ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় বিয়ের করতে যাওয়ার সময় বরের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে বরপক্ষের ৪ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও আরও দুজন হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার বড়িকান্দি গ্রামের অলি মিয়ার বাড়িতে এ হামলা চালায় মনাক মিয়া ও তার বাহিনী।

এ ঘটনায় রাতে আহত অলি মিয়ার স্ত্রী সেলিনা বেগম মনাকসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয়ে আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে নবীনগর থানায় মামলা করেছেন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপারেশন) ওবায়দুর রহমান, নবীনগর থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
 
গুলিবিদ্ধরা হলেন- অলি মিয়া (৫০), তার বড় ভাই খলিল মিয়া (৬০), ছোট ছেলে আসিফ মিয়া (১৬) ও ভাগনে নাছির মিয়া (২০)।

পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বড়িকান্দি গ্রামে অলি মিয়ার ছেলে ইমরান মিয়ার বিয়ে উপলক্ষে বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনরা একে একে আসছিলেন। এমন সময় নূরজাহানপুর গ্রামের মনাক মিয়ার নেতৃত্বে তার বাহিনী সেখানে হামলা চালায়। মনাক বাহিনীর গুলিতে আহত হন ৪ জন।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আজিজুল হক বলেন, ‘হামলার বিষয়টি শুনেছি। গুলিবিদ্ধ অলি মিয়াসহ চারজনকে  ঢাকায় পাঠানো হয়।’

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমান জানান, ‘হামলার পর অলি মিয়ার বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি শান্ত।’

নবীনগর থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মনাকের বিরুদ্ধে মাদক, চুরি, ডাকাতি, হত্যাসহ বহু মামলা রয়েছে। ঘটনার পর তাকে ধরতে অভিযান চালিয়েছ পুলিশ। তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য়

এছাড়াও পড়ুন:

ধামরাইয়ে ৩ বছরেও শেষ হয়নি ‘বেলিশ্বর সেতু’ নির্মাণ

ঢাকার ধামরাইয়ে তিন বছরেও শেষ হয়নি বাথুলি-মহিশাষী সড়কের ‘বেলিশ্বর সেতু’র নির্মাণ কাজ। এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সড়কে চলাচল করা স্থানীয় কয়েক গ্রামের বাসিন্দারা। কর্তৃপক্ষ বলছে, অতি দ্রুত সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করে চলাচলের উপযোগী করা হবে।

ধামরাই উপজেলা এলজিইডি কর্তৃপক্ষ জানায়, ঢাকা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের (ডিডিআইআরডব্লিউএসপি) ধামরাই-সাটুরিয়া সড়কের মহিশাষী বাসস্ট্যান্ড থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সংযুক্ত বাথুলি বাসসট্যান্ড সড়কের বেলিশ্বর মোহনী মোহন উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় বিলের ওপর ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়। 

২০২২ সালের জুন মাসে ২ কোটি ৪৫ লাখ ৩৯৩ টাকায় সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নিরাপদ এন্টারপ্রাইজ। ২০২৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ২০ ভাগের মতো কাজ করে এক বছরের আগেই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে পালায় ঠিকাদার। 

এরপর ২০২৪ সালের ৫ ডিসেম্বর মেসার্স প্রিন্স এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নতুন করে ১ কোটি ৬৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকায় সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৫ সালের ৪ ডিসেম্বর। এরইমধ্যে ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সেতুর অর্থ ছাড় দেওয়া হয়েছে ৮৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকার।

সরেজমিনে বেলিশ্বর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেতুর দুই পাশের ভিত্তি নির্মাণ শেষ হয়েছে। পাইলিংয়ের কাজ চলছে। পরবর্তী কাজের জন্য ঠিকাদারের মালামাল এনে রাখা হয়েছে। 

এদিকে সেতুর কয়েক ফুট দূরত্বেই সাময়িক চলাচলে তৈরি করা হয়েছে বিকল্প সড়ক। এই সড়কে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয় অন্তত ২৫-৩০টি গ্রামের বাসিন্দা। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছেন স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবীরা।

ভুক্তভোগী এলাকাবাসীরা বলছেন, প্রায় তিন বছরেও সেতু নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন তারা। অটোরিকশা-ভ্যানে চলাচলের সময় এক পাশে নেমে অপর পাশে গিয়ে উঠতে হয়। একটু বৃষ্টি হলেই কাঁদার কারণে সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এছাড়া রোদের সময় পুরো এলাকা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে। সেতু নির্মাণ শেষ হলে দুর্ভোগ থেকে রক্ষা মিলবে বলে মনে করেন এলাকাবাসী।

বাথুলি এলাকায় একটি স্কুল থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে মহিশাষী এলাকায় বাড়ি ফিরছিলেন লিপি আক্তার। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘এই রাস্তাটা খুবই খারাপ। বাচ্চা নিয়ে স্কুলে যাই-আসি। খুব ঝুঁকিতে চলাচল করতে হয়। ডাইভারশন সড়ক যেটা করছে, বৃষ্টির সময় কাদা আর রোদের সময় ধুলায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে। অনেক সময় অটোরিকশা-ভ্যান উল্টে যায়। রাস্তাটা দ্রুত ঠিক করা দরকার।’’

মো. নুরুল ইসলাম নামে স্থানিয় এক মসজিদের ইমাম বলেন, ‘‘আমরা এলাকাবাসী ছাড়াও আশপাশের অনেক এলাকার লোকজন এই সড়ক ব্যবহার করে চলাচল করে। ব্রিজটা প্রায় দুই বছর হয়ে গেছে। কাজ শেষ না হওয়ায় আমরা অনেক দুর্ভোগের মধ্যে আছি। বৃষ্টি হলেও জ্বালা, রোদ উঠলেও পুরো এলাকা ধুলাবালিতে অন্ধকার হয়ে যায়। কিছু দেখা যায় না। সবকিছু মিলিয়ে আমরা খুবই দুর্ভোগে আছি। আমরা চাই অতি দ্রুত সেতুটি নির্মাণ করা হোক।’’

এদিকে বিকল্প সড়কে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সড়কে যানবাহন নিয়ে চলাচলরতরাও। ইশারত আলী নামে এক ভ্যানচালক বলেন, ‘‘তিন বছর যাবত সেতু নির্মাণ কাজটি চলছে। আমাদের চলাচলের সমস্যা। বৃষ্টি নামলে হাঁটা যায় না। রোদ উঠলে ধুলার কারণে চলাচল করা যায় না। বেশি মালামাল নিয়ে চলাচল করতে পারি না। নেমে ঠেলে যেতে হয়। দ্রুত সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি জানাই।’’

রাজীব নামে এক অটোরিকশা চালক বলেন, ‘‘আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই। কিছু দিন কাজ চলে। আবার বন্ধ। বৃষ্টির সময় গাড়ি চালাতে পারি না। সরকারের কাছে আবেদন সেতুটি দ্রুত শেষ করে দিক।’’

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ধামরাই উপজেলা প্রকৌশলী মো. মিনারুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমাদের বেলিশ্বর সেতুটি ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের। সেতুটি ইতোপূর্বে টেন্ডার হয়েছিল। কিন্তু ঠিকাদার কাজ শেষ না করায় কাজটি বাতিল করে পুনরায় টেন্ডার করা হয়। বর্তমানে কাজটি মেসার্স প্রিন্স এন্টারপ্রাইজ করছে। চুক্তি রয়েছে এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজটি শেষ হবে। কাজ চলমান রয়েছে। বর্তমানে ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি সময়মতো কাজটি শেষ হবে।’’

ঢাকা/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ