ফরিদা আক্তার পপি তাঁর আসল নাম। সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী আজ ৭১ বছর পূর্ণ করলেন। চিরসবুজ অভিনেত্রী ববিতা আজও আছেন সিনেমাপ্রেমীদের হৃদয়জুড়ে। শিশুশিল্পী হিসেবে ‘সংসার’ ছবি দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেছিলেন ববিতা। তাঁর দ্বিতীয় ছবির কাজও মাঝপথে এসে থেমে যায়। এরপর রাজ্জাক ও ববিতাকে নিয়ে জহির রায়হান তৈরি করেন চলচ্চিত্র ‘শেষ পর্যন্ত’। এটিই ছিল তাঁর প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র। এর পর থেকেই বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের এই নক্ষত্রের উত্থান। আজ ৩০ জুলাই তাঁর জন্মদিন। জন্মদিনে ববিতাকে নিয়ে জাহীদ রেজা নূরের লেখাটি আবার প্রকাশ করা হলো।

সদ্য স্বাধীন দেশে দুটো সাপ্তাহিক পত্রিকায় সিনেমাজগতের খবর পাওয়া যেত। একটি ‘চিত্রালী’, অন্যটি ‘পূর্বাণী’। ব্রডশিটে বের হতো। আরও পত্রিকা নিশ্চয়ই ছিল, কিন্তু সেগুলো আমার চোখ এড়িয়ে গেছে হয়তো। এই পত্রিকা দুটোর প্রথম পৃষ্ঠায় বড় বড় ছবি থাকত নায়ক-নায়িকাদের। রাজ্জাক, কবরী, ববিতা, শাবানা, আলমগীর, ইলিয়াস কাঞ্চন, ফারুক। আরও কত নাম! বড়রা পড়ে ফেলার পর আমরা ছোটরাও পড়তাম সে পত্রিকাগুলো। কখনো তারা পড়ে ফেলার আগেই। বাড়ির পরিবেশ এমন ছিল যে সিনে পত্রিকাগুলো উল্টেপাল্টে দেখলে কেউ বকাবকি করত না। একটা সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলেই বেড়ে উঠছিলাম আমরা। ঢাকা থিয়েটার কিংবা থিয়েটার যে নাটকগুলো করত, সেগুলো দেখতে যেতাম। হলে গিয়ে দেখে আসতাম দেশি-বিদেশি সিনেমা!
এ রকম একটা সময় মুক্তি পেল আবদুল্লাহ আল-মামুনের ‘সারেং বৌ’। তারই কিছুদিন পর আমজাদ হোসেনের ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’। এ কথা আলাদা করে বলছি এই কারণে যে এই প্রথম দল বেঁধে আত্মীয়স্বজন মিলে আমরা ছবি দুটি দেখেছিলাম।

মুক্তিযুদ্ধোত্তর ‘ওরা ১১ জন’, ‘সংগ্রাম’, ‘আলোর মিছিল’, ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ছবিগুলো তো দেখেছি আগেই।‘নয়নমনি’ও দেখা হয়ে গিয়েছিল। সাত বছর বয়সে ‘ওরা ১১ জন’ দেখে তেমন কিছুই বুঝিনি। শুধু পাকিস্তানি সেনার অশ্লীল হাসি আর ভয়ার্ত একটি মেয়ের অবয়ব ত্রাসের সৃষ্টি করত মনে।

রঙিন দিনের সাদা-কালো ববিতা। ছবি: ফেসবুক.