মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেলেন অপহরণের শিকার চিকিৎসক
Published: 12th, January 2025 GMT
গাজীপুরের মাওনা চৌরাস্তা এলাকার একটি ক্লিনিকে গত শনিবার চেম্বার করতে এসেছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসক আমিনুর রহমান। সন্ধ্যায় ঢাকায় ফেরার পথে একদল লোক তাঁকে প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে শুরু করে মারধর। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিবারের কাছ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা নেওয়ার পর ভোরে আমিনুরকে ফেলে চলে যায়।
অপহরণের শিকার আমিনুর রহমান টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার কচুটি গ্রামের ইসমাইল হোসেনে ছেলে। তিনি ঢামেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক। পরিবার নিয়ে থাকেন রাজধানীর শনির আখড়া এলাকায়। সপ্তাহে এক দিন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তার লাইফ কেয়ার নামে একটি ক্লিনিকে চেম্বার করেন আমিনুর।
রোববার রাত ১১টা তিনি সমকালকে বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬টার পর চেম্বার শেষ করে আমি মাওনা ফ্লাইওভারের দক্ষিণ দিকে মহাসড়কের পাশে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এ সময় সিলভার কালারের একটি প্রাইভেটকার আমার সামনে এসে দাঁড়ায়। চালক জানতে চান, আমি যাব কিনা? মাথা নেড়ে না সূচক জবাব দেওয়ার পরই আমার পেছন দিক থেকে এসে তিন যুবক জাপটে ধরে জোর করে প্রাইভেটকারে তুলে নেয়। মহাসড়ক দিয়ে ঢাকার দিকে গাড়ি দ্রুতগতিতে যেতে থাকে। আপনাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে বলতে বলতে তারা আমার দুই চোখ স্কচটেপ দিয়ে পেঁচিয়ে ফেলে। বলে, টাকা দিলেই ছেড়ে দেব।’
তিনি বলেন, ‘আমার দুই হাঁটুতে তারা হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। আমি তখন চিৎকার করছিলাম। আমার কাছ থেকে স্ত্রীর মোবাইল নম্বর নিয়ে কল করে সেই চিৎকারের শব্দ শোনানো হয়। প্রথমে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে সেটা ৩ লাখ টাকায় নামে।’
ডা.
আমিনুর রহমান বলেন, ‘অপহরণকারীরা আমার সঙ্গে থাকা নগদ সাড়ে ৯ হাজার টাকাও নিয়ে নেয়। পরে গাজীপুরের হোতাপাড়া ও রাজেন্দ্রপুর এলাকা থেকে কিছু দূর ভেতরে আমাকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়ে চলে যায়। সোমবার মামলা করার জন্য শ্রীপুর থানায় যাব।’
শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, অপহরণের শিকার চিকিৎসক বাসায় ফিরেছেন। স্বজন এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে এ ঘটনায় রোববার পর্যন্ত কেউ মামলা করতে আসেনি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় বাবা-মাকে মারধর করে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণ, অভিযুক্ত আটক
বাড়ির ভেতর ঢুকে বাবা-মাকে মারধরের পর এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের বেপারীপাড়ায় ঘটনাটি ঘটে। বিকেল ৫টার দিকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার ও মূল অভিযুক্ত আটক করে পুলিশ।
অভিযুক্ত সঞ্চয় (২০) উপজেলার ফাঁসিতলা এলাকার মোঘলটুলী গ্রামের রাফিউল ইসলাম রাফির ছেলে।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, মঙ্গলবার দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরেন ওই শিক্ষার্থী। কিছুক্ষণ পর সঞ্চয়সহ ১৫-২০ জন লাঠি নিয়ে বাড়িতে হামলা চালায়। তারা ঘরের দরজা-জানালাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এবং মালামাল লুট করে। এসময় বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা ওই শিক্ষার্থীর বাবা-মাকে মারধর ও কুপিয়ে আহত করে। পরে তারা শিক্ষার্থীকে টেনেহিঁচড়ে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
ধামরাইয়ে চালক-হেলপারকে মারধর করে তেলবাহী ট্রাক ছিনতাই
সিরাজগঞ্জে সহপাঠীদের মারধরে আহত এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু
পুলিশ বিকেল ৫টার দিকে পার্শ্ববর্তী কামারদহ ফেলুপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে চাঁন মিয়ার বাড়ি থেকে অপহৃত শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে। এসময় অভিযুক্ত সঞ্চয়কে আটক ও তার কাছে থাকা মোটরসাইকেল জব্দ করে পুলিশ।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ভাষ্য, দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে যাওয়া আসার পথে তাকে উত্ত্যক্ত করাসহ বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছিলেন সঞ্চয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সঞ্চয়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
ঘটনাটি নিশ্চিত করে গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি বুলবুল ইসলাম বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ উদ্ধার অভিযান চালায়। একটি বাড়ি থেকে শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করা হয়। অভিযুক্ত সঞ্চয়কে আটক করা হয়েছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।”
ঢাকা/মাসুম/মাসুদ