বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যুৎ রপ্তানি চুক্তি নবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ভারত
Published: 20th, October 2025 GMT
বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যুৎ রপ্তানি সংক্রান্ত চুক্তি নবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ভারত। ভারতের এনটিপিসি বিদ্যুৎ ব্যাপার নিগম লিমিটেড ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য চুক্তি নবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে সম্প্রতি দপ্তরটির একজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ কর্পোরেশন লিমিটেড (টিএসইসিএল) এবং বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) এর মধ্যে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ চুক্তি আসন্ন ২০২৬ সালের মার্চ মাসে শেষ হওয়ার কথা। তার আগেই বাংলাদেশ চুক্তি নবায়ন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ায় ভারতের পক্ষেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেই এনটিপিসি সূত্রে খবর।
আরো পড়ুন:
আমাকে পুরস্কার দেওয়া হলে, তা ডাস্টবিনে ফেলে দেব: বিশাল
ভারতীয় জেলেদের মাছ শিকার নিয়ে দুশ্চিন্তায় মৎস্যজীবীরা
এনটিপিসি বিদ্যুৎ ব্যাপার নিগমের কর্মকর্তারা গত শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) এই বিষয়ে ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ দপ্তর টিএসইসিএলের এমডি দেবাশীষ বোসের সঙ্গে নবায়নের বিষয়ে নয়াদিল্লিতে একটি বৈঠক করেছেন।
দেবাশিস বোস সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমরা বিপিডিবির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করতে প্রস্তুত।”
তিনি জানান, টিএসইসিএল বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে এবং নভেম্বর থেকে এটি ১০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হবে।
বোস আরো বলেন, “প্রক্রিয়া অনুসারে, এনটিপিসি বিদ্যুৎ ব্যাপার নিগম এখন বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি বৈঠক করবে। যদি তারা রাজি হয়, তাহলে আমরা প্রতিবেশী দেশটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালিয়ে যাব।”
নেপালে বিদ্যুৎ সরবরাহের কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “নেপালের তুলনায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা বেশি কার্যকর। বর্তমানে, আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির সম্প্রসারণের উপর মনোযোগ দিচ্ছি।”
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব দ য ৎ সরবর হ নব য ন র প রক র য এনট প স
এছাড়াও পড়ুন:
রাশিয়ায় হামলা চালাতে ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছেন না ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে কাঙ্ক্ষিত টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে প্রস্তুত নন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। এ অবস্থায় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি হোয়াইট হাউস থেকে খালি হাতে ফিরেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, তিনি ও ট্রাম্প দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে কথা বললেও এ বিষয়ে কোনো বিবৃতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ, পরিস্থিতি আরও খারাপ হোক, যুক্তরাষ্ট্র তা চায় না।’
বৈঠকের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিয়েভ এবং মস্কোকে তারা ‘যেখানে আছে সেখানে থামার’ এবং যুদ্ধ শেষ করার আহ্বান জানান।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার এক দিন পর জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পুতিনের সঙ্গে ফোনে আলোচনায় দুই নেতা হাঙ্গেরিতে বৈঠকে বসতে রাজি হন।
জেলেনস্কি মনে করেন, টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার তেল ও জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানলে পুতিনের যুদ্ধ অর্থনীতি মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে পড়বে।
ট্রাম্প অবশ্য ইউক্রেনকে এ ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার বিষয়টি একেবারে উড়িয়ে দেননি। তবে শুক্রবার জেলেনস্কির সঙ্গে হোয়াইট হাউসের বৈঠকে তাঁর বক্তব্য ছিল অস্পষ্ট।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আশা করি তাদের এটি লাগবে না। আশা করি, আমরা টমাহক নিয়ে না ভেবেই যুদ্ধ শেষ করতে পারব। আমার মনে হয়, আমরা যুদ্ধ শেষ করার বেশ কাছাকাছি আছি।’
ট্রাম্প এই অস্ত্রটিকে ‘বড় ব্যাপার’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রয়োজন। ইউক্রেনকে টমাহক সরবরাহ করলে সংঘাত আরও বাড়তে পারে, তবে সেগুলো পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা চলবে।
টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রের বিষয়টি পুতিনকে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে উৎসাহিত করেছে কি না, বিবিসির এমন প্রশ্নে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, সেই হুমকি (ক্ষেপণাস্ত্রের) ভালো, তবে সেই হুমকি সব সময়ই আছে।
ইউক্রেনের নেতা ইঙ্গিত দেন, টমাহকের বিনিময়ে তাঁর দেশ ড্রোন দিতে পারে। এতে ট্রাম্পের মুখে হাসি ও তাঁকে সম্মতিসূচক মাথা নাড়তে দেখা যায়।
জেলেনস্কি মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ সুরক্ষিত করার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের ভূমিকার প্রশংসা করে ইঙ্গিত দেন, মার্কিন নেতা ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ শেষ করতে সেই গতিকে কাজে লাগাতে পারেন।
বৈঠকের পর হোয়াইট হাউসের বাইরে একজন সাংবাদিক জেলেনস্কির কাছে জানতে চান, পুতিন কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে চান নাকি বুদাপেস্টে ট্রাম্পের সঙ্গে পরিকল্পিত বৈঠকের মাধ্যমে শুধু সময় নিচ্ছেন—এ বিষয়টি তিনি কীভাবে দেখছেন।
জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি জানি না।’ তবে তিনি যোগ করেন, ইউক্রেনের টমাহক পাওয়ার সম্ভাবনা রাশিয়াকে ‘ভীত’ করেছে। কারণ, এটি একটি শক্তিশালী অস্ত্র।
ইউক্রেন টমাহক পাবে কি না, ওয়াশিংটন ছেড়ে যাওয়ার সময় তিনি বিষয়টি নিয়ে আরও আশাবাদী কি না, জানতে চাইলে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি বাস্তববাদী।’
ইউক্রেনীয় নেতা আরও ইঙ্গিত দেন, বর্তমান যুদ্ধরেখা বরাবর যুদ্ধ থামানোর ট্রাম্পের পরামর্শে তিনি রাজি হতে পারেন।
জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা যেখানে আছি, সেখানে থামতে হবে। তিনি ঠিক, প্রেসিডেন্ট ঠিক।’ তিনি যোগ করেন, এর পরের পদক্ষেপ হবে ‘কথা বলা’।
পরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এক্স-এ (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে লিখেছেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের আলোচিত বিষয় সম্পর্কে জানাতে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ফোন করেছেন। এখন প্রধান অগ্রাধিকার হচ্ছে যতটা সম্ভব জীবন রক্ষা করা, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ইউরোপে সবাইকে শক্তিশালী করা।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে এই আলোচনাকে ‘ফলপ্রসূ’ বলে অভিহিত করেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, ইউকে মানবিক সহায়তা ও সামরিক সমর্থন পাঠানো অব্যাহত রাখবে।
গতকাল শুক্রবার একজন সাংবাদিক ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেছিলেন, পুতিন নতুন একটি শীর্ষ সম্মেলনের জন্য সম্মত হয়ে সময় নষ্ট করছেন কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি উদ্বিগ্ন।’
আরেক সাংবাদিক যখন জিজ্ঞেস করেন, বুদাপেস্টে সম্ভাব্য আলোচনায় জেলেনস্কি থাকবেন কি না, তখন ট্রাম্প বলেন, পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে ‘খারাপ সম্পর্ক’ আছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সবার জন্য স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে চাই। আমাদের তিনজনের অংশগ্রহণে থাকবে, তবে এটি আলাদা হতে পারে।’