শাহরাস্তিতে পরকীয়া জেরে দিনমজুরকে জবাই করে হত্যা, আটক ২
Published: 18th, March 2025 GMT
চাঁদপুরের শাহরাস্তির চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের মনিপুর গ্রামে পরকীয়া ও টাকা লেনদেনের জেরে আলমগীর হোসেন (৩৫) নামে এক দিনমজুরকে নির্মমভাবে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ হত্যার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রহস্য উন্মোচন করে প্রবাসী আবুল হোসেন মানিকের স্ত্রী খাদিজা আক্তার (৫০) ও মেয়ে মাহমুদা আক্তার সোনিয়াকে (২৫) আটক করেছে।
সোমবার রাতে শাহরাস্তি থানার পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোনিয়ার কাছ থেকে হত্যার স্বীকারোক্তি নেয়। তিনি জানান, আলমগীরের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল, তবে তিনি তাকে বিরক্ত করছিলেন। এ কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, সোনিয়া চিতোষী বাজার থেকে হত্যার জন্য একটি ছুরি কেনেন এবং পরে সেটি ব্যবহার করে আলমগীরকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্রসহ আলামত উদ্ধার করেছে।
অন্যদিকে, নিহত আলমগীরের স্ত্রী তাছলিমা বেগম অভিযোগ করেন, সোনিয়া তার স্বামীর কাছে ১২ লাখ টাকা পেতেন এবং সেই টাকা দেওয়ার নাম করে ডেকে নিয়ে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। তবে হত্যাকাণ্ডে আরও কেউ জড়িত কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পুলিশ মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য সূত্র ধরে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে শাহরাস্তি থানায় মামলা করেছেন।
শাহরাস্তি মডেল থানার ওসি আবুল বাসার জানান, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং আটক মা-মেয়েকে আদালতে পাঠিয়ে তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আলমগ র
এছাড়াও পড়ুন:
আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি
খুলনা মহানগরীর লবণচরার বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার ঘের ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন বিদ্যুৎ (২৪) হত্যা মামলার বিচার কাজ এক যুগ অতিবাহিত হলেও এখনো শেষ হয়নি। মামলার দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে আসামিরা জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন নিহতের পরিবারকে। তাদের বিরুদ্ধে বাদীর অপর ছেলেকে হত্যার ভয়-ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে।
এ অবস্থায় সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণের ব্যবস্থা এবং আসামিদের অপতৎপরতা থেকে রক্ষা করে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছেন নিহত বিদ্যুতের মা জাহানারা বেগম। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিচার বিভাগ, পুলিশ বিভাগ ও সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আরো পড়ুন:
কেএমপির ৮ থানার ওসি রদবদল
জলবায়ু পরিবর্তন আজকের বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: ইইউ রাষ্ট্রদূত
লিখিত বক্তব্যে জাহানারা বেগম বলেন, “২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীরা আমার ছোট ছেলে মো. আলমগীর হোসেন ওরফে বিদ্যুৎকে (২৪) নগরীর খানজাহান আলী (র.) সেতু এলাকায় নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর ৭ ডিসেম্বর আমি বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা করি (মামল নং- ০৩)। মামলাটি বর্তমানে খুলনা মহানগর দায়রা জজ (মামলা নং: ৪৪৯/১৫) বিচারাধীন আছে।”
“মামলায় লবণচরা বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার নাজিম খলিফার দুই ছেলে আরমান খলিফা ও আরিফ খলিফা, লবণচরা মোহাম্মদীয়া পাড়া মসজিদ এলাকার আব্দুল জলিল হাওলাদারের ছেলে হারুন হাওলাদার, লবণচরা ইব্রাহীমিয়া মাদরাসা রোড এলাকার হামিদ মিস্ত্রীর ছেলে মো. সিরাজ এবং লবণচরা মোক্তার হোসেন রোড এলাকার হযরত আলী ফকিরের ছেলে বাদল ফকিরকে আসামি করা হয়। এ মামলায় আসামিরা বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারেও ছিলেন। আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে জেল থেকে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে। এই সব আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় বিভিন্ন মামলাও রয়েছে”, যোগ করেন তিনি।
জাহানারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “আমার কলিজার টুকরো সন্তানকে হত্যা করেও সন্ত্রাসীরা ক্ষ্যান্ত হয়নি। উপরন্ত জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা এখন মামলা তুলে নিতে আমি ও আমার এক মাত্র সন্তান এবং মামলার স্বাক্ষীদের জীবননাশসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে বারবার সাধারণ ডায়রি (জিডি) করার ফলে হত্যাকারী-সন্ত্রাসীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যে কোন সময় তারা আমি ও আমার বড় ছেলেসহ আমার পরিবারের সদস্যদের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে। এ অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।”
তিনি আরো বলেন, “হত্যাকারী-আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমি এখন পর্যন্ত খুলনা ও লবণচরা থানায় চারটি সাধারণ ডায়রি করেছি। সর্বশেষ গত ৩ মার্চও আমি লবণচরা থানায় জিডি করি। কারণ ২ মার্চ দুপুরে মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি আরমান তার ভাই আরিফ এবং অপর আসামি জুয়েল শেখ, হারুন হাওলাদার, সিরাজ ও বাদল ফকিরসহ আরো অনেকে আমার বাসার সামনে এসে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। এমনকি তারা আমাকে ও আমার বড় ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বিপ্লবকেও হত্যা করবেন বলেও হুমকি দেয়। এ ছাড়া, একই ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকির কারণে আমি ২০১৪ সালের ৪ মার্চ ও ২ মে খুলনা থানায় এবং একই বছরের ৪ মে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লবণচরা থানায় সাধারণ ডায়রি করি।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ