তামান্না ভাটিয়ার মতো উজ্জ্বল ত্বক পেতে কী করবেন
Published: 19th, January 2025 GMT
বলিউড অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া। তার দুধ সাদা গায়ের রঙের নেপথ্যের কাহিনি অনেকেই জানতে চান। অনেকেই ভাবেন তিনি ত্বকের খুঁত ঢাকতে পারলারে যান। অনেক অভিনেতা- অভিনেত্রীরা নিজেকে সুন্দর দেখাতে অনেক চিকিৎসাও করান। তবে তামান্না ভাটিয়া সেদিকে যাননি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এ বলিউড অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তিনি তার মায়ের শেখানো ঘরোয়া উপকরণেই ত্বকের যত্ন নেন। ছোটবেলা থেকেই তামান্না সেই রূপটানের উপর ভরসা রেখেছেন।
পেশার কারণেই বেশির ভাগ সময়ে মেকআপ করে থাকতে হয় তামান্নাকে। দিনের পর দিন রাসায়নিক দেওয়া প্রসাধনী ব্যবহারে ত্বকের প্রভূত ক্ষতিও হয়। তাই মায়ের শেখানো ঘরোয়া স্ক্রাব এবং মাস্কের উপরেই ভরসা করেন তিনি।
তামান্নার শেখানো স্ক্রাব তৈরি করতে কী কী লাগবে?
উপকরণ:
১ চা চামচ চন্দনের গুঁড়ো
১ চা চামচ কফি পাউডার
১ চা চামচ মধু
পদ্ধতি:
ছোট পাত্রে সব উপকরণ মিশিয়ে নিন। চোখের চারপাশ বাদে পুরো মুখে মেখে নিন এই স্ক্রাব। হালকা হাতে মাসাজ করতে থাকুন। মিনিট দশেক পরে ঈষদুষ্ণ পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন। শুকনো তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে ময়েশ্চারাইজার মেখে নিন।
তমন্নার শেখানো মাস্ক তৈরি করতে কী কী লাগবে?
উপকরণ:
১ টেবিল চামচ বেসন
১ টেবিল চামচ টক দই
১ টেবিল চামচ গোলাপজল
পদ্ধতি:
ছোট পাত্রে সব উপকরণ নিয়ে ঘন প্যাক তৈরি করে নিন। পুরো মুখে ওই প্যাক লাগান। মিনিট দশেক অপেক্ষা করুন। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। তোয়ালে দিয়ে শুকনো করে মুখ মুছে নিন। এরপর ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চা শ্রমিকদের ক্লান্তি দূর করে ‘পাতিচখা’
চায়ের সবুজ বাগানে গাছ থেকে পাতা কুঁড়ি তোলার কাজ সবচেয়ে বেশি করেন নারী শ্রমিকরা। রোদে পুড়ে এবং বৃষ্টিতে ভিজে চায়ের বাগানের টিলায় পাতা কুঁড়ি সংগ্রহ করতে হয় তাদের।
ক্লান্ত দুপুরে নিজ হাতে তৈরি ‘পাতিচখা’ বা কাঁচা চা পাতির ভর্তা খেয়ে দুর্বল স্নায়ুকে আবার সবল করেন তারা। এরপর আবারো শুরু করেন কর্মযজ্ঞ। পড়ন্ত বিকেলে ওজন ধারের কাছে তোলা পাতার হিসাব দিয়ে ঘরে ফেরেন এই নারীরা।
চা সংশ্লিষ্টরা জানান, চায়ের কাঁচা পাতায় রয়েছে ক্যাফেইন নামক উপাদান। হাতের মলায় ক্যাফেইন তৈরি হয়। যা খেলে শরীরে উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়। পাতিচখা বা চা পাতির ভর্তা চা শ্রমিকদের প্রিয় খাবার। দুপুর হলেই তারা গাছের ছায়ায় গোল হয়ে বসে চানাচুর, সিদ্ধ করা আলু, মরিচ, রসুনসহ অন্যান্য উপাদানের সঙ্গে চা পাতার কচি কুঁড়ি দিয়ে হাতের তালুতে ডলে তৈরি করেন পাতিচখা।
আরো পড়ুন:
পিয়াইন নদীতে নিখোঁজ বালু শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার
গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) মৌলভীবাজারের বিভিন্ন চা বাগান গিয়ে শ্রমিকদের পাতিচখা খাওয়ার দৃশ্য চোখে পড়ে।
কথা হলে চা শ্রমিকরা জানান, নারী শ্রমিকদের সর্দারনি সবার কাছ থেকে রুটি, পেঁয়াজ, মুড়ি, রসুন, চানাচুর, সিদ্ধ আলুসহ পাতিচখার উপকরণ সংগ্রহ করেন। একটি পাত্রে সব উপকরণ জমা করে সব শেষে চা পাতার কচি কুঁড়ি হাতের তালুতে ডলে সবাই মিলে তৈরি করেন পাতিচখা। সর্দারনি আবার সকলের হাতে হাতে তা বন্টন করেন।
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার করিমপুর চা বাগানের নারী শ্রমিক বাসন্তি মুন্ডার বলেন, “আমরা ক্লান্তি দূর করার জন্য পাতিচখা খাই। এটা আমাদের নিজস্ব খাবার।”
বসন্তি মুন্ডার কাছে বসে থাকা অপর নারী শ্রমিক সুমা কর্মকার বলেন, “ক্লান্ত দুপুরে গাছের শান্ত ছায়ায় বসে আমরা পাতিচখা খেয়ে কাজে যায়। আমরা এ থেকে শক্তি পাই।”
বাগানের শ্রমিক উর্মিলা তাপসী বলেন, “আমাদের দুপুরের নাস্তা পাতিচখা খেলে শক্তি আসে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, চা জনগোষ্ঠীর আদি পেশা হলো কৃষি। কৃষি কাজ করে তাদের জীবন চলত। ১৮৪০ সালের দিকে ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলে চায়ের চাষ বৃদ্ধি পায়। কর্মক্ষেত্র ক্লান্তি দূর করায় চায়ের কদর বাড়তে থাকে।
বাংলাদেশের চট্টগ্রামে প্রথম কর্ণফুলী চা বাগানের মাধ্যমে চায়ের চাষাবাদ শুরু হয়। মাটি, আবহাওয়া ও জলবায়ু অনুকূলে থাকায় সিলেট ও চট্টগ্রামে চা বাগান গড়ে ওঠে। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চা গাছ পরিচর্যার জন্য এখানে শ্রমিক আনা হয়। কাজের ক্লান্তি দূর করার জন্য মধ্যাহ্ন বিরতিতে রুটি খাওয়া ছিল তাদের পুরানো প্রথা। মনের খেয়ালে চা-গাছের কচি পাতা হাতের তালুতে ডলে রুটির সঙ্গে খেতে শুরু করেন তারা।
শরীরে উদ্দীপনা সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে তারা দুপুরে রুটির সঙ্গে চায়ের কচি পাতা খাওয়ার প্রথা শুরু করেন। এর সঙ্গে যোগ হয় চানাচুর, সিদ্ধ করা আলু, মরিচ, রসুনসহ অন্যান্য উপাদান। শ্রমিকদের ভাষায় চাপাতি ভর্তা। এর বর্তমান নাম পাতিচখা।
চা বাগানের শ্রমিকদের সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বাগানে কাজ করতে হয়। দুপুরে ঘরে ফেরার সুযোগ নেই তাদের।
কথা হলে করিমপুর চা বাগানের শ্রমিক নেতা জাবেদ খান বলেন, “নারী শ্রমিকরা দুপুরে খাবার জন্য দুইটি রুটি সঙ্গে নিয়ে যান। এর সঙ্গে যোগ হয় চানাচুর, সিদ্ধ করা আলু, মরিচ, চায়ের কচি পাতা রসুন, পেঁয়াজসহ অন্যান্য উপাদান। ভর্তা খাওয়ার প্রথা আদিকাল থেকে চলে আসছে।”
ওই চা বাগানের সাবেক পঞ্চায়েত সভাপতি ৮০ বছর বয়সী কতুব আলী বলেন, “পাতিচখা এটি আদিকাল থেকে চলে আসছে। নাস্তা খাওয়ার পর শরীরে এনার্জি আসে, সেটি খেয়ে আবার কাজে মন দেন শ্রমিকরা।”
ঢাকা/মাসুদ