ঢাকার আদালত চত্বর থেকে পুলিশের চোখে স্প্রে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলবিরুনী মীর এ আদেশ দেন।

এর আগে এই তিনজন এ মামলায় জামিনে ছিলেন। কিন্তু নির্ধারিত তারিখে আদালতে হাজির না হওয়ায় আদালত তাঁদের জামিনাদেশ বাতিল করে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।

আসামিরা হলেন আবদুস সবুর ওরফে রাজু, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ও আরাফাত রহমান।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মো.

জায়েদুর রহমানের ভাষ্য, জঙ্গি ছিতাইয়ের ঘটনার সময় এই তিন আসামি অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এরপর ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর জঙ্গি ছিতাইয়ের ঘটনায় করা মামলায় সেদিনই এই তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে আরাফাত, ৬ এপ্রিল খায়রুল এবং গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সবুর এ মামলা থেকে জামিন পান। গত ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁদের আদালতে হাজিরা দেওয়ার তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু ভুলবশত তাঁদের হাজিরা দেওয়া হয়নি। এ কারণে আদালত তাঁদের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

আইনজীবী বলেন, ‘৩ ডিসেম্বর তাঁদের এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করি। আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজ আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আমরা পুনরায় এই মামলায় তাঁদের জামিনের জন্য আবেদন করব।’

যেভাবে জঙ্গি ছিনতাই হয়েছিল

২০২২ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল থেকে আট জঙ্গিকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। আসামিরা যখন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতের প্রধান ফটকের সামনে আসেন, তখন হাতকড়া পরা দুই জঙ্গি এক পুলিশ সদস্যকে মারধর শুরু করেন।

এ সময় আশপাশে থাকা জঙ্গিদের সহযোগীরাও হামলায় যোগ দেন। অন্য পুলিশ সদস্যরা আক্রান্ত সদস্যকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলে তাঁদের ওপর মরিচের স্প্রে ছোড়া হয়। এরপর সিজেএম আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীত দিকের গলি দিয়ে মোটরসাইকেলে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

ঘটনার দিন রাতেই পুলিশ ২০ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে। মামলার এজাহারে বলা হয়, আনসার আল–ইসলামের সামরিক শাখার নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে সাগর ওরফে বড় ভাই ওরফে মেজর জিয়ার (চাকরিচ্যুত মেজর) পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। এতে জড়িত আনসার আল–ইসলামের ১৫ থেকে ১৮ সদস্য।

পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, পালিয়ে যাওয়া দুজন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল–ইসলামের (সাবেক আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) সদস্য। তাঁরা জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এই জঙ্গি সংগঠনের নেতা হিসেবে পরিচিত মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ জিয়াউল হক, যাঁর পরিকল্পনায় ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একাধিক লেখক, প্রকাশক, ব্লগার ও অধিকারকর্মীকে হত্যা করা হয়।

আরও পড়ুনআদালত চত্বর থেকে যেভাবে জঙ্গি ছিনতাই২০ নভেম্বর ২০২২

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম ন আস ম আনস র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

এই দিনে হানাদার মুক্ত হয়েছিল কুষ্টিয়ার যেসব স্থান

আজ ৮ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনটি ছিল কুষ্টিয়ার মানুষের কাছে স্মরণীয় এক মুহূর্ত। এ দিন মুক্ত হয় জেলার মিরপুর, দৌলতপুর ও ভেড়ামারা উপজেলা। মুক্তিকামী জনতা স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে বিজয় আনন্দে মেতে ওঠেন।

মিরপুর: ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর ভোরে ই-৯ এর গ্রুপ কমান্ডার আফতাব উদ্দিন খান ১৭০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে মিরপুর থানায় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা গান স্যালুটের মাধ্যমে উত্তোলন করেন। এরপর ৬৫ জন পাকহানাদার বাহিনীর দোসর ও রাজাকার পাহাড়পুর মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে আত্মসমর্পন করে। মিরপুর হানাদার মুক্ত হওয়ার সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন বয়সের হাজারো নারী-পুরুষ রাস্তায় নেমে আনন্দ উল্লাস করতে থাকেন।

আরো পড়ুন:

ঝালকাঠি পাক হানাদার মুক্ত দিবস আজ 

আজ গোপালগঞ্জ মুক্ত দিবস

দৌলতপুর মুক্ত দিবস: ১৯৭১ সালের এই দিন থানা চত্বরে বিজয় পতাকা উড়ানোর মধ্য দিয়ে দৌলতপুরকে হানাদার মুক্ত ঘোষণা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। 

দৌলতপুরকে হানাদার মুক্ত করতে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাদের সম্মুখসহ ছোট-বড় ১৬টি যুদ্ধ সংঘঠিত হয়। এসব যুদ্ধে ৩৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ কয়েক’শ নারী-পুরুষ শহীদ হন।

সবচেয়ে বড় যুদ্ধ সংঘঠিত হয় উপজেলার ধর্মদহ ব্যাংগাড়ী মাঠে। এ যুদ্ধে প্রায় সাড়ে ৩০০ পাকিস্তানি সেনা নিহত হন। শহীদ হন তিন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তিন ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সদস্য। 

৮ ডিসেম্বর সকালে আল্লারদর্গা এলাকায় পাক সেনাদের গুলিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক শহীদ হন। এরপর দৌলতপুর হানাদার মুক্ত ঘোষণা করেন তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মেজর নুরুন্নবী।

ভেড়ামারা মুক্ত দিবস: মিত্র বাহিনীর সহায়তায় আজকের দিনে মুক্তিযোদ্ধারা কুষ্টিয়ার ভেড়ামারাকে শত্রু মুক্ত করেন।

এই দিন ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর আবুল মুনছুরের নেতৃত্বে জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদুল আলমের নেতৃত্বে ২ ভাগে বিভক্ত হয়ে ভোর ৭টার দিকে ভেড়ামারা ফারাকপুরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। প্রায় ৭ ঘণ্টার এই যুদ্ধে আটজন পাকসেনা নিহত হয়। যুদ্ধের পরপরই মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে প্রায় ৫০/৬০ জন বিহারী নিহত হন। 

এই ঘটনার সংবাদ পেয়ে ভেড়ামারায় অবস্থানরত পাকবাহিনীর অন্য সদস্যদের মনোবল ভেঙ্গে যায়। তারা সন্ধ্যার আগেই ভেড়ামারা থেকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ দিয়ে পালিয়ে যায়। এই দিন রাতে মুক্তিপাগল মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধারা দলে দলে ভেড়ামারায় প্রবেশ করতে থাকেন। তখন তারা বিজয়ের আনন্দে রাস্তায় নেমে উল্লাস করতে থাকেন।

ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাজারে এসেছে নতুন আলু, দাম কত
  • ইংল্যান্ডের ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় বড় ধাক্কা উডের
  • মানিকগঞ্জে বাউলশিল্পী আবুল সরকারের জামিন আবারও নামঞ্জুর
  • এই দিনে হানাদার মুক্ত হয়েছিল কুষ্টিয়ার যেসব স্থান
  • ৬০ বছর বয়সে প্রেমের দেখা পাব ভাবিনি: আমির খান
  • ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে ২–০–তে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া
  • বিশ্বকাপ ২০২৬: গ্রুপ পর্বে যে ৭টি ম্যাচ হতে পারে দারুণ রোমাঞ্চকর
  • নবীজি (সা.) যেভাবে নামাজ পড়তেন
  • ইরানে দৌড় প্রতিযোগিতায় হিজাব লঙ্ঘনের অভিযোগে দুই আয়োজক গ্রেপ্তার