দেশের নারী উদ্যোক্তারা অর্থায়নের দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছেন। আমি সিটি ব্যাংকে নারী ব্যাংকিং বিভাগে কাজের সুবাদে এ বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিতে চাই, যা বাজেটে বিবেচনা করা যেতে পারে। নারী ব্যবসায়ী ঋণগ্রহীতাদের জন্য পাঁচ লাখ টাকার কম পরিমাণ ঋণের ক্ষেত্রে যেসব নথিপত্রের (ডকুমেন্টেশন) প্রয়োজন হয় সেগুলোর প্রক্রিয়া সহজ করা প্রয়োজন। যেমন তাঁদের ব্যবসায় নিবন্ধনের কাগজ জমা দেওয়ার শর্তের অব্যাহতি দিলে সেটি নারী ঋণগ্রহীতা বাড়াতে সহায়ক হবে।

নারীদের ব্যবসায় নিবন্ধন নবায়নের সময় এক বছর থেকে বাড়িয়ে তিন বছর করা হলে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংকেরও সুবিধা হবে। এ ছাড়া একই পরিমাণ ঋণের ক্ষেত্রে নারী গ্রাহকদের কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) সনদ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ বিষয়টি অব্যাহতি দিলে নারীদের ব্যাংকমুখী করার সুযোগ আরও বাড়বে। তাতে নারী ব্যবসায়ীরা তাঁদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে এবং বড় করতে পারবেন। ব্যাংকগুলোও এতে ভালো ভূমিকা রাখতে পারবে।

বাজেটে দাতা সংস্থার অর্থায়ন খাত কিছু তহবিল বরাদ্দ পেলে ব্যাংকগুলো নারীদের জন্য আর্থিক সক্ষমতা ও দক্ষতা অর্জনের কর্মসূচি নিতে পারবে। তাতে অর্থনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ আগের তুলনায় বাড়বে। পুনঃঅর্থায়ন তহবিল থেকে নারী ব্যবসায়ীদের এসএমই ঋণ নেওয়ার পরিমাণ প্রতিবছর বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো আরও বেশি পরিমাণে তহবিল বরাদ্দ পেলে নারীদের ঋণ গ্রহণের বিষয়ে উৎসাহী করা যাবে।

বর্তমানে ব্যাংকগুলো আনুষ্ঠানিক মাধ্যমে আসা প্রবাসী আয়ের (রেমিট্যান্স) বিপরীতে ঋণ দিয়ে থাকে। প্রবাসী আয় গ্রহীতাদের বড় একটি অংশ হচ্ছেন নারী। আনুষ্ঠানিক মাধ্যমে প্রবাসী আয় বাড়াতে প্রণোদনা বৃদ্ধিসহ কিছু উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। অন্যদিকে নারীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে আসা প্রবাসী আয়ের বিপরীতে ঋণ নিয়ে তাঁদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করতে পারবেন।

ফারিয়া হক, হেড অব সিটিজেম প্রায়োরিটি অ্যান্ড সিটি আলো-উইমেন ব্যাংকিং, সিটি ব্যাংক

.