সৃজিত মুখার্জির ‘মিশর রহস্য’ দিয়ে বড় পর্দায় যাত্রা শুরু করেছিলেন ত্রিধা চৌধুরী। করেছেন আরও বাংলা সিনেমা। পরে অবশ্য মুম্বাইয়ে হিন্দি সিরিজ দিয়ে পরিচিতি পেয়েছেন ত্রিধা চৌধুরী। বিশেষ করে ‘আশ্রম’ সিরিজে ববি দেওলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করে নানা আলোচনার জন্ম দেন। এক সাক্ষাৎকারে অভিনয় ক্যারিয়ার, ঘনিষ্ঠ দৃশ্যসহ নানা প্রসঙ্গে কথা বলেছেন ত্রিধা।

ত্রিধা চৌধুরী। অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রোকেয়া চর্চা বাড়াতে বাংলা একাডেমি ও রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমঝোতা স্মারক সই

নারী জাগরণের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে নিয়ে চর্চা বাড়াতে বাংলা একাডেমি ও রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। আজ মঙ্গলবার রোকেয়া দিবস উপলক্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কক্ষে এ সমঝোতা স্মারক সই করা হয়। বাংলা একাডেমির পক্ষে মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে উপাচার্য মো. শওকাত আলী সমঝোতা স্মারকে সই করেন।

আজ ৯ ডিসেম্বর নারী জাগরণ ও অধিকার আন্দোলনের অগ্রদূত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ১৪৫তম জন্ম ও ৯৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের পায়রাবন্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩২ সালের একই দিনে তিনি কলকাতায় মারা যান। ক্ষণজন্মা মহীয়সী এই নারীর জন্ম ও মৃত্যুদিন ঘিরে প্রতিবছর রোকেয়া দিবস পালন করা হয়।

সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘রোকেয়ার জন্মস্থান পায়রাবন্দে রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র আছে। এটি পরিচালনা করে বাংলা একাডেমি। সেখানে সুন্দর একটা অবকাঠামো আছে। বাংলা একাডেমির পাঠাগার ছাড়াও সংগীত, আবৃত্তি, কর্মসূচি চালু রয়েছে। রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকের মানে হলো এই আয়োজনকে গবেষণা ও পাঠের সঙ্গে সম্পর্কিত করা। রোকেয়া সম্পর্কিত ব্যাপারও এখানে চর্চিত হবে। একই সঙ্গে এর সঙ্গে সম্পর্কিত নানা বিষয়—গবেষণা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম বাংলা একাডেমি ও বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে করতে পারবে।’

মোহাম্মদ আজম আরও বলেন, ‘রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রটিকে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলার জন্য বড় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা এখানে রোকেয়া গবেষণার জন্য উপকরণগত আর্কাইভ তৈরি করব। রোকেয়া–সম্পর্কিত যত উপকরণ আছে বিভিন্ন ভাষায় সারা পৃথিবীতে—তাঁর বই–পুস্তক, নিজের রচনাবলি আমরা চেষ্টা করব যত লেখাপত্র প্রকাশ হয়েছে এবং যত নথিপত্র এবং দলিলপত্র ইত্যাদি মিলে আমরা একটা আর্কাইভ করার জন্য কাজ শুরু করেছি। এটা হয়ে গেলে রোকেয়া গবেষণার জন্য একটি অনন্য কাজ হবে। এই সবকিছু মিলে মনে করছি, রোকেয়া চর্চার একটি নতুন মাত্রা যোগ হবে।’

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. শওকত আলী বলেন, ‘রোকেয়ার স্বপ্ন, দর্শন ও তাঁর গবেষণার দ্বার উন্মোচিত করার জন্য রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার একটি হাব হবে পায়রাবন্দ স্মৃতিকেন্দ্র। এই হাব করার জন্য আমরা বাংলা একাডেমিকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এই সমঝোতা স্মারক ইতিহাসে সাক্ষী হবে।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য মাছুমা হাবিব, গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হোসেন উদ্দিন শেখর, বাংলা একাডেমির সচিব সেলিম রেজা, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. হারুন অর রশিদ, বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শফিকুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত।

রোকেয়া দিবস উপলক্ষে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক মাঠে আলোচনা সভা ও প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। উপাচার্য মো. শওকত আলীর সভাপতিত্বে এতে প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম।

মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘রোকেয়া আমাদের জন্য সর্বজনীন জ্ঞানের উৎস। আমাদের সৌভাগ্য, রোকেয়ার সঙ্গে আমরা নানাভাবে টান অনুভব করতে পারি। এই রংপুরে রোকেয়া আমাদের স্থানিকভাবে খুব কাছে বলে অনুভূত হয়। আমরা রোকেয়ার জীবন ও তৎপরতা যদি রি-জেনারেট বা পুনর্জন্মের ভেতর দিয়ে নিতে পারি, তাহলে আজকের দিনের নানা ধরনের তৎপরতায়, আমাদের উজ্জীবনে, সামনের দিনে পথচলায় রোকেয়া আরও বেশি সহায়ক হতে পারে।’

জন্মভিটা পায়রাবন্দে শ্রদ্ধা নিবেদন

এদিকে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্মরণে তাঁর জন্মভিটা পায়রাবন্দে রোকেয়ার স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সর্বস্তরের মানুষ। আজ বেলা ১১টার দিকে তাঁর স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল আহসান, পুলিশ সুপার মো. মারুশাত হুসাইন, বাংলা একাডেমির সচিব সেলিম রেজা, মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. পারভেজ।

এ ছাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বেগম রোকেয়া স্মৃতি সংসদ, মহিলাবিষয়ক উপপরিচালকের কার্যালয়, পায়রাবন্দ সরকারি বেগম রোকেয়া স্মৃতি কলেজ, উপজেলা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে বেগম রোকেয়া স্মৃতি ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় মাঠে বেলুন উড়িয়ে তিন দিনব্যাপী রোকেয়া মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক।

বেগম রোকেয়া দিবসে রংপুর নগরের শালবন ইন্দ্রারা মোড়ের ভাস্কর্যে ফুল দিয়ে রোকেয়ার ওপর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে নিপীড়ন বিরোধী নারীমঞ্চ। পরে বেগম রোকেয়ার সংগ্রামী জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নিপীড়ন বিরোধী নারীমঞ্চের জেলা আহ্বায়ক বীথি দাস নন্দিনী, সদস্য সোনালী রায়, সুলতানা আক্তার প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ