নেত্রকোনায় স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে স্বামীর বাড়িতে অনশন
Published: 2nd, August 2025 GMT
ভালোবেসে বিয়ে, পরিবারের সম্মতি না থাকায় কিছুটা গোপনে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে সম্পন্ন হয়। এরপর ময়মনসিংহ শহরে ভাড়া বাসায় সংসার পাতেন তারা। বছর যেতে না যেতে বেজে ওঠে ভাঙনের সুর। কনের দাবি, তার স্বামী আরেজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে বিয়ে করতে চান এবং তাদের বিয়ে অস্বীকার করেন। তাই পারিবারিক স্বীকৃতির দাবিতে গত বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভুক্তভোগী তার স্বামীর বাড়িতে এসে ওঠেন।
নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা সদর ইউনিয়নের ছোছাউড়া গ্রামের আলাল মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি সমাধান করতে শনিবার (২ আগস্ট) সকালে উভয় পরিবার আলোচনায় বসার কথা ছিল। বিকেল পর্যন্ত আলোচনায় বসেনি।
আলাল মিয়ার ছেলে হানিফ মিয়ার সঙ্গে ওই নারীর বিয়ে হয়েছে। ভুক্তভোগী নারীর উপস্থিতি টের পেয়ে হানিফ মিয়া বসত ঘরে তালা দিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। উপায় না পেয়ে ওই মেয়ে ঘরের বারান্দায় অনশনে বসেন স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে। ভুক্তভোগী নারী একই উপজেলার বাসিন্দা। তিনি ময়মনসিংহ একটি বেসরকারি হাসপাতালে সেবিকার চাকরি করেন।
আরো পড়ুন:
বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে নারী
সেশনজট নিরসনের দাবিতে চবির শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন
ওই নারী জানান, কলেজ জীবনের লেখাপড়া করার সময় হানিফ মিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে তারা গোপনে বিয়ে করেন। ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের দিঘারকান্দা এলাকার কাজী মো.
ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘‘এই অবস্থায় আমার আর কোনো উপায় না থাকায় স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকালে শ্বশুর বাড়িতে এসেছি। এখানে তারা আমাকে গ্রহণ না করে উল্টো মারধর করেছেন। এখানে অবস্থান নেয়ার পর তারা ঘরে তালা লাগিয়ে চলে গেছেন। তারপরও আমি আমার দাবি আদায় ছাড়া যাবো না।’’
ময়মনসিংহে ভাড়া বাসার মালিক হানিফের ফুফাত বোন রিনা আক্তার জানান, প্রায় দুই বছর আগে হানিফের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে হয়। এখন হানিফ তার সঙ্গে সংসার করতে চাচ্ছে না। এতে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হানিফের মোবাইল নম্বরে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।
হানিফ মিয়ার বাবা আলাল মিয়া বলেন, ‘‘বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে হানিফের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করতে পারছি না। তার সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করা হবে।’’
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ নূরে আলম জানান, এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে দুই পক্ষের পরিবারের লোকজন সমাধান করতে আলোচনায় বসার কথা তিনি শুনেছেন।
ঢাকা/কামাল/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী
সম্পূরক বৃত্তি এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে অনশন শুরু করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী। আজ মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন তাঁরা।
এর আগে গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। তিন দফা দাবির অন্যটি হলো ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি প্রদান ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু।
অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফয়সাল মুরাদ ও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফেরদৌস শেখ, ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শাহীন মিয়া এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অপু মুন্সী।
অনশনে অংশ নেওয়া গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস শেখ বলেন, মন্ত্রণালয়ের সব শিকল ভেঙে এখন জবিয়ানদের অধিকার আটকে আছে জবি প্রশাসনের কাছে। সিদ্ধান্ত একান্ত প্রশাসনের, তারা শিক্ষার্থীদের অধিকার বাস্তবায়ন করবে কি না।
ফেরদৌস শেখ বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, (বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন) মন্ত্রণালয়ে সঠিকভাবে যোগাযোগ করতে না পারার কারণেই মূলত আমরা আমাদের অধিকার থেকে আজও বঞ্চিত। তারা বিভিন্নভাবে কাটছাঁট করে শিক্ষাবৃত্তি আনার চেষ্টা করতে চাইছে, যা আমরা কখনোই মেনে নেব না।’
অনশনের অংশ নেওয়া এ কে এম রাকিব বলেন, ‘আমরা অবস্থানসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করেছি, কিন্তু তাতে প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই অনশনে যেতে বাধ্য হয়েছি। এ ছাড়া আমাদের উপায় ছিল না। এই নখদন্তহীন প্রশাসন হয়তো আমাদের দাবি মেনে নেবে, নয়তো তাদের নিজেদের রাস্তা মাপতে হবে।’
অনশনের অংশ নেওয়া ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে সম্পূরক বৃত্তি নিয়ে যে নাটক শুরু করা হয়েছে, সেটির দ্রুত সমাপ্তি চাই। জকসু হলো ১৮ হাজার শিক্ষার্থীর অধিকার, কিন্তু প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবে সেটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। প্রশাসনকে দ্রুত তফসিল ঘোষণার আহ্বান জানাচ্ছি।’