পার্থে অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে বাঁ হাঁটুতে চোট পান ইংল্যান্ডের পেসার মার্ক উড। ব্রিসবেনে দ্বিতীয় টেস্টে তিনি খেলেননি। এবার জানা গেল, হাঁটুর সেই চোট পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠায় অ্যাশেজের বাকি তিন টেস্ট থেকেই ছিটকে গেছেন উড। ২০২২ সালে একটি টেস্ট খেলা ২৮ বছর বয়সী পেসার ম্যাথু ফিশারকে তাঁর বদলি হিসেবে দলে টেনেছে ইংল্যান্ড।

২০২২ সালে ব্রিজটাউনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকে ১ উইকেট পান ৬ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার পেসার ফিশার। তাঁর বলের ‘রিলিজ পয়েন্ট’ বেশ উঁচু থেকে। ইংল্যান্ড লায়নসের হয়ে ফিশার এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছেন এবং চলতি সপ্তাহেই যোগ দেবেন ইংল্যান্ড জাতীয় দলে। ১৭ ডিসেম্বর অ্যাডিলেডে শুরু হবে তৃতীয় টেস্ট। পাঁচ টেস্টের এই সিরিজে ২-০–তে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া।

আগামী জানুয়ারিতে ৩৬ বছর বয়সে পা রাখবেন উড। মেলবোর্ন ও সিডনিতে শেষ দুই টেস্ট খেলার আশা মনে মনে পুষে রেখেছিলেন তিনি। তবে বয়স যে প্রভাব ফেলছে তাঁর ওপর, সেটাও তিনি স্বীকার করেছেন। উডের ছিটকে পড়ার বিষয়ে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) বিবৃতিতে বলা হয়, ‘উড চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে দেশে ফিরবেন এবং পুনর্বাসন ও সুস্থ হয়ে ওঠার লক্ষ্যে ইসিবির মেডিকেল বিভাগের সঙ্গে কাজ করবেন।’

আরও পড়ুনঅ্যাডিলেডে ফিরছেন কামিন্স, হ্যাজলউডের অ্যাশেজ শেষ৪ ঘণ্টা আগে

গত ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে চোটের কারণে খুঁড়িয়ে মাঠ ছাড়েন উড। এরপর বাঁ হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করান। পার্থে প্রথম টেস্ট ছিল সর্বশেষ ১৫ মাসের মধ্যে উডের প্রথম টেস্ট ম্যাচ। পার্থে ১১ ওভার বোলিং করে উইকেট পাননি উড। বাঁ হাঁটুতে ব্যথা অনুভবের কথা জানানোর পর তাঁকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। পার্থ ও ব্রিসবেন টেস্টে ৮ উইকেটে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া।

অ্যাশেজ থেকে ছিটকে পড়ায় উড নিজেও মর্মাহত। নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে তাঁর পোস্ট, ‘অ্যাশেজের বাকি অংশ থেকে ছিটকে পড়ায় খুবই মর্মাহত হয়েছি। অস্ত্রোপচার, সাত মাসের কঠোর পরিশ্রম এবং পুনর্বাসনের পরেও আমার হাঁটু টিকল না। আমরা কেউই এটা আশা করিনি। অনেক প্রত্যাশা নিয়ে এখানে (অস্ট্রেলিয়া) এসেছিলাম। ইঞ্জেকশন ও চিকিৎসার পরও এটা পরিষ্কার যে যতটা শঙ্কা, আমার হাঁটুর সমস্যা তার চেয়েও জটিল। আমি খুবই হতাশ।’

আরও পড়ুনবাংলাদেশের বিপক্ষে নতুন এক টেস্ট ভেন্যু পাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া২১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বকাপ ২০২৬: গ্রুপ পর্বে যে ৭টি ম্যাচ হতে পারে দারুণ রোমাঞ্চকর

২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র হয়ে গেছে। কোন দল কোন গ্রুপে পড়েছে, প্রতিপক্ষ কারা, সেসবও জানা হয়ে গেছে। এবার অপেক্ষা মাঠের লড়াইয়ের।

এবারের বিশ্বকাপে দল বেড়েছে ১৬টি। ৩২ থেকে সংখ্যাটা ৪৮ হয়ে যাওয়ায় অনেকের মনে হতেই পারে, গ্রুপ পর্বের ঝাঁজ বুঝি কমে যাচ্ছে এবার। তা হয়তো একটু কমবে। তবে এর মাঝেও ড্রয়ে এমন কিছু ম্যাচ নিশ্চিত হয়েছে, যেগুলো দেখার জন্য ফুটবলপ্রেমীরা হয়তো অধীর আগ্রহেই অপেক্ষা করবেন।
ও রকম ৭টি ম্যাচের দিন তারিখ আগেই টুকে রাখতে পারেন ক্যালেন্ডারে।

ফ্রান্স-নরওয়ে: গ্রহের দুই সেরা ফরোয়ার্ডের দ্বৈরথ

কোনো সন্দেহ নেই, সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশিত দ্বৈরথটি হতে চলেছে ‘আই’ গ্রুপে—ফ্রান্স বনাম নরওয়ে। এই বিশ্বের সেরা দুই ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপ্পে ও আর্লিং হলান্ড মুখোমুখি হবেন এই ম্যাচে। গোল উৎসব তো হতেই পারে। ২৮ বছর পর নরওয়ে এসেছে বিশ্বকাপে, হলান্ড খেলবেন প্রথমবার। ওদিকে এমবাপ্পে এরই মধ্যে ২০১৮ বিশ্বকাপজয়ী, ২০২২ সালের রানার্স আপ দলের সেরা খেলোয়াড় ও গোল্ডেন বুটজয়ী। হলান্ডও নিশ্চয়ই চাইবেন এবার নিজের ছাপ রেখে যেতে।

স্পেন-উরুগুয়ে: ভিন্ন দুই ফুটবল-দর্শনের লড়াই

‘এইচ’ গ্রুপে এক ধুন্ধুমার লড়াইয়ের হাতছানি। মুখোমুখি দুই সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্পেন ও  উরুগুয়ে। দুই ভিন্ন ঘরানার ফুটবলের সংঘাত! লুইস দে লা ফুয়েন্তের দলের দৃষ্টিনন্দন, পাসিং ফুটবলের বিপরীতে উরুগুয়ের সেই চিরচেনা ‘চ্যারুয়া গ্রিট’ বা লড়াকু মনোভাব। এমন এক ম্যাচ, যা ভরপুর বিনোদনের আভাস দিচ্ছে।

রোনালদোর পর্তুগাল বনাম হামেসের কলম্বিয়া

বিশ্বকাপে কলম্বিয়া কখনো নিরাশ করে না। ওদের যাত্রা যেখানেই থামুক, তার আগপর্যন্ত বিনোদনের পসরা সাজিয়ে রাখে। এবার তারা গ্রুপ ‘কে’-তে, যেখানে অন্যতম প্রতিপক্ষ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল! রোনালদোর মতো না হলেও কলম্বিয়া দলেও আছেন এক বড় তারকা হামেস রদ্রিগেজ। বিশ্বকাপের মঞ্চ থেকেই আসলে যাঁর উত্থান হয়েছিল। দুজনেরই সম্ভবত এটা শেষ বিশ্বকাপ। দুই জাদুকরের দ্বৈরথ কেমন হয়, সেটা দেখার অপেক্ষা করতেই হচ্ছে।

ইংল্যান্ডের কঠিন পরীক্ষা: প্রতিপক্ষ ভয়ংকর ক্রোয়েশিয়া

ছয় দশক ধরে বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডের জন্য এক আক্ষেপের নাম। এবার টমাস টুখেল পেয়েছেন ইংল্যান্ডের ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই প্রজন্মকে। বাছাইপর্বে দুর্দান্ত খেলেছে ইংল্যান্ড। তাদের মনে করা হচ্ছে শিরোপার বড় দাবিদার। কিন্তু  গ্রুপে তাদের সামনে বাধা হতে পারে ক্রোয়েশিয়া। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে ক্রোয়াটরা তৃতীয় হয়েছিল, এর আগের বিশ্বকাপে রানার্স আপ। ইংল্যান্ডের পথটা কঠিন করে তুলতে পারে এই একটা ম্যাচই।

শুরুতেই মরক্কো-চ্যালেঞ্জে ব্রাজিল

মরক্কোকে বলা যায় বিশ্ব ফুটবলের উদীয়মান শক্তি। ২০২২ বিশ্বকাপে তারা সবাইকে চমকে দিয়ে চতুর্থ হয়েছে। বড় দলগুলোর সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে শিখে গেছে। ব্রাজিল অবশ্য শুধু বড় দল নয়, বিশ্বকাপের সবচেয়ে সফল দলও। তবে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা সর্বশেষ ট্রফি জিতেছিল ২৪ বছর আগে। সেই অপেক্ষা ঘোচানোর আশায় কার্লো আনচেলত্তিকে কোচ বানিয়েছে সেলেসাওরা। বাছাইপর্বে খুব একটা ভালো খেলেনি ব্রাজিল। ফলে মরক্কোর বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটি আনচেলত্তির জন্য এক কঠিন চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে।

ফ্রান্স-সেনেগাল: ২০০২-এর প্রতিশোধ হবে এবার

বিশ্বকাপের ইতিহাসে অন্যতম বড় অঘটনের সঙ্গে এই দুই দলের নাম জড়িত। ২০০২ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই তখনকার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে ১-০ গোলে হারিয়ে পুরো বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল সেনেগাল। ২৪ বছর পর সেই হারের বদলা নেওয়ার সুযোগ এসেছে ফ্রান্সের সামনে। দিদিয়ের দেশমের দল নিশ্চয়ই সুযোগটা দারুণভাবেই কাজে লাগাতে চাইবে। কিন্তু সেনেগাল কি সহজে ছেড়ে দেবে?

নড়বড়ে জার্মানির সামনে ইকুয়েডর চারবারের চ্যাম্পিয়ন জার্মানি, অথচ সর্বশেষ দুটি বিশ্বকাপেই গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে দলটা। এবার গ্রুপ পর্বে ইকুয়েডরের বিপক্ষে তাদের ম্যাচটা হাই ভোল্টেজ লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। ইকুয়েডরের রক্ষণভাগ শুধু দক্ষিণ আমেরিকার নয়, বিশ্বের অন্যতম সেরা।  দুই দলের সর্বশেষ দেখা হয়েছিল ২০০৬ বিশ্বকাপে, যেখানে জার্মানরা জিতেছিল ৩-০ গোলে। তবে সময় এখন পাল্টেছে, নইলে কি আর জার্মানি গ্রুপ পর্ব থেকেই পরপর দুবার বাদ পড়ে!

আরও পড়ুন২০২৬ বিশ্বকাপে কি মৃত্যুকূপ বলে কিছু আছে১৫ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্বকাপ ২০২৬: গ্রুপ পর্বে যে ৭টি ম্যাচ হতে পারে দারুণ রোমাঞ্চকর
  • ইরানে দৌড় প্রতিযোগিতায় হিজাব লঙ্ঘনের অভিযোগে দুই আয়োজক গ্রেপ্তার