কক্সবাজার-৪ (উখিয়া–টেকনাফ) আসনকে ঘিরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের উত্তাপ এখন তুঙ্গে। মিয়ানমার সীমান্তঘেঁষা ও সাগর উপকূলের এ গুরুত্বপূর্ণ আসনে এবার মুখোমুখি হচ্ছেন দেশের দুই প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের স্থানীয় শীর্ষ দুই নেতা। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির এবং বিএনপির জেলা সভাপতি। ফলে নির্বাচনকে ঘিরে তৈরি হয়েছে ‘হাইভোল্টেজ’ পরিস্থিতি।

এ আসনে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক পালাবদলের অনন্য ইতিহাস রয়েছে। অতীতে যে দলের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন, কেন্দ্রীয় ক্ষমতাও গেছে তাদের হাতেই। উখিয়া–টেকনাফের এই সংবেদনশীল আসনে ১৯৭৯ সাল থেকে বিএনপির হয়ে নির্বাচন করছেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী। এবারও তিনি দলটির ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থী। তবে তার মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে মাঠে সোচ্চার রয়েছেন জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল্লাহর নেতৃত্বাধীন আরেকটি অংশ।

অন্যদিকে, জামায়াত এবার আরো শক্ত অবস্থানে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামছে। দলটির জেলা আমির নূর আহমদ আনোয়ারীকে এ আসনে প্রার্থী করা হচ্ছে। তিনি টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চারবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। স্থানীয়ভাবে তার জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক প্রভাবের কারণে জামায়াত এবার আসনটি দখলে নেওয়ার ব্যাপারে বেশ আত্মবিশ্বাসী।

স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনের বিশ্লেষকদের মতে, রোহিঙ্গা ইস্যু, সীমান্ত নিরাপত্তা, মানবপাচার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ এসব প্রশ্নে ভোটারদের অবস্থান এবারের নির্বাচনে বড় ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের রায়ই লড়াইয়ের ফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

এরইমধ্যে মাঠ পর্যায়ে বিএনপি ও জামায়াতের সমর্থকরা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে সরব হয়ে উঠেছেন। দুই দলের নেতারাই নিজেদের বিজয় নিয়ে আশাবাদী।

বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘‘চারটি আসনের মধ্যে তিনটিতে দলীয় প্রার্থী নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রার্থীসহ নেতা-কর্মীরা মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। আশা করি, অতীতের মতো এবারও ভোটাররা বিএনপিকেই বেছে নেবেন।’’

জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির নূর আহমদ আনোয়ারী বলেন, ‘‘নতুন বাংলাদেশ গড়তে আমাদের মূল অঙ্গীকার হবে গণমানুষের প্রত্যাশা পূরণ, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন এবং জবাবদিহিমূলক নেতৃত্ব নিশ্চিত করা। আমি নির্বাচনে জয়ী হয়ে এলাকার নিরাপত্তা জোরদার, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি এবং মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করার সুযোগ চাই।’’

সব মিলিয়ে কক্সবাজার-৪ আসনে এবার দুই শীর্ষ নেতার মুখোমুখি লড়াইকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে নজিরবিহীন উত্তাপ। নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই তীব্র হচ্ছে উখিয়া–টেকনাফের রাজনৈতিক হালচাল।

কক্সবাজার-৪ (উখিয়া–টেকনাফ) আসনে মোট ১১১টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। ভোটার রয়েছেন ৩৭ লাখ ৩ হাজার ১৩০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৯ লাখ ১২ হাজার ১০ জন, নারী ভোটার ১৮ লাখ ১৯ হাজার ১৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ৫ জন।

ঢাকা/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত ক ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে পাওনা টাকা নিয়ে তরুণকে অপহরণের পর হত্যা, আরও একজন গ্রেপ্তার

সিলেটের কানাইঘাটে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে সাইফুল ইসলামকে (২০) অপহরণের পর খুনের ঘটনায় প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার ঝাউচর মেঘনাঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে গত ৩০ নভেম্বর বিকেলে সাইফুল ইসলামকে অপহরণের পর কানাইঘাটের লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের রাতাছড়া গ্রামে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ছলু মিয়া ২ ডিসেম্বর কানাইঘাট থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা দু-একজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। গ্রেপ্তার তরুণের নাম শাকিল আহমদ (২২)। তাঁর বাড়িও রাতাছড়া গ্রামে। ওই ঘটনায় এর আগে শাকিলের বাবাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, নিহত সাইফুল ও শাকিলের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি দুজনের মধ্যে দুই লাখ টাকা দেনা-পাওনা নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। ঘটনার দিন শাকিল সাইফুলের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে নিয়ে দনা বাজারে যান। সন্ধ্যায় সাইফুলের ভাই সুফিয়ান আহমদ দনা বাজার থেকে বাবাকে ফোন দিয়ে জানান, শাকিল মোটরসাইকেলে করে সাইফুলকে তাঁদের বাড়ির দিকে নিয়ে গেছে। পরে বাড়িতে সাইফুলকে বেঁধে মারধর করা হয় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুকে আঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে বাড়ির পূর্ব পাশের জঙ্গলে হাত-পা বেঁধে ফেলে রেখে যায় হামলাকারীরা।

আরও পড়ুনসিলেটে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে অপহরণ, পরে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ০১ ডিসেম্বর ২০২৫

পরে সাইফুলকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর অভিযুক্ত শাকিলের বাবা এবং আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এবার প্রধান অভিযুক্ত শাকিলকে গ্রেপ্তার করা হলো।

র‍্যাব-৯-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) কে এম শহিদুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া শাকিলকে সিলেটের কানাইঘাট থানায় হস্তান্তরের পর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এনইআইআর চালুতে ‘আপস করবে না’ সরকার, কমতে পারে আমদানি শুল্ক
  • বায়ুদূষণ রোধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি
  • সিলেটে পাওনা টাকা নিয়ে তরুণকে অপহরণের পর হত্যা, আরও একজন গ্রেপ্তার
  • ধর্মের নামে ট্যাবলেট বিক্রি করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণার পরিকল্পনা চলছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • বিএনপির মনোনীত নেতারা প্রচারে, পিছিয়ে নেই জামায়াত
  • শেখ হাসিনা দেশে বাকশাল কায়েম করেছিলেন: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত