আফগান সীমান্তের কাছে সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানের ৬ সেনা নিহত
Published: 9th, December 2025 GMT
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকার কাছে একটি নিরাপত্তা চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলায় ছয়জন সেনা নিহত হয়েছেন। খবর আল-জাজিরার।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) পুলিশ ও নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, সোমবার মধ্যরাতে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের উপজাতীয় জেলা কুররামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী নিরাপত্তা চৌকিতে (চেকপয়েন্টে) হামলা চালায়, যার ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলি বিনিময় হয়।
আরো পড়ুন:
পাকিস্তানের হামলায় ২৩ আফগান সেনা নিহত
গান না গেয়েই কেন চলে যেতে হবে পাকিস্তানি ব্যান্ড কাবিশকে?
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যেই এই হামলার ঘটনা ঘটলো। বার্তা সংস্থা এএফপির খবর অনুসারে, নিষিদ্ধ ঘোষিত পাকিস্তানি তালেবান বা টিটিপি এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
কুররামে নিযুক্ত এক সরকারি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে বলেন, “হামলায় ছয়জন নিরাপত্তা কর্মী শহীদ এবং চারজন আহত হয়েছেন এবং লড়াইয়ে দুই জঙ্গিও নিহত হয়েছে।”
যুদ্ধবিরতির মধ্যেও পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত উত্তেজনা অব্যাহত
প্রায় দুই দশক ধরে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসা টিটিপি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ক্রমবর্ধমানভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে। ২০২১ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণকারী তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে এই গোষ্ঠীটিকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ এনেছে ইসলামাবাদ।।
কাবুল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং দাবি করে যে, পাকিস্তানের নিরাপত্তা একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়।
চলতি বছরের অক্টোবরে এক সপ্তাহ ধরে দুই দেশের সংঘর্ষে ৭০ জনেরও বেশি নিহত এবং শত শত মানুষ আহত হন। পরিস্থিতি তীব্র যুদ্ধের দিকে যাওয়ায় কাতার, তুরস্ক এবং সৌদি আরবের মধ্যস্থতায় আফগান ও পাকিস্তানি কর্মকর্তারা একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
তবে, উত্তেজনা এখনও তীব্র। সীমান্ত হামলা অব্যাহত থাকায় সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।
সর্বশেষ গত শুক্রবার আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশের স্পিন বোল্ডাক সীমান্ত ক্রসিংয়ে পাকিস্তান ও আফগান বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলিতে আফগানদের মতে, চারজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং একজন সেনা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আফগানিস্তানের তালেবান সরকার ও পাকিস্তান একে অপরকে উসকানির জন্য দোষারোপ করেছে। তালেবান মুখপাত্রের মতে, পাকিস্তান হামলা শুরু করলে আফগান বাহিনী পাল্টা জবাব দিতে বাধ্য হয়, এবং পাকিস্তান দাবি করে যে আফগান বাহিনী বিনা উস্কানিতে গুলি চালিয়েছে।
যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরের বিষয়গুলোও এই উত্তেজনাকে উস্কে দিচ্ছে। পাকিস্তান তাদের আশ্রয় দেওয়া আফগান শরণার্থীদের মধ্যে অনেককে, বিশেষ করে যারা অবৈধভাবে বসবাস করছে, তাদের গণ বহিষ্কারের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করেছে।
তবে, ইসলামাবাদ গত সপ্তাহে বলেছে যে, তারা শিগগির জাতিসংঘের সাহায্য আফগানিস্তানে পৌঁছানোর অনুমতি দেওয়া শুরু করবে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আফগ ন স ত ন আফগ ন স ত ন র
এছাড়াও পড়ুন:
অভ্যুত্থানচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, শাস্তি পেতে হবে: বেনিনের প্রেসিডেন্ট তালোন
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বেনিনের প্রেসিডেন্ট প্যাট্রিস তালোন বলেছেন, তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে ঘটানো অভ্যুত্থানচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। সরকার ও দেশের সশস্ত্র বাহিনী এ চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে। অভ্যুত্থানচেষ্টায় দায়ী সবাইকে শাস্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট তালোন।
গতকাল রোববার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় দেওয়া এক ভাষণে এ কথা বলেন প্রেসিডেন্ট তালোন। বেনিনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম প্রেসিডেন্টের ভাষণ প্রচার করে।
দেশটির সবচেয়ে বড় শহর কতনোউয়ে গোলাগুলির প্রায় ১২ ঘণ্টা পর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে হাজির হয়ে প্রেসিডেন্ট তালোন অভ্যুত্থানচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার ঘোষণা দেন। এর আগে একদল সেনা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের পর্দায় হাজির হয়ে অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেন। বলেন, তাঁরা একত্রে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, প্যাট্রিস তালোন আর প্রেসিডেন্ট থাকছেন না। সেনাদলটি নিজেদের মিলিটারি ‘কমিটি ফর রিফাউন্ডেশন (সিএমআর)’ হিসেবে পরিচয় দেয়।
ভাষণে প্রেসিডেন্ট তালোন বলেন, সরকারের প্রতি অনুগত বাহিনীর দ্রুত তৎপরতায় এই দুঃসাহসিকদের প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে। এই বিশ্বাসঘাতকতার জন্য শাস্তি পেতেই হবে।
বেনিনের সামরিক ও নিরাপত্তা সূত্রগুলোর বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এএফপি জানিয়েছে, অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টায় গতকাল সন্ধ্যায় দেশটিতে ডজনখানেক সেনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একটি সূত্র এএফপিকে জানান, গ্রেপ্তার করা হয়েছে মোট ১৩ জনকে। আরেকজন জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে একজন সাবেক সেনাসদস্য। অন্যরা সেনাবাহিনীতে কর্মরত।
১০ বছর ধরে বেনিনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্যাট্রিস তালোন। আগামী এপ্রিলে তাঁর ক্ষমতা ছাড়ার কথা। ওই সময় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটি।
আরও পড়ুনবেনিনে প্রেসিডেন্টকে উৎখাতের দাবি একদল সেনার, সরকারের অস্বীকার১৬ ঘণ্টা আগেএ পরিস্থিতিতে বেনিনে অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা ছিল এই অঞ্চলের গণতান্ত্রিক শাসনের জন্য সর্বশেষ হুমকি। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সামরিক বাহিনী বেনিনের প্রতিবেশী নাইজার ও বুরকিনা ফাসোর পাশাপাশি মালি ও গিনিতে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে নিয়েছে। গত মাসে গিনি বিসাউয়েও সেনা–অভ্যুত্থান ঘটেছে।
আরও পড়ুনগিনি-বিসাউয়ে ক্ষমতা দখল করল সেনাবাহিনী, প্রেসিডেন্ট গ্রেপ্তার২৭ নভেম্বর ২০২৫