কমরেড অমল সেনের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন
Published: 16th, January 2025 GMT
উপমহাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম পুরুষ, ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনের নেতা, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কমরেড অমল সেনের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়।
কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুলের নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড আনিসুর রহমান মল্লিক, কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড তপন দত্ত, কমরেড হিমাংশু সাহা, কমরেড রফিকুল ইসলাম পিয়ারুল, কমরেড দীপংকর সাহা দিপু, কমরেড আমিরুল হক আমিন, কমরেড জাকির হোসেন রাজু, কমরেড মোস্তফা আলমগীর রতন, কমরেড সাব্বাহ আলী খান কলিন্স, কমরেড আবুল হোসাইন, কমরেড মুর্শিদা আখতার নাহার, কমরেড তৌহিদুর রহমান, কমরেড সাদাকাত হোসেন খান বাবুল, কমরেড তপন রায় প্রমুখ।
আরও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিন মোল্লা, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.
কমরেড অমল সেন ব্রিটিশ ভারতে ১৯১৪ সালে বর্তমানের নড়াইল জেলার আফরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। নবম শ্রেণির ছাত্র থাকাবস্থায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামে যুক্ত হয়ে ‘অনুশীলন’ সমিতির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ১৯৩৩ সালে খুলনার বিএল কলেজে রসায়নশাস্ত্রে পড়াকালে অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যুক্ত হন। ওই বছরই এ অঞ্চলের জমিদারদের বিরুদ্ধে কৃষক আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। নিজের বাবার জমিদারির বিরুদ্ধে কৃষক আন্দোলন তাকে আরও পরিচিত করে তোলে। ধারাবাহিকভাবেই ওই অঞ্চলে আন্দোলন চলতে থাকে। ১৯৩৫ সালে তিনি অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ লাভ করেন। ১৯৪৬ ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনের কিংবদন্তী পুরুষ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন সবার ‘বাবুদা’ হিসেবে। ১৯৪৮ সালে যশোর পার্টির সম্পাদক নিযুক্ত হন। সদ্য ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর পাকিস্তানি মুসলিম লীগ সরকারের রোষানলে পড়েন এবং ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত কারাগারে থাকেন। দুই বছরের জন্য বাইরে থাকলেও আবারও ১৯৫৮ সালে তিনি গ্রেপ্তার হয়ে ১৯৬৯ সন পর্যন্ত জেলে থাকেন।
উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সময় মুক্তি লাভ করলেও আবারও তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯৭১-এর মার্চ মাসে জনগণ জেল ভেঙে তাকে মুক্ত করেন।
আজীবন বিপ্লবী, অকৃতদার, নিঃস্বার্থ বিপ্লবী কমরেড অমল সেন ১৯৭১ সালে জেলমুক্ত হয়ে ভারতে চলে যান এবং তখন বিভ্রান্ত বাম আন্দোলনের কর্মীদের সংগঠিত করতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ করতে ‘খোলা চিঠি’ দিয়ে আহ্বান জানান। ভারতে বসেই তিনি এ দেশের বিপ্লবীদের ঐক্যবদ্ধ করার প্রচেষ্টা চালান। পরে ‘কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের সমন্বয় কমিটি’ গড়ে তোলেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে পিকিং-মস্কো ধারার বিপরীতে লেনিনবাদী কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে তোলেন এবং তার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
কমরেড অমল সেনের হাতে গড়া লেনিনবাদী কমিউনিস্ট পার্টি পরবর্তীতে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি নামধারণ করে। তিনি ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন।
কমরেড অমল সেন ২০০৩ সালে ৮৯ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রাজনৈতিক জীবনে কমরেড অমল সেন তার সময়ে বাম-ডান বিচ্যুতির বিরুদ্ধে কমিউনিস্ট কর্মীদের সমাজবিপ্লবের পথ দেখিয়েছেন তার ‘জনগণের বিকল্প শক্তি’ নামক চিন্তাসূত্র দিয়ে।
সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের বিপর্যয়ের আগেই ১৯৭৭ সালে তিনি ‘বিশ্ব সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সমস্যা প্রসঙ্গে’ প্রবন্ধ লেখেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেল ৩৭টি প্রতিষ্ঠান
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছে ৩৭টি প্রতিষ্ঠান। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এসব প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের একেকটি ২০ থেকে ৫০ টন পর্যন্ত ইলিশ রপ্তানি করতে পারবে। আজ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে চলতি বছর ভারতে ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ মাছ রপ্তানির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত ৮ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করে। গত বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রথমে ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে সেটি কমিয়ে ২ হাজার ৪২০ টন করা হয়। সেই তুলনায় এবার অর্ধেক ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছর অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে ৫ অক্টোবরের মধ্যে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করতে বলেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অনুমোদনপত্রে বলা হয়েছে, শুল্ক কর্তৃপক্ষ রপ্তানি পণ্যের যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। অনুমোদিত পরিমাণের বেশি রপ্তানি করা যাবে না। অনুমতিপত্র হস্তান্তরযোগ্য নয়। সরকার প্রয়োজনে যেকোনো সময় এই রপ্তানির অনুমতি বাতিল করতে পারবে।
ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো খুলনার আরিফ সি ফুডস, বিশ্বাস এন্টারপ্রাইজ, লোকজ ফ্যাশান ও মাশফি অ্যান্ড ব্রাদার্স, চট্টগ্রামের জেএস এন্টারপ্রাইস ও আনরাজ ফিশ প্রোডাক্টস, যশোরের লাকী এন্টারপ্রাইজ, এমইউ সি ফুডস, লাকী ট্রেডিং, রহমান ইমপেক্স ফিস এক্সপোর্ট, মোহাতাব অ্যান্ড সন্স, জনতা ফিস, বিশ্বাস ট্রেডার্স ও কেবি এন্টারপ্রাইজ, ঢাকার ভিজিল্যান্ড এক্সপ্রেস, স্বর্ণালী এন্টারপ্রাইজ, মাজেস্টিক এন্টারপ্রাইজ ও বিডিএস করপোরেশন, বরিশালের মাহিমা এন্টারপ্রাইজ, নাহিয়ান এন্টারপ্রাইজ, এ আর এন্টারপ্রাইজ ও তানিসা এন্টারপ্রাইজ, পাবনার নোমান এন্টারপ্রাইজ, রুপালী ট্রেডিং করপোরেশন, সেভেন স্টার ফিস প্রসেসিং কোং, ন্যাশনাল অ্যাগ্রো ফিশারিজ, আরফি ট্রেডিং করপোরেশন, জারিফ ট্রেডিং করপোরেশন, জারিন এন্টারপ্রাইজ, ফারিয়া ইন্টারন্যাশনাল ও সততা ফিস, ভোলার রাফিদ এন্টারপ্রাইজ, সাতক্ষীরার মা এন্টারপ্রাইজ ও সুমন ট্রেডার্স।