পঞ্চগড়ে ট্রাকের চাপায় পিষ্ট হয়ে রিনা আক্তার (৪৫) নামের এক নারী নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন তার স্বামী সাইফুল ইসলাম (৫৩)। 

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পঞ্চগড় পৌরসভার তেলিপাড়া এলাকায় বিজিবি ক্যাম্পের সামনে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত রিনা পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার মুন্সীপাড়ার বাসিন্দা। তিনি দেবীগঞ্জ পারফেক্ট একাডেমির প্রধান শিক্ষক ছিলেন। আহত সাইফুল ইসলাম শেখবাঁধা রেয়াজিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দাপ্তরিক কাজের জন্য মঙ্গলবার সকালে দেবীগঞ্জ থেকে মোটরসাইকেল যোগে পঞ্চগড় শহরের দিকে আসছিলেন এই দম্পতি। বিজিবি ক্যাম্পের সামনে পৌঁছালে একটি ট্রাককে পাশ কাটাতে গিয়ে সড়কের স্পিডব্রেকারে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারান তারা। এ সময় ট্রাকের পেছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান রিনা আক্তার। তার দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। 

দুর্ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অবৈধ স্পিডব্রেকার অপসারণের দাবিতে প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। খবর পেয়ে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কাজী মো.

সায়েমুজ্জামান ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধরা সড়ক থেকে সরে যান।

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, দুর্ঘটনার পর ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা আইনে নিয়মিত মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

ঢাকা/নাঈম/রফিক 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

মতপার্থক্য থাকলেও ছেলেমেয়েদের আত্মাহুতি যাতে বৃথা না যায়: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, চব্বিশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে বিজয় অর্জন হয়েছে, সবাই মিলে যেন সেই বিজয়কে সুসংহত করা হয়। মতপার্থক্য থাকলেও ছেলেমেয়েদের আত্মাহুতি যাতে বৃথা না যায়, স্বপ্ন যাতে বাস্তবায়ন করা যায়।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ ও তাঁর প্রয়াত সহধর্মিণী উম্মে সালমা আলো প্রণীত গ্রন্থগুলোর প্রকাশনা উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ তাঁর লেখায় দেশের কথা, মানুষের কথা, সমাজ পরিবর্তনের কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত পাওয়া-না পাওয়ার কথা তাঁর বইতে পাওয়া যায় না। বাংলাদেশের পণ্ডিত মানুষগুলোর মধ্যে মাহবুব উল্লাহ অন্যতম। অথচ তাঁকে সেই মূল্যায়ন করা হয়নি।

বিএনপির সঙ্গে অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহর সম্পর্ক তুলে ধরেন দলটির মহাসচিব। তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে মাহবুব উল্লাহর সম্পর্ককে অস্বীকার করলে সত্যকে অস্বীকার করা হবে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যখনই কোনো আলোচনা করতে চেয়েছেন, মাহবুব উল্লাহকে ডেকে পাঠিয়েছেন। খালেদা জিয়ার ভিশন-২০৩০-এর মূল চিন্তাগুলোও মাহবুব উল্লাহর কাছ থেকে এসেছে। ২০১৮ সালে যখন রাজনৈতিক দল নিয়ে ফ্রন্ট গঠন করা হয়, তখনো মাহবুব উল্লাহ, মাহফুজ উল্লাহ, জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন।

অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ব্রিটিশরা এ দেশের মানচিত্র নিয়ে অনেক খেলাধুলা করেছে। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ হলেও পরে তা চাপের মুখে রদ করা হয়। তখন যদি বঙ্গভঙ্গ রদ না হতো, তাহলে ১৯৪৭ সালে যে একটা কৃত্রিম রাষ্ট্র তৈরি, পাকিস্তান রাষ্ট্র তৈরি, সেটিরও প্রয়োজনীয়তা থাকত না। আর যদি তা হতো, তাহলে এরপরে স্বাধীনতার যে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম, সেটিরও প্রয়োজনীয়তা হতো না।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন যুগান্তর সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ নুরুল আমিন ব্যাপারী, ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আহমেদ কামাল, কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক হায়াত হোসেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিলুফার সুলতানা, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, ইনকিলাব পত্রিকার সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দীন।

আরও বক্তব্য দেন আইনজীবী ও লেখক নজমুল হক নান্নু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ প্রমুখ।

উপস্থিত ছিলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাঈল জবিউল্লাহ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক লুৎফর রহমান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ শাহান প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ