আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের কাছে রাজনৈতিক দল এবং তাদের প্রতীক সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে। দেশের ৫১ শতাংশ মানুষ সংসদীয় নির্বাচনে দল ও তাদের প্রতীক দেখে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছেন। 

প্রথম আলোর উদ্যোগে করা ‘গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক-রাজনৈতিক বিষয়ে জাতীয় জনমত জরিপ ২০২৫’–এ এই মতামত উঠে এসেছে। প্রথম আলোর জন্য জরিপটি করেছে কিমেকারস কনসাল্টিং লিমিটেড।

জরিপে বেশ কিছু বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়। এর মধ্যে একটি প্রশ্ন ছিল, ভোট দেওয়ার সময় কোন বিষয়টি আপনার বিবেচনায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়/ পাবে? মতামতে উঠে এসেছে, ৫১ শতাংশ মানুষ রাজনৈতিক দল বা প্রতীক দেখে ভোট দেবেন। ১৭ দশমিক ৪০ মানুষ প্রার্থীর আচরণ বা ব্যবহার দেখে, ১৬ দশমিক ১ শতাংশ প্রার্থীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দেখে এবং ১০ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ প্রার্থীর সততা দেখে ভোট দেবেন। 

প্রার্থীর ধর্মীয় চেতনা দেখে ২ দশমিক ৪ শতাংশ, প্রার্থীর দলের রাজনৈতিক ইশতেহার দেখে ১ দশমিক ৩ শতাংশ, প্রার্থীর এলাকা দেখে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ এবং প্রার্থীর সামাজিক অবস্থান ও পরিচিতি দেখে ভোট দেবেন শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ। 

জরিপে দেশের ৫টি নগর ও ৫টি গ্রাম বা আধা শহরাঞ্চলের প্রাপ্তবয়স্ক (১৮-৫৫ বছর) ১ হাজার ৩৪২ জনের মতামত নেওয়া হয়। এর মধ্যে পুরুষ ৬৭৪ জন, নারী ৬৬৮ জন। জরিপে অংশ নেওয়া মানুষেরা বিভিন্ন আয়, শ্রেণি ও পেশার। গত ২১ থেকে ২৮ অক্টোবর জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। 

জরিপকারী প্রতিষ্ঠান বলেছে, এটি একটি মতামত জরিপ। এটা দেশের প্রতিনিধিত্বমূলক জরিপ, তবে নির্দিষ্টভাবে কোনো নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করে না। জরিপের নমুনা এমন মানুষদেরই তুলে ধরেছে, যাঁরা অনলাইন অথবা ছাপা পত্রিকা পড়তে পারেন এবং আগামী নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জরিপের ফলাফলের নির্ভরযোগ্যতার (কনফিডেন্স লেভেল) মাত্রা ৯৯ শতাংশ। 

জরিপে নানা বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। এতে উঠে এসেছে, আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে—এ বিষয়ে আশাবাদী মানুষ ৫০ শতাংশের কিছু বেশি। প্রায় ৩৪ শতাংশ হতাশার কথা জানিয়েছেন। আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে যাবেন প্রায় ৯২ শতাংশ মানুষ। 

জরিপে একটি প্রশ্ন ছিল, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর নারী প্রার্থীদের সরাসরি ভোটে দাঁড়ানোর জন্য কেমন সংখ্যায় মনোনয়ন দেওয়া উচিত বলে মনে করেন। উত্তরে ৫৩ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ বলেছেন, আগামী নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর আগের সমানসংখ্যক নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া উচিত। কিছুটা বেশি সংখ্যায় মনোনয়ন দেওয়ার পক্ষে ১০ দশমিক ৭ শতাংশ, আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে মনোনয়ন দেওয়ার পক্ষে ১ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা। অন্যদিকে আগের চেয়ে কম পরিমাণে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার পক্ষে ২৬ শতাংশ এবং নারী প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন ৮ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ। 

প্রথম আলো গ্রাফিকস.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক দল মত মত দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করবে টেশিস ও ইডটকো

টেলিযোগাযোগ খাতে স্থানীয় কারিগরি সক্ষমতা বৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিফোন শিল্প সংস্থার (টেশিস) সঙ্গে চুক্তি করেছে টেলিযোগাযোগ অবকাঠামোগত প্রতিষ্ঠান ইডটকো বাংলাদেশ। নতুন এ চুক্তির আওতায় টেশিসের স্থাপনায় ব্যাটারি মেরামত ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে একটি কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, ফলে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি দীর্ঘদিন ব্যবহারের পাশাপাশি ই-বর্জ্য হ্রাস এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় জনশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। সম্প্রতি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে এ বিষয়ক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন টেশিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মানোয়ার হোসেন মোল্লা ও ইডটকো বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (সিএমডি) সুনীল আইজ্যাক। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ইডটকো বাংলাদেশ।  

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, এই উদ্যোগ সফল হলে ভবিষ্যতে দেশেই ব্যাটারি সেল উৎপাদনের পথ সুগম হবে, যা বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় এবং নতুন প্রযুক্তি খাত গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। এই চুক্তি দেশের টেলিযোগাযোগ অবকাঠামোকে আরও শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সভাপতির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আব্দুন নাসের খান বলেন, টেশিসের শিল্প সক্ষমতা ও ইডটকোর আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিগত দক্ষতা পারস্পরিক লাভজনক অংশীদারত্ব গড়ে তুলবে, যা শুধু টেলিযোগাযোগ খাত নয়, ভবিষ্যতের প্রযুক্তিনির্ভর অন্যান্য শিল্পেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

সুনীল আইজ্যাক বলেন, দেশের ডিজিটাল অবকাঠামো নির্মাণের অংশীদার হিসেবে আমরা বিশ্বাস করি, টেকসই উদ্যোগ, উদ্ভাবন এবং স্থানীয় সক্ষমতা বৃদ্ধি একটি শক্তিশালী ইকোসিস্টেম গঠনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নতুন এই উদ্যোগের মাধ্যমে স্থানীয় জনশক্তির ক্ষমতায়ন ও সম্পদের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পাবে।  

মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, এই সমঝোতা স্মারক দেশীয় সক্ষমতা, দক্ষতা ও সম্ভাবনা বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। টিএসএসের উৎপাদন সক্ষমতা এবং ইডটকোর প্রযুক্তিগত দক্ষতাকে একীভূত করার মাধ্যমে আমরা দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত দক্ষতা উন্নয়ন এবং একটি আরও টেকসই ও স্বনির্ভর টেলিকম শিল্প গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ