ভারতের উত্তরাখণ্ডের একটি গ্রামে ভয়াবহ মেঘ ভাঙনের ফলে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্তত ৫০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। মঙ্গলবার ক্ষীর গঙ্গা নদীর জলাধার এলাকায় এই মেঘ ভাঙনের ঘটনা ঘটে।

প্রাপ্ত ভিডিওর বরাত দিয়ে এনডিটিভি অনলাইন জানিয়েছে, পাহাড় থেকে তীব্র পানির স্রোত উত্তরকাশীর থারালি গ্রামের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে এবং অনেক ঘরবাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও পোস্ট করেছেন যেখানে আতঙ্কে মানুষের চিৎকার শোনা যাচ্ছে।

উত্তরকাশী পুলিশ ধ্বংসযজ্ঞের ছবি পোস্ট করেছে এবং নদী থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার জন্য স্থানীয়দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। 

পোস্টে বলা হয়েছে, “এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, সবারাই নদী থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা উচিত। নিশ্চিত করুন যে আপনি নিজে, শিশু এবং প্রাণীরা নদী থেকে নিরাপদ দূরত্বে রয়েছে।”

উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি জানিয়েছেন, ত্রাণ দল উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।

তিনি এক্স-এ একটি পোস্টে লিখেছেন, “ধারালি (উত্তরকাশি) অঞ্চলে মেঘ ভাঙনের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর অত্যন্ত দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। এসডিআরএফ, এনডিআরএফ, জেলা প্রশাসন এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দল যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এই বিষয়ে, আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে ক্রমাগত যোগাযোগ রাখছি এবং পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আমি সবার নিরাপত্তার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি।”

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বিক্ষোভ নিয়ে মুখ খুললেন নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী

চলতি মাসে নেপাল জুড়ে বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন কেপি শর্মা ওলি। ২০২৪ সালে শের বাহাদুর দেউবা সরকারের পতনের পর ফের ক্ষমতায় আসা ওলি এক বছরের মধ্যেই দেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, সম্পদ অপব্যবহার ও কর্তৃত্ববাদী শাসনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমতে থাকে। তার সরকারের পতন ঘটে চলতি মাসে টানা কয়েক দিনের বিক্ষোভ থেকে, যেখানে নেতৃত্বে ছিল ‘জেন জি’ তরুণ প্রজন্ম। বর্তমানে ধীরে ধীরে শান্ত হচ্ছে নেপাল। আর এই আবহে নিরাবতা ভাঙলেন সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) নেপালের সংবিধান দিবসে ফেসবুকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ওলি দেশের সংবিধান প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন। তিনি সংবিধানকে ‘নেপালি জনগণের নিজেদের জন্য লেখা একটি ভবিষ্যতের রেখা’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি দাবি করেন, “জেন-জির শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চলাকালীন অনুপ্রবেশ ঘটেছিল। যেসব ষড়যন্ত্রকারীরা এতে অনুপ্রবেশ করেছিল, তারা সহিংসতা উস্কে দেয় এবং আমাদের তরুণদের হত্যা করে। সরকার বিক্ষোভকারীদের গুলি করার নির্দেশ দেয়নি। পুলিশের কাছে নেই- এমন স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি চালানোর ঘটনা তদন্ত করা উচিত।” 

৮ সেপ্টেম্বরের ওই সহিংসতায় ১৯ জন নিহত হন। ওলি দাবি করেন, বিক্ষোভে গোপন ষড়যন্ত্রকারীরা অনুপ্রবেশ করে হিংসাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, যার ফলেই এতগুলো প্রাণহানি ঘটেছে। ওলি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী (পদ) থেকে আমার পদত্যাগের পর সিংহ দরবার পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, নেপালের মানচিত্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, দেশের প্রতীক মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। সংসদ, আদালত, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং রাজনৈতিক দলের অফিস, তাদের নেতা ও কর্মীদের বাড়িঘর, ব্যক্তিগত সম্পত্তি ছাই করে দেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “ঘটনার পেছনের ষড়যন্ত্র নিয়ে আমি আজ বেশি কিছু বলব না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছুই নিজে নিজেই প্রকাশ পাবে। কিন্তু আমাদের অবশ্যই জিজ্ঞাসা করতে হবে, আমাদের জাতি কী গড়ে উঠছিল, নাকি ভেঙে ফেলা হচ্ছিল? এই ক্ষোভ কী কেবল একটি মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর বর্ণনা দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল?” 

সাবেক প্রধানমন্ত্রী জানান, “আমাদের নতুন প্রজন্ম নিজেরাই সত্য বুঝতে পারবে। আর যারা দেশ ছেড়ে যাওয়া তরুণদের অবজ্ঞা করে, সময় তাদের মনে করিয়ে দেবে যে, তাদের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। অবশেষে নতুন প্রজন্ম সবকিছুই বাস্তবে দেখতে পাবে।” 

প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে ওলি জনসাধারণকে রাজনৈতিক বিভাজনের ঊর্ধ্বে উঠে সংবিধান রক্ষার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আমাদের, নেপালিদের সকল প্রজন্মকে, সার্বভৌমত্বের উপর আক্রমণ মোকাবিলা করতে এবং সংবিধান রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যদি সার্বভৌমত্ব আমাদের অস্তিত্ব হয়, তাহলে সংবিধান আমাদের স্বাধীনতার ঢাল।”

কাঠমাণ্ডু পোস্টের খবর অনুসারে, ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অলি সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় ছিলেন। ব্যারাকে ৯ দিন কাটানোর পর গত বৃহস্পতিবার তিনি একটি ব্যক্তিগত জায়গায় চলে গেছেন।

নেপালের সেনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান ৯ দিন সামরিক সুরক্ষায় থাকার পর তার ব্যক্তিগত বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ