2025-11-12@03:28:52 GMT
إجمالي نتائج البحث: 327

«ম ইবন»:

    মানুষের শরীরে একটা ছোট্ট অঙ্গ আছে, যাকে বলি হৃদয়। ইসলামে এটাকে বলা হয় কল্‌ব। কিন্তু ইসলাম অনুসারে এটা শুধু রক্ত সঞ্চালন করা যন্ত্র নয়, বরং আত্মার কেন্দ্র, ইমানের আধার, সব আমলের উৎস। হৃদয় দিয়ে ভালো হলে সারা জীবন ভালো হয়, খারাপ হলে সবকিছু নষ্ট হয়।আল্লাহ বলেছেন: ‘সেই দিন কোনো সম্পদ বা সন্তান কাজে আসবে না, শুধু সে ছাড়া যে আল্লাহর কাছে পৌঁছবে পরিচ্ছন্ন হৃদয় নিয়ে।’ (সুরা শুয়ারা, আয়াত: ৮৮-৮৯)এই আয়াত যেন বলে, কেয়ামতের দিন হৃদয়ই সবচেয়ে বড় সম্বল। আজকের এই লেখায় আমরা দেখব, ইসলামে হৃদয়ের কী মর্যাদা, অন্তরের আমল কী, তার রোগ কী, আর কীভাবে পরিষ্কার রাখব। পড়তে পড়তে মনে হবে, যেন নিজের হৃদয়কে আয়নায় দেখছি।শোনো, শরীরে একটা মাংসপিণ্ড আছে, সেটা ভালো হলে সারা শরীর ভালো হয়, খারাপ হলে সব...
    বর্তমানে সারা বিশ্বে পানিতে ডিটারজেন্ট দূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিবছর সারা বিশ্বে প্রায় ১ হাজার ২২০ কোটি লিটার ডিটারজেন্ট ব্যবহৃত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, এর মধ্যে শুধু ২৫-৩০ শতাংশ পানি পরিশোধিত হয়। এ সমস্যা সমাধানে দুই খুদে বিজ্ঞান আরীব বিন ফারুক ও সাইম ইবনে সারোয়ার ‘দ্য সল্টিং আউট সিস্টেম ২.০’ প্রকল্প বানিয়েছে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ডিটারজেন্ট ও তেলের কারণে দূষিত পানিকে লবণাক্ত হলেও পরিষ্কার পানিতে পরিণত করা। এই পানি পরে শিল্প ও কৃষি খাতে ব্যবহার করা সম্ভব।আরীব ও সাইমের নকশা করা পদ্ধতিতে বিশেষ ধরনের লবণ পানিতে দ্রবীভূত করে দূষণকারী উপাদান, যেমন তেল ও ডিটারজেন্টকে কার্যকরভাবে পৃথক করা হয়। উচ্চমাত্রায় আয়নিত লবণ পানিতে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মতো কাজ করে ডিটারজেন্ট, তেল ও প্রোটিনের মতো পদার্থকে অদ্রবণীয় করে তোলে। এর ফলে পানি...
    আল্লাহর নবী হজরত আদম (আ.) মানবজাতির প্রথম পিতা, যাঁর সৃষ্টির মাধ্যমে আল্লাহ-তাআলা পৃথিবীতে মানুষকে প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত করেন। কোরআনে বর্ণিত আছে, আল্লাহ ফেরেশতাদের বলেছিলেন, ‘আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি সৃষ্টি করতে যাচ্ছি।’ (সুরা বাকারা, ৩০)মানবসভ্যতার প্রথম অধ্যায় তাই শুরু হয় আদম (আ.)-এর অবতরণ থেকেই। ইসলামি ঐতিহ্য অনুসারে, তাঁর জীবনের সূচনা জান্নাতে এবং অবতরণ পৃথিবীতে। পরে সেই পৃথিবীতেই তাঁর বংশধরেরা ছড়িয়ে পড়ে এবং গড়ে ওঠে মানবসমাজের প্রথম ভিত্তি।আদম (আ.) ও তাঁর স্ত্রী হাওয়া (আ.) পৃথিবীতে অবতরণের পর আল্লাহ তাঁদের সন্তান দান করেন। পবিত্র কোরআনে সন্তানদের সংখ্যা উল্লেখ নেই, তবে ইসলামি ইতিহাসবিদ ইমাম ইবনে কাসির উল্লেখ করেন, হাওয়া (আ.)-এর প্রতি গর্ভে এক পুত্র ও এক কন্যা জন্ম নিত।এভাবে মোট চল্লিশটি যুগল সন্তান পৃথিবীতে এসেছিল। সেই হিসাবে আদম (আ.)-এর সন্তানের সংখ্যা প্রায় ৮০। ইমাম...
    ইসলামি সমাজে নারী কখনো পিছিয়ে থাকেনি। পুরুষের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে নারী এগিয়েছে সব ক্ষেত্রে—আলেমা হিসেবে, মুহাদ্দিসা হিসেবে, কবি-সাহিত্যিক হিসেবেও তাঁরা ছিলেন উজ্জ্বল। আর সেবামূলক কাজে তো তাঁরা রীতিমতো প্রতিযোগিতাই করেছেন।ওয়াক্‌ফ, অর্থাৎ সম্পদকে ব্যক্তিগত ব্যবহার থেকে আলাদা করে স্থায়ীভাবে সেবামূলক কাজে লাগানো, এতে নারীদের ভূমিকা ছিল অসাধারণ।ইসলামি সভ্যতার উন্নয়ন, সমাজকল্যাণ, অর্থনীতি, ধর্মীয় জীবন—সবকিছুতে নারীর ওয়াক্‌ফের ভূমিকা রয়েছে। প্রথম যুগে এটা সীমিত ছিল, যদিও ফকিহরা নারীকে ওয়াক্‌ফকারী ও তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে পুরোপুরি অনুমোদন দিয়েছেন।উম্মুল মুমিনিন হাফসা (রা.) প্রথম ওয়াক্‌ফ ব্যবস্থার সূচনা করেন। খলিফা ওমর (রা.) মৃত্যুর আগে তাঁকে কিছু ওয়াক্‌ফের দায়িত্ব দেন। আব্বাসি যুগে হারুন রশিদের স্ত্রী যুবাইদা ছিলেন এ ক্ষেত্রে বিখ্যাত।উম্মুল মুমিনিন হাফসা (রা.) প্রথম ওয়াক্‌ফ ব্যবস্থার সূচনা করেন। খলিফা ওমর (রা.) মৃত্যুর আগে তাঁকে কিছু ওয়াক্‌ফের দায়িত্ব দেন। আব্বাসি যুগে হারুন...
    প্রিয় মানুষের কথা মনে পড়লে চোখ ভিজে আসে। প্রিয় বইয়ের পাতা উল্টালে মন ভালো হয়ে যায়। ভালোবাসা এমনই—যা ভালোবাসি, তার সঙ্গে সময় কাটাতে চাই, তার কথা শুনতে চাই, তাকে জানতে চাই।আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনের সবচেয়ে বড় ভালোবাসা ছিল কোরআন। এটা কোনো বাড়িয়ে বলা কথা নয়—তাঁর পুরো জীবনই এর সাক্ষী।রাতের নামাজে কান্নাভেজা কণ্ঠ রাত যখন গভীর হতো, মানুষ যখন ঘুমে আচ্ছন্ন থাকত, তখন নবীজি (সা.) উঠে দাঁড়াতেন নামাজে। শুধু দাঁড়াতেন না—দীর্ঘ সময় ধরে কোরআন পড়তেন, এত ধীরে, এত গভীরভাবে যে পা ফুলে যেত।কখনো একটি আয়াত পড়তে পড়তে থেমে যেতেন। সেই আয়াত নিয়ে ভাবতেন, কাঁদতেন, বারবার পড়তেন। তাঁর দাড়ি ভিজে যেত অশ্রুতে। সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪৭৬৩কখনো একটি আয়াত পড়তে পড়তে থেমে যেতেন। সেই আয়াত নিয়ে ভাবতেন, কাঁদতেন, বারবার পড়তেন। তাঁর...
    “মোহরে ফাতেমি” মুসলিম বিবাহে একটি বহুল আলোচিত ধারণা, যাকে মূলত নারীর অধিকার, সম্মান ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতীক বলা যায়।‘মোহর’ বা ‘মাহর’ শব্দটি আরবি “মাহর” থেকে এসেছে, যার অর্থ, স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে নির্ধারিত অর্থ বা সম্পদ, যা বিবাহের অধিকার হিসেবে বাধ্যতামূলকভাবে প্রদান করতে হয়।‘মোহরে ফাতেমি’ বলতে বোঝানো হয় সেই পরিমাণ মাহর, যা নবীজি (স.) তাঁর কন্যা ফাতিমা (রা.)-এর বিয়েতে নির্ধারণ করেছিলেন। এটি মুসলিম ইতিহাসে আদর্শ মাহরের মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয়।মোহরে ফাতেমির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটরাসুলুল্লাহ (স.)-এর কন্যা ফাতিমা (রা.)-এর বিয়ে হয়েছিল আলী ইবনে আবি তালিব (রা.)-এর সঙ্গে। এই বিয়েতে নবীজি (স.) যে পরিমাণ মোহর নির্ধারণ করেছিলেন, সেটিই পরে “মোহরে ফাতেমি” নামে পরিচিত হয়।ইমাম বায়হাকি ও ইবনে মাজাহ-এর বর্ণনা অনুযায়ী, মোহরে ফাতেমি ছিল ৫০০ দিরহাম রূপা (প্রায় ১.৫ কেজি রূপা)। (সুনান ইবনে...
    আমাদের এই পৃথিবীতে মানবজাতির ইতিহাস শুরু হয়েছিল নবী হজরত আদম (আ.)-এর মাধ্যমে। আল্লাহ তায়ালা যখন ফেরেশতাদের উদ্দেশে ঘোষণা করলেন, ‘আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি সৃষ্টি করতে যাচ্ছি,’ তখনই মূলত সূচনা ঘটে মানব ইতিহাসের। ফেরেশতারা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘আপনি কি এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন, যে সেখানে ঝগড়া-ফাসাদ ও রক্তপাত ঘটাবে?’আল্লাহ তায়ালা তখন বলেন, ‘আমি যা জানি তোমরা তা জানো না।’ (সুরা বাকারা, ৩০-৩৪)কোরআনে উল্লেখ আছে, আল্লাহ তাঁকে সৃষ্টি করেছেন ‘শুষ্ক কাদামাটি থেকে, যা রূপান্তরিত হয়েছিল কালচে শুকনো মাটিতে।’ (সুরা হিজর, ২৬)আল্লাহ নিজ হাতে আদম (আ.)-এর অবয়ব তৈরি করেন, তাতে প্রাণ ফুঁকে দেন এবং ফেরেশতাদের আদেশ করেন তাকে সেজদা করতে।আল্লাহ নিজ হাতে আদম (আ.)-এর অবয়ব তৈরি করেন, তাতে প্রাণ ফুঁকে দেন এবং ফেরেশতাদের আদেশ করেন তাকে সেজদা করতে। সকল ফেরেশতা তাকে সেজদা...
    ইতিহাসের পরিক্রমায় এমন কিছু শহর আছে যেগুলো শুধু ভৌগোলিক স্থান নয়, বরং মানবসভ্যতার নৈতিক দিকনির্দেশক হয়ে উঠেছে। সপ্তম শতাব্দীর মদিনাতুন নবী বা মদিনা মুনাওয়ারা এমনই এক শহর, যেখানে আল্লাহর রাসুল হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলামি সভ্যতা ও রাষ্ট্রব্যবস্থার বাস্তব ভিত্তি স্থাপন করেন। মক্কায় তেরো বছরব্যাপী দাওয়াত, নির্যাতন ও সামাজিক বয়কটের পর যখন তিনি হিজরত করে ইয়াসরিবে (মদিনা) আগমন করেন, তখন ইসলামের রূপ আর শুধু একটি আধ্যাত্মিক আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকল না; বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থার বাস্তব রূপরেখা লাভ করল। হিজরতের প্রেক্ষাপট মক্কায় মুসলমানরা চরম নির্যাতনের শিকার হচ্ছিল। তৎকালীন কুরাইশদের অন্যায় আচরণ, অর্থনৈতিক অবরোধ ও ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবিদের নিয়ে ইয়াসরিবে হিজরতের নির্দেশ দেন। আনসার গোত্রের প্রতিনিধি দল আকাবায় আল্লাহর রাসুলের...
    মুসলিম সভ্যতার ইতিহাসে প্রায়ই বিজ্ঞান, স্থাপত্য বা শাসনব্যবস্থার কথা আলোচিত হয়। কিন্তু এর মানবিক দিক অধরা রয়ে যায়। বিশেষ করে দরিদ্রদের প্রতি দয়া ও চিকিৎসাসেবার গল্প আড়ালে রয়ে গেছে সব সময়।মুসলিম সভ্যতায় কীভাবে দরিদ্র ও অসুস্থদের জন্য বিনা মূল্যে চিকিৎসা, আশ্রয় এবং মানসিক সান্ত্বনার ব্যবস্থা করা হয়েছিল, তা এক অপূর্ব কাহিনি।বিমারিস্তান: দরিদ্রদের জন্য চিকিৎসার আশ্রয় মুসলিম সভ্যতায় দরিদ্রদের চিকিৎসাসেবায় ‘বিমারিস্তান’ নামের হাসপাতাল ছিল একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। এগুলো শুধু চিকিৎসার জায়গা ছিল না, বরং দরিদ্রদের জন্য বিনা মূল্যে আশ্রয়, খাদ্য ও যত্নের ব্যবস্থা ছিল। বেশির ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত নগরে, বিশেষ করে বড় রাজধানীগুলোতে বিমারিস্তান ছিল। দামেস্কে বিমারিস্তানের নাম ছিল ‘নুরি’, বাগদাদে ‘আদুদি’।প্রতিটি অন্ধ বৃদ্ধের জন্য এমন একজন সাহায্যকারী নিয়োগ কর, যে তাকে অত্যাচার বা অবহেলা না করে।খলিফা উমর ইবন আবদুল আজিজ...
    মুসলিম মনন ও মনীষার ইতিহাসে যে কয়েকজন মনীষী আপন প্রতিভার দ্যুতিতে স্বতন্ত্র এক জগৎ নির্মাণ করেছেন, ইমাম আবু জাফর মুহাম্মদ ইবন জারির আত-তাবারি (২২৪-৩১০ হিজরি) তাঁদের মধ্যে অবিস্মরণীয়।তাঁর পূর্ণ নাম মুহাম্মদ ইবন জারির ইবন ইয়াযিদ ইবন কাসির ইবনে গালিব। তিনি ছিলেন একাধারে কোরআনের এক অবিসংবাদিত ভাষ্যকার, নিপুণ ইতিহাসবিদ এবং প্রাজ্ঞ ফকিহ। তাঁকে ‘ইমামুল মুফাসসিরিন’ বা মুফাসসিরদের ইমাম উপাধিতে ভূষিত করা হয়।২২৪ হিজরি সনে তাবারিস্তানের উর্বর ভূমিতে ইমাম তাবারির জন্ম। শৈশব থেকেই তাঁর মধ্যে আশ্চর্য মেধা ও প্রতিভার স্ফুরণ ঘটে। তাঁর পিতা আল্লাহপ্রদত্ত এই গুণ বুঝতে পেরে শৈশব থেকেই জ্ঞানের পথে তাঁকে পরিচালিত করেন। পুত্রের পড়াশোনা, ভ্রমণ ও গবেষণায় পূর্ণ মনোযোগ নিশ্চিত করতে নিজের জমির আয় পর্যন্ত উৎসর্গ করেছিলেন।ধীরে ধীরে তিনি আরও প্রাজ্ঞ হয়ে ওঠেন। নিজস্ব ইজতিহাদ তাঁকে স্বতন্ত্র পথে চালিত...
    রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে সায়মা হোসাইনের মৃত্যুর ঘটনাকে ‘অবহেলাজনিত হত্যা’ অভিযোগ করে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে তাঁরা প্রাথমিক তদন্তের তিন দিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচারসহ চার দফা দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে কর্মসূচি পালন শেষ এ ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।তাঁদের অন্য তিনটি দাবি হলো প্রশাসন কর্তৃক সায়মার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের সংস্কার ও উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে রোডম্যাপ ঘোষণা এবং সুইমিং পুলের একটি অংশের গ্যালারি সায়মার নামে নামকরণ।সমাবেশে অংশ নিয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইবনে ফজল বলেন, ‘সায়মার মৃত্যুর সময় তিনজন প্রশিক্ষক সুইমিং পুলের ভেতরে উপস্থিত ছিলেন। তবে তাঁরা কেউ সায়মার অনুপস্থিতি লক্ষ করেননি। তাঁরা যখন বুঝতে...
    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) তহবিলের পূর্ণাঙ্গ হিসাব প্রকাশ ও বরাদ্দকৃত অর্থ হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করেন ডাকসু ও হল সংসদ নেতারা। একপর্যায়ে তাঁরা ভবনের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কক্ষে গিয়ে স্লোগান দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা ও প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদের আশ্বাসে তাঁরা ফিরে যান।আজ রোববার বেলা দুইটার দিকে ডাকসু নেতারা রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এ বি জুবায়ের, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ, পরিবহন সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহসহ বিভিন্ন হল সংসদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো, ২০১৯ সালের পর থেকে ডাকসু ও হল সংসদ ফি বাবদ...
    শিক্ষার্থীদের দেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) জন্য প্রদেয় ফান্ডের টাকা এর নেতৃবৃন্দের কাছে হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিল্ডিং ঘেরাও করা হয়েছে। রবিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে রেজিস্ট্রার বিল্ডিং ঘেরাও করে এ বিক্ষোভ করেন ডাকসু ও হল সংসদের নেতৃবৃন্দ। আরো পড়ুন: জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবিতে রংপুরে জামায়াতের বিক্ষোভ ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে ববিতে বিক্ষোভ  ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জোবায়ের, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ, পরিবহন সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহ ও বিভিন্ন হল সংসদের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ২০১৯ সালের পর থেকে ডাকসু ও হল সংসদ ফি বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা টাকা হস্তান্তর ও ডাকসুর অতীতের সব ফান্ডের পূর্ণাঙ্গ হিসাব...
    বরকত শব্দটির আরবি ‘বারাকাহ’। এর অর্থ ‘আশীর্বাদ’, ‘প্রাচুর্য’ বা ‘কল্যাণ বৃদ্ধি’। এর দ্বারা বোঝানো হয় আল্লাহর পক্ষ থেকে কোনো কিছুতে বরকত বা কল্যাণ দেওয়া, যা অল্প সময়েই অধিক ফল দেয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়। এটি আধ্যাত্মিক শক্তি ও সমৃদ্ধির একটি ধারণা; যা জীবন, সম্পদ, স্বাস্থ্য বা সময়ের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে হতে পারে।অল্প চেষ্টায় কোনো কিছু লাভ করা বা দীর্ঘ সময় ধরে কোনো কিছু অটুট থাকলে তাকেও বরকত বলা হয়।জীবনে উন্নতি ও শান্তির জন্য অনেকেই কঠোর পরিশ্রম করেন, বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেন। তবু মনে হয় ঘরে যেন কোনো বরকত নেই, বরকত পাওয়া যাচ্ছেই না। আয়ে, শান্তিতে, এমনকি ভালো কাজেও কোনো ফল আসছে না। তখন তাঁরা ভীষণ দুঃখিত ও হতাশ হয়ে পড়েন।আসলে বরকত মানে তো শুধু কঠোর পরিশ্রম করার ফল বা কোনো কিছু...
    আজকের ডিজিটাল যুগে ই–মেইল, মেসেজিং অ্যাপ আর ইন্টারনেট আমাদের যোগাযোগকে দ্রুত ও সহজ করেছে। তবু ডাকব্যবস্থা এখনো সমাজের সংযোগ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।১৮৭৪ সালে বিশ্ব ডাক সংস্থা প্রতিষ্ঠার স্মরণে প্রতিবছর ৯ অক্টোবর বিশ্ব ডাক দিবস পালিত হয়। ২০২৫ সালে এই দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘মানুষের সেবায় ডাক’। যোগাযোগের সেতু হিসেবে, উদ্ভাবনের প্রেরণা ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে ডাকব্যবস্থার গুরুত্ব ছিল সীমাহীন।ইসলামি সভ্যতায় ডাকব্যবস্থা ছিল শাসন, প্রশাসন ও জ্ঞানের আদান-প্রদানের একটি প্রধান স্তম্ভ।ডাকব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিচালনা ছিল রাষ্ট্র সুসংহত থাকার প্রতীক। যদি কোনো প্রদেশ থেকে ডাক আসা বন্ধ হতো, তা বিদ্রোহ বা অস্থিরতার লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হতো।ইসলামি সভ্যতায় ডাকব্যবস্থার ইতিহাস ইসলামি সভ্যতায় ডাকব্যবস্থা ছিল রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাঠামোর একটি মূল অংশ। এটি বিভিন্ন প্রদেশকে রাজধানীর সঙ্গে সংযুক্ত করত, খলিফার কাছে খবর...
    রাওয়ালপিন্ডিতে চলমান পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্টে আজ তৃতীয় দিনের খেলা শেষ হয়েছে একটু অদ্ভুতভাবে। দক্ষিণ আফ্রিকার কেশব মহারাজ বল করলেন, আর পাকিস্তানের ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ান সেটি কাভারের দিকে ড্রাইভ করলেন। কাভারে ফিল্ডার ছিলেন, রান নেওয়ার সুযোগ ছিল না। রিজওয়ান চেষ্টাও করেননি।অদ্ভুত ঘটনা ঘটে এরপরই। বল খেলেই রিজওয়ান ঘুরে দাঁড়ান এবং ইচ্ছাকৃতভাবেই ব্যাট দিয়ে স্টাম্পে আলতো টোকা মেরে বেলস ফেলে দেন। তাৎক্ষণিকভাবে আম্পায়ারের কাছে ‘হিট উইকেটের’ আবেদন করেন দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটকিপার কাইল ভেরেইনা। কিন্তু আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ তাতে সাড়া দেননি। বরং হেসে ইশারায় আপিল থামিয়ে দেন। স্কয়ার লেগে থাকা আম্পায়ার ক্রিস ব্রাউনও এ বিষয়ে কোনো ভূমিকা নেননি।দক্ষিণ আফ্রিকানদের আউটের আবেদনের কারণ ছিল যথেষ্টই। রিজওয়ানের ব্যাট হয়ে বল গেছে কাভারের দিকে। সেখান থেকে ফিল্ডার তখনো বল ফেরত পাঠাননি। আম্পায়ারও বেলস ফেলে খেলার...
    মুসলিম সভ্যতার স্থাপত্য শুধু মসজিদ, মাদরাসা বা প্রাসাদের গল্প নয়, সাধারণ মানুষের বাড়িঘরের গল্পও এখানে অনেক। ঘরবাড়ির স্থাপত্য নকশা ছিল তাদের জীবন, সংস্কৃতি আর অর্থনৈতিক অবস্থার প্রতিফলন। মুসলিম শহরগুলোর পুরোনো মহল্লায় হাঁটলে আজও সেই স্থাপত্যের জৌলুশ চোখে পড়ে।এই লেখায় আমরা সাধারণ ও মধ্যবিত্ত মানুষের বাড়ির নকশা, নির্মাণশৈলী আর তাদের জীবনযাত্রার ছোঁয়া নিয়ে আলোচনা করব। প্রাসাদ বা দুর্গের গল্প এড়িয়ে আমরা সাধারণ মানুষের ঘরের গল্পে প্রবেশ করব—তাদের দরজা থেকে ছাদ, ঘর থেকে সুবিধা এবং আলো ও শীতলতার ব্যবস্থা পর্যন্ত দেখার চেষ্টা করব।সাধারণ জীবনের স্থাপত্য ইসলামের প্রথম দিনগুলোতে আরবের বেদুইন অঞ্চলে বাড়ি বলতে ছিল তাঁবু, চামড়ার বিস্তার বা খেজুরপাতার ছাউনি। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের জন্য তোমাদের ঘরকে শান্তির আশ্রয় করেছেন এবং পশুর চামড়া থেকে ঘর তৈরি করেছেন।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৮০)মক্কা...
    কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে রবিবার (১৯ অক্টোবর) নবীন বরণ অনুষ্ঠানে সংঘর্ষের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ ও র‌্যাব নগরীর বিভিন্ন স্থানে যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।  সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে র‍্যাব-১১-এর কুমিল্লা কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল্লাহ ও কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আরো পড়ুন: খুলনা কারাগারে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ বন্দীকে কাশিমপুরে প্রেরণ খুলনা কারাগারে বন্দিদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৮ পুলিশ জানায়, রবিবার দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে আধিপত্য নিয়ে তর্কাতর্কি সংঘর্ষে রূপ নিলে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। ঘটনাস্থলে চারজন শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান, অনয় দেবনাথ, মাহিন ও রিজভী গুরুতর আহত হন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে...
    শহরে প্রবেশ করেন এক মুসাফির। চিন্তার ছাপ চেহারায়। পথচারীদের সাহায্যে তিনি মসজিদে নববিতে চলে আসেন। নবীজি (সা.) মসজিদেই ছিলেন৷ সঙ্গে সাহাবিরা৷ সামনে এগিয়ে যান মুসাফির। নবীজিকে সালাম করে বিনয়ের সঙ্গে জানান, ‘অনেক দূর থেকে এসেছি। মদিনায় কেউ পরিচিত নেই। থাকারও কোনো ব্যবস্থাপত্র হয়নি। আমাকে সাহায্য করুন, আল্লাহর রাসুল!’নবীজি (সা.) তখনই সম্মানিতা স্ত্রীদের ঘরে খোঁজ লাগান—তাদের কারও ঘরে খাবার কিছু আছে কি না! একে একে সকলেই জানান, ‘ঘরে আজ খাবার কিছুই নেই!’এবার সাহাবিদের দিকে ফিরে নবীজি (সা.) বলেন, ‘কেউ কী আছ, যে আল্লাহর এই বান্দাকে মেহমান বানাতে পারবে?’নবীজির আহ্বানে এক সাহাবি দাঁড়িয়ে যান। জ্যোতির্ময় চেহারা৷ সবিনয়ে বলেন, ‘মেহমানকে আমি বাড়ি নিয়ে যাব।’এটুকু বলে তখনই বেরিয়ে পড়েন। বাড়ি গিয়ে মেহমানের কথা জানিয়ে স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেন, ‘ঘরে খাবার কিছু আছে?’পরিকল্পনা মতো হয় সবকিছু।...
    জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সংঘর্ষের ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় চারটি মামলা করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে করা এসব মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ৯০০ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান।ডিসি ইবনে মিজান প্রথম আলোকে বলেন, জাতীয় সংসদ ভবন এলাকাটি সংরক্ষিত অঞ্চল। সেখানে জোর করে ঢুকে পুলিশের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে চারটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ৯০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয় দিয়ে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে বিক্ষোভের পর সকালে প্রাচীর টপকে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন শতাধিক ব্যক্তি। পুলিশ কর্মকর্তা এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা রাত থেকে তাঁদের অনেক বোঝানোর পরও তাঁরা সরছিলেন না। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাঁদের সরিয়ে দেয়।আরও...
    নামাজ ইসলামের মূল স্তম্ভ এবং বান্দার সঙ্গে তার রবের মধ্যে সবচেয়ে গভীর সম্পর্কের মাধ্যম। এটি শুধু একটি ধর্মীয় আচার নয়, বরং আত্মার শান্তি, হৃদয়ের প্রশান্তি এবং জীবনের সঠিক পথে চলার শক্তির উৎস।রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন বান্দার প্রথম যে আমলের হিসাব নেওয়া হবে, তা হলো তার নামাজ। যদি নামাজ সঠিক হয়, তবে সে সফল ও বিজয়ী হবে। আর যদি নামাজ নষ্ট হয়, তবে সে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৪১৩)নামাজের গুরুত্ব এতটাই যে, এটি সঠিকভাবে আদায় না করলে পুরো ধর্মই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।নামাজে বান্দার সঙ্গে আল্লাহর একটি সংলাপ চলে। এটি কেবল শারীরিক ক্রিয়া নয়, বরং হৃদয় ও আত্মার সঙ্গে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের মাধ্যম।হাদিসের ঘটনা: ‘যাও, আবার নামাজ পড়ো’ আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, একদিন রাসুল (সা.) মসজিদে প্রবেশ করলেন। এমন...
    চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫টি হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচনে জয়ীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাতে হল ও হোস্টেল সংসদের পূর্ণাঙ্গ ফলাফল প্রকাশ করে রাকসু নির্বাচন কমিশন। আরো পড়ুন: চাকসুর ফলাফল: ২ জন বাদে সবাই শিবিরের চাকসু নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে: নাছির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী মিলেয়ে হল রয়েছে ১৪টি। হোেস্টেল আছে একটি। এই ১৫টিতেই নির্বাচন হয়েছে। এই ১৫ সংসদে জয়ীদের তালিকা একনজরে দেখে নেওয়া যাক। এফ রহমান হল সংসদ ভিপি- শাহরিয়ার আহমেদ সোহাগ, জিএস- তামিম চৌধুরী, এজিএস- সাইদুল ইসলাম, খেলাধুলা ও ক্রিয়া সম্পাদক- নাইমুর রহমান; সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক- জয়নুল  আবেদীন ফাহিম, দপ্তর সম্পাদক- কামরুল ইসলাম; রিডিংরুম, ডাইনিংরুম ও হল লাইব্রেরি সম্পাদক- জামাল উদ্দিন; সমাজসেবা, পরিবেশ ও মানবাধিকার সম্পাদক- শেখ মাআজ আহাম্মেদ; বিজ্ঞান, গবেষণা...
    মুসলিম জীবনের সর্বোচ্চ লক্ষ্য হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। এটি এমন একটি পথ, যা বান্দার হৃদয়ে শান্তি, আত্মায় প্রশান্তি এবং জীবনে সুখ নিয়ে আসে। প্রতিটি পদক্ষেপ যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নেওয়া হয়, তবে তা দুনিয়া ও আখেরাতে অপার সাফল্যের দ্বার খুলে দেয়।তবে এই পথে চলতে গিয়ে মানুষের সন্তুষ্টির সঙ্গে আল্লাহর সন্তুষ্টির দ্বন্দ্ব, নিজের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা এবং সমাজের চাপের মতো বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়।আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন একটি জীবনব্যাপী সাধনা। শুধু বড় বড় আমলের মাধ্যমে নয়, বরং ছোট ছোট কাজে খাঁটি নিয়তের মাধ্যমেও তা অর্জন করা যায়।আল্লাহর সন্তুষ্টি বনাম মানুষের সন্তুষ্টি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথে একজন মুসলিমকে প্রায়ই মানুষের অসন্তুষ্টির সম্মুখীন হতে হয়। এটি এমন একটি পরীক্ষা, যেখানে বান্দাকে দুনিয়ার স্বার্থ ও আখেরাতের কল্যাণের মধ্যে একটি বেছে নিতে হয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, “দুনিয়ার...
    রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে বুথ। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাত থেকেই শুরু হয়েছে বুথ প্রস্তুতের কাজ। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে বুথ স্থাপন। আরো পড়ুন: ১৭ ঘণ্টার মধ্যেই রাকসুর ফল প্রকাশ: প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাকসু: শীর্ষ তিন পদের প্রার্থীরা যেখানে ভোট দেবেন বুধবার (১৫ অক্টোবর) বেলা ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান নির্বাচন কমিশন।  মমতাজউদ্দিন একাডেমিক ভবন, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ কলাভবন, সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবন, জাবির ইবনে হাইয়ান একাডেমিক ভবন, জামাল নজরুল একাডেমিক ভবন, সত্যেন্দ্রনাথ বসু একাডেমিক ভবন, জগদীশচন্দ্র একাডেমিক ভবনের দুটি করে কেন্দ্রে এবং জুবেরী ভবনের একটি কেন্দ্রসহ মোট ১৭টি কেন্দ্রের ৯৯০টি বুথে ভোটগ্রহণ...
    কুমিল্লায় বিদেশি পিস্তলসহ দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। সংস্থাটির ভাষ্য, তাঁরা ভারত থেকে অবৈধভাবে অস্ত্র ও মাদক এনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করতেন। তাঁদের একজনের বিরুদ্ধে ১৮টি ও অন্যজনের বিরুদ্ধে সাতটি অস্ত্র, চাঁদাবাজি, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের মামলা আছে।আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব-১১-এর সিপিসি-২ কুমিল্লার কোম্পানি অধিনায়ক মেজর সাদমান ইবনে আলম এসব তথ্য জানান।গতকাল সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার ভাটকেশ্বর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও ৩টি গুলিসহ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়।গ্রেপ্তার দুজন হলেন আদর্শ সদর উপজেলার ভাটকেশ্বর গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে রিয়াদ হোসেন (২৯) ও কার্তিকপুর গ্রামের প্রয়াত মঞ্জিল মিয়ার ছেলে মামুন মিয়া (২৯)। এর মধ্যে রিয়াদের বিরুদ্ধে ১৮টি ও...
    বগুড়ার একটি রোগনির্ণয় কেন্দ্রের (ডায়াগনস্টিক সেন্টার) ভুল আলট্রাসনোগ্রাফি প্রতিবেদনের (রিপোর্ট) কারণে দ্বিতীয় দফা অ্যাপেন্ডিসাইটিসের অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন এক নারী। প্রয়োজন না থাকলেও অস্ত্রোপচার করায় তিনি শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন।শিমু আকতার নামের ওই নারী একজন স্কুলশিক্ষক ছিলেন। আজ সোমবার বগুড়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার বগুড়া শাখার ভুল প্রতিবেদন দেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না।তবে এই সংবাদ সম্মেলনকে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন করার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন ইবনে সিনা বগুড়া শাখার ব্যবস্থাপক শওকত আলী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ওই নারীর অভিযোগ নিয়ে দুই দফা তদন্ত হয়েছে। প্রথম দফা জেলা প্রশাসকের নির্দেশে মাস তিনেক আগে শহীদ জিয়াউর...
    ইসলামের আগমনের অনেক আগে, আরব উপদ্বীপে এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছিল। আজও সেটি মুসলিমদের জন্য একটি জীবন্ত স্মৃতি। এটি আবরাহা নামে এক আবিসিনিয়ার (বর্তমান ইথিওপিয়া) সেই শাসকের গল্প, যিনি ইয়েমেন শাসন করে মক্কার কাবাকে প্রতিস্থাপন করার স্বপ্ন দেখেছিলেন।আবরাহা ইয়েমেনে একটি বিশাল গির্জা তৈরি করে সেটিকে ‘নতুন কাবা’ হিসেবে ঘোষণা করেন। কিন্তু তাঁর এই উচ্চাকাঙ্ক্ষা ধুলিসাৎ হয়ে যায়, যখন আল্লাহর অলৌকিক হস্তক্ষেপে তাঁর সেনাবাহিনী ধ্বংস হয়।এই ঘটনা কোরআনের সুরা ফিলে (১০৫ নম্বর সুরা) বর্ণনা করা হয়েছে। বিখ্যাত তাফসিরকার ইবনে কাসিরের ব্যাখ্যায়ও এর বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়। আজও এই গল্প আমাদের শেখায় যে সত্যিকারের ইমানের স্থানকে কোনো মানুষীয় ক্ষমতা বা প্রাসাদ দিয়ে সরানো যায় না।আবরাহা একটি বিশাল গির্জা নির্মাণ করেন, যার নাম ‘আল-কালিস’। গির্জাটি এত উঁচু ছিল যে এর চূড়া দেখার চেষ্টায় মানুষের...
    কোরআন তিলাওয়াত করা মানে শুধু পড়ে যাওয়া নয়, যেমন অন্য যে–কোনো বই পড়া হয়, বরং এটা হল আল্লাহর সঙ্গে কথা বলার মতো একটি পবিত্র কাজ।কোরআন পড়ার ফজিলত সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোরআনের একটি অক্ষর পড়ে, তার জন্য একটি নেকি। আর প্রতিটি নেকি দশগুণ বৃদ্ধি পায়। আমি বলছি না যে ‘আলিফ লাম মীম’ একটি অক্ষর, বরং আলিফ একটি অক্ষর, লাম একটি অক্ষর, মীম একটি অক্ষর।” (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২৯১০)যে কোরআন পড়ে, সে যেন আল্লাহর কাছে চায়। কারণ, এমন কিছু লোক আসবে যারা কোরআন পড়ে মানুষের কাছে চাইবে। সুনান তিরমিজি, হাদিস: ২৯১৬এই কাজকে আরও অর্থপূর্ণ করতে কিছু শিষ্টাচার মেনে চলা উচিত। কথায় আছে, আদব নেই যার, সে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত থাকে। কোরআন তিলাওয়াতের কয়েকটি আদব উল্লেখ করা হল:১. খাঁটি...
    দুপুরের খাবারের পর আমাদের অনেক সময় ক্লান্তি ও আলস্য পায়, তখন অনেকে স্বল্প সময় বিশ্রাম নেন। এ বিশ্রামকে হাদিসের ভাষায় বলে কায়লুলা। বাংলায় ‘ভাতঘুম’ বললে এর কাছাকাছি অর্থ হয়।কায়লুলা আমাদের দিনের পরবর্তী অংশকে প্রাণবন্ত ও সক্রিয় করে তোলে। বর্তমানে বিজ্ঞান কায়লুলার অনেক উপকারিতা উল্লেখ করছে। এটি নবীজি (সা.) ও সাহাবিগণের নিয়মিত অভ্যাস ছিল। তারা কখনও জোহরের নামাজের আগে আবার কখনও জুমার নামাজের পর কায়লুলা করতেন।বিজ্ঞানীরা মনে করেন, দুপুর বেলায় স্বল্প সময়ের ঘুম মানুষের শরীর ও মনকে সতেজ করে, চিন্তা ও মনোযোগ পুনসঞ্চয় ঘটায় ও কাজের সক্রিয়তা বৃদ্ধি করে।কায়লুলার উপকারিতা বিজ্ঞানীরা মনে করেন, দুপুর বেলায় স্বল্প সময়ের ঘুম মানুষের শরীর ও মনকে সতেজ করে, চিন্তা ও মনোযোগ পুনসঞ্চয় ঘটায় ও কাজের সক্রিয়তা বৃদ্ধি করে।‘সাইকোলজিক্যাল সায়েন্স’ জার্নালে ২০০২ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায়...
    ইসলামি ফিকহের চারটি প্রধান মাজহাব—হানাফি, মালিকি, শাফেয়ি এবং হাম্বলি—সাহাবিদের ফিকহ ও জ্ঞানের গর্ভে জন্ম নিয়েছে। এদের শিকড় সাহাবিদের পদ্ধতির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত, যারা ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন, শরীয়া বিধান বোঝা এবং নাসের ব্যাখ্যা ও বাস্তবায়নে ইজতিহাদ করতেন।সাহাবিরা ঘটনাগুলোকে তাদের অনুরূপ ঘটনার সঙ্গে তুলনা করতেন, সাদৃশ্য খুঁজতেন এবং বিধান নির্ধারণে একটিকে অপরটির সঙ্গে যুক্ত করতেন। এভাবে তারা ইজতিহাদের পথ প্রশস্ত করেন এবং উলামাদের জন্য পথ নির্দেশ করেন। তাবিয়িনের যুগে এই পদ্ধতি আরও সুসংগঠিত হয়। চার মাজহাবের ইমামগণ সাহাবিদের শিষ্যদের শিষ্য ছিলেন। তারা সাহাবিদের জ্ঞান ও পদ্ধতি গ্রহণ করে তা প্রসারিত করেন। ইবনে কাইয়্যিম উল্লেখ করেন, ইসলামি জ্ঞান ও ফিকহের বিস্তার মূলত চারজন সাহাবির শিক্ষার মাধ্যমে হয়েছে: আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, জায়েদ ইবনে সাবিত, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর এবং আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)।মদিনার জ্ঞান এসেছে...
    মোবাইল ফোন এখন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, নামাজ চলাকালে কারও মোবাইল ফোন বেজে ওঠে, যা ইমাম ও জামাতের মনোযোগ নষ্ট করে এবং অন্যদের খুশু-খুজু (নিবিষ্টতা) ভঙ্গ করে।এই পরিস্থিতিতে অনেকেই দ্বিধায় পড়ে যান, এসময় মোবাইল বন্ধ করা যাবে কি না, নাকি নামাজ ভেঙে যাবে?নামাজে অল্প কাজের অনুমতি শরিয়তে ইসলামি শরিয়াহ নামাজে অতি সামান্য ও প্রয়োজনীয় কাজ করার অনুমতি দিয়েছে, যদি তা মনোযোগ নষ্ট না করে বা নামাজের আসল কাঠামো ভেঙে না দেয়। রাসুল (সা.)-এর আমলে সাহাবিরা নামাজে হালকা কাজ করতেন, সাহাবিরা নামাজে সেজদার জায়গা থেকে কাঁকর সরিয়ে নিতেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৫৪৬)।ইমাম নববি (রহ.) বলেন, “যদি কোনো কাজ স্বল্প হয় এবং ইবাদতের স্বভাব পরিবর্তন না করে, তবে তা নামাজ নষ্ট করে না।” (শারহু মুসলিম, খণ্ড ৪,...
    ইসলামি ফিকহের ইতিহাসে সাহাবিদের যুগকে দ্বিতীয় পর্যায় হিসেবে গণ্য করা হয়, যা রাসুল (সা.)–এর যুগের পর শুরু হয়। এই যুগকে ‘ভিত্তি ও বিকাশের পর্যায়’ বলা হয়। রাসুলের যুগের ফিকহ মূলত তাঁর ব্যক্তিত্ব এবং ওহির অবতারণার সাথে যুক্ত ছিল, কিন্তু সাহাবিদের যুগে ফিকহের বিকাশ ঘটে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে, যা ইসলামি আইনশাস্ত্রের ভিত্তি স্থাপন করে।অনেকে মনে করেন যে সকল সাহাবিই ছিলেন ফকিহ এবং ইজতিহাদকারী। কিন্তু এটি একটি ভুল ধারণা। প্রথম মুসলিম সমাজে সাহাবিদের সবাই উলামা বা ফকিহ ছিলেন না।রাসুলের যুগে বা খোলাফায়ে রাশেদিনের সময়ে তারা বেশিরভাগই দৈনন্দিন জীবনযাপন, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ইসলাম প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন। তারা ছিলেন ধার্মিক এবং সৎ, যারা ইসলামকে জীবনে প্রয়োগ করতে আগ্রহী ছিলেন, কিন্তু গভীর জ্ঞানার্জন তাদের সকলের জন্য প্রধান লক্ষ্য ছিল না।তারা ধর্মের প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করতেন...
    ইসলাম মানব সমাজে শালীনতা, পরিমিতি ও ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার ধর্ম। এটি শুধু ইবাদত নয়, বরং জীবনযাত্রার নান্দনিক ও নৈতিক দিকগুলোও নির্ধারণ করে। পুরুষ ও নারীর পোশাক, আচরণ, অলঙ্কার—সব ক্ষেত্রেই ইসলাম একটি স্পষ্ট পার্থক্য রেখেছে।এর অন্যতম উদাহরণ হলো পুরুষের জন্য স্বর্ণ (Gold) পরিধান নিষিদ্ধকরণ। এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুশাসন নয়; বরং এটি সামাজিক, মনস্তাত্ত্বিক ও নৈতিক ভারসাম্য রক্ষার প্রজ্ঞায় ভরপুর এক বিধান।কোরআনের নির্দেশনা ও ব্যাখ্যা যদিও কোরআনে সরাসরি পুরুষদের স্বর্ণ পরার নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে এতে সাজসজ্জার সীমা ও শালীনতার নীতি সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত। আল্লাহ বলেন, “বল, কে হারাম করেছে আল্লাহর সৌন্দর্যোপকরণ, যা তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন এবং পবিত্র জীবনোপকরণ।”  (সুরা আ‘রাফ, আয়াত: ৩২)সাজসজ্জা বৈধ, তবে তা এমনভাবে হতে হবে যাতে শরিয়তের নির্ধারিত সীমা অতিক্রম না করে। পুরুষদের জন্য স্বর্ণ ও রেশম...
    ভাষা জন্মাল কীভাবে? এ এক প্রাচীন ধাঁধা। এই প্রশ্ন ভাবিয়েছে পুরোনো দিনের দার্শনিকদের, ভাবাচ্ছে আজকের ভাষাতাত্ত্বিকদেরও। আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানে অবশ্য বিবর্তনের তত্ত্ব বেশ গভীর ছাপ ফেলেছে।প্রাচীনকালে কিন্তু অনেক রকম মত ছিল। এক দল মনে করত, ভাষার জন্ম স্বর্গীয় অনুপ্রেরণা বা ইলহাম থেকে। এই পথের পথিক ছিলেন আবু আলী ফারসি ও ইবনে হাজম আন্দালুসির মতো পণ্ডিতেরা। তাঁরা প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরতেন সুরা বাকারার ৩১ নম্বর আয়াত, যেখানে বলা হয়েছে—‘তিনি আদমকে সব নাম (আসমা) শিক্ষা দিয়েছেন।’তাঁদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, আল্লাহ স্বয়ং আদমকে আরবি, ফারসি, সিরীয় বা হিব্রুর মতো কিছু মৌলিক ভাষার মাধ্যমে সব প্রাণী আর জড়বস্তুর নাম শিখিয়ে দিয়েছিলেন।তাওরাত অনুসরণ করে হিব্রু পণ্ডিতেরাও প্রায় একই কথা বলেন। এমনকি গ্রিক ও রোমান দার্শনিকদের মধ্যেও এই ধারণার ছায়া খুঁজে পাওয়া যায়। প্লেটোর মতে, ভাষা আসলে ঈশ্বরের...
    ইসলামের ইতিহাসে নবীরা (আ.) কেবল আল্লাহর বাণী পৌঁছে দেওয়ার দূত ছিলেন না, তাঁরা ছিলেন চরিত্রের উজ্জ্বল আদর্শ। তাঁদের জীবন ছিল সততা, ধৈর্য, ক্ষমা, করুণা এবং দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্যের প্রতিফলন।কোরআনে কারিম তাঁদের এই গুণাবলিকে সাধারণভাবে এবং বিশদভাবে বর্ণনা করেছে, যাতে মানবজাতি তাঁদের অনুসরণ করে জীবনকে সুন্দর করে তুলতে পারে। আল্লাহ বলেছেন, ‘তাঁরাই যাদেরকে আল্লাহ পথ দেখিয়েছেন, তাই তাঁদের পথানির্দেশ অনুসরণ করো।’ (সুরা আনআম, আয়াত: ৯০)নবীরা ছিলেন আল্লাহর নির্বাচিত ব্যক্তিত্ব, যাঁদের জীবন ছিল সদাচারণতার আয়না।নবীদের চরিত্র: কোরআনের সাধারণ ও বিশদ বর্ণনা কোরআন নবীদের চরিত্রকে সাধারণভাবে বর্ণনা করে বলেছে যে তাঁরা সবাই উত্তম গুণাবলির অধিকারী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিল ধৈর্য, ক্ষমা, উদারতা, সততা, বিশ্বস্ততা, নম্রতা, করুণা, দয়া, দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য এবং মানুষের অত্যাচার সহ্য করার ক্ষমতা। এই গুণগুলো তাঁদের সাধারণ মানুষ থেকে আলাদা...
    ইসলামি অর্থনীতির মূল ভিত্তি হলো আখলাকি মূল্যবোধ। এটা কেবল ব্যক্তিগত লাভের ওপর নির্ভর করে না, বরং সমাজের সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিত করে। এর মধ্যে ‘ইসার’ একটি অনন্য ধারণা, যা অন্যকে নিজের ওপর অগ্রাধিকার দেওয়া বোঝায়।এটাকে শুধু একটি নৈতিক গুণ বললে ভুল হবে, বরং এটা অর্থনৈতিক ব্যবস্থার একটি মৌলিক স্তম্ভও বটে। সমাজে সহযোগিতা, ন্যায়বিচার এবং দয়ার পরিবেশ গড়ে তুলতে ‘ইসার’-এর ভূমিকা অনস্বীকার্য।যারা অভাব সত্ত্বেও নিজেদের ওপর অন্যকে অগ্রাধিকার দেয়... তারাই সফলকাম।’সুরা হাশর, আয়াত: ৯পুঁজিবাদী ব্যবস্থার স্বার্থপরতা এবং সুদভিত্তিক অর্থনীতির বিপরীত এই নীতি। এতে ব্যক্তি তার সম্পদ বা সুবিধা অন্যকে দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করে, যা দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ নিয়ে আসে।‘ইসার’ অর্থ কীভাষাগত দিক থেকে, ইসার শব্দটি ‘আসারা’ থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ অগ্রাধিকার দেওয়া বা পছন্দ করা। ইসলামি পরিভাষায়, এটি হলো দুনিয়াবি...
    শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ কোম্পানি ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালসের মুনাফা সাড়ে ৫ শতাংশ বা প্রায় পৌনে ৪ কোটি টাকা কমে গেছে। গত জুনে সমাপ্ত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ৬৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। তার আগের অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৬৭ কোটি ৫ লাখ টাকা। কোম্পানিটি আজ রোববার শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মুনাফার এই তথ্য জানিয়েছে।এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। আজ রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে তা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। তাতে মুনাফার এই তথ্য পাওয়া যায়। আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পাশাপাশি কোম্পানিটি গত অর্থবছরের জন্য শেয়ারধারীদের ৬৪ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে। তাতে একজন শেয়ারধারী একটি শেয়ারের বিপরীতে ৬ টাকা ৪০ পয়সা করে লভ্যাংশ পাবেন। বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএমে অনুমোদনের...
    পুঁজিবাজারে ওষুধ ও রসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালের লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৬৪ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর পুরোটাই নগদ লভ্যাংশ। প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের শেয়ারের বিপরীতে ৬.৪০ টাকা নগদ লভ্যাংশ পাবেন শেয়ারহোল্ডারা। ২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য এ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। রবিবার (৫ অক্টোবর) ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই-সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তথ্য মতে, ঘোষিত লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৩ নভেম্বর সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে।...
    কোরআনের পাতায় ‘হিকমত’ শব্দটি ঘুরেফিরে এসেছে প্রায় ২০ বার। শুধু তা–ই নয়, এর ধাতুমূল থেকে জন্মানো আরও অনেক শব্দ চোখে পড়ে। যেমন ‘হাকিম’ শব্দটি। এর দেখা মেলে ৯৭ বার।বিখ্যাত আভিধানিক গ্রন্থ লিসানুল আরব থেকে জানা যায়, আগে ‘হিকমত’ শব্দটির অন্য মানে ছিল। এর ব্যবহার ছিল মূলত ঘোড়ার লাগাম বোঝাতে। লাগামকে বলা হতো হিকমত। কেন? কারণ লাগামই তো ঘোড়াকে শাসনে রাখে। তাকে অবাধ্য হতে দেয় না, বেপরোয়া হতে দেয় না।পরে মানুষের গভীর জ্ঞান আর জীবনবোধ বোঝাতে এই শব্দ ব্যবহৃত হতে শুরু করল। হিকমত মানুষকে নৈতিকতার লাগামে বেঁধে রাখে। সে নিজের কাছে দায়বদ্ধ থাকে। এখান থেকেই আরব মানসের একটি বড় পরিচয় মেলে। নৈতিকতার শিকড়হীন নিছক বুদ্ধির ফুলঝুরিকে আরব-মন যেন মেনে নিতে পারত না।তিনি যাকে ইচ্ছা হিকমত দান করেন এবং যাকে হিকমত দান...
    কোরআনের আয়াত আমাদের জন্য প্রকৃতির রহস্য উন্মোচনের জানালাও বটে। সুরা নামলের ৮৮ নম্বর আয়াতটি তার এক উজ্জ্বল উদাহরণ: ‘আর তুমি পাহাড়সমূকে দেখছ, সেগুলোকে তুমি স্থির মনে করছ। অথচ তা মেঘমালার ন্যায় চলতে থাকবে। (এটা) আল্লাহর কাজ, যিনি সবকিছু দৃঢ়ভাবে করেছেন। নিশ্চয় তোমরা যা করো, তিনি সে সম্পর্কে বিশেষভাবে অবহিত।’ (সুরা নামল, আয়াত: ৮৮)আয়াতটি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মুফাসসির ও আলিমদের মনে প্রশ্ন জাগিয়েছে। কেউ বলেছেন এটি কিয়ামতের দৃশ্য, কেউ বলেছেন এটি পৃথিবীর গতিশীলতার ইঙ্গিত। আজকের বিজ্ঞানের আলোয় এটি পৃথিবীর গতি ও পাহাড়ের স্থিতিশীলতার এক অসাধারণ বর্ণনা বলে মনে হয়।আর তুমি পাহাড়সমূকে দেখছ, সেগুলোকে তুমি স্থির মনে করছ। অথচ তা মেঘমালার ন্যায় চলতে থাকবে। (এটা) আল্লাহর কাজ, যিনি সবকিছু দৃঢ়ভাবে করেছেন।সুরা নামল, আয়াত: ৮৮আয়াতের পটভূমি: কিয়ামত, না পৃথিবী কোরআনের আয়াতটি সুরা...
    শিক্ষা কেবল বইয়ের পাতা ওলটানো নয়; বরং জীবনের সব ক্ষেত্রে আলো ছড়ানোর এক অমূল্য হাতিয়ার। কোরআন বলেছে, ‘যারা জানে এবং যারা জানে না, তারা কি সমান? নিশ্চয় শুধু বিবেকবানেরাই এতে চিন্তা করে।’ (সুরা যুমার, আয়াত: ৯)আবার বলেছে, ‘তোমাদের মধ্য থেকে যারা ইমান এনেছে এবং যাদের জ্ঞান দেওয়া হয়েছে, আল্লাহ তাদের মর্যাদা দান করবেন।’ (সুরা মুজাদালা, আয়াত: ১১)।মহানবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘যাকে আল্লাহ কল্যাণকর করতে চান, তাকে ইসলামের জ্ঞান দান করেন।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২২৪) এবং ‘জ্ঞান অর্জন প্রত্যেক মুসলিমের ওপর ফরজ।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২২৪)ইসলামের প্রথম দিন থেকে এ আহ্বান বাস্তবায়িত হয়েছে। বদরের যুদ্ধের বন্দীদের মুক্তির শর্ত ছিল, মুসলিম শিশুদের শিক্ষা দেওয়া। ইসলামি ইতিহাসে ইবনে সিনা, গাজালি ও ইবনে খালদুনের মতো মহান চিন্তাবিদেরা শিক্ষার তাত্ত্বিক ভিত্তি গড়ে তুলেছেন।খালদুন...
    নবীজি (সা.)-এর মসজিদ ছিল সবার জন্য উন্মুক্ত। এখানে যেমন পুরুষেরা যেতেন, তেমনি যেতেন নারী ও শিশুরাও। তারা নবীজির পেছনে নামাজ আদায় করতেন, বক্তৃতা শুনতেন এবং ইসলামের জ্ঞান শিক্ষা করতেন। সাহাবিরা তাঁদের শিশুদের নিয়ে মসজিদে যেতেন। নবীজি (সা.) স্বয়ং তার দৌহিত্রদের সঙ্গে নিয়ে মসজিদে গিয়েছেন। পাশে রেখে নামাজ আদায় করেছেন, কখনও কাঁধে তুলে নিয়েছেন।শিশুদের কাতার নির্ধারণ মসজিদে নববিতে পুরুষের জন্য যেমন কাতার ছিল, তেমনি ছিল নারী ও শিশুদের কাতার। পুরুষদের কাতার ছিল সর্বাগ্রে, তাদের পেছনে শিশুদের এবং সর্বশেষ ছিল নারীদের কাতার।মসজিদে নববিতে পুরুষের জন্য যেমন কাতার ছিল, তেমনি ছিল নারী ও শিশুদের কাতার। পুরুষদের কাতার ছিল সর্বাগ্রে, তাদের পেছনে শিশুদের এবং সর্বশেষ ছিল নারীদের কাতার।আবু মালিক আশয়ারি (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজি (সা.) চার রাকাত নামাজের মধ্যে কিরাত ও কিয়ামের (দাঁড়ানোর) ক্ষেত্রে সমতা রাখতেন। তবে প্রথম রাকাত একটু লম্বা করতেন...
    ইসলামে জ্ঞানের মর্যাদা এমন উঁচু যে, এটি কেবল একটি গুণ নয়; বরং জীবনের মূল ভিত্তি। পবিত্র কোরআনের প্রথম অবতীর্ণ আয়াতই ‘পড়’ নির্দেশ দিয়ে শুরু হয়েছে, যা জ্ঞানার্জনের প্রতি ইসলামের অটুট আহ্বানের প্রতীক।আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এটা আল্লাহর কারিগরি, যিনি সবকিছুকে নিখুঁতভাবে সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় তিনি তোমাদের কাজকর্ম সম্পর্কে সম্যক অবগত।’ (সুরা নামল, আয়াত: ৮৮)এই আয়াতগুলো আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে জ্ঞান ইমানের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘বলো, যারা জানে এবং যারা জানে না, তারা কি সমান? নিশ্চয়ই শুধু বিবেকবানরাই এতে চিন্তা করে।’ (সুরা জুমার, আয়াত: ৯)আর সবচেয়ে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাদের মধ্য থেকে যারা ইমান এনেছে এবং যাদের জ্ঞান দেওয়া হয়েছে, তাদের মর্যাদা দান করবেন।’ (সুরা মুজাদালা, আয়াত: ১১)বলো, যারা জানে এবং যারা জানে না, তারা কি সমান?...
    আব্বাসীয় খলিফা আল-মামুন একবার বাইজান্টাইন সম্রাটকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলেন, ‘আমাকে তোমাদের লাইব্রেরি থেকে যত বই চাও পাঠাও, আমি তাদের স্বর্ণের ওজন দিয়ে পুরস্কৃত করব।’ এই উক্তির মধ্যেই লুকিয়ে আছে আব্বাসীয় সাম্রাজ্যের বৌদ্ধিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও জ্ঞানচর্চার প্রতি গভীর অনুরাগের প্রকাশ। আল-মামুনের পৃষ্ঠপোষকতায় ৭৫০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে বাগদাদে প্রতিষ্ঠিত বায়তুল হিকমা তৎকালীন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জ্ঞানকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল।বায়তুল হিকমা কেবল একটি গ্রন্থাগার ছিল না; ছিল অনুবাদ, গবেষণা, গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, দর্শন ও চিকিৎসাশাস্ত্রের প্রাণকেন্দ্রও। গ্রিক, পারসি, সিরীয় ও ভারতীয় ভাষা থেকে জ্ঞান আহরণ করে আরবিতে অনুবাদ করার এক বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছিল এখানে। হুনাইন ইবনে ইসহাক, আল-খওয়ারিজমি, আল-কিন্দির মতো পণ্ডিতেরা শুধু অনুবাদেই সীমাবদ্ধ থাকেননি, বরং তাতে যুক্ত করেছেন নতুন আবিষ্কার ও বিশ্লেষণ।আরবিতে অনূদিত এই জ্ঞানের স্রোত পরে আন্দালুসিয়া ও সিসিলির মাধ্যমে ইউরোপে প্রবেশ করে।...
    সুরা মুহাম্মাদ আমাদেরকে এক অলৌকিক যাত্রায় নিয়ে যায়, যেখানে দুনিয়ার মায়াজাল থেকে শুরু করে আখিরাতের সত্যতা পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে আল্লাহর অসীম রহমতের ছায়া। এই সুরার শেষ আয়াতগুলো (৩৬-৩৮) একটি বিশেষ নিয়ম প্রতিষ্ঠা করে: “আল্লাহ ধনী এবং তোমরা দরিদ্র”।এটা জীবনের এক গভীর দর্শন।সুরা মুহাম্মাদ মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে। মুসলিমরা হুদায়বিয়ার সন্ধির পরের দিনগুলো পার করছে। সহিহ বুখারিতে বর্ণিত আছে যে, সুরা ফাতহের পর এই সুরা ‘কারে আল-গামিম’ (মক্কার কাছে এক স্থান) নামক স্থাকে অবতীর্ণ হয়। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪১৭২)এই সুরা মুসলিমদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে বিজয়ের পরও সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়, কারণ দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী। ইমাম আলুসি বলেছেন, এই সুরা মুনাফিকদের সন্দেহ দূর করে এবং মুমিনদের ইমান বৃদ্ধি করে। (ইমাম আলুসী, রুহুল মা'আনি ফিত তাফসিরিল কুরআনিল আজিম, দারুল কুতুবিল ইলমিয়া, বৈরুত, ১৪১৫ হি./১৯৯৪...
    ইসলামের জয়যাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রসারিত হচ্ছিল তার জ্ঞানচর্চার দিগন্তও। মুসলমানরা নিত্যনতুন সভ্যতা, ভাষা ও ঐতিহ্যের সংস্পর্শে আসছিলেন। একদিকে যেমন ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে আরবি ভাষা শিক্ষার আগ্রহ বাড়ছিল, তেমনই মুসলিম বিশ্বের কাছে বিভিন্ন সভ্যতার জ্ঞানভান্ডার পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজন হয়ে পড়ল বিপুল অনুবাদের।ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কারণেই তৎকালীন বিশ্বে আরবি ছিল সংযোগ ও ভাবপ্রকাশের মূল মাধ্যম। কিন্তু আরবদের নিজস্ব লিখিত সম্পদ ছিল যৎসামান্য।প্রাচীন আরবেরা গণিত বা বিজ্ঞানের চেয়ে সাহিত্যানুরাগী ছিলেন বেশি। তাঁদের কবিতা ও বাগ্মিতার ঐতিহ্য ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধ। সেই সাহিত্যে জ্ঞানের যে প্রকাশ দেখা যেত, তা মূলত ভূয়োদর্শন ও অভিজ্ঞতালব্ধ; যাকে তাঁরা বলতেন ‘হিকমা’।অন্যান্য সভ্যতার মুখোমুখি হয়ে আরবেরা যখন এক বিপুল জ্ঞানসমুদ্রের সন্ধান পেলেন, তখন তাঁরা উপলব্ধি করলেন যে এই জ্ঞান কেবল স্মৃতিতে ধরে রাখা সম্ভব নয়।জ্ঞানের সংরক্ষণে লিপিবদ্ধকরণের পরিবর্তে তাঁরা...
    মক্কা বিজয়ের পর আশপাশের ভূখণ্ডে বেগবান হয়ে ছড়িয়ে পড়ে ইসলাম। আরব উপদ্বীপের আপাতবিক্ষিপ্ত গোত্রগুলো দলবদ্ধ হয়ে মেনে নিতে থাকে নতুন এই ধর্ম।তখন হিজরি নবম অথবা দশম বছর। অন্যদের মতো আবদুল কাইস গোত্রও নবীজি (সা.)-এর কাছে একটি প্রতিনিধিদল প্রেরণ করে। দলটি ছিল ২০ সদস্যের। আরেক বর্ণনামতে ৪০।দলটি নবীজি (সা.)-এর কাছে উপস্থিত হলে বাহিনীপ্রধান আগ বেড়ে নবীজিকে সম্বোধন করে বলেন, ‘হে মুহাম্মদ, আমি আগে থেকেই একটি আসমানি ধর্মাদর্শ অনুসরণ করে আসছি। এখন আপনার আনীত ধর্ম গ্রহণ করতে চাই। আপনি কি আমার পক্ষে কেবল একটা বিষয়ের দায় নিতে পারেন—আমি ইসলাম গ্রহণ করলে পরকালে মুক্তি পাব?’জবাবে নবীজি (সা.) বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি এ কথার দায় নিচ্ছি; ইসলাম তোমার পূর্বেকার পালিত ধর্ম থেকে উত্তম।’হে মুহাম্মদ, আমি আগে থেকেই একটি আসমানি ধর্মাদর্শ অনুসরণ করে আসছি। এখন আপনার...
    মানুষের জীবনে জীবিকা, প্রশান্তি ও সমৃদ্ধির গুরুত্ব অপরিসীম। এগুলোর পেছনে তাকে ছুটে চলতে হয় অবিরাম। কিন্তু কোরআন ও হাদিস আমাদের জানায়, এসবের সবচেয়ে সহজ ও শক্তিশালী মাধ্যম হলো ইস্তিগফার। আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা শুধু পাপ মোচনের জন্য নয়; বরং জীবিকা লাভের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।কোরআনের সাক্ষ্য আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে নুহ (আ.)-এর কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, তিনি তো অতি ক্ষমাশীল। (তোমরা তা করলে) তিনি আকাশ থেকে তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততি বাড়িয়ে দেবেন, তোমাদের জন্য বাগান সৃষ্টি করবেন এবং নদীনালা প্রবাহিত করবেন।’ (সুরা নুহ, আয়াত: ১০–১২)তোমরা ইস্তিগফার করো এবং আল্লাহর কাছে তাওবা করো। (তোমরা তা করলে) তিনি তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের শক্তি বাড়িয়ে দেবেন।সুরা হুদ, আয়াত: ৫২হুদ...
    নাম মানুষের পরিচয়ের অন্যতম প্রধান অংশ। একটি সুন্দর ও অর্থবহ নাম শুধু দুনিয়াতে নয়, আখিরাতেও মর্যাদা বয়ে আনে। ইসলাম নামের গুরুত্বকে অত্যন্ত জোর দিয়ে উল্লেখ করেছে।রাসুল (সা.) সন্তানের সুন্দর নাম রাখতে বলেছেন এবং অনেকের নাম পরিবর্তনও করেছেন, যদি তাতে মন্দ অর্থ বা বিকৃত ধ্বনি থাকে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের সমাজে প্রায়ই নাম বিকৃতি বা নাম বিকৃতভাবে উচ্চারণ করার প্রবণতা দেখা যায়, যা ইসলামি শিক্ষার পরিপন্থী।সঠিক নামে ডাকার গুরুত্ব কোরআন ও হাদিসে বারবার বলা হয়েছে, মানুষকে তার নিজস্ব নামেই ডাকা উচিত।আল্লাহ বলেন: “তোমরা একে অপরকে উপহাস করো না, একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। ঈমানের পর মন্দ নামকরণ অতি নিকৃষ্ট।” (সুরা হুজুরাত, আয়াত: ১১)রাসুল (সা.) বলেছেন: “তোমরা সন্তানদের সুন্দর নাম দাও, কারণ কিয়ামতের দিনে তোমাদের নাম ও পিতার নামে ডাকা হবে।” (সুনানে...
    আমরা কোরআনের এখন কপি লিখিত কপি দেখি, কোরআন প্রথমে এমন ছিল না। কোরআনের বিভিন্ন আয়াত নাজিল হওয়ার পর কোথাও একটি জায়গায় লিখে রাখা হয় নি, বরং নানা অংশ নানান জনের কাছে সংরক্ষিত ছিল। কোনো কোনো আয়াতের লিখিত অংশ খুঁজে পায় যায় নি, শুধু হাফেজদের বক্ষে ধারণ করা ছিল।ফলে ইসলামের ইতিহাসে কোরআন সংগ্রহণ এমন এক অধ্যায়, যা শুধু ধর্মীয় গ্রন্থের সংরক্ষণের গল্প নয়, বরং মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, দূরদর্শিতা এবং আল্লাহর কালামের প্রতি অটুট ভক্তির প্রতিচ্ছবি।এটি এমন একটি যাত্রা, যা নবী মুহাম্মাদ (সা.)-এর যুগ থেকে শুরু করে খলিফা আবু বকর (রা.) ও উসমান (রা.)-এর সময়কালে পূর্ণতা পেয়েছে। এই গল্পে রয়েছে সাহাবীদের ত্যাগ, তাদের দায়িত্ববোধ এবং কোরআনের অখণ্ডতা রক্ষার জন্য অক্লান্ত প্রচেষ্টা।নবীজির জীবদ্দশায় কোরআন ছিল সাহাবীদের হৃদয়ে ধারণ করা। তারা এটি মুখস্থ করতেন...
    রাসুল (সা.) সর্বযুগের আদর্শ ব্যক্তিত্ব। তাঁর জীবনের বিভিন্ন দিক আমাদের জন্য অনুকরণীয়। তিনি পরিবারের নারীদের প্রতি যেমন মধুর ও সম্মানজনক ব্যবহার করতেন, তেমনি সমাজের অন্যদের সঙ্গেও তাঁর আচরণ ছিল অতুলনীয়।নারীর প্রশংসা করা, সৌজন্যমূলক আচরণের সঙ্গে তিনি হাস্যরসাত্মক আচরণে তিনি কখনো কার্পণ্য করেননি।নারীদের প্রশংসা ও সৌজন্য রাসুল (সা.) নারী ও পুরুষ সকল অতিথিকে হাসিমুখে স্বাগত জানাতেন। আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, একবার একদল নারী ও শিশুকে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফিরতে দেখে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা আমার কাছে সর্বাধিক প্রিয়।’ এই কথা তিনি তিনবার পুনরাবৃত্তি করেন, যা তাঁর নারীদের প্রতি গভীর স্নেহ ও সম্মান প্রকাশ করে। (সুনান ইবন মাজাহ, হাদিস: ১,৮৯৯)আবার আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, খাদিজা (রা.)-এর বোন হালা বিনতু খুওয়াইলিদ একদিন রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি চাইলে, তিনি খাদিজার স্মৃতি...
    নবুয়ত লাভের বছর তিনেক পরেও নবীজি (সা.) ও সাহাবিরা নীরবেই কাজ করে গেছেন। গোপনে গোপনে চলেছে ইসলামের দাওয়াত। তখন মক্কায় মুসলিমদের লুকিয়ে লুকিয়ে নামাজ পড়তে হতো, যাতে মুশরিকরা টের না পায়।এত লুকোচুরির পরেও কাফেররা জেনে গিয়েছিল, তাদের কেউ কেউ নতুন ধর্ম গ্রহণ করেছে। সেই ধর্মের ইবাদত পদ্ধতিও আলাদা৷ ফলে তেতে ওঠে মুশরিকরা। মুসলিমদের যেখানে ইবাদত করতে দেখত, শুরু করে দিত মারধর। তাদের এমন বাড়াবাড়ির কারণে মুসলিমদের প্রকাশ্য ইবাদত বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।নবীজি (সা.) একটি গোপন জায়গার তালাশে ছিলেন, যেখানে মুসলিমরা নিরাপদে ইবাদত করতে পারবে৷ তখনো জায়গা পাননি, খোঁজাখুঁজি চলছে। নবীজির দরবারে হাজির হন উনিশ-বিশ বছরের এক টগবগে তরুণ। তার পরিস্কার প্রস্তাব—‘আল্লাহর রাসুল, আপনার ওপর আমার বাবা-মা কুরবান হোক! আমার ঘরটা খালি পড়ে আছে৷ সাফা পাহাড়ের পাদদেশে আমার ঘর। কাবার কাছেই। ঘরটা এখন থেকে আপনার। মুসলিমরা সেখানে...
    কোরআনের সবচেয়ে মহিমান্বিত আয়াত হলো আয়াতুল কুরসি। ‘আয়াতুল কুরসি’ হলো সুরা বাকারার ২৫৫ নম্বর আয়াত। এটি আল্লাহর একত্ব, জ্ঞান, শক্তি এবং সার্বভৌমত্বের অনন্য ঘোষণা।আল্লাহর গুণাবলি নিয়ে এত বিস্তৃত ও গভীর বর্ণনা আর কোনো একক আয়াতে পাওয়া যায় না। এজন্যই রাসুল (সা.) একে কোরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ আয়াত বলেছেন।আয়াতুল কুরসির উচ্চারণ আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়া আল-হাইয়্যুল-ক্বাইয়্যূম, লা তাকুযুহু সিনাতুওঁ ওয়ালা নাওম, লাহূ মা ফিস্-সামাওয়াতি ওয়া মা ফিল আরদ, মান্ যাল্লাযি ইয়াশফাউ ইন্দাহু ইল্লা বি ইযনিহ, ইয়ালামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়া মা খালফাহুম, ওয়ালা ইউহিতুনা বি শাইইম্ মিন ইলমিহি ইল্লা বিমা শা’আ, ওয়াসিয়া কুরসিইহুস্-সামাওয়াতি ওয়াল আরদ, ওয়ালা ইয়াউদুহু হিফযুহুমা, ওয়াহুয়াল আলিইয়্যুল আজিম।আরও পড়ুনআয়াতুল কুরসির বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ০১ জানুয়ারি ২০২৪আয়াতুল কুরসির মূল শিক্ষা ১. আল্লাহ ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই।২. তিনি চিরঞ্জীব ও...
    রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহ অনুসরণ আমাদের জীবনে অফুরন্ত বরকত নিয়ে আসে এবং আত্মিক প্রশান্তি প্রদান করে। একজন মুসলিমের প্রতিদিনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহ গভীরভাবে জড়িত।সুন্নাহ পালনের মাধ্যমে আমরা মহান আল্লাহর ভালোবাসা ও ক্ষমা লাভ করতে পারি। মহান আল্লাহ বলেন, “বলে দিন, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবেসে থাক, তবে আমার অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ৩১)কিছু সুন্নাহ আমাদের কাছে অধিক পরিচিত, যেমন—কাজ শুরু করার আগে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা, ডান হাতে খাবার খাওয়া, তিন চুমুকে পানি পান করা, হাসিমুখে থাকা ইত্যাদি।বলে দিন, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবেসে থাক, তবে আমার অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ৩১তবে...
    ইমাম কুরতুবি (রহ.) একটি ঘটনা বর্ণনা করেছেন। এ ঘটনার মূল বর্ণনাকারী হলেন রাবি ইবনে সুবাইহ (রহ.)। তিনি ছিলেন বসরার একজন প্রসিদ্ধ হাদিস সংকলক এবং হাসান বসরি (রহ.)-এর শিষ্য।তিনি বলেন, ‘একদিন আমরা হাসান বসরির কাছে বসা ছিলাম এমন সময় কয়েকজন মানুষ নিজেদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তাঁর কাছে উপস্থিত হলো। একজন বলল, “হুজুর, আমার জমি অনুর্বর হয়ে গেছে, কোনো ফলন হচ্ছে না। আমার জন্য দোয়া করুন।”’হাসান বসরি (রহ.) বলেন, তুমি আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার (ক্ষমাপ্রার্থনা) করো।আরেকজন এসে বলল, ‘হুজুর, আমি খুবই দরিদ্র। অভাব–অনটন আমার পিছু ছাড়ছে না। আমার জন্য দোয়া করুন।’হাসান বসরি (রহ.) তাকে বলেন, তুমি ইস্তিগফার করো।অন্যজন এসে অনুরোধ করল, ‘আমি নিঃসন্তান। আমার জন্য দোয়া করুন, যেন আল্লাহ আমাকে সন্তান দান করেন।’হাসান বসরি (রহ.) তাকে একই কথা বলেন, তুমিও ইস্তিগফার করো।আরও পড়ুনতওবা-ইস্তিগফার:...
    নবীজির (সা.) জ্যেষ্ঠ কন্যা জয়নব বিনতে মুহাম্মদ (রা.) জন্ম হিজরিপূর্ব ২৩ সালে, ৬০০ খ্রিষ্টাব্দে। উম্মুল মুমিনিন খাদিজা (রা.) তাঁর আপন বোন হালাহ বিনতে খুওয়াইলিদের ছেলে আবুল আসকে নিজের ছেলের মতোই ভালোবাসতেন।জয়নবের বয়স ১০ পেরোনোর আগেই আবুল আসের সঙ্গে তিনি তাঁর বিয়ের প্রস্তাব করলেন।নবীজি (সা.) কখনো জীবনসঙ্গী খাদিজার কথা ফিরিয়ে দিতেন না, তিনি এই সম্পর্ক কবুল করেন এবং আল্লাহর নামে দুজনকে পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ করেন। এরপর একে অপরের প্রতি নির্ভরতা আর ভালোবাসায় সুখেই দিন কাটছিল।এরই মধ্যে নবীজি (সা.) নবুয়ত পেয়ে ইসলাম প্রচার শুরু করেন। জয়নব (রা.) ইসলামে দীক্ষিত হন; কিন্তু তাঁর স্বামী আবুল আস নিজ ধর্মেই অটল রইলেন। (ইদরীস কান্ধলবী (র.), সীরাতে মুস্তফা, ২/১০৯-১১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ২০১৩)নবুয়তের প্রথম দিকে নিয়ম ছিল জীবনসঙ্গীর যেকোনো একজন মুশরিক থাকলেও সম্পর্ক বহাল রাখতে পারবে।নবুয়তের...
    মহালয়ার পর থেকেই চাঁদপুর জেলার ২২৪টি দুর্গাপূজা মন্ডপের নিরাপত্তায় সার্বিক টহল জোরদার করার কথা জানিয়েছেন র‍্যাব-১১ কুমিল্লার কোম্পানি অধিনায়ক মেজর সাদমান ইবনে আলম। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের কালীবাড়ি মন্দিরের পূজো মন্ডপ ও প্রতীমা তৈরির স্থান পরিদর্শনকালে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের এ কথা জানান। মেজর সাদমান ইবনে আলম বলেন, “গেলো বছরের চেয়ে এ বছর আরো ভালোভাবে যেন সনাতনীরা দুর্গোৎসব সম্পন্ন করতে পারে সেজন্য র‍্যাব-১১ থেকে তাৎক্ষণিক সংবাদ পেতে একটি কন্ট্রোল টিম খোলা হয়েছে। এছাড়া আমাদের দুটি টিম সার্বক্ষণিক টহলে থাকবে এবং একটি স্ট্রাইকিং ফোর্স রেডি থাকবে। এছাড়া সাদা পোশাকে র‍্যাব মাঠে থাকবে।” তিনি আরো বলেন, “এরইমধ্যে প্রতিটি পূজা মন্ডপের দায়িত্বশীলদের যোগাযোগের নম্বর আমরা সংগ্রহ করেছি। তাদেরকেও আমাদের গুরুত্বপূর্ণ নম্বর সরবরাহ করেছি। যেকোন অপ্রতীকর পরিস্থিতি এড়াতে যেন তারা আমাদের খবর...
    নবীজি (সা.)-এর জীবন ছিল ত্যাগ, ধৈর্য ও সহ্যশীলতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁর জীবনে ক্ষুধা এবং দারিদ্র্যের ঘটনা অনেকবার এসেছে, যা মুসলিম উম্মাহকে শিক্ষা দেয় যে দুনিয়ার অভাব-অনটন সত্ত্বেও আল্লাহর ওপর ভরসা রাখতে হবে।একটি প্রসিদ্ধ ঘটনা হলো নবীজি (সা.)-এর পেটে পাথর বাঁধা, যা ক্ষুধার তীব্রতার প্রতীক। এই ঘটনা কীভাবে ঘটেছে, এর অর্থ কী এবং এর সত্যতা কতটুকু—সে সম্পর্কে আমাদের সমাজে ব্যাপক বিভ্রান্তি লক্ষ করা যায়। আমরা আজ সে বিষয়টি তুলে ধরছি।ক্ষুধায় পেটে পাথর বাঁধা হতো কেন নবীজি (সা.)-এর জীবনের প্রথম দিকে, বিশেষ করে মক্কায় দাওয়াতের সময় এবং মদিনায় খন্দক যুদ্ধের মতো কঠিন মুহূর্তে ক্ষুধা একটি সাধারণ ঘটনা ছিল। কোরআনে আল্লাহ বলেন: ‘আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য পথ বের করে দেবেন এবং তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দেবেন, যা...
    কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক সড়কের খিলা দক্ষিণ বাজারের দীর্ঘদিনের ‘মরণফাঁদ’ হিসেবে পরিচিত সেই ইউটার্ন অবশেষে বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।  শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে সেনাবাহিনী ও হাইওয়ে পুলিশ যৌথভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ইউটার্নটি বন্ধ করে দেয়। বিকল্প হিসেবে এখন থেকে সব যানবাহনকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার সামনে লুধুয়া পেট্রোল পাম্পের সামনে থাকা ইউটার্ন ব্যবহার করতে হবে। দুর্ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন শেষে সেনা কর্মকর্তা, পুলিশ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা এ সিদ্ধান্ত নেন। আরো পড়ুন: খুলনায় যানজট নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামী নিহত অনুসন্ধানে জানা গেছে, এ ইউটার্নকে ঘিরে ভয়াবহ সব দুর্ঘটনার মূল কারণ ছিল উল্টো পথে যানবাহনের প্রবেশ ও বাহির। গত তিন বছরে এখানে অন্তত ৫৪টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন যাত্রী,...
    ইসলামের ইতিহাসে এমন অনেক সাহাবি আছেন, যারা নীরবে-নিভৃতে ইসলামের জন্য অসাধারণ অবদান রেখেছেন। তাঁরা জিহাদ ও দাওয়াতের অঙ্গনে গৌরবময় ভূমিকা পালন করেছেন, কিন্তু ইতিহাসের পাতায় তাঁদের আলোচনা প্রায়শই উপেক্ষিত থেকে যায়।এমনই একজন মহান সাহাবি হলেন রুওয়াইফা বিন সাবিত আনসারি (রা.)। তিনি ছিলেন একাধারে মুজাহিদ, দক্ষ প্রশাসক, দূরদর্শী দাঈ ও ফকিহ। তিউনিসিয়ার জারবা দ্বীপ জয়ের নায়ক রুওয়াইফা তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন ইসলামের সেবায় এবং জিহাদে অবদান রেখে শাহাদতের মর্যাদা লাভ করেছেন।তিনি রাজনৈতিক বিরোধ থেকে নিজেকে সর্বদা দূরে রাখতেন এবং ইসলামের শান্তিপূর্ণ দাওয়াত ছড়িয়ে দিতে অটল ছিলেন।তিনি ছিলেন একাধারে মুজাহিদ, দক্ষ প্রশাসক, দূরদর্শী দাঈ ও ফকিহ। তিউনিসিয়ার জারবা দ্বীপ জয়ের নায়ক রুওয়াইফা তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন ইসলামের সেবায়।নাম ও বংশপরিচয় রুওয়াইফা বিন সাবিত বিন সাকান বিন আদি বিন হারিসা আনসারি ছিলেন খাযরাজ...
    কোরআনে সুরা ফিল-এ আল্লাহ তাআলা বাদশাহ আবরাহা এবং সেনাবাহিনী ধ্বংসকারী হিসেবে একটি পাখির উল্লেখ করেছেন। অনেকেই পাখিটিকে ‘আবাবিল’ পাখি হিসেবে চিনে থাকে। বস্তুত কোরআনে বর্ণিত এই পাখির নাম আবাবিল নয়। আবাবিল শব্দের অর্থ পাখির ঝাঁক। যেহেতু আল্লাহ তাআলা ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি প্রেরণ করেছিলেন এবং আল-কোরআনেও ‘ত্বইরান আবাবিল’ বলা হয়েছে, সেহেতু অনেকে এই পাখিকে আবাবিল পাখি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।সুরা ফিল-এর অনুবাদ‘(হে নবী) আপনি কি দেখেননি আপনার প্রভু হস্তী বাহিনীর সঙ্গে কী আচরণ করেছিলেন? তিনি কি তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেননি? তিনি তাদের বিরুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি, যারা তাদের ওপর পাথরের কাঁকর নিক্ষেপ করেছিল, আর তিনি তাদের করলেন ভক্ষিত তৃণ-ঘাসের মতো।’আরও পড়ুনসুরা ফিলের সারসংক্ষেপ১৯ জানুয়ারি ২০২৫আবাবিল পাখির আকৃতি নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। কেউ বলেছেন, এরা ছিল চড়ুই-জাতীয় ক্ষুদ্র পাখি, আবার কেউ বলেছেন...
    মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী ইসলামের ইতিহাসে একটি অমূল্য সম্পদ। তাঁর জীবন শুধু মুসলিমদের জন্য নয়; বরং পুরো মানবজাতির জন্য নৈতিকতা, ন্যায়বিচার ও আধ্যাত্মিকতার এক আলোকবর্তিকা।কিন্তু তাঁর জীবনী রচনা করা একটি জটিল কাজ। ঐতিহাসিক তথ্যের সত্যতা যাচাই, বিভিন্ন সূত্রের জটিলতা ও তাঁর সময়ের প্রেক্ষাপট বোঝা—সব মিলিয়ে কম চ্যালেঞ্জিং নয়।ইদানীং বাংলা ভাষায় মহানবীর (সা.) জীবনী রচনার প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে এবং বেশির ভাগ রচয়িতা ইংরেজি সূত্র থেকে তথ্য গ্রহণ করছেন। ফলে কোথাও কোথাও বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। ফলে মহানবী (সা.)–এর জীবনী রচনার প্রধান সমস্যাবলি, সমাধানের পথ ও ভবিষ্যৎ গবেষণার সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা জরুরি হয়ে পড়েছে।ইদানীং বাংলা ভাষায় মহানবীর (সা.) জীবনী রচনার প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে এবং বেশির ভাগ রচয়িতা ইংরেজি সূত্র থেকে তথ্য গ্রহণ করছেন। ফলে কোথাও কোথাও বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।জীবনীর...
    চিকিৎসাধীন এক রোগীর মৃত্যুর জেরে সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় হাসপাতালটির কর্মচারীদের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের মারামারি ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে সিলেট নগরের সোবহানীঘাট এলাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।তাৎক্ষণিকভাবে আহত ব্যক্তিদের প্রকৃত সংখ্যা ও নাম-পরিচয় জানা যায়নি। রোগীর স্বজনদের দাবি, তাঁদের মধ্যে পাঁচজন আহত হয়ে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।পুলিশ, রোগীর স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, ৫ সেপ্টেম্বর সিলেট বিমানবন্দর সড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন গোলাপগঞ্জের তানিম আহমদ (২৪) নামের এক তরুণ। তাঁকে প্রথমে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ইবনে সিনা হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিউ) নেওয়া হয়। সেখানে...
    নবীজি মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মের কয়েক মাস আগে বাদশাহ আবরাহা মক্কায় অবস্থিত কাবাঘর ধ্বংস করতে আসেন। তার সঙ্গে ছিল প্রায় ৬০ হাজার সৈন্য এবং অন্যূন ১০টি বৃহদাকার হাতি।এ হাতিগুলো আবরাহার সেনাবাহিনীর সম্মুখভাগে ছিল এবং এগুলো দিয়েই কাবাঘর ধ্বংস করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার অভিপ্রায় ছিল তার। এ কারণে তার বাহিনীকে আসহাবে ফিল বা হস্তীবাহিনী বলা হয়। (সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২১৬)আবরাহা যখন মক্কায় পৌঁছে হাতিগুলোকে কাবাঘরের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তখন হাতিগুলো সামনে না গিয়ে নিজেদের জায়গা বসে পড়ে। হাতির মাহুত এবং সৈন্যরা শত চেষ্টা করেও আর সেগুলোকে কাবাঘরের দিকে নিয়ে যেতে পারল না।আবরাহা যখন মক্কায় পৌঁছে হাতিগুলোকে কাবাঘরের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তখন হাতিগুলো সামনে না গিয়ে নিজেদের জায়গা বসে পড়ে।হাতিগুলোকে নিষ্ঠুরভাবে পেটানো হলো, সেগুলোর...
    মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সিরাত বা জীবনী শুধু ইসলামের ইতিহাসের একটি অধ্যায় নয়, বরং এটি একটি স্বতন্ত্র জ্ঞানশাখা, যার কেন্দ্রে রয়েছেন তিনি এবং তাঁর যুগের ঘটনাবলি, মূল্যবোধ, নীতি, মুজিজা এবং সম্পর্ক।নবীজির সিরাত প্রতিষ্ঠিত কোরআন, হাদিস এবং সাহাবিদের জীবনাচরণের আলোকে। তবে এই জীবনী নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ভ্রান্ত ব্যাখ্যা এবং তথ্য বিকৃতির ঘটনা ঘটেছে, যা ইসলামের প্রকৃত চিত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।প্রামাণিক উৎস মহানবী (সা.)–এর জীবন সম্পর্কে অধ্যয়নের সবচেয়ে প্রামাণিক উৎস হলো কোরআন মাজিদ। কোরআনে তাঁর জীবনের বিভিন্ন পর্যায়, তাঁর রিসালাত, হিজরত, যুদ্ধ এবং তাঁর মানবিক গুণাবলি সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, সুরা মুহাম্মদে তাঁর নাম উল্লেখ করা হয়েছে (আয়াত: ২)।সুরা আলে ইমরানেও এসেছে (আয়াত: ১৪৪), সুরা আহজাবে তাঁকে ‘খাতামুন নাবিয়্যিন’ বা নবীদের সিলমোহর (মানে শেষ নবী) বলা হয়ে (আয়াত: ৪০) এবং সুরা ফাতহে...
    মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম মানব ইতিহাসের একটি অলৌকিক ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা, যা শুধু আরবের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব ফেলেছে।তাঁর জন্মের সময়, স্থান ও এর সঙ্গে যুক্ত অলৌকিক ঘটনাগুলো ঐতিহাসিক ও হাদিস সূত্রে বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে।তাঁর জন্মের সময়, স্থান ও এর সঙ্গে যুক্ত অলৌকিক ঘটনাগুলো ঐতিহাসিক ও হাদিস সূত্রে বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে।জন্মের সময় ও স্থান মহানবী (সা.) মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন, যা তৎকালীন আরবের ধর্মীয় ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। বেশির ভাগ ঐতিহাসিক সূত্র অনুসারে, তিনি ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে (৫৩ হিজরিপূর্বে) রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। এই তারিখ ইবনে ইসহাক ও ইবনে হিশামের বর্ণনার ভিত্তিতে সর্বাধিক গৃহীত। (ইবনে হিশাম, সিরাতুন নবী, ১/১৫৮, দারুল কুতুবিল ইলমিয়া, বৈরুত, ১৯৯৮)।তবে কিছু সূত্রে ২,...
    মাদারীপুরের শিবচর পৌর বাজারে প্রকাশ্যে রাকিব মাদবর (২৫) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিক পৌর বাজারের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সামনে তাকে হত্যা করা হয়।  শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রকিবুল ইসলাম বলেন, ‍“পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি ছিলেন রাকিব। ওই হত্যার ঘটনার জেরে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।” আরো পড়ুন: ‘সঠিক বিচারিক প্রক্রিয়ায় হাসিনাকে ফাঁসিতে ঝুলানো নিশ্চিত করা হবে’ বাবাকে হত্যার অভিযোগে ছেলের মৃত্যুদণ্ড নিহত রাকিব সম্প্রতি আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় আসেন। তিনি চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। রাকিব সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের...
    ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, “সুস্থ সংস্কৃতি, আমাদের ধর্মীয় মুল্যবোধ বইয়ের মাধ্যমে বাংলার মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে চাই। বই হচ্ছে জ্ঞানের ভান্ডার, বইয়ে মানুষের হৃদয়কে আলোকিত করার তথ্য উপাত্ত আছে যা সুস্থ সমাজ গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে আসছে।” শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ১৪৪৭ হিজরি উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব চত্ত্বরে আয়োজিত ইসলামি বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আরো পড়ুন: ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের নামে হল না থাকার শূন্যতা অনুভব করেছি: আহমাদুল্লাহ ইসলামী দলগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করবে: ফয়জুল করিম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামানিক। সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (সিনিয়র জেলা ও দায়রা...
    কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিন বেগমকে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন আব্দুর রব (৭৩) নামে একজনকে আটক করেছে র‍্যাব-১১। সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টায় র‍্যাব-১১ সিপিসি-২ এর কুমিল্লা কোম্পানি অধিনায়ক মেজর সাদমান ইবনে আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আরো পড়ুন: কুবি শিক্ষার্থী ও তার মায়ের হত্যা’র বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ফিলিং স্টেশনের ক্যাশিয়ারকে হত্যা, মূল অভিযুক্ত আটক র‍্যাব জানিয়েছে, আব্দুর রব (৭৩) পেশায় কবিরাজ। তার বাড়ি লাঙ্গলকোট উপজেলায়। নিহতের সাথে সবর্শেষ যোগাযোগ হয়েছিল আব্দুর রবের। র‍্যাব-১১ সিপিসি-২ এর কুমিল্লা কোম্পানি অধিনায়ক মেজর সাদমান ইবনে আলম বলেন, “সন্দেহভাজন একজনকে লাঙ্গলকোট থেকে দুপুরে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।” সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুরীতে নিজ বাসা থেকে লোক প্রশাসন বিভাগের...
    কায়রোর বায়তুল হিকমার একটি কক্ষে মোমবাতির আলোয় একজন শিক্ষার্থী পড়ছেন। তাঁর পাশে একজন খ্রিষ্টান পণ্ডিত, হুনাইন ইবনে ইসহাক (মৃ. ৮৭৩ খ্রি.), গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটলের একটি পাণ্ডুলিপি আরবিতে অনুবাদ করছেন। এই শিক্ষার্থী একজন মুসলিম, তার পাশেরজন খ্রিষ্টান, দুজনই শিক্ষার জন্য ওয়াক্‌ফ থেকে ভাতা পান। দৃশ্যটি মুসলিম সভ্যতার শিক্ষাবৃত্তির একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে—কেননা, এই সভ্যতা শুধু মুসলিমদের জন্য নয়, অমুসলিম পণ্ডিতদেরও জ্ঞানচর্চায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে।এই সিরিজের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বে আমরা শিক্ষাবৃত্তির ধর্মীয় ভিত্তি, এর প্রাথমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ এবং ওয়াক্‌ফর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেছি। এ পর্বে আমরা দেখব, কীভাবে অমুসলিম পণ্ডিতরা ইসলামি শিক্ষাবৃত্তিতে অবদান রেখেছেন, কীভাবে বিজ্ঞান ও দর্শনের মতো বিশেষ ক্ষেত্রে বৃত্তি দেওয়া হতো এবং কীভাবে এই শিক্ষাবৃত্তি ইসলামি সভ্যতার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলেছে।মুসলিম সভ্যতায় শিক্ষাবৃত্তি ছিল একটি বৈচিত্র্যময়...
    রাজধানীর বনানী এলাকার ‘৩৬০ ডিগ্রি’ নামের একটি সিসা বারে রাহাত হোসেন রাব্বি (৩১) নামের এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় কুমিল্লা থেকে দুই যুবককে আটক করেছেন র‍্যাবের সদস্যরা। আটকের পর তাঁদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।র‍্যাব-১১ সিপিসি-২ কুমিল্লা কোম্পানি অধিনায়ক মেজর সাদমান ইবনে আলম আজ শুক্রবার রাত ৯টার দিকে প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যার আগে জেলার বরুড়া উপজেলার গামরুয়া এলাকা থেকে তাঁদের আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।আটককৃত ব্যক্তিরা হচ্ছেন রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার আবদুল ওহিদের ছেলে মুন্না (২৭) এবং কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার গাংটিয়ারা গ্রামের আবদুল্লাহ আল মামুনের ছেলে মাকসুদুর রহমান ওরফে হামজা (২৬)।মেজর সাদমান ইবনে আলম বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় র‍্যাব-১১ সিপিসি-২ কুমিল্লা এবং র‍্যাব-১ এর যৌথ অভিযানে ওই দুই যুবককে বরুড়া উপজেলার গামরুয়া এলাকা থেকে আটক...
    উকবা ইবনে নাফে ছিলেন আফ্রিকায় মুয়াবিয়া ও ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়ার প্রতিনিধি। মহান এই সেনাপতির ওপরই মুয়াবিয়া (রা.) আফ্রিকা বিজয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তিনি মিসর থেকে পশ্চিম আফ্রিকার আটলান্টিক উপকূল পর্যন্ত বিজয় অভিযান পরিচালনা করেন। তাঁর হাতেই কায়রোয়ান শহর প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ্বস্ততা, নেতৃত্বগুণ এবং নির্ভীক যোদ্ধা ও দ্বীনদার ব্যক্তি হিসেবে তিনি সবিশেষ খ্যাত ছিলেন।তাঁর পিতা নাফে ইবনে আবদুল কায়েস ছিলেন একজন সাহাবি। উকবা ছিলেন আরেক বীর সাহাবি আমর ইবনুল আস (রা.)-এর স্বজন। কেউ তাঁকে আমরের ভাই, কেউ মামাতো ভাই, আবার কেউ ভ্রাতুষ্পুত্র বলেও উল্লেখ করেন।তিনি মিসর থেকে পশ্চিম আফ্রিকার আটলান্টিক উপকূল পর্যন্ত বিজয় অভিযান পরিচালনা করেন। তাঁর হাতেই কায়রোয়ান শহর প্রতিষ্ঠিত হয়।জন্ম ও বেড়ে ওঠা উকবা জন্মগ্রহণ করেন মহানবীর (সা.) হিজরতের এক বছর আগে। নবীজির সঙ্গে তাঁর সরাসরি সাক্ষাৎ প্রমাণিত নয়। তবে...
    ৮৭০ খ্রিষ্টাব্দ, হিজরি ২৫৬ সন। মুহাম্মদ ইবন ইসমাঈল বুখারি (রহ.), যিনি ইমাম বুখারি নামে সুপরিচিত, তখন মুসলিম বিশ্বে একজন কিংবদন্তি। তাঁর রচিত সহিহ বুখারি, বিশুদ্ধ হাদিসের এক অমর গ্রন্থ, তাঁর নাম আরব থেকে আজম পর্যন্ত ছড়িয়ে দিয়েছে (আজ-জাহাবি, মুহাম্মদ ইবন আহমদ, ১৯৮৫, সিয়ার আ‘লাম আন-নুবালা, বৈরুত: মুয়াসসাসাতুর রিসালাহ, ১২/৪০০)যেখানেই তিনি যেতেন, মানুষ তাঁকে সম্মান ও শ্রদ্ধার সঙ্গে বরণ করে নিতেন। তাঁর বয়স তখন প্রায় ৬০ বছর। এই সময়ে ইরানের নিশাপুর শহরের মানুষ তাঁকে তাঁদের শহরে আমন্ত্রণ জানান। তাঁরা ইমামের মুখ থেকে হাদিস শুনতে এবং সহিহ বুখারি সংকলনের গল্প জানতে আগ্রহী ছিলেন (আল-খতিব আল-বাগদাদি, আহমদ ইবন আলী, ২০০১, তারিখে বাগদাদ, বৈরুত: দারুল গারব আল-ইসলামি, ১০/৩০০)। তাঁদের আবদার রক্ষায় ইমাম বুখারি নিশাপুরে পৌঁছান।ইরানের নিশাপুর শহরের মানুষ তাঁকে তাঁদের শহরে আমন্ত্রণ জানান। তাঁরা...
    সুরা নাস কুরআনের ১১৪তম এবং শেষ সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ বলে মাক্কী সুরা নামে পরিচিত। এতে মোট ৬টি আয়াত রয়েছে। এই সুরাটি মানুষকে শয়তানের প্রতারণা ও মন্দ প্রভাব থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে শেখায়। এটি ‘মু’আওয়িযাতাইন’ (দুটি আশ্রয়প্রার্থী সুরা: সুরা ফালাক ও সুরা নাস)–এর একটি।সুরা নাসের বাংলা উচ্চারণ, অর্থ এবং সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা আলোচনা করা হলো।বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ উচ্চারণ: কুল আউজু বিরাব্বিন নাস। মালিকিন নাস। ইলাহিন নাস। মিন শাররিল ওয়াসওয়াসিল খান্নাস। আল্লাজি ইউওয়াসউইসু ফি সুদুরিন নাস। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান নাস।অর্থ: বলো, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করি মানুষের রবের কাছে। মানুষের অধিপতির কাছে। মানুষের উপাস্যের কাছে। মন্দ প্রবৃত্তির কুমন্ত্রণা থেকে, যে পিছনে লুকায়। যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে। জিন ও মানুষের মধ্য থেকে।আরও পড়ুনসুরা ফাতিহার বাংলা উচ্চারণ অর্থ ও ফজিলত২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪সুরা...
    মানুষের প্রকৃত স্বরূপ তার ঘরের চার দেয়ালের ভেতরে প্রকাশ পায়। বাইরের ব্যস্ততা শেষে তিনি এখানে কোনো প্রকার ভণিতা ছাড়া ফিরে আসেন। স্ত্রী-সন্তান, মা-বাবা, ভাই-বোন অথবা গৃহকর্মীর সঙ্গে আচরণে তাঁর প্রকৃত চরিত্র প্রতিফলিত হয়।নবীজি (সা.) বাইরের ব্যস্ততা শেষে অন্যান্য মানুষের মতো ঘরে ফিরতেন। ঘরে তাঁর চরিত্রের নির্মলতা ফুটে উঠত। তিনি পারিবারিক কাজে সহযোগিতা করতেন। কখনো নিজের কাজ অন্যের ওপর চাপিয়ে দিতেন না। নিজের কাজ নিজেই করতেন। এমনকি ঘরের ছোটখাটো কাজও নিজ হাতে করতেন। যেমন ছাগ দোহন করতেন ও পোশাকের উকুন তালাশ করতেন।নবীজি (সা.) ছিলেন মানুষের মধ্যে একজন মানুষ। পোশাকের মধ্যে তিনি উকুন তালাশ করতেন, ছাগ দোহন করতেন ও নিজের কাজ নিজেই সম্পন্ন করতেন।হজরত আয়েশা (রা.), শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস: ৩৪২আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো নবীজি ঘরে অবস্থানকালে কী করতেন? তিনি বললেন, নবীজি...
    সালাতুল হাজত একটি নফল নামাজ, যা বিশেষ প্রয়োজনকে সামনে রেখে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে আদায় করা হয়। এই নামাজের মাধ্যমে মুমিন ব্যক্তি জীবনের বিভিন্ন কঠিন পরিস্থিতিতে আল্লাহর নৈকট্য ও সাহায্য কামনা করে।হাদিসে সালাতুল হাজতের ফজিলত ও নিয়ম বর্ণিত আছে, যা মুমিনের আল্লাহর ওপর ভরসাকে দৃঢ় করে।সালাতুল হাজত নামাজের নিয়ম সালাতুল হাজত একটি নফল নামাজ, যা সাধারণত দুই রাকাত আদায় করা হয়। তবে ইচ্ছা হলে চার বা ততোধিক রাকাতও পড়া যায়। নামাজের নিয়ম বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো:১. অজু করাসালাতুল হাজত নামাজের জন্য পূর্ণ পবিত্রতা প্রয়োজন। তাই প্রথমে অজু করতে হবে। অজুর ফরজ চারটি: মুখমণ্ডল ধোয়া, দুই হাত কনুই পর্যন্ত ধোয়া, মাথায় মসেহ করা এবং দুই পা টাখনু পর্যন্ত ধোয়া। এ ছাড়া সুন্নত অনুযায়ী অজু করা উত্তম, যেমন বিসমিল্লাহ বলে শুরু...
    বাগদাদের দজলা নদীর তীরে, একটি মাদরাসার চত্বরে বসে আছে শিক্ষার্থীরা। তাদের হাতে কলম আর কাগজ, অপলক তাকিয়ে আছে সামনে শিক্ষকের মুখের দিকে। শিক্ষক, একজন প্রখ্যাত ফকিহ, কোরআনের তাফসির ব্যাখ্যা করছেন। এই শিক্ষার্থীদের অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে এসেছেন—কেউ নিশাপুর থেকে, কেউ দামেস্ক থেকে। তাদের থাকার জায়গা, খাবার, এমনকি কাগজ-কলমের খরচও বহন করছে একটি ওয়াকফ প্রতিষ্ঠান, যা একজন ধনী বণিক বা শাসক দান করেছেন। এই দৃশ্য ইসলামি সভ্যতায় শিক্ষাবৃত্তির প্রাতিষ্ঠানিক রূপের একটি প্রতিচ্ছবি।এই পর্বে আমরা শিক্ষাবৃত্তির প্রাতিষ্ঠানিক বিকাশ, ওয়াকফের ভূমিকা এবং এর বিভিন্ন রূপ নিয়ে আলোচনা করব। নিজামিয়া মাদরাসার মতো প্রতিষ্ঠান কীভাবে শিক্ষাবৃত্তিকে একটি সংগঠিত রূপ দেয়, তাও আমরা দেখব।বাগদাদের মুস্তানসিরিয়া মাদরাসার ওয়াকফের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯০০,০০০ স্বর্ণ দিনার, যা আজকের হিসেবে প্রায় ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমান।শিক্ষাবৃত্তির প্রাতিষ্ঠানিক রূপ: মাদরাসা ও মসজিদ...
    সহানুভূতি একটি শক্তিশালী মানবিক গুণ, যা আমাদেরকে অন্যের দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের আবেগ ও অনুভূতি বুঝতে সাহায্য করে। তাদের দুঃখ-কষ্ট, আনন্দ বা ভয়ের মতো অনুভূতিগুলো নিজের মধ্যে অনুভব করা যায়।সহানুভূতি একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ, যা রাসুল (সা.) তাঁর জীবনে বারবার প্রদর্শন করেছেন। সহানুভূতি অনুশীলনের পাঁচটি ধাপ নিয়ে আমরা আলোচনা করব, যা আমাদের জীবনে এই ভুলে যাওয়া সুন্নাহ পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করবে আশা করা যায়।সহানুভূতি মানে অন্যের অনুভূতি নিজের মধ্যে অনুভব করা এবং তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে পরিস্থিতি বোঝা।সহানুভূতি ও সমবেদনার পার্থক্য সহানুভূতি (এমপ্যাথি) ও সমবেদনা (সিমপ্যাথি) প্রায়ই একই মনে হলেও এদের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। সমবেদনা হলো অন্যের জন্য উদ্বিগ্ন বোধ করা বা তাদের দুঃখে দুঃখিত হওয়া। কেউ অসুস্থ হলে তার জন্য দুঃখবোধ করা সমবেদনা। কিন্তু সহানুভূতি এর চেয়ে গভীর।সহানুভূতি মানে অন্যের অনুভূতি...
    মদিনার মসজিদে নববীর এক কোণে আহলুস সুফফার একটি দল বসে আছে। তাদের কাপড় মলিন, পেটে ক্ষুধার জ্বালা, তবু চোখে জ্ঞানের অদম্য তৃষ্ণা। মুহাম্মদ (সা.) নিজে তাদের কোরআন শিক্ষা দিচ্ছেন, তাদের জন্য খাদ্য ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করছেন। এই দলের মধ্যে রয়েছেন আবু হুরায়রা (রা.), সালমান ফারসি (রা.), আবু সাঈদ খুদরি (রা.)—যারা পরবর্তীকালে ইসলামি জ্ঞানের মহীরুহ ধারক হয়ে উঠবেন।মুসলিম সভ্যতায় শিক্ষাবৃত্তির প্রথম দৃশ্যটি ছিল এমনই। জ্ঞান অর্জন ও প্রচারের জন্য আর্থিক ও সামাজিক সমর্থনের এই ঐতিহ্য পরবর্তী কয়েক শতকে মুসলিম বিশ্বের শিক্ষা ও সভ্যতার মেরুদণ্ড হয়ে ওঠে। এই প্রবন্ধে আমরা দেখব মুসলিম সভ্যতায় শিক্ষাবৃত্তির ধর্মীয় ভিত্তি, এর প্রাথমিক রূপ এবং সামাজিক প্রভাব কেমন ছিল।মহানবী (সা.) আহলুস সুফফার শিক্ষার্থীদের প্রতি দুজনের জন্য প্রতিদিন এক মুদ খেজুর (প্রায় আধা কিলোগ্রাম) বরাদ্দ করতেন।আল-তাবারানি, আল-মুজাম আল-আওসাত,...
    গোলাপজলের মিষ্টি সুবাস থেকে শুরু করে কেরোসিনের জ্বালানি শক্তি—মুসলিম সভ্যতার রসায়নবিদরা একটি সমৃদ্ধ রসায়নের জগত উপহার দিয়েছেন। নবম শতাব্দী থেকে তারা পাতন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জীবনকে আরও সুন্দর ও কার্যকর করেছেন। তাদের আবিষ্কার আধুনিক রসায়নের ভিত্তি স্থাপন করেছে, যা আজও আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিফলিত হয়।এই নিবন্ধে জাবির ইবন হাইয়ান, আল-রাজি ও আল-কিন্দির মতো পথপ্রদর্শকদের হাত ধরে মুসলিম সভ্যতার রসায়নের সোনালি যুগের সন্ধান করা হয়েছে।পাতনের প্রথম ফল ছিল গোলাপজল, যা ছিল খাবার, পানীয়, সুগন্ধি ও প্রসাধনীতে অপরিহার্য। আল-কিন্দি সুগন্ধির রসায়ন বিষয়ে একটি গ্রন্থ লিখেছিলেন, যাতে ছিল ১০৭টি ভিন্ন সুগন্ধির রেসিপি।পাতন প্রক্রিয়া: রসায়নের হৃৎপিণ্ড নবম শতকের মাঝামাঝি মুসলিম রসায়নবিদরা স্ফটিকায়ন, জারণ, বাষ্পীভবন, পরিশোধন ও ফিল্টারেশনের মতো প্রক্রিয়া সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। (১০০১ ইনভেনশনস: দি এন্ডিউরিং লিগ্যাসি অব মুসলিম সিভিলাইজেশন, ৪র্থ সংস্করণ,...
    ইশরাকের নামাজ ইসলামে একটি নফল নামাজ, যা ফজরের নামাজের পর সূর্যোদয়ের কিছু সময় পরে আদায় করা হয়। এটি সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদা (ঐচ্ছিক সুন্নত) হিসেবে বিবেচিত এবং এর ফজিলত অনেক।মহানবী (সা.) এই নামাজের প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন এবং এর মাধ্যমে মুমিন আল্লাহর সন্তুষ্টি ও বিশেষ পুরস্কার অর্জন করতে পারেন।ইশরাকের নামাজের সময়সূচি ইশরাকের নামাজের সময় ফজরের নামাজের পর থেকে শুরু হয় এবং সূর্যোদয়ের পর শেষ হয়। নিচে এর সময়সূচি বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হলো:শুরুর সময় : ইশরাকের নামাজ সূর্যোদয়ের প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর থেকে শুরু হয়, যখন সূর্য সম্পূর্ণভাবে দিগন্তের উপরে উঠে যায়। এই সময়টি সাধারণত ফজরের নামাজের সময় শেষ হওয়ার পর থেকে শুরু হয়। (ফিকহুস সুন্নাহ, সাইয়্যিদ সাবিক, পৃষ্ঠা: ১৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ২০১৮)ধরা যাক, ফজরের সময় ঢাকায় সকাল ৪:৩০ এ শুরু...
    ফরজ নামাজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম এবং মুমিনের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। মহানবী (সা.) ফরজ নামাজের পর নির্দিষ্ট কিছু আমল করতেন, যা তাঁর সুন্নাহর অংশ। এই আমলগুলো নামাজের সওয়াবকে পূর্ণতা দেয়, আধ্যাত্মিক সংযোগ বাড়ায় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সহায়তা করে।ফরজ নামাজের পর নবীজি (সা.)-এর আমল ও তার ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।ফরজ নামাজের পর মহানবী (সা.)-এর আমল নবীজি (সা.) ফরজ নামাজের পর নিয়মিত কিছু জিকির, দোয়া এবং অন্যান্য আমল করতেন, যা হাদিসে বিস্তারিত বর্ণিত আছে। যেমন:১. নির্দিষ্ট তসবিহ পাঠতিনি ফরজ নামাজের পর নির্দিষ্ট তসবিহ পাঠ করতেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর ৩৩ বার ‘সুবহানাল্লাহ’, ৩৩ বার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ এবং ৩৩ বার ‘আল্লাহু আকবার’ বলে, তারপর একবার ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু...
    আধুনিক যুগে প্রযুক্তি আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব ফেলেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ই-কমার্স থেকে টেলিমেডিসিন—প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রাকে সহজ করেছে, দূরত্ব কমিয়েছে এবং নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।তবে এই দ্রুত পরিবর্তনের মধ্যে মুসলিম সমাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠে আসে: কীভাবে আমরা আমাদের ইসলামি মূল্যবোধ ও ঐতিহ্যের সঙ্গে আপস না করে প্রযুক্তির সুবিধাগুলো গ্রহণ করব?ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয় তাওয়াযুন বা ভারসাম্যের পথ, যার মাধ্যমে প্রযুক্তির উন্নতি গ্রহণ করতে পারি, কিন্তু নৈতিকতা ও সমাজের প্রতি দায়িত্বের প্রতিও সচেতন থাকতে হবে।ইসলাম জ্ঞানের সন্ধান এবং সেই জ্ঞানের সুফল সবার কল্যাণে ব্যবহার করতে উৎসাহিত করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যাকে প্রজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তাকে দেওয়া হয়েছে প্রভূত কল্যাণ।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৬৯)আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘সর্বোত্তম মানুষ তারা যারা...
    আমরা এমন এক যুগে বাস করছি যেখানে সবকিছুই দ্রুতগতির। নতুন ফোন, ফ্যাশনেবল জুতা বা ব্যাগ—ইচ্ছা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেতে চাই। ‘ইনস্ট্যান্ট গ্র্যাটিফিকেশন’ বা তাৎক্ষণিক তৃপ্তির এই সংস্কৃতি আমাদের সমাজে গভীরভাবে প্রোথিত। অ্যামাজন প্রাইমের এক ক্লিকে পণ্য বাড়িতে চলে আসে, নাইকির স্লোগান ‘জাস্ট ডু ইট’ নিয়ত তাড়া দিতে থাকে। তাড়াহুড়োয় ভুলে যাই ধৈর্য ও সংযমের গুরুত্ব। অথচ মুসলিম হিসেবে এই দুটি গুণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।নফস শব্দটির আক্ষরিক অর্থ ‘আত্মা’ বা ‘সত্তা’। একে ‘প্রবৃত্তি’ও বলা যায়। নফস আমাদের মন্দ কাজের দিকে প্ররোচিত করে। কোরআনে নবী ইউসুফের (আ.) বক্তব্য রয়েছে, ‘আমি আমার নফসকে পবিত্র মনে করি না, নিশ্চয়ই নাফস মন্দ কাজ প্রবণ।’ (সুরা ইউসুফ, আয়াত: ৫৩)নফসকে তার ইচ্ছানুযায়ী চলতে দেওয়া বিপজ্জনক, কারণ এটি তাকে আরও শক্তিশালী করে এবং আমাদের সংযমের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ইসলামে নফসকে নিয়ন্ত্রণ করার শিক্ষা রয়েছে।...
    জীবন একটি পরীক্ষার ময়দান, যেখানে আমরা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও কষ্টের মুখোমুখি হই। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা, সম্পদের ক্ষতি, জীবন ও ফসলের ক্ষতি দিয়ে। আর যারা ধৈর্য ধরে, তাদের সুসংবাদ দাও।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৫)এই পরীক্ষাগুলো প্রায়ই আমাদের হতাশ বা বিমর্ষ করে তুলতে পারে, কিন্তু ইসলাম আমাদের শেখায় যে এই কষ্টগুলো আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম এবং পরকালে চিরস্থায়ী সুখের পথ প্রশস্ত করে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘এই দুনিয়ার জীবন তো কেবল ক্ষণস্থায়ী ভোগ, আর পরকালই হলো চিরস্থায়ী আবাস।’ (সুরা গাফির, আয়াত: ৩৯)পরীক্ষার উদ্দেশ্য ইসলামে পরীক্ষা বা কষ্টকে আল্লাহর রহমতের অংশ হিসেবে দেখা হয়। এগুলো আমাদের পাপ থেকে মুক্তি, আল্লাহর ওপর নির্ভরতা বৃদ্ধি, নিজেকে নম্র করা এবং তাঁর নৈকট্য লাভের মাধ্যম।আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা...
    আধুনিক মুসলিম নারীদের জন্য একজন অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হতে পারেন নবীজি (সা.)–এর সাহাবি আবু দারদা (রা.)-এর স্ত্রী উম্মে দারদা (রহ.)। তাঁর মূল নাম ছিল হুজাইমাহ আল আওয়াসাবিয়্যাহ, তবে ইতিহাসে তিনি অমর হয়ে আছেন জ্ঞানসাধক উম্মে দারদা নামেই। ইসলামি শিক্ষায় পাণ্ডিত্য অর্জন এবং পরবর্তী সময় শিক্ষক হিসেবে তাঁর অবদান ইসলামের ইতিহাসে অমর হয়ে আছে।উম্মে দারদা (রহ.)-এর মা-বাবা কে ছিলেন, সে ব্যাপারে ইতিহাস নিরব। তবে ছোটবেলায় তিনি মা-বাবাকে হারান। এ সময় মদিনার আবু দারদা (রা.) উম্মে দারদাকে এতিম শিশু হিসেবে গ্রহণ করেন এবং পরবর্তী সময় তাঁকে সঙ্গে করে দামেস্কে নিয়ে যান। পরিণত বয়স হলে তাঁকে বিয়ে করেন।যখন বালিকা থেকে কিশোরী হয়ে উঠেন, একদিন মসজিদে গিয়ে আবু দারদা তাঁকে বলেন, এখন থেকে তুমি ওই পাশে নারীদের কাতারে গিয়ে নামাজ পড়বে।ইবনে জাবির ও উসমান ইবনে...
    ইসলামের ইতিহাসে সাহাবিদের অবদান অতুলনীয়। তাঁরা ছিলেন রাসুল (সা.)-এর সবচেয়ে নিকটতম সঙ্গী, যাঁরা ইসলামের প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় অসাধারণ ত্যাগ ও নিষ্ঠা প্রদর্শন করেছিলেন।তাঁদের মধ্যে কিছু সাহাবি জীবদ্দশায়ই রাসুল (সা.)-এর মাধ্যমে জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছিলেন। এই সাহাবিদের মধ্যে ‘আশারায়ে মুবাশশারা’ বা জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ১০ জন সাহাবির নাম সহিহ হাদিসে স্পষ্ট উল্লেখ আছে।এ ছাড়া বেশ কয়েকজন সাহাবিকে আল্লাহর রাসুল বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন উদাহরণের মাধ্যমে জান্নাতি হওয়ার কথা জানিয়েছেন।আশারায়ে মুবাশশারা: জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ১০ সাহাবি ‘আশারায়ে মুবাশশারা’ অর্থ সুসংবাদপ্রাপ্ত ১০ জন। এই ১০ জন সাহাবি জীবদ্দশায় রাসুল (সা.) থেকে জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছিলেন।একটি হাদিসে সাঈদ ইবনে জায়িদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেন, ‘১০ জন জান্নাতে যাবে: আবু বকর জান্নাতি, ওমর জান্নাতি, উসমান জান্নাতি, আলী জান্নাতি, তালহা জান্নাতি, জুবাইর ইবনুল আওয়াম জান্নাতি, আবদুর রহমান ইবনে...
    মহানবী (সা.) বয়োজ্যেষ্ঠদের যত্ন নিতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি নিজে যে নীতি শিখিয়েছিলেন, তা নিজের জীবনে প্রয়োগ করে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।ইসলামে বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রতি দায়িত্ব নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যদি কোনো যুবক বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে তাঁর বয়সের কারণে সম্মান করে, তবে আল্লাহ তার বৃদ্ধ বয়সে তাকে সম্মান করার জন্য কাউকে নিযুক্ত করবেন।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২,০২২)বয়োজ্যেষ্ঠদের সম্মান করতে তিনি যুবসমাজকে উৎসাহিত করেছেন, যাতে প্রজন্মের মধ্যে দূরত্ব কমে এবং ভালোবাসা ও বোঝাপড়ার পরিবেশ সৃষ্টি করে। হাদিসে ‘বয়োজ্যেষ্ঠ’ শব্দটি সাধারণভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, যা জাতি বা ধর্মের সীমাবদ্ধতা ছাড়াই সব বয়োজ্যেষ্ঠের প্রতি সম্মান প্রকাশ করে।সে আমাদের মধ্যে নয়, যে আমাদের শিশুদের প্রতি দয়া করে না এবং আমাদের বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রতি সম্মান দেখায় না।সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১,৯১৯আরেকটি হাদিসে তিনি বলেছেন, ‘যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাঁর...
    আমাদের মতোই মহানবী (সা.) নিত্যদিন নানামুখী জীবন–যন্ত্রণার মুখোমুখি হয়েছেন, বিভিন্ন ধরনের মানুষের সমর্থন ও বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছেন। তাঁর জীবনের ঘটনাবলি আমাদের শেখায় কীভাবে আমরা আমাদের উদ্দেশ্যের পথে অটল থাকব, সমর্থন গ্রহণ করব এবং বিরোধিতার মোকাবিলা করব।১. ভিন্নমতের সমর্থকদের মূল্যায়নজীবনে এমন কিছু মানুষ থাকবেন, যারা আপনার উদ্দেশ্য বিশ্বাস না করলেও আপনাকে সমর্থন করবেন, প্রয়োজনে জীবনের ঝুঁকি নেবেন। এমন সমর্থকদের মূল্য দেওয়া উচিত, এমনকি যদি তারা আমাদের বিশ্বাসে পুরোপুরি একমত না হন, তবুও। নবীজি (সা.)-এর জীবনে এমন একজন ছিলেন তাঁর চাচা আবু তালিব। তিনি ইসলাম গ্রহণ না করলেও নবীজি (সা.)-কে মক্কার কঠিন সময়ে সুরক্ষা দিয়েছেন। আবু তালিব কুরাইশদের বিরোধিতার মুখে অটল থেকে নবীজি (সা.)-এর পাশে দাঁড়িয়েছেন (ইবন হিশাম, আস-সীরাহ আন-নাবাবিয়্যাহ, ১/২৬৫, কায়রো: মাকতাবাত মুহাম্মদ আলী সাবিহ)।আরও পড়ুনমহানবী (সা.)–র হিজরত মদিনায় হলো যে কারণে২৯ জুন ২০২৫২. নিকটাত্মীয়দের বিরোধিতার মোকাবিলাকখনো কখনো নিকটাত্মীয়রাও আমাদের...
    ইসলামের প্রতি একটি প্রচলিত ভুল ধারণা হলো এটি কঠোর এবং মানুষের প্রাকৃতিক আকাঙ্ক্ষাকে দমন করে। বিশেষ করে নারী-পুরুষের মধ্যে প্রেম বা হুব্ব নিয়ে এই ধারণা প্রায়শই প্রচারিত হয়।ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রেমের ধারণা, শরিয়তের সীমাবদ্ধতা এবং ফকিহদের তাত্ত্বিক ও দার্শনিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ রয়েছে।ইসলামে প্রেম: ভুল ধারণা ও বাস্তবতা ইসলাম প্রেমকে নিষিদ্ধ করেনি; বরং এটিকে শরিয়তের সীমার মধ্যে রাখার পক্ষে। ইসলাম প্রেমকে একটি প্রাকৃতিক ও ফিতরাতের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, যা মানুষকে আধ্যাত্মিক ও নৈতিক উৎকর্ষের দিকে নিয়ে যেতে পারে।তবে এই প্রেম যেন ফুজুর (অশ্লীলতা) বা পাপের দিকে না নিয়ে যায়, সেজন্য শরিয়ত কিছু সীমারেখা নির্ধারণ করেছে। ইসলাম প্রেমকে শুদ্ধভাবে পালনের জন্য বিবাহের মাধ্যমে একটি বৈধ পথ দেখিয়েছে।ইসলামের প্রতি একটি প্রচলিত ভুল ধারণা হলো এটি কঠোর এবং মানুষের প্রাকৃতিক আকাঙ্ক্ষাকে দমন করে।...
    টাকা বা আরো বিশেষ করে বললে, অর্থ আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। কিন্তু টাকা শুধু ধাতব মুদ্রা বা কাগজের নোট নয়, এটি একটি ব্যবস্থা, যা সমাজের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোকে সচল রাখে। ইসলামি ও পশ্চিমা রাষ্ট্রে মুদ্রার ভূমিকা কীভাবে গড়ে উঠেছে এবং এর কাজ কী ছিল, তা বোঝার জন্য আমাদের ইতিহাসের পাতা উল্টে দেখতে হবে।ইসলামি রাষ্ট্রে মুদ্রার ভূমিকা অতীতে মানুষ বিনিময় প্রথার (Barter System) মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য করত। কিন্তু এ প্রথায় অনেক সমস্যা ছিল। ধরুন, কেউ গম বিক্রি করতে চায়, কিন্তু তার বিনিময়ে তিনি ছাগল চান। যদি ছাগলের মালিক গম না চায়, তাহলে লেনদেন সম্ভব হতো না। জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ সমস্যা আরও জটিল হয়ে ওঠে। তখনই টাকার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়, যা একটি সাধারণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করে এবং বিনিময়প্রক্রিয়াকে...
    নবীজি (সা.) চল্লিশ বছর বয়সে প্রথম ওহি পান। তিনি মানবজাতির কাছে আল্লাহর বাণী প্রচার ও শিক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব পান এবং এই দায়িত্ব পালনে তিনি নিজের সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করেন।তবে, এই ওহি গ্রহণের প্রক্রিয়া তাঁর জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যন্ত কঠিন ছিল।ওহি গ্রহণের শারীরিক ও মানসিক প্রভাব নবীজি (সা.) যখন ওহি গ্রহণ করতেন, তখন তা তাঁর উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করত। হাদিসে উল্লেখ আছে যে, ওহি গ্রহণের সময় তাঁর শরীরে ভারী বোঝা অনুভূত হত, যা তাঁকে ক্লান্ত ও দুর্বল করে দিত (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২)।এই প্রক্রিয়া শুধু শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবেও ছিল কঠিন। একই সঙ্গে, তিনি মক্কার বিরোধীদের থেকে প্রবল প্রত্যাখ্যান ও বিরোধিতার সম্মুখীন হচ্ছিলেন। এই চাপের কারণে তিনি কয়েকদিন অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং এমনকি রাতের তাহাজ্জুদ নামাজের জন্যও উঠতে পারেননি।ওহির সাময়িক...
    মহানবী (সা.)-এর জীবনশৈলী শুধু ধর্মীয় বিচারে নয়, বরং আধুনিক সময়ে বিজ্ঞানময় জীবন যাপনের দিন থেকেও একটি অনুকরণীয় আদর্শ। তাঁর দৈনন্দিন অভ্যাসগুলো স্বাস্থ্য, মানসিক শান্তি এবং সমাজের সামগ্রিক কল্যাণের জন্য অত্যন্ত উপকারী ছিল।আধুনিক গবেষণা তাঁর অনেক অভ্যাসের স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রমাণ করেছে, যা আমাদের জন্য তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরে। আজ আমরা নবী (সা.)-এর নয়টি অভ্যাস নিয়ে আলোচনা করব।১. ভোরে ওঠা নবীজি (সা.) প্রতিদিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠতেন এবং রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতেন। সকাল সকাল জেগে ওঠা উৎপাদনশীলতা বাড়ায় এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ভোরে ওঠেন, তারা দিনের কাজে বেশি মনোযোগী হন এবং তাদের মানসিক চাপ কম থাকে (ম্যাক্সওয়েল, জে., দ্য পাওয়ার অফ অ্যারলি মর্নিং, হার্পারকলিন্স, নিউ ইয়র্ক: ২০১৮, পৃ. ৪৫-৪৭)।পেটের এক-তৃতীয়াংশ খাবার, এক-তৃতীয়াংশ পানি...
    ৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে সংঘটিত হয় নবীজির (সা.) তাবুক অভিযান। এই তাবুক অভিযানের সময় একটি বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি ছিল তরুণ সাহাবি আবদুল্লাহ জুলবিজাদাইনকে নিয়ে। তার ঘটনাটি বলতে হলে জানতে হবে তার আগেকার জীবনও।ইয়েমেনের সীমান্তবর্তী একটি গ্রাম। সেই ছোট্ট গ্রামটিতে বাস করত এক মধ্যবিত্ত পরিবার। স্বামী-স্ত্রী ও আদরের এক ছেলে। তাঁরা ছেলেটির নাম রেখেছিলেন আবদুল উজ্জা।আচমকাই একদিন মারা গেলেন আবদুল উজ্জার পিতা। বাড়ির একমাত্র কর্মক্ষম মানুষটি মারা গেলে স্বাভাবিকভাবেই উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যায়। পরিবারটিরও তা–ই হলো। অবশেষে অভাব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য গ্রামের এক ব্যক্তিকে বিয়ে করতে বাধ্য হলেন আবদুল উজ্জার মা।চাচার সংসারে থাকেন বালক আবদুল উজ্জা। সারা দিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয়। এভাবেই দিন কাটতে লাগল বালক আবদুল উজ্জার।নতুন স্বামী ভালো মানুষ ছিলেন না। তিনি তাঁর নতুন স্ত্রীর আগের ছেলে...
    ইসলামের ইতিহাসে ‘মসজিদে যিরার’–এর ঘটনা একটি তাৎপর্যপূর্ণ ও শিক্ষণীয় অধ্যায়। মসজিদটি মদিনায় নির্মাণ করেছিল মোনাফেকরা (কপট বিশ্বাসীদের) মুসলিম সম্প্রদায়ের ঐক্য ভাঙতে এবং ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালানোর উদ্দেশ্যে। মুহাম্মদ (সা.) তাই মসজিদ ধ্বংসের নির্দেশ দিয়েছিলেন।ঘটনার পটভূমি মদিনায় মুসলমানরা যখন ইসলামের প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত, তখন আবু আমির নামের খ্রিষ্টান সন্ন্যাসী ও তার মোনাফিক সহযোগীরা মসজিদে যিরার নির্মাণ করে। মসজিদটির অবস্থান ছিল তাকওয়ার ভিত্তিতে নির্মিত ইসলামের প্রথম মসজিদ ‘মসজিদে কোবা’র কাছাকাছি।আবু আমির ছিলেন জাহেলি যুগে খাজরাজ গোত্রের একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তিনি চেয়েছিলেন মসজিদটিকে মোনাফিকদের জন্য একটি গোপন ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে, যেখান থেকে মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা সহজ হবে।আবু আমির চেয়েছিলেন এই মসজিদকে মোনাফিকদের জন্য একটি গোপন ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে, যেখান থেকে মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা সহজ হবে।তারা নবীজি...
    দুনিয়া, এ এক বিচিত্র মোহের মায়াজাল। এখানে প্রতিনিয়ত মানুষ লিপ্ত থাকে খ্যাতি, সম্পদ আর ভোগবিলাসের পেছনে ছুটে চলার প্রতিযোগিতায়। আজকের উম্মাহর অধিকাংশ মানুষই দুনিয়ার মোহে বিভোর। কেউ ক্ষমতার চূড়ায় উঠতে চায়, কেউ সম্পদের পাহাড় গড়ার স্বপ্নে বিভোর, আবার কেউ খ্যাতির দুনিয়ায় নিজেকে উঁচুতে তুলে ধরতে চায়।রঙিন এই দুনিয়ায় যখন মানুষের অন্তর দুনিয়ার মোহে নিমজ্জিত, তখন যদি কোনো চিন্তাশীল হৃদয় নিজেকে প্রশ্ন করে, ‘এই দুনিয়ার সঙ্গে আমার কী সম্পর্ক?’আমরা দেখি, প্রায় দেড় হাজার বছর আগে আমাদের প্রিয় নবী (সা.) এ প্রশ্নের কী অপূর্ব উত্তর দিয়েছেন। আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) একবার খেজুরপাতার মাদুরে শুয়েছিলেন। মাদুরের দাগ তাঁর পবিত্র শরীরে স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। আমি বললাম, “হে আল্লাহর রাসুল, যদি আপনি অনুমতি দেন, তবে আমরা আপনার জন্য আরামদায়ক বিছানা তৈরি করে দিতাম, যাতে...
    ইবনে হাইম মাকদিসি ছিলেন বিখ্যাত ইসলামবেত্তা ইবনে হাজার আসকালানির (রহ.) শিক্ষক। ফিলিস্তিনের ইতিহাসে অসংখ্য পণ্ডিত ইসলামি জ্ঞান ও সংস্কৃতির অগ্রগতিতে অবদান রেখেছেন, ইবনে হাইম তাঁদের অন্যতম।ইবনে হাজার (রহ.) তাঁর সম্পর্কে বলেন, তিনি গণিত ও ‘ফারায়েজ’ শাস্ত্রে সমসাময়িকদের তুলনায় ছিলেন শ্রেষ্ঠ, আর এ জন্য দূরদূরান্ত থেকে মানুষ তাঁর কাছে জ্ঞান অর্জনের জন্য আসত। (ইবনে হাজার, ইনাবা, ১৯৯৪, ২/৫২৫)ইবনে হাইম একাধারে ফিকহ, গণিত, ব্যাকরণ, কবিতা ও ফারায়েজ (উত্তরাধিকার হিসাব) বিষয়ে গভীর জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। ফারায়েজ শাস্ত্রে বিশেষ দক্ষতার কারণে তিনি ইবনে হাইম আল-ফারায়েজি নামেও পরিচিত ছিলেন।তিনি গণিত এবং উত্তরাধিকার হিসাবে সমসাময়িকদের তুলনায় শ্রেষ্ঠ ছিলেন, যাঁর জন্য দূরদূরান্ত থেকে মানুষ তাঁর কাছে জ্ঞান অর্জনের জন্য আসতেন।ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.), ইনাবা, ১৯৯৪, ২/৫২৫তাঁকে জেরুজালেমের পণ্ডিত বলা হলেও তাঁর জন্ম হয় কায়রোতে আল-কারাফা আল-সুগরা এলাকায়...
    ধৈর্য বা সবর ইসলামে একটি মহৎ গুণ, যা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রয়োজন। বিশেষ করে যারা আল্লাহর পথে ডাকার কাজে নিয়োজিত, তাদের জন্য অপরিহার্য। ইসলামের কথা বলতে গিয়ে একজন দায়ী (আহ্বানকারী) বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। তার মধ্যে ব্যক্তিগত দুর্বলতা যেমন থাকে, একইভাবে বিভিন্ন ধাপে থাকে বিরোধিতাও। এইসব চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে ধৈর্য অত্যন্ত জরুরি।ধৈর্য গড়ে তুলতে বেশ কয়েকটি শিক্ষা কোরআন আমাদের দিয়েছে, তার মধ্যে ৬টি শিক্ষার কথা আজ বলব।১. আল্লাহর সাহায্য চাওয়া ধৈর্য হল হৃদয়ের সেই শক্তি, যা আল্লাহর স্মরণ ও তাঁর প্রতি সমর্পণের মাধ্যমে জাগ্রত হয়।ইমাম গাজ্জালি বলেন, ইহইয়াউ উলুমিদ্দিনকোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘ধৈর্য ধরো, আর তোমার ধৈর্য আল্লাহর সাহায্য ছাড়া সম্ভব নয়।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ১২৭)বোঝা যায় যে, ধৈর্য একটি আধ্যাত্মিক গুণ, যা কেবল আল্লাহর প্রতি নির্ভরতার মাধ্যমে অর্জিত হয়। ধৈর্য...
    তাওহিদ হলো ইসলামের মূল ভিত্তি, যা মুমিনের ইমানের কেন্দ্রবিন্দু। শব্দটির আভিধানিক অর্থ ‘একত্ব’ বা ‘এক করা’।ইসলামের পরিভাষায়, তাওহিদ হলো আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস করা এবং তাঁকে সব ইবাদতের একমাত্র হকদার হিসেবে মানা। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘বলো, তিনি আল্লাহ, এক ও অদ্বিতীয়।’ (সুরা ইখলাস, আয়াত: ১)বলো, তিনি আল্লাহ, এক ও অদ্বিতীয়।সুরা ইখলাস, আয়াত: ১তাওহিদের অর্থ ও প্রকার তাওহিদ শব্দটি আরবি শব্দ ‘ওয়াহিদ’ থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘এক’। ইসলামি আকিদায় তাওহিদ হলো আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস করা—তিনি একমাত্র স্রষ্টা, পালনকর্তা ও ইবাদতের যোগ্য।ইমাম ইবনে কাসির বলেন, ‘তাওহিদ হলো আল্লাহর অস্তিত্ব, গুণাবলি ও ইবাদতের একত্বে বিশ্বাস করা।’ (ইবনে কাসির, ৪/৫৬২)আরও পড়ুনকেন শিরক সবচেয়ে বড় পাপ১৮ জুন ২০২৫তাওহিদকে সাধারণত তিনটি প্রকারে ভাগ করা হয়:তাওহিদুর রুবুবিয়্যাহ: আল্লাহর স্রষ্টা, পালনকর্তা ও বিশ্বের নিয়ন্ত্রক হিসেবে একত্বে বিশ্বাস। কোরআনে বলা...