবারে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় নৌঘাঁটি। ঘাঁটিটি বানানো হয় ১৯০৮ সালে। এরপর ১৯৪০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান নৌঘাঁটি ক্যালিফোর্নিয়া থেকে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের পার্ল হারবারে স্থানান্তর করা হয়। কৌশলগত দিক দিয়ে এই ঘাঁটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সামরিক এলাকা। যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় দুই হাজার মাইল ও জাপান থেকে প্রায় চার হাজার মাইলে দূরে অবস্থিত ছিল এই নৌঘাঁটি।ক্ষেত্র প্রস্তুত হচ্ছিল অনেক দিন ধরেই

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগেই জাপান আগ্রাসী হয়ে উঠেছিল। চীনের সঙ্গে পরপর দুটি যুদ্ধজয়ের পর রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধজয়ে জাপান আরও বেশি আগ্রাসী হয়ে ওঠে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ–পরবর্তী অর্থনৈতিক মন্দা থেকে বাঁচতে জাপান আধিপত্যবাদী নীতি নেয়। এরই অংশ হিসেবে ১৯৩১ সালে চীনের মাঞ্চুরিয়া আক্রমণের মধ্য দিয়ে জাপান তাদের আধিপত্য বিস্তার শুরু করে।

জাপানের এই আক্রমণাত্মক মনোভাব যুক্তরাষ্ট্র ভালোভাবে নেয়নি। ১৯৪১ সালের জুলাই মাসে ফরাসি ইন্দোচীন দখল করার সময় জাপান জানত যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পূর্ণ মাত্রার আক্রমণ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাঁদের যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটাতে পারে।

আগ্রাসী আচরণের বিষয়ে জাপানকে সতর্ক করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এতে ফল না আসায় ১৯৪০ সালে যুক্তরাষ্ট্র জাপানের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেয়। লৌহ আকরিক, স্ক্র্যাপ লোহা ও ইস্পাত রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হয়। আশা ছিল, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা চীন ও ইন্দোচীনে জাপানের সাম্রাজ্যবাদী অগ্রযাত্রা থামাতে পারে। তবে এতে কোনো কাজ হয়নি।

১৯৪১ সালের জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্র জাপানের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করে দেয় এবং যুক্তরাষ্ট্রে থাকা জাপানের সব সম্পদ জব্দ করে। গ্রেট ব্রিটেন, চীন ও নেদারল্যান্ডস জাপানে তেল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগ দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরের যুদ্ধজাহাজের সারি লক্ষ্য করে হামলা শুরু হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভোট দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রবল, এটা সত্য 
  • পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম করা হয়
  • ফতুল্লায় মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেয়ায় ছেলেকে তুলে নিয়ে ছুরিকাঘাত
  • যেই কারণে মনির হোসেন কাসেমীকে শোকজ
  • ঠিক ঠিক টিক দাও
  • জামায়াত ধর্মকে ব্যবহার করে বিভা সহিংসতার রাজনীতি উসকে দিচ্ছে: এনসিপি
  • জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ভবন সংস্কারের সুপারিশ মূল্যায়ন কমিটির
  • জাপানের হামলার সময় যুক্তরাষ্ট্র কি ইচ্ছা করেই পার্ল হারবার অরক্ষিত রেখেছিল
  • গাজা যুদ্ধবিরতি ‘জটিল’ পর্যায়ে রয়েছে: কাতার