প্রথমবারের মতো স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ডলার
Published: 14th, March 2025 GMT
স্বর্ণের দাম আজ শুক্রবার আউন্সপ্রতি ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়ে তিন হাজার ডলারে পৌঁছেছে। এ দাম বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম। এ নিয়ে চলতি বছরে ১৩ বার বিশ্ব বাজারে স্বর্ণের দাম রেকর্ড সর্বোচ্চ পর্যায়ে বাড়লো। মূলত ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে অনিশ্চিয়তা দেখা দেওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
মূলত ইউরোপের ওপর নতুন করে শুল্ক হুমকির পর বিশ্ব বাজারে স্বর্ণের দাম বৃহস্পতিবার বেড়ে ফের রেকর্ড সর্বোচ্চ হয়। এদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর ওয়াইন-শ্যাম্পেনসহ অন্যান্য অ্যালকোহলযুক্ত পণ্যের ওপর দুইশ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেন।
ট্রাম্পের এমন হুমকির পর বৈশ্বিক বাণিজ্যে অনিশ্চয়তার আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় স্বর্ণের দাম বেড়ে যায়। মূলত যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত হুইস্কির ওপর ইউরোপের শুল্কের প্রতিশোধ হিসেবেই এই পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, যদি এই শুল্ক অবিলম্বে প্রত্যাহার না করা হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র শিগগির ফ্রান্স ও অন্যান্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো থেকে আসা সব ধরনের ওয়াইন-শ্যাম্পেনসহ অ্যালকোহলযুক্ত পণ্যের ওপর দুইশ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সব ধরনের ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ বর্ধিত শুল্ক এরই মধ্যে কার্যকর হয়েছে। যার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ২৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্যের ওপর এই শুল্ক আরোপ করা হবে। বুধবার (১২ মার্চ) ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিশন এ তথ্য জানিয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স বর ণ র দ ম স বর ণ র দ ম শ ল ক আর প র ওপর ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
ইরান ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো পরমাণু কর্মকাণ্ডে বৈশ্বিক বাধ্যবাধকতা মানছে না: আইএইএ
ইরান ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো পরমাণু কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বৈশ্বিক বাধ্যবাধকতা মানছে না বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।
সংস্থাটির গভর্নর বোর্ডে আজ বৃহস্পতিবার গৃহীত একটি প্রস্তাবে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। এই অভিযোগ ভবিষ্যতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বিষয়টি উত্থাপনের পথ খুলে দিতে পারে।
গত সপ্তাহে আইএইএ ইরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটি সংস্থাটির গভর্নর বোর্ডে আজকের সিদ্ধান্তের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছিল, ইরান আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা করছে না। তারা কিছু এলাকায় গোপনে পারমাণবিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে তদন্তের আওতায় থাকা কিছু এলাকায় এমন কিছু পারমাণবিক উপকরণ রেখেছে, যার বিষয়ে তারা তথ্য দেয়নি।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি আইএইএর বৈঠকের আগে ইউরোপীয় শক্তিগুলোকে প্রস্তাবটি সমর্থন না করার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এতে তাঁরা বড় ভুল করবেন এবং ইরান এর ‘জবাব’ দেবে।
আইএইএর প্রতিবেদন এবং গভর্নর বোর্ডের এমন প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে নতুন পারমাণবিক চুক্তির লক্ষ্যে চলমান আলোচনাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
আরও পড়ুননিরাপত্তাঝুঁকিতে ইরাকের দূতাবাস থেকে কর্মীদের আংশিকভাবে সরাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র১১ ঘণ্টা আগেতা ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। এমন এক সময়ে আইএইএর গভর্নর বোর্ডে প্রস্তাবটি গৃহীত হলো, যার মাত্র এক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের কিছু নাগরিককে মধ্যপ্রাচ্য ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র নিজ দেশের নাগরিকদের অঞ্চলটি ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছে।
তবে ইরান জোর দিয়ে বলেছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ এবং তারা কখনো পরমাণু অস্ত্র তৈরি বা অর্জনের চেষ্টা করবে না।
২০১৫ সালে ছয় বিশ্ব শক্তি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করেছিল ইরান। এই চুক্তির আনুষ্ঠানিক নাম জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ)। ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম নজরদারি করার জন্য এই চুক্তি করা হয়েছিল, যাতে দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে।
আরও পড়ুন‘শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম’ থেকে বঞ্চিত হলে পারমাণবিক চুক্তি নয়: ইরান০৪ জুন ২০২৫চুক্তি করার বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু ২০১৮ সালে তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন এই চুক্তি থেকে একতরফা বের হয়ে যায়। তাঁর মতে, এই চুক্তি ইরানের পরমাণু বোমা তৈরির পথ বন্ধে যথেষ্ট নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের বের হয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে চুক্তিটি একধরনের বাতিল হয়ে যায়। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় এসে চুক্তিটি নবায়নের জন্য জোর চেষ্টা চালিয়েছিলেন, কিন্তু সফল হননি।
আইএইএর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৭ মে পর্যন্ত ইরান ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ ৪০৮ দশমিক ৬ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত করেছে, যা অস্ত্র তৈরির পর্যায়ের কাছাকাছি এবং প্রায় ৯টি পারমাণবিক বোমা বানানোর জন্য যথেষ্ট। পরমাণু অস্ত্র নেই—এমন যেকোনো দেশের ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ এই পরিমাণ ইউরেনিয়াম মজুত নজিরবিহীন ঘটনা। ফেব্রুয়ারির সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এই মজুতের পরিমাণ প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে ১৩৩ দশমিক ৮ কেজিতে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুনইরানের উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়ামের মজুত ৪০৮ কেজি, যা নজিরবিহীন: আইএইএ৩১ মে ২০২৫