ম্যাচশেষে ওল্ড ট্রাফোর্ডের দর্শকরা তাদের গানের মধ্যে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কোচ রুবেন আমোরিমের নাম ঢুকিয়ে দিলেন। এই পর্তুগিজ কোচ সাফ জানিয়ে দিলেন তিনি এখনও এই সম্মান পাওয়ার যোগ্য নয়! ব্যাপারটা খুব একটা ভুল বলেননি হয়তো এই ৩৯ বছর বয়সী কোচ। কারণ তার দল যে, ইউরোপা লিগের ম্যাচে বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি, ২০২৫) রাতে রেঞ্জার্সের বিপক্ষে ২-১ গোলে জয় পেয়েছে, তাতে তার কৌশল তো আরও একবার মুখ থুবড়ে পড়তে নিয়েছিল! তবে তার স্বদেশি ফুটবলার ব্রুনো ফার্নান্দেজের শেষ মুহুর্তের নাটকীয় গোলে কঠিন সমালোচনার হাত থেকে বাঁচল ম্যান ইউনাইটেড কোচ আমোরিম।

প্রথমার্ধে আধিপত্য বিস্তার করে খেলে ম্যান ইউনাইটেড। ম্যাচের ২৪ মিনিটে ডি লিট কর্নার থেকে হেডে বল জালে জড়িয়েছিলেন। তবে লেনি ইয়োরোর রেঞ্জার্স ডিফেন্ডার ডেভি প্রপারকে ফাউল করার কারণে গোলটি বাতিল করা হয়।

বিরতির পরপরই রেঞ্জার্স গোলরক্ষক জ্যাক বাটল্যান্ড ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনের কর্নার বল ভুলভাবে ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের জালে বল পাঠিয়ে দেন, ফলে ইউনাইটেড লিড নেয়। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হওয়ার দুই মিনিট আগে রেঞ্জার্সের বদলি খেলোয়াড় সিরিল ডেসারস গোল করে সমতা ফিরিয়ে আনেন। তবে যোগকরা সময়ে (৯২ মিনিট) ব্রুনোর অসাধারণ গোল রেড ডেভিলদের জয় নিশ্চিত করে।

আরো পড়ুন:

ভিনিসিউসের গোলের রেকর্ড

চ্যাম্পিয়নস লিগে বুধবার রাতের ম্যাচের ফলাফল

এই জয়ের মাধ্যমে ৩২ দল নিয়ে করা রবিন রাউন্ডের ইউরোপা লিগের পয়েন্ট তালিকায় ইউনাইটেড টেবিলের চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে, ১৫ পয়েন্ট নিয়ে রাউন্ড অফ ১৬-এ সরাসরি যোগ্যতা অর্জনের পথে বেশ ভালোভাবে রয়েছে।

প্রিমিয়ার লিগে ইউনাইটেডের সংগ্রামের মাঝেও এটি ইউরোপা লিগে তাদের টানা চতুর্থ জয়। এই কারণেই ব্রুনোর গোলের পর শান্ত স্বভাবের ইউনাইটেড কোচকে বাতাসে মুষ্টিবদ্ধ ঘুষি মেরে জয় উদযাপন করতে দেখা যায়। ম্যাচ শেষে আমোরিম বলনে, “আমরা জানতাম খেলাটা কঠিন হবে। তবে ওই মুহূর্তে ড্রটা আমাদের জন্য ন্যায্য হতো না, জয়টায় আমাদের প্রাপ্য ছিল।”

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল পর ত গ ল ইউর প

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ