ফতুল্লায় মামুন হত্যা মামলায় ৭ আসামির জামিন না মঞ্জুর, কারাগারে প্রেরন
Published: 19th, June 2025 GMT
ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মামুন হোসাইন হত্যা মামলায় আওয়ামী নেতা আক্তার-সুমনের সাত অনুসারী সন্ত্রাসীর জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আাদালত।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আবু শামীম আজাদ এর আদালতে তারা আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন। এসময় আদালত উভয় পক্ষের আইনজীবীদের শুনানী শেষে আত্মসমর্পনকারী রতন হোসাইন ওরফে রাখাল রতন, শাওন হোসেন, রাকিব প্রধান, নয়ন ওরফে কিলার নয়ন, শাহ আলম, জয়নাল ও রাসেল সহ প্রত্যেককে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ প্রদান করেন।
আদালতের ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রশিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক নয়ন এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আত্মসমর্পনকারী আসামীরা উচ্চ আদালত থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে সেচ্ছায় আত্মসমর্পনের আদেশ নিয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির হয়েছে। আদালত তাদের কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার তদন্তকারী অফিসার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭জনের বিরুদ্ধে রিমান্ড চাইতে পারেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি ভোর ৫ টার দিকে ফতুল্লার পূর্ব লালপুর রেললাইন সংলগ্ন (পাকিস্তানী খাদের) নিজ বাড়ীর সামনে বাসা থেকে বের করে মামুন হোসাইনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এঘটনায় মামুনের স্ত্রী বাদী হয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা আক্তার ও সুমনসহ তাদের অনুসারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
ভারতীয় যৌথবাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে সংঘর্ষবিরতির আর্জি জানিয়েছে মাওবাদী ও নকশালবাদীরা। গত ৯ মাসে ২১০ জন সদস্যের মৃত্যুর পর ভারত সরকারের কাছে প্রথমবারের মতো শান্তির দাবি জানাল মাওবাদীরা। সশস্ত্র এই বামপন্থী সংগঠনটির পক্ষে এক প্রেস বিবৃতির মাধ্যমে জানানো হয়েছে, শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে হাতিয়ার ছেড়ে বৈঠকে বসতে রাজি তারা।
মাও-কেন্দ্রীয় কমিটি জানিয়েছে, তারা আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগ করতে রাজি। যাতে সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দুই পক্ষ সমাধানের পথে আসতে পারে। তবে সেই আলোচনার পথে সরকার যেন কোনোরকম চালাকি না করে।
আরো পড়ুন:
মাদক পাচারে অভিযুক্ত ১৬ হাজার বিদেশিকে বহিষ্কার করবে ভারত
অনুষ্ঠান করে স্ত্রীকে বিয়ে দিলেন স্বামী
জানা গেছে, গত ১৫ অগাস্ট সরকারকে এই প্রস্তাব পাঠিয়েছিল মাওবাদীরা।
১৫ অগাস্ট লেখা চিঠিতে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, একমাস ধরে এই সংঘর্ষবিরতি জারি রাখার আর্জি জানিয়েছিল মাওবাদীরা। তারপর নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালাতে চায় তারা। মাওবাদীদের সাধারণ সম্পাদক অভয়ের নাম উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। তবে মোদি সরকারের পক্ষ থেকে মাওবাদীদের এই চিঠির কোনো জবাব এখনও দেওয়া হয়নি বলেই খবর।
মাওবাদী নেতা অভয়ের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সংঘর্ষ যাতে থামে সেটা আমরাও চাই। আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত বদল করেছি। তবে এই বিষয়ে আমাদের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানানো উচিত। যদি সরকার সত্যিই আলোচনা চায় তাহলে আমাদের এক মাসের সময় দেওয়া হোক। এই সময়ে জেলবন্দি শীর্ষ মাওবাদী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চায় তারা। তবে এই এক মাস যাতে কোনো অভিযান না চলে সেটাও জানানো হয়েছে মাওবাদীদের তরফে।
মাও সংগঠনের বার্তা, “এই সময়কালে তাদের উপর যেন নিরাপত্তবাহিনী কোনোরকম অভিযান না চালায়। সরকার যদি চায় তবে কাল থেকেই ভিডিও কলের মাধ্যমে আলোচনা চালাতে প্রস্তুত আমরা।”
প্রসঙ্গত ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত নকশাল বিরোধী অভিযানে কেন্দ্র ও রাজ্যে সরকারগুলোর যৌথ নিরাপত্তা বাহিনী উল্লেখ্য সাফল্য অর্জন করেছে। এই সময়ের মধ্যে অন্তত ৪৯৮ জন মাওবাদী নিকেশ হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৬১৬ জনকে।
২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে মাওবাদমুক্ত ভারত গড়ার বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছত্তিশগড়ে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর মাওবিরোধী অভিযান আরো গতি পেয়েছে। এরমধ্যে ২০২৪ সালে বস্তার অঞ্চলে নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে মৃত্যু হয়েছে ২৮৭ জন মাওবাদীর। পাশাপাশি আত্মসমর্পণ করেন ১ হাজার ৬৬৬ জন। ২৪-এর পর ২০২৫ সালে অভিযানের ঝাঁজ আরো বেড়েছে। রিপোর্ট বলছে, গত ৯ মাসে এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে ২১০ জন মাওবাদীর। এদের মধ্যে শুধুমাত্র ছত্তিশগড়ে ১৩ জন শীর্ষ মাওবাদী নেতার মৃত্যু হয়েছে। যাদের মাথার দাম ছিল ন্যূনতম ২০ লাখ থেকে এক কোটি রুপি পর্যন্ত। কেবলমাত্র ছত্তিশগড়েই ৬৫টি নতুন সুরক্ষা ক্যাম্প খোলা হয়েছে।
অনুমান করা হচ্ছে, একের পর এক শীর্ষ কমান্ডারের মৃত্যুর পর নকশালদের মনোবল ভেঙে পড়েছে। তারা এখন বেশ কিছুটা ব্যাকফুটে। আশঙ্কার আবহও মাওবাদীদের মধ্যে। আর সে কারণেই তাদের পক্ষ থেকে বারবার সংঘর্ষবিরতির আর্জি জানানো হচ্ছে। তবে সরকার মাওবাদীদের সে দাবি মানবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ