জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেছেন, ‘জেএসডি নেত্রী তানিয়া রবের প্রচারণায় হামলা দেশের গণতান্ত্রিক ভিত্তিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করেছে। এ ধরনের বর্বরোচিত কর্মকাণ্ড গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর নির্লজ্জ আক্রমণ।’

আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলার দাগনভূঞায় জেএসডির প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন এ কথা বলেন।

শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক সন্ত্রাস এবং স্বাধীন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধা প্রদানের নিন্দা ও ধিক্কার জানাই। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। অথচ আজ যা ঘটেছে তা প্রমাণ করে, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অথবা প্রশ্রয়ে গণতন্ত্রের মৌলিক অধিকারকে গলা টিপে হত্যা করার অপচেষ্টা চলছে। এটি গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক ঠোকার শামিল।’

শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন আরও বলেন, ‘জেএসডির প্রত্যেক কর্মী, সমর্থক এবং দেশের প্রত্যেক গণতন্ত্রপ্রেমী নাগরিককে এমন ঘটনায় সতর্ক ও সোচ্চার হতে হবে। আমাদের রাজনৈতিক পথ হবে সর্বদা শান্তিপূর্ণ, অহিংস এবং সাংবিধানিক আন্দোলনের। তবে আমরা ভীত নই; বরং আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’

শহীদ উদ্দিন মাহমুদ অবিলম্বে হামলার মূল হোতাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান। পাশাপাশি নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের পূর্ণ নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতেরও দাবি জানান।

ফেনী জেলা জেএসডির সভাপতি হীরালাল চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে এবং এম এইচ জাহাঙ্গীরের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন জেলা সাধারণ সম্পাদক সামছুদ্দিন মজুমদার, জেএসডি নেতা তাহের উদ্দিন মহিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের, ওসমান গনি, তাজ উদ্দিন আজাদ, আনোয়ার হোসেন, সুলতান আহমেদ মাস্টার প্রমুখ।

গতকাল সোমবার বিকেলে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিতে আসার পথে নেতা-কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটে। এতে একজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। এ সময় হামলাকারীরা ১০-১২টি মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে।

তবে হামলার পরও আলেক্সান্ডার সরকারি মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে জেএসডির নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের স্ত্রী তানিয়া রব। তিনি দলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি। বিএনপি জোট থেকে এই আসনে তানিয়া রবের নির্বাচন করার সম্ভাবনা রয়েছে।

হামলার ঘটনায় স্থানীয় বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী এক নেতাকে দায়ী করেছে জেএসডি। জেএসডি নেতা লোকমান হোসেন অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী এ বি এম আশরাফ উদ্দিনের অনুসারীরা পরিকল্পিতভাবে এসব হামলা চালিয়েছে।

তবে রামগতি বিএনপির সভাপতি মো.

জামাল উদ্দিন হামলায় বিএনপির জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘বিএনপির নেতা-কর্মীরা জেএসডির কারও ওপর হামলা করেনি; বরং জেএসডির নেতা-কর্মীরাই রামদয়াল বাজারে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের পাঁচজন নেতা-কর্মী আহত হন।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণতন ত র ব এনপ র জ এসড র র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনা দেশে বাকশাল কায়েম করেছিলেন: সালাহউদ্দিন আহমদ

গণতন্ত্রের মুখোশের শেখ হাসিনা এই দেশে বাকশাল কায়েম করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, নামমাত্র বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা, সাংবিধানিক শাসনব্যবস্থা চালু থাকলেও প্রকৃতপক্ষে সবাই জানেন, গণতন্ত্রের মুখোশে শেখ হাসিনা এই দেশে বাকশাল কায়েম করেছিলেন। একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছিলেন। বাংলাদেশের জনগণ রক্ত দিয়ে সেই ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে।

আজ শনিবার দুপুরে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ইসলামনগরে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত এক নারী সমাবেশে এ কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমি নির্বাসিত জীবন কাটাতে বাধ্য হয়েছি প্রায় ১০ বছর। আপনারা জানেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুম করেছিলেন। আপনারা নামাজ পড়ে, রোজা রেখে দোয়া করেছিলেন বলেই আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আজ জাতীয় রাজনীতিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ। শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রূপান্তরের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছি। আশা করি এ সপ্তাহের মধ্যেই আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে এই ঐতিহাসিক বাংলাদেশের পরিবর্তনের সূচনাকারী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘যাঁরা এখনো আওয়ামী লীগের সমর্থন করেন, তাঁদের কী যুক্তি আছে সমর্থন করার, আমি জানি না। যে আওয়ামী লীগের নেত্রী এবং তাঁদের মন্ত্রী-এমপিরা নিজেরা রক্ষা পাওয়ার জন্য সহায়–সম্পদ নিয়ে, জীবন নিয়ে পালিয়ে গেছেন, সে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করা কি উচিত? আমি চাই, তাঁরা গণতন্ত্রের পথে ফেরত আসুন।’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে একটি ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণ করব। একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ করব। এ দেশের গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের প্রত্যাশা, এ দেশের জনমানুষের প্রত্যাশা বাংলাদেশে সত্যিকারভাবে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার সরকার প্রতিষ্ঠা হোক।’

বেহেশতের লোভ দেখিয়ে যাঁরা ভোটের কথা বলেন, তাঁদের কাছ থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আজ ধর্মের দোহাই দিয়ে সরলমনা মা-বোনদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, অমুক মার্কায় ভোট দিলে বেহেশতে যাওয়া যাবে।’

কয়েক দিনের মধ্যে আগামী নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করা হবে জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আগামী দিনে বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহার হবে এ দেশের মানুষের মুক্তির সনদ, গণতন্ত্রের মুক্তির সনদ, বাংলাদেশের অধিকার বাস্তবায়নের সনদ।

আজ শনিবার সালাহউদ্দিন আহমদ চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল, কাকারা ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি অন্তত আটটি পথসভায় বক্তব্য দেন। এসব পথসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা, চকরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল হক, সাধারণ সম্পাদক এম মোবারক আলী। বিকেল চারটার দিকে তিনি ২০১৩ সালে নিহত ছাত্রদল কর্মী মোহাম্মদ মিজানের কবর জিয়ারত করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানবাধিকার রক্ষা প্রতিদিনের জন্য অপরিহার্য: তারেক
  • খালেদা জিয়া: কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে আপসহীন নাম
  • ‘একজন ভালো আর সবাই খারাপ’- আ. লীগ আমলের এই প্রচার এখনো চলছে: তারেক রহমান
  • জনমানসের পরিবর্তন একক কারণে নয়
  • তাদের দেশের মানুষ ১৯৭১ সালেই দেখেছে: তারেক রহমান 
  • রাজনৈতিক চাহিদা থাকলে আইন দিয়ে অবৈধ আয় বন্ধ হবে না: ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ
  • গণতন্ত্রের স্বার্থে জাপাকে নির্বাচনের সুযোগ দিতে হবে: জি এম কাদের
  • বেগম জিয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছিলেন:টুকু
  • শেখ হাসিনা দেশে বাকশাল কায়েম করেছিলেন: সালাহউদ্দিন আহমদ