২০২৪ সালে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা রয়েছে। এই নির্বাচনে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের প্রভাব কতটা পড়বে, তা নিয়ে নানা আলোচনা আছে। প্রথম আলোর উদ্যোগে পরিচালিত এক জরিপ অনুযায়ী, ২৩ শতাংশ মানুষ মনে করেন, এই নির্বাচনে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের প্রভাব উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ও ব্যাপকভাবে পড়বে। 

জরিপে দেশের ৫টি নগর ও ৫টি গ্রাম বা আধা শহরাঞ্চলের প্রাপ্তবয়স্ক (১৮-৫৫ বছর) ১ হাজার ৩৪২ জনের মতামত নেওয়া হয়। এর মধ্যে পুরুষ ৬৭৪ জন, নারী ৬৬৮ জন। জরিপে অংশ নেওয়া মানুষেরা বিভিন্ন আয়, শ্রেণি ও পেশার। গত ২১ থেকে ২৮ অক্টোবর জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। 

জরিপকারী প্রতিষ্ঠান বলেছে, এটি একটি মতামত জরিপ। এটা দেশের প্রতিনিধিত্বমূলক জরিপ, তবে নির্দিষ্টভাবে কোনো নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করে না। জরিপের নমুনা এমন মানুষদেরই তুলে ধরেছে, যাঁরা অনলাইন অথবা ছাপা পত্রিকা পড়তে পারেন এবং আগামী নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জরিপের ফলাফলের নির্ভরযোগ্যতার (কনফিডেন্স লেভেল) মাত্রা ৯৯ শতাংশ। 

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কতটা প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন—জরিপে এ প্রশ্নের জবাবে ৩০ শতাংশ উত্তরদাতা সামান্য প্রভাবের কথা বলেছেন। আর ৮ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কোনো প্রভাব পড়বে না।

প্রথম আলো গ্রাফিকস.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভবিষ্যতে ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া কেউ ব্যবসা করতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

দেশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সিংহভাগ এখনো ভ্যাট নিবন্ধনের বাইরে। এই পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ভবিষ্যতে কেউ চাইলেও ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া ব্যবসা করতে পারবেন না।

পর্যায়ক্রমে ভ্যাট নিবন্ধন ৩০ থেকে ৪০ লাখে উন্নীত করা হবে। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজস্ব ভবনে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ উদ্‌যাপনবিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন আবদুর রহমান খান।

আগামীকাল বুধবার ভ্যাট দিবস উপলক্ষে ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ভ্যাট সপ্তাহ উদ্‌যাপিত হবে। এ বছরের ভ্যাট দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সময়মতো নিবন্ধন নিব, সঠিকভাবে ভ্যাট দিব’।

সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, ১০ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশব্যাপী বিশেষ নিবন্ধন অভিযান চালানো হবে। এর মাধ্যমে এক লাখ নতুন ভ্যাট নিবন্ধন দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে এটা ৩০ থেকে ৪০ লাখে উন্নীত করা হবে।

সেই সঙ্গে আবদুর রহমান খান বলেন, এক ক্লিকেই ভ্যাট দেওয়ার পদ্ধতি চালু করা হবে। কিছু বৃহৎ প্রতিষ্ঠান এখন এক ক্লিকেই ভ্যাট দিচ্ছে বলে জানান তিনি।

বর্তমানে দেশে ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬ লাখ ৪৪ হাজার। এ বছর ৪০ লাখ ই-রিটার্ন জমা পড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন আবদুর রহমান খান।

এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, ‘আজ পর্যন্ত ২২ লাখ ই-রিটার্ন জমা পড়েছে। আমরা অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছি। ভবিষ্যতে ই-রিটার্ন জমার সঙ্গে ব্যাংকের সমন্বয় করা হবে। ই-রিটার্ন জমার দেওয়ার সময় ব্যাংকসংক্রান্ত চারটি তথ্য দিতে হয়। সে জন্য করদাতাদের ব্যাংকের কাছে যেতে হয়। বিষয়টি স্বয়ংক্রিয় করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, সেটা হলে করদাতাদের ভোগান্তি কমবে। মানুষের মধ্যে অবশ্য ভুল ধারণা আছে যে রাজস্ব কর্মকর্তারা এ তথ্য দেখতে পারবেন, বাস্তবে তা হয় না।’

রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধিবিষয়ক প্রশ্নের জবাবে আবদুর রহমান খান বলেন, ‘রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্যই লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে। তবে কোনো অবস্থায় যেন হয়রানি বা জুলুম করা না হয়, সেটা আমরা নিশ্চিত করব। মূলত যাঁরা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন, তাঁদের কাছ থেকেই আমরা রাজস্ব আদায়ের জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

এবারও ভ্যাট পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে না বলে জানান আবদুর রহমান খান। এর নীতিমালা নিয়ে কাজ হচ্ছে বলে জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে এনবিআরের সদস্য (মূসক নীতি) মো. আজিজুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ