মুন্সিগঞ্জ ও পটুয়াখালীতে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ, মশালমিছিল
Published: 9th, December 2025 GMT
মুন্সিগঞ্জ–৩ (সদর–গজারিয়া) ও পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মশালমিছিল করেছেন মনোনয়নবঞ্চিত নেতার অনুসারীরা।
আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মুন্সিগঞ্জ শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. মহিউদ্দিন আহমেদের সমর্থকেরা। এতে মুন্সিগঞ্জ ও মিরকাদিম পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ড ও সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের হাজারো নেতা–কর্মী অংশ নেন।
অন্যদিকে সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে থেকে মশালমিছিল শুরু করে পৌরসভার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অনুসারী নেতা–কর্মীরা।
৪ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ৩৬টি আসনে বিএনপির প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে বিএনপির কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক মো.
এখানে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. মহিউদ্দিন। মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে তাঁর সমর্থকেরা প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ করে আসছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, আজ দুপুরের পর থেকে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনের সড়কে বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে জড়ো হন মহিউদ্দিন আহমেদের সমর্থকেরা। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে পুরো সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল চারটার দিকে নেতা–কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি শহরের সুপার মার্কেট, জুবলী সড়ক, পুরাতন কাছারি এলাকা ঘুরে আবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
বিক্ষোভকারী নেতা–কর্মীদের অভিযোগ, দীর্ঘ ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে জেলায় বিএনপিকে সংগঠিত করে রেখেছে মহিউদ্দিনের পরিবার। মহিউদ্দিন ও তাঁর বড় ভাই আবদুল হাইয়ের নেতৃত্বে আন্দোলন ও সংগ্রাম করেছেন। গত ১৭ বছর তাঁরা দুই ভাই অসংখ্য হামলা–মামলার শিকার হয়েছেন। আবদুল হাই অসুস্থ হওয়ার পর মহিউদ্দিন একাই দলের সব কার্যক্রম চালিয়ে নিয়ে গেছেন। জেল–জুলুমের পরও দল ছাড়েননি। কিন্তু মনোনয়ন পাওয়া কামরুজ্জামানকে দেখা যায়নি। কিন্তু নেতা–কর্মীদের মতামতের মূল্যায়ন না করে তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এখানে প্রার্থী পরিবর্তন করে মহিউদ্দিনকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আতোয়ার হোসেন, সাহাদাত হোসেন সরকার, কাজী আবু সুফিয়ান, পঞ্চসার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুল মতিন, মিরকাদিম পৌর বিএনপির সভাপতি জসিমউদ্দীন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাউফলে মশালমিছিলবাউফলে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে একাংশের নেতা–কর্মীদের মশালমিছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাউফল প্রেসক্লাবের সামনের সড়কেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র প র র থ র স মন ব উফল
এছাড়াও পড়ুন:
জামায়াতের মিষ্টি কথার আড়ালে কী আছে, আল্লাহ জানে: নাসীরুদ্দীন
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, দেশের রাজনীতিতে ‘চেতনার ব্যবসায়ীরা’ নতুন রূপে আবির্ভূত হয়েছে। তিনি বিএনপিকে ইঙ্গিত করে অভিযোগ করেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নতুন চেতনার ব্যবসাদার হাজির হয়েছে আর জামায়াতে ইসলামী গণ–অভ্যুত্থানের চেতনাকে ব্যবহার করে ধর্ম ব্যবসা শুরু করেছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর পরীবাগে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় যুব শক্তির জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলন–২০২৫–এ অংশ নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এ কথা বলেন।
নাসীরুদ্দীন বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ব্যবসা করেছিল। এখন নতুন চেতনার ব্যবসাদার হাজির হয়েছে আমাদের সামনে। আমরা তাদের উদ্দেশ্য বলব, বাংলাদেশে চেতনা দিয়ে পলিটিকস হয় না।’
জামায়াতে ইসলামীর প্রসঙ্গে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আরেকটা নতুন দলের এখন পাখনা গজাইছে—জামায়াত ইসলামী। গণ–অভ্যুত্থানের এখন নতুন চেতনার কথা বলে তারা নতুন ধর্ম ব্যবসা করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।’
জামায়াতে ইসলামীকে ‘ভণ্ডামি’ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘যদি রাজনীতি করতে চান, সোজা পথে আসুন। তাদের মিষ্টি মিষ্টি কথার আড়ালে কী আছে, সেটা তো আল্লাহ জানে।...পাকিস্তানেও এ ধরনের জামায়াতে ইসলামীর একটি পাখা গজায়ছিল। একটি আসনও তারা পায়নি।’
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতি হয়েছে দাবি করে এনসিপির এই নেতা বলেন, কয়েক দিন আগে তারা (বিএনপি) বলল যে তারা নাকি বাংলাদেশে দুর্নীতি হলে শেষ করবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় একটি জোকারি হয়েছে এটি।
এনসিপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘এ গণ–অভ্যুত্থানের পর জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি গণ–অভ্যুত্থানের নেতাদের (নির্বাচন) আসনের লোভ দেখিয়ে কিনতে চেয়েছিল। আমরা বলেছিলাম, নব্বইয়ের ছাত্রনেতারা বিক্রি হয়েছে, চব্বিশের কোনো ছাত্রনেতা ইনশা আল্লাহ, বিক্রি হবে না হবে না হবে না হবে না।...আমরা কোনো শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি করার জন্য পলিটিকসে নামি নাই। আমরা কোনো চেতনা ব্যবসা করতে চাই না।’
রাজনৈতিক দলগুলো যদি এক হয়ে জাতীয় সরকার গঠন করতে পারত, তাহলে নতুন সংবিধান রচনার মাধ্যমে দেশকে দুর্নীতির বলয় থেকে বের করে আনা সম্ভব হতো বলে মনে করেন নাসীরুদ্দীন। তাঁর অভিযোগ, অতীতে বিএনপি, জামায়াত ও অন্য রাজনৈতিক শক্তির ব্যর্থতার কারণেই রাষ্ট্র এক–এগারোর মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল এবং তরুণেরা ব্যাপক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন।
প্রতিনিধি সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আকতার হোসেন, যুব শক্তির আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম, সদস্যসচিব জাহেদুল ইসলাম, মুখ্য সংগঠক ফরহাদ সোহেল, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদা বুশরা ও জাতীয় যুব শক্তির জ্যেষ্ঠ সংগঠক ইয়াসিন আরাফাত।