সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচনসহ পাঁচ দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি ইসলামি দল ৬ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে স্মারকলিপি দেবে।

আজ সোমবার আটটি দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নতুন এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক। রাজধানীর পল্টনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

মামুনুল হক বলেন, ৬ নভেম্বর বেলা ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিতে গণমিছিল করা হবে। তবে সরকার দাবি মেনে না নিলে তারা ১১ নভেম্বর ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবেন।

এই দলগুলোর পাঁচ দফা দাবি হলো—জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও ওই আদেশের ওপর নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে বা উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম–নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

সংবাদ সম্মেলেন এই পাঁচ দফার কিছু বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানানো হয়। অগ্রাধিকার দেওয়া সেই তিন বিষয় হলো—অনতিবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোটের আয়োজন ও সংশোধিত আরপিওর খসড়ায় আর কোনো পরিবর্তন না আনা।

‘আরপিওতে নতুন করে কোনো পরিবর্তন মানা হবে না,’ হুঁশিয়ার করেন মামুনুল হক। তাঁরা সংশোধিত আরপিওর পক্ষে অবস্থান নিলেও এর বিরোধিতা করছে বিএনপি। দলটির আপত্তি, জোটের ক্ষেত্রে এক দলের প্রতীক অন্য দলের ব্যবহার বন্ধ করা নিয়ে।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ দেখা দিয়েছে। তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকার আজ এক সংবাদ সম্মেলনে দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে মতৈক্যে আসতে বলা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সারা না হলে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানানো হয়েছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে মামুনুল হক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আলোচনার ভিত্তিতে সব দল রাজনৈতিক সংকটের সমাধান করতে পারবে এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির মাধ্যমেই আগামী নির্বাচন হবে বলে তাঁরা আশা করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর)। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, জাগপার সহসভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনের আগে সকালে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন আটটি দলের শীর্ষ নেতারা। দলগুলো হলো—জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ম ন ল হক সরক র ইসল ম দলগ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনে শিকারিদের হামলায় বন কর্মকর্তা আহত

সুন্দরবনে হরিণ শিকারীদের হামলায় পূর্ব বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেব আহত হয়েছেন। সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের ডিমেরচর এলাকায় হামলা করা হয়। পরবর্তীতে তিন শিকারিকে আটক করেছে বনরক্ষীরা। 

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল্লাহ জানান, হরিণ শিকারিদের আক্রমণে একজন বন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। হামলাকারীদের তিনজনকে আটক করা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

হরিণ শিকারের ফাঁদে আটকা পড়ল বানর

কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে ৮ ফুট লম্বা অজগর অবমুক্ত

তিনি আরো জানান, বন বিভাগের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তারা অভিযোগ দিলে এবং আসামিদের হস্তান্তর করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আটকরা হলেন, বাগেরহাট সদর উপজেলার সুগন্ধি গ্রামের রাফি হাসান (২৬), রামপাল উপজেলার সোনাতুনিয়া গ্রামের শহিদ মল্লিক (২৮) ও একই উপজেলার ঝালবাড়ি গ্রামের আল আমিন আকুঞ্জি (২৭)।

আহত সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেব বলেন, ‘‘বন্যপ্রাণি রক্ষা ও হরিণ শিকাররোধে বনরক্ষীদের সঙ্গে নিয়ে ডিমেরচর এলাকায় বনের ভেতরে হেঁটে টহল দিচ্ছিলাম। বনের মধ্যে হরিণ ধরার জন্য পেতে রাখা একাধিক ফাঁদ দেখতে পাই। সেখানে চার থেকে পাঁচজন শিকারিকেও দেখতে পাই। আমি দৌড়ে গিয়ে একজনকে ধরে ফেললে বাকি শিকারিরা ফিরে এসে আমাকে মারধর করে ধৃত শিকারিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।’’

পরে বনরক্ষীরা ঘটনাস্থল থেকে ১৮টি হাঁটা ফাঁদ উদ্ধার করেন বলে জানান তিনি। 

আহত রানা দেবকে তাৎক্ষণিকভাবে দুবলারচরের অস্থায়ী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। হামলার পরপরই বনরক্ষীরা অভিযান চালিয়ে তিন শিকারিকে আটক করে।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী ও শরণখোলা রেঞ্জের অন্যান্য কর্মকর্তারা রাস পূজার দায়িত্ব পালনের জন্য দুবলার চরে অবস্থান করায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

ঢাকা/শহিদুল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ