গৃহকর্মী নিয়োগের আগে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।

মঙ্গলবার রাতে ডিএমপির এক বিজ্ঞপ্তিতে এই অনুরোধ জানান তিনি।

আরো পড়ুন:

সিলেটে পুলিশ কর্মকর্তাকে ছুরিকাঘাত: ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

পুলিশের ঊর্ধ্বতন ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিরাপত্তার স্বার্থে গৃহকর্মী নিয়োগের পূর্বে তার জাতীয় পরিচয়পত্র, এক কপি সম্প্রতি তোলা পাসপোর্ট আকারের ছবি ও তার পরিচয় নিশ্চিতের জন্য কমপক্ষে দুজন সনাক্তকারীর নাম-ঠিকানা সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য নগরবাসীকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন ডিএমপি কমিশনার।

ভাড়াটিয়া নিবন্ধন ফর্ম যথাযথভাবে পূরণ পূর্বক নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহে পুলিশকে সহযোগিতার জন্যও অনুরোধ করেন তিনি।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত সোমবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গৃহকর্মী কর্তৃক চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনের একটি ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এছাড়া, গৃহকর্মী কর্তৃক অনেক সময় মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও নতুন নয়। 

নগরবাসী একটু সচেতন হলে এরূপ অপরাধ প্রতিরোধ করা অনেকাংশে সম্ভব বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ হকর ম কর ত ক অন র ধ ড এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সমাধান বের করতে হবে

ঢাকার সাত কলেজকে একীভূত করে বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা করা হলেও প্রস্তাবিত কাঠামো নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক স্তরের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকায় নতুন সংকট তৈরি হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের কারণে গতকাল সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। কলেজগুলোতেও ক্লাস-পরীক্ষাসহ শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ত্রিমুখী আন্দোলনে সংকট নতুন মাত্রা পেয়েছে। অচলাবস্থা নিরসনে সরকারের যৌক্তিক ও বিচক্ষণ পদক্ষেপ জরুরি বলে আমরা মনে করি।

ব্যক্তিবিশেষের ইচ্ছা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই ঢাকার সাত কলেজকে ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এই অবিমৃশ্যকারী সিদ্ধান্তেই সংকটের সৃষ্টি। পরীক্ষা, ক্লাসসহ নানা বিষয়ে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের গত আট বছরে অসংখ্য আন্দোলন করতে হয়েছে। ফলে কয়েকটি শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন দীর্ঘায়িত হয়েছে। আন্দোলনে গুরুতর আহত হয়েছেন অনেকে। এসব আন্দোলনে সড়ক বন্ধ থাকায় দিনের পর দিন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে নগরবাসীকে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত জানুয়ারি মাসে সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পৃথক করা হয়। স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় কাঠামো কেমন হবে, তার রূপরেখা প্রণয়নে কমিটি করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, সাত কলেজকে একীভূত করে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ প্রস্তাবিত কাঠামোর পক্ষে-বিপক্ষে অন্তত পাঁচটি পক্ষ হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ দ্রুত জারির দাবিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা গতকাল দ্বিতীয়বারের মতো শিক্ষা ভবনের সামনে সড়ক অবরোধ করেন। 

অন্যদিকে রোববার কলেজের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার দাবিতে ঢাকা কলেজসহ একাধিক কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন। স্কুলিং মডেল বাতিল ও একাদশের স্বতন্ত্র কাঠামো বহাল রাখার দাবিতে শিক্ষার্থীদের একাংশ আন্দোলন করছেন। এ ছাড়া ইডেন মহিলা কলেজকে কেবল নারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা ও প্রস্তাবিত কাঠামোর বিরোধিতা করে আন্দোলন করছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা।

প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির স্কুলিং মডেল বাতিল এবং স্বাতন্ত্র্য কাঠামো অক্ষুণ্ন রেখে একাডেমিক-প্রশাসনিক পদে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে অধ্যাদেশ জারির দাবিতে শিক্ষকেরা মানববন্ধন, কর্মবিরতিসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন। 

সব মিলিয়ে ঢাকার সাত কলেজকেন্দ্রিক সংকট জটিল আকার ধারণ করেছে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পরস্পর বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিষ্কার করে বলতে পারছে না নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ তারা কবে ঘোষণা করতে পারবে। আমরা মনে করি, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত হওয়ার আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নতুন করে সংকট ডেকে এনেছে।

সাত কলেজের প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী, সাত হাজার শিক্ষক ও কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্বার্থেই এই সংকটের সমাধান জরুরি। এটা সত্যি যে দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত সমস্যার সমাধান এক দিনেই হবে না। কিন্তু শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নানা পক্ষ যদি নিজ নিজ দাবিতে অনড় থাকে, তাহলে কোনো যৌক্তিক সমাধান আসবে না। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে, সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবশ্যই শিক্ষাবিদ, সাত কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত সমাধানের পথ বের করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সমাধান বের করতে হবে