ফ্রান্সে সমুদ্রসৈকত বা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত পার্কে আজ রোববার থেকে ধূমপান নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এখন থেকে এসব স্থানে ধূমপান করলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে শিশুদের রক্ষা করতেই নেওয়া হয়েছে এ উদ্যোগ।

গতকাল শনিবার ধূমপান নিষিদ্ধের সরকারি গেজেট প্রকাশ হয়। এক দিন পর আজ থেকে সেটি কার্যকর হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় বাসস্ট্যান্ড, গ্রন্থাগার, সুইমিং পুল ও বিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকাও পড়বে।

তবে পানশালা ও রেস্তোরাঁর বাইরে বসার জায়গায় এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। এ সিদ্ধান্তের কারণে তামাকবিরোধী কিছু কর্মী হতাশা প্রকাশ করেছেন। ই-সিগারেটকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় না রাখার কারণেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তাঁরা।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আগের ঘোষণায় ধারণা করা হয়েছিল, আগামী মঙ্গলবার থেকে এ বিধি কার্যকর হবে। কিন্তু সরকারিভাবে গেজেটে প্রকাশিত হওয়ায় তা আগেভাগে আজ থেকেই কার্যকর হচ্ছে।

বিদ্যালয়, সুইমিং পুল, গ্রন্থাগার ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষতি করতে পারে—এমন সব স্থানের ১০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যেও ধূমপান নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ভবিষ্যতে এসব এলাকার জন্য ধূমপানের ন্যূনতম দূরত্ব নির্ধারণ করা হবে এবং স্থান চিহ্নিত করতে যে চিহ্ন ব্যবহার হবে, তা–ও জানানো হবে। নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনকারীরা ১৩৫ ইউরো (১৬০ ডলার) থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানার মুখে পড়তে পারেন। তবে শুরুতে কিছুটা শিথিলতা থাকবে।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ফ্রান্সে পরোক্ষ ধূমপানে প্রতিবছর ৩ থেকে ৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। আর প্রত্যক্ষ ধূমপানে মৃত্যু হয় ৭৫ হাজার মানুষের। এক সাম্প্রতিক জনমত জরিপ অনুযায়ী, ৬২ শতাংশ ফরাসি নাগরিক উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ করার পক্ষে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রক শ

এছাড়াও পড়ুন:

সুরা নাস: বাংলা অর্থসহ এবং সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা

সুরা নাস কুরআনের ১১৪তম এবং শেষ সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ বলে মাক্কী সুরা নামে পরিচিত। এতে মোট ৬টি আয়াত রয়েছে। এই সুরাটি মানুষকে শয়তানের প্রতারণা ও মন্দ প্রভাব থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে শেখায়। এটি ‘মু’আওয়িযাতাইন’ (দুটি আশ্রয়প্রার্থী সুরা: সুরা ফালাক ও সুরা নাস)–এর একটি।

সুরা নাসের বাংলা উচ্চারণ, অর্থ এবং সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা আলোচনা করা হলো।

বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

উচ্চারণ: কুল আউজু বিরাব্বিন নাস। মালিকিন নাস। ইলাহিন নাস। মিন শাররিল ওয়াসওয়াসিল খান্নাস। আল্লাজি ইউওয়াসউইসু ফি সুদুরিন নাস। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান নাস।

অর্থ: বলো, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করি মানুষের রবের কাছে। মানুষের অধিপতির কাছে। মানুষের উপাস্যের কাছে। মন্দ প্রবৃত্তির কুমন্ত্রণা থেকে, যে পিছনে লুকায়। যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে। জিন ও মানুষের মধ্য থেকে।

আরও পড়ুনসুরা ফাতিহার বাংলা উচ্চারণ অর্থ ও ফজিলত২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪সুরা নাসের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা

সুরা নাস মানুষকে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে শিক্ষা দেয়। এই সুরায় আল্লাহকে তিনটি গুণে সম্বোধন করা হয়েছে:

রব্বিন নাস (মানুষের রব): আল্লাহ মানুষের সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা।

মালিকিন নাস (মানুষের অধিপতি): তিনি মানুষের উপর সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী।

ইলাহিন নাস (মানুষের উপাস্য): তিনিই একমাত্র উপাসনার যোগ্য।

সুরাটি শয়তানের মন্দ প্রভাব থেকে সুরক্ষা প্রার্থনায় জোর দেয়। কেননা, শয়তান ‘ওয়াসওয়াস’ (কুমন্ত্রণা) দেয় এবং ‘খান্নাস’ (পিছনে লুকিয়ে থাকে)। এই কুমন্ত্রণা জিন ও মানুষ উভয়ের থেকে আসতে পারে, যা মানুষের অন্তরে মন্দ চিন্তা ও পাপের প্রতি প্ররোচিত করে।

হাদিসে আছে, মহানবী (সা.) প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক এবং সুরা নাস পড়তেন, হাতে ফুঁ দিয়ে শরীরে মুছে নিতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০১৭)

বোঝা যায়, সুরা নাস পড়া শয়তানের প্রভাব ও অন্যান্য ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দেয়।

আরও পড়ুনসুরা কাহাফের ৪ কাহিনিতে সফলতার ৪ শিক্ষা২০ জুলাই ২০২৫সুরা নাসের ফজিলত

সুরা নাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত আছে, নবীজি (সা.)–কে যখন জাদু করা হয়, তখন সুরা ফালাক ও সুরা নাস নাজিল হয় এবং তিনি এই দুই সুরা পড়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন এবং আরোগ্য লাভ করেন। (সুনান নাসাঈ, হাদিস: ৫৪৩৭)

এই সুরা পড়া শয়তানের কুমন্ত্রণা, জাদু, হিংসা এবং অন্যান্য ক্ষতি থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। তাফসিরে ইবনে কাসিরে বলা হয়েছে, “সুরা নাস মানুষকে শয়তানের মানসিক ও আধ্যাত্মিক আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।” (তাফসির ইবনে কাসির, পৃষ্ঠা: ৮/৫৩৬, দারুস সালাম প্রকাশনী, ২০০০)।

সুরা নাস একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ সুরা, যা মানুষকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনার মাধ্যমে শয়তানের মন্দ প্রভাব থেকে রক্ষা করে। আধুনিক জীবনে, যখন আমরা প্রতিনিয়ত নানা প্রলোভন ও মানসিক চাপের মুখোমুখি হই, তখন এই সুরা আমাদের ঈমানকে দৃঢ় করতে পারে। এই সুরা নিয়মিত পাঠ, বিশেষ করে সকাল-সন্ধ্যায় এবং ঘুমানোর আগে, মুমিনের জীবনে শান্তি ও সুরক্ষা নিয়ে আসে।

আরও পড়ুনসুরা আর-রহমান: সারকথা ও ফজিলত০৮ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ