ফাঁদটির বহুল ব্যবহার দেখে ইউরোপের ধারাভাষ্যকারেরা চমকেও গেছেন। তাঁদের প্রতিক্রিয়া ছিল অনেকটা এমন, হান্সি ফ্লিক কি বার্সেলোনায় আগুন নিয়ে খেলছেন? কারণ, অফসাইডের যে ফাঁদ তিনি পেতেছেন, সেখানে একটু গড়বড় মানেই নিশ্চিত গোল হজম!

কিন্তু গত বছর ফ্লিক বার্সেলোনা কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ম্যাচের পর ম্যাচ চলে গেলেও এই ফাঁদ কাতালান ক্লাবটির গলার কাঁটা হয়ে ওঠেনি। বরং হাই লাইন ডিফেন্স সাজিয়ে ফ্লিক প্রতিপক্ষদের নিয়মিতই এই ফাঁদে আটকে ফেলছেন। মূলত হাই প্রেসিং, দলীয় শৃঙ্খলা ও ভিএআর প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করে, সেই ব্যাপারটি ভালোমতো বুঝে নেওয়া—এই তিনটি অনুমিতির ওপর বার্সার রক্ষণে ফাঁদটি পাতা হয়।

আরও পড়ুনমেসিকে পেনাল্টি নেওয়া শিখিয়েছিলেন নেইমার১ ঘণ্টা আগে

প্রতিপক্ষের আক্রমণভাগের খেলোয়াড়কে এই ফাঁদে ফেলতে পজিশনাল জ্ঞানও থাকতে হয়—কখন, কোথায়, কীভাবে দাঁড়ালে অন্তত সেকেন্ডের ভগ্নাংশ সময়ের ব্যবধানে অফসাইড ফাঁদ কার্যকর হয়ে উঠবে, সেটা বোঝাও গুরুত্বপূর্ণ। বার্সার ডিফেন্ডাররা যখন নিজেদের মধ্যে জায়গা কমিয়ে সামনে প্রেস করতে শুরু করেন, তখন প্রতিপক্ষ কোনোভাবে বল পেলেও অফসাইড ফাঁদ কেটে আক্রমণে ওঠা তাদের জন্য দুঃসাধ্য হয়ে ওঠে। দলের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের মধ্যে এ জন্য সমন্বয়টা খুব জরুরি।

তবে সেই সমন্বয়ে ভূমিকা আছে আক্রমণভাগেরও। ফ্লিকের শিষ্যরা রক্ষণ থেকে খুব দ্রুত আক্রমণে উঠতে পারেন বলেই প্রতিপক্ষ গুছিয়ে ওঠার সময় পায় না ও পাল্টা আক্রমণে ওঠার সময় ফাঁদে আটকে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, এবার ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের মধ্যে বার্সার গোলসংখ্যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (৬৭)। এত গোল সাক্ষ্য দিচ্ছে, বার্সা আক্রমণে ওঠার সময় দলটির রক্ষণভাগের খেলোয়াড়েরা ফাঁদটি পাতার জন্য যথেষ্ট সময়ও পাচ্ছেন।

বার্সেলোনা কোচ হান্সি ফ্লিক.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পর্যটকের মৃত্যু: ট্যুর এক্সপার্টের এডমিন বর্ষা গ্রেপ্তার

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় নারী পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনায় ভ্রমণভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপ ‘ট্যুর এক্সপার্টের’ এডমিন বর্ষা ইসলাম বৃষ্টির বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। 

শনিবার (১৪ জুন) নিহত স্মৃতি আক্তারের বাবা হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে আলীকদম থানায় মামলা করেন। পরে বর্ষা ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় বলে নিশ্চিত করেন আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা জহির উদ্দিন।

যে ধারায় মামলা করা হয়েছে, সেই ধারায় বলা আছে, ‘‘যদি কেউ অবহেলা বা অসাবধানতার কারণে কারো মৃত্যুর কারণ ঘটায়, তবে সেটি এই ধারায় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।’’

আরো পড়ুন:

দিনাজপুরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার দুই আসামি গ্রেপ্তার

কাছারি বাড়িতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২

গ্রেপ্তার বর্ষা ইসলাম যশোরের চৌগাছা থানার জগদীশপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আড়পাড়ার বাসিন্দা রবিউল ইসলামের মেয়ে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত বর্ষা ইসলাম বৃষ্টি তার ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করে বিভিন্ন ট্যুরের আয়োজন করেন। তার ক্রিসতং-রুংরাং পাহাড় সামিট (৩০ তম) ইভেন্টে অংশ নিতে গিয়ে স্মৃতি আক্তার গত (৮ জুন) আলীকদমের উদ্দেশে রওনা হন। এরপর থেকে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে (১৩ জুন) আলীকদমের তৈন খালের মোড় থেকে স্মৃতি আক্তারের লাশ উদ্ধার করা হয়।

এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, বর্ষা ইসলাম স্থানীয় প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে মাত্র সিদ্ধার্থ তঞ্চঙ্গ্যা নামে একজন গাইড নিয়ে ৩৩ জনের ট্যুর আয়োজন করেন এবং তিনি পর্যটকদের আবহাওয়া সম্পর্কে জানাননি। তারা ৯ জুন দুর্গম রুংরাং-ক্রিসতং এলাকার উদ্দেশে রওয়ানা হন। ১০ জুন গাইডসহ ১২ জন খেমচং পাড়া থেকে আন্ধারমানিক ট্রেইলের উদ্দেশে চলে যায়। 

বাকি ২২ জন, যার মধ্যে স্মৃতি আক্তারও ছিলেন; অপর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও গাইড ছাড়াই মো. হাসান চৌধুরীর মাধ্যমে দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি পথ পেরিয়ে আলীকদম সদরে ফেরত পাঠালে (১১ জুন) বিকালে শামুক ঝর্ণা এলাকায় পাহাড়ি ঢলে স্মৃতি আক্তার, মো. হাসান চৌধুরী এবং শেখ জুবাইরুল ইসলাম নিখোঁজ হয়। ১২ জুন শেখ জুবাইরুলের লাশ এবং ১৩ জুন স্মৃতি আক্তারের লাশ উদ্ধার হলেও মো. হাসান চৌধুরী শুভ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

মামলার বাদী মো. হাবিবুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘‘বর্ষা ইসলাম বৃষ্টির দায়িত্ব অবহেলা ও অদক্ষতার কারণে স্মৃতি আক্তারের মৃত্যু হয়েছে।’’ 

শুক্রবার (১৩ জুন) স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের জিজ্ঞেসাবাদে বর্ষা ইসলাম দাবি করেছেন, তিনি কেবল পাঁচ দিনের ট্যুরে ছিলেন। আর দুর্ঘটনা ঘটে তিন দিনের অন্য ট্যুরে, যার নেতৃত্বে ছিলেন নিখোঁজ কো-অপারেটর হাসান চৌধুরী। 

এ বিষয়ে আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা জহির উদ্দিন জানান, নারী পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনায় ভ্রমণভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপ ‘ট্যুর এক্সপার্টের’ এডমিন বর্ষা ইসলাম বৃষ্টির বিরুদ্ধে নিহত স্মৃতি আক্তারের বাবা বাদী হয়ে আলীকদম থানায় মামলা মামলা করেছেন। অভিযুক্ত বর্ষা ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। 

এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার বলেন, ‘‘পার্বত্য অঞ্চলে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ট্যুর অপারেটর এজেন্সিগুলোর আরো বেশি দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য ট্যুর অপারেটর ও গাইডদের সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী।’’ 

ঢাকা/চাইমং/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পর্যটকের মৃত্যু: ট্যুর এক্সপার্টের এডমিন বর্ষা গ্রেপ্তার