২৪ ঘণ্টায় ৭ হাজারের বেশি পুলআপ দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড
Published: 2nd, June 2025 GMT
মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ৭ হাজার ৭৯ বার পুলআপ! শুনে অবিশ্বাস্য লাগলেও সেটিই করে দেখিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা অলিভিয়া ভিনসন। সবচেয়ে কম সময়ে সর্বাধিকবার পুলআপ দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন ৩৪ বছর বয়সী এই ফিটনেসপ্রেমী নারী।
অলিভিয়া বলেন, ‘আমি বড় কোনো চ্যালেঞ্জ খুঁজছিলাম। তখন আমার স্বামী ২৪ ঘণ্টায় পুলআপ দেওয়ার রেকর্ড ভাঙার কথা বলেন। তাঁর কথা শুনে আমি প্রথমে হেসে ফেলি। মনে হয়েছিল, এটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারলাম, এর আগের রেকর্ডটি ছিল ৪ হাজার ৮১ বারের। আবারও মনে হলো, এটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।’
অলিভিয়া বলেন, ‘পোল্যান্ডের পাউলা গোর্লো নামের এক নারী ২০২১ সালে আগের রেকর্ডটি গড়েছিলেন। তাঁর রেকর্ডটি নিয়ে একটু হিসাব-নিকাশ করার পর একটু একটু করে মনে হতে লাগল, হয়তো আমিও পারব।’
এরপর স্বামীর তত্ত্বাবধানে তিন মাস কঠোর অনুশীলনের পর প্রথমবার রেকর্ড গড়ার উদ্যোগ নেন অলিভিয়া। কিন্তু ১২ ঘণ্টার মাথায় বাঁ হাতে চোট পেয়ে থেমে যেতে হয় তাঁকে। এরপর তাঁর পক্ষে আর একটি পুলআপও দেওয়া সম্ভব হয়নি।
চোট থেকে সেরে উঠতে দুই মাস লেগে যায়। তারপর আবার শুরু হয় প্রস্তুতি। দ্বিতীয়বার রেকর্ড গড়ার উদ্যোগ নেন অলিভিয়া। বলেন, ‘১৯ ঘণ্টা পার হতেই আমার প্রচণ্ড বমি বমি ভাব শুরু হয়। সম্ভবত অতিরিক্ত ক্লান্তির ফলে এমনটা হচ্ছিল। আর আমাকে সেটা সামলাতে হয়েছে যতটা সম্ভব নিজের মতো করে। তখন আমার সবচেয়ে বড় চিন্তা ছিল, শরীরটা শেষ পর্যন্ত টিকবে তো?’
তবু হাল ছাড়েননি অলিভিয়া। শেষ পর্যন্ত ৭ হাজার ৭৯টি পুলআপ দিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখান। এর আগের রেকর্ডের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ পুলআপ দিতে সক্ষম হন এই নারী।
অলিভিয়া বলেন, ‘আমি এমন এক সংখ্যা ছুঁয়েছি, যা শুরুতে আমার নিজের কাছেই অসম্ভব বলে মনে হয়েছিল। মানুষের স্বভাবই হলো, নিজের সীমানা ছাড়িয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া। আর বিশ্ব রেকর্ড যেন সেই সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার এক বাস্তব দৃষ্টান্ত।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।