ইইউ প্রতিনিধিদের কাছে ইসিকে নিয়ে অসন্তোষ জানালেন জি এম কাদের
Published: 9th, December 2025 GMT
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি প্রতিনিধিদল ও জাতীয় পার্টির একাংশের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফার্স্ট সেক্রেটারি সেবাস্তিয়ান রিগার ব্রাউন এবং ডেপুটি হেড অব ডেলিগেশন বাইবা জারিনার নেতৃত্বে এ বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান জি এম কাদের সাংবাদিকদের জানান, নির্বাচন কমিশনের আচরণ নিয়ে তাঁরা ইইউর কাছে স্পষ্ট অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার তাদের কর্মকাণ্ডে নিজেরাই প্রমাণ করেছে যে তারা নিরপেক্ষ নয়। তাদের নিয়োগ করা নির্বাচন কমিশনও নিরপেক্ষ নয় বলে আমরা মনে করি।’
জি এম কাদের অভিযোগ করেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন অন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করলেও জাতীয় পার্টিকে কোনো নির্বাচন-সংক্রান্ত বৈঠকে আমন্ত্রণ জানায়নি।
জি এম কাদের বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করা প্রমাণ করে যে সবার জন্য সমান সুযোগ বা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি। সারা দেশে অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি।
জাতীয় পার্টি এ অবস্থান ইইউ প্রতিনিধিদের কাছে তুলে ধরেছে।
বৈঠকে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী এবং চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহফুজুর রহমান।
ইইউ প্রতিনিধিদল জাতীয় পার্টির বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনে এবং আসন্ন নির্বাচনী পরিবেশ সম্পর্কে দলের মূল্যায়ন জানতে চায় বলে বৈঠক-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এম ক দ র
এছাড়াও পড়ুন:
ইরাক যুদ্ধে ভূমিকার কারণে গাজা ‘পিস বোর্ডে’ রাখা হচ্ছে না টনি ব্লেয়ারকে
ফিলিস্তিনের গাজার অন্তর্বর্তী প্রশাসনের ওপর তদারকির দায়িত্ব পেতে যাওয়া ‘বোর্ড অব পিস’-এ রাখা হচ্ছে না যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারকে। ইরাক যুদ্ধে তাঁর ভূমিকার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সূত্রের বরাতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ১০ অক্টোবর থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ চলছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী—যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে উপত্যকাটি অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর তদারকি করবে ‘বোর্ড অব পিস’ নামের একটি কমিটি। ট্রাম্পের পছন্দেই এই কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পাওয়ার কথা ছিল ৭২ বছর বয়সী ব্লেয়ারের।
তবে এ নিয়ে আপত্তি তোলে কয়েকটি আরব দেশ। কারণ, ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল যুক্তরাজ্যও। তখন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ব্লেয়ার। এ বিষয়ে জানাশোনা আছে এমন সূত্রের বরাতে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী বোর্ড অব পিসে টনি ব্লেয়ার থাকছেন। তবে তিনি অন্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন।
সূত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইসরায়েলও বোর্ড অব পিসে ব্লেয়ারকে চায়। তবে আরব ও মুসলিম দেশগুলোর আপত্তি রয়েছে। ওই দেশগুলোর নাম উল্লেখ করেনি সূত্র। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে মিসরে ব্লেয়ারের সফরের কথা উঠলে ব্যাপক প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন দেশটির সাধারণ মানুষজন ও রাজনীতিকেরা।
মিসরের সাবেক মন্ত্রী কামাল আবু এইতা সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ আরবকে বলেন, ‘ঔপনিবেশিক ঐতিহ্যের সঙ্গে শক্তভাবে জড়িয়ে আছেন এমন একজন ব্যক্তি—টনি ব্লেয়ারকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে আমরা বিশ্বাস করি না। গাজায় যেকোনো ধরনের দখলদারির বিরুদ্ধে মিসরীয়রা। এই ভূখণ্ড শুধু স্থানীয় মানুষদের মাধ্যমেই শাসিত হবে।’
ইরাক থেকে সাদ্দাম হোসেনকে সরানোর অভিযানে যুক্তরাজ্যের অংশগ্রহণের প্রতিবাদে ২০০৩ সালে মিসরের রাজধানী কায়রো, জর্ডানের রাজধানী আম্মান ও লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল। যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনেও প্রতিবাদ জানাতে সড়কে নেমেছিল মানুষ। এর জেরে সে সময় ব্লেয়ারের জনপ্রিয়তায় ব্যাপক ধস নেমেছিল।
২০০৭ সালে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান টনি ব্লেয়ার। এরপর ‘কোয়ারটেট’ নামে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর প্রতিনিধি হন তিনি। ওই গোষ্ঠী ফিলিস্তিন-ইসরায়েল শান্তিপ্রক্রিয়া নজরদারির দায়িত্বে রয়েছে। ২০১৫ সাল পর্যন্ত কোয়ারটেটের প্রতিনিধি ছিলেন ব্লেয়ার। এই কাজে তিনি ইসরায়েলের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট ছিলেন বলে অভিযোগ এনেছিলেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুনগাজা শাসনে ব্লেয়ারের কেন এত আগ্রহ০৯ অক্টোবর ২০২৫আরও পড়ুনইরাক যুদ্ধে 'ভুলের' জন্য ব্লেয়ারের দুঃখ প্রকাশ২৫ অক্টোবর ২০১৫