বাজেটে কৃষি খাতে ৪০ শতাংশ বরাদ্দের দাবি
Published: 22nd, May 2025 GMT
জাতীয় বাজেটের উন্নয়ন বরাদ্দের ৪০ শতাংশ কৃষি খাতে বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে ‘সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট’। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, কৃষি প্রধান বাংলাদেশে একক খাত হিসেবে সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে উপেক্ষিত খাত কৃষি। মোট শ্রমশক্তির ৪৫ শতাংশ এবং গ্রামীণ কর্মজীবী নারীর প্রায় ৬০ শতাংশ কৃষিতে নিয়োজিত। জিডিপিতে কৃষির অবদান ১১ দশমিক ২ শতাংশ। অথচ কৃষি চরম অবহেলিত। কৃষি ও কৃষক ক্ষেতমজুর না বাঁচলে দেশ বাঁচবে না।
তিনি বলেন, ক্ষেতমজুরদের ১৮০ দিনের বেশি কাজ থাকে না। আর্মি রেটে গ্রামীণ রেশনিংয়ের দীর্ঘ দিনের দাবি আজও উপেক্ষিত। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কৃষিকে এগিয়ে নিতে হবে। ফলে বাজেটে কৃষি খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। এ সময় তিনি জাতীয় বাজেটের উন্নয়ন বরাদ্দের ৪০ শতাংশ কৃষি খাতে বরাদ্দের জোর দাবি জানান।
সমাবেশে অন্য নেতারা বলেন, বন্যা, খরা, নদী ভাঙনসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও ক্ষেতমজুরদের আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপের দুর্বলতা রয়েছে। শষ্যবিমা চালু করা প্রয়োজন। সরকারি খাস জমি প্রকৃত ভূমিহীনদের মাঝে বিতরণ করার দাবি দীর্ঘদিনের। ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত কৃষি ঋণ সুদ ও আসলসহ মওকুফ করার দাবি আজও পূরণ হয়নি। সমতলের আদিবাসীদের জন্য স্বাধীন ভূমি কমিশন গঠনের দাবি উপেক্ষিত। কৃষকদের সমস্যা সমাধানে সরকারকে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে।
সমাবেশ শেষে আব্দুল কুদ্দুস, নিখিল দাস, শফিউর রহমান শফি, জুলফিকার আলীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল অর্থ উপদেষ্টা ড.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মরিশাসের কাছে চাগোস হস্তান্তর প্রক্রিয়া স্থগিত
মরিশাসের কাছে ভারত মহাসাগরে অবস্থিত চাগোস দ্বীপপুঞ্জ হস্তান্তর প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশে তা করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্য ও মরিশাস সরকারের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি শেষ মুহূর্তে সাময়িকভাবে স্থগিত হয়ে গেল।
বিবিসি জানিয়েছে, দুই চাগোসীয় নারীর করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোররাতে বিচারপতি গুজ এই আদেশ দেন। ফলে চুক্তিটি স্বাক্ষরের আগেই স্থগিত করা হয়েছে। কথা ছিল, চুক্তিটির আওতায় যুক্তরাজ্য চাগোস দ্বীপপুঞ্জ মরিশাসের হাতে তুলে দেবে। আর এই দ্বীপপুঞ্জের বৃহত্তম দ্বীপ দিয়েগো গার্সিয়ায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের যৌথ সামরিক ঘাঁটি আরও ৯৯ বছরের জন্য ব্যবহার চালিয়ে যেতে পারবে। বৃহস্পতিবার এই চুক্তি স্বাক্ষরের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের অংশ নেওয়ার কথা ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি।
এর আগে এই চুক্তিটি নিয়ে চাগোস দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দাদের একটি অংশ থেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এসেছিল। বার্নাডেট ডুগাস ও বার্ট্রিস পম্প নামে চাগোসের দু’জন নারী তাদের জন্মভূমি দিয়েগো গার্সিয়ায় গিয়ে বসবাস করতে চেয়ে সম্ভাব্য চুক্তিটির বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। তবে প্রস্তাবিত চুক্তি তো বটেই, বর্তমান ব্যবস্থায়ও গার্সিয়া দ্বীপে চাগোসবাসীর ফেরার অনুমতি নেই।
মামলা করা দুই নারীর আইনজীবী মাইকেল পোলাক বলেন, চাগোসবাসীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে পরামর্শ না করেই সরকার তাদের জন্মভূমি দিয়ে দেওয়ার যে উদ্যোগ নিচ্ছে, তা চাগোসবাসীর প্রতি অতীতের নিষ্ঠুর আচরণেরই ধারাবাহিকতা।
চুক্তি নিয়ে চাগোসবাসীর হতাশা ও ক্ষোভ বৃহস্পতিবার আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে যখন ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ল্যামি ও মন্ত্রী স্টিফেন ডোটি চাগোসীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের পর ‘চাগোসিয়ান ভয়েস’ সংগঠনের সদস্য জেমি সাইমন বলেন, এই চুক্তিতে আমাদের জন্য ভালো কিছু নেই। আমি আতঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ।
চাগোস দ্বীপপুঞ্জ ১৯৬৫ সালে মরিশাস থেকে আলাদা করা হয়েছিল। সেই সময় ব্রিটিশ উপনিবেশের অধীনে ছিল মরিশাস। সেই সময় মাত্র ৩০ লাখ পাউন্ডে দ্বীপগুলো কিনে নিয়েছিল ব্রিটেন। তবে মরিশাসের দাবি, স্বাধীনতা অর্জনের জন্য চাপে পড়ে তারা এসব দ্বীপকে আইনবিরোধীভাবে হারাতে হয়েছিল। এর পর ১৯৭১ সালে একটি অভিবাসন আদেশের মাধ্যমে চাগোসবাসী নিজেদের জন্মভূমিতে ফেরত আসা নিষিদ্ধ করা হয়।
এদিকে জাতিসংঘের আদালত ও সাধারণ পরিষদ সম্প্রতি চাগোস দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে মরিশাসের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যের তৎকালীন কনজারভেটিভ সরকার চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করলেও তা চূড়ান্ত করতে পারেনি। লেবার সরকার ক্ষমতায় আসার পর আলোচনা আবারও এগোতে শুরু করে।