চ্যাম্পিয়ন নারী দলের জন্য মোটা অঙ্কের বোনাস ঘোষণা করল বিসিসিআই
Published: 3rd, November 2025 GMT
ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে এক অনন্য দিন। ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে রোববার রাতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫২ রানে হারিয়ে নিজেদের প্রথম নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতে নিল টিম ইন্ডিয়া। সেই সঙ্গে ভারতের নারী ক্রিকেটে শুরু হলো এক নতুন যুগের সূচনা।
এই ঐতিহাসিক অর্জনের পর উচ্ছ্বসিত ভারতজুড়ে শুরু হয় উদ্যাপন। ম্যাচ শেষে বিসিসিআই সচিব দেবজিত সাইকিয়া ঘোষণা দেন বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় নারী দল ও সাপোর্ট স্টাফদের জন্য ৫১ কোটি রুপির (প্রায় ৬৮ কোটি টাকা) আর্থিক পুরস্কার। তিনি বলেন, “এটি নারী ক্রিকেটের এক ঐতিহাসিক অধ্যায়। এই জয় ভারতীয় নারী ক্রিকেটকে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।”
আরো পড়ুন:
নীল সমুদ্রে দক্ষিণ আফ্রিকার নীল বেদনা, ভারত বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন
৪১১ রানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৯ রানে হারল জিম্বাবুয়ে
আইপিএল চেয়ারম্যান অরুণ ধুমলও দলের এই কীর্তিকে ১৯৮৩ সালের পুরুষ দলের বিশ্বকাপ জয়ের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, “আজকের দিনটি ভারতীয় নারী ক্রিকেটের স্বর্ণাক্ষরে লেখা দিন। ১৯৮৩ সালে যা করেছিলেন কপিল দেবরা। আজ সেই ইতিহাসই পুনর্লিখন করলেন মান্ধানারা। এই জয় নারীদের ক্রিকেটকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।”
ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে ভারত তোলে ৭ উইকেটে ২৯৮ রান। উদ্বোধনী জুটিতে শেফালি ভার্মা (৮৭) ও স্মৃতি মান্ধানা (৪৫) গড়েন শতাধিক রানের দারুণ পার্টনারশিপ। মাঝের ওভারে দীপ্তি শর্মা (৫৮) ও ঋচা ঘোষ (৩৪) গুরুত্বপূর্ণ রান এনে দলকে পৌঁছে দেন বড় পুঁজি গড়ার পথে।
২৯৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আত্মবিশ্বাসী শুরু করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তাজমিন ব্রিটস ও লরা উলভার্ট গড়েন পঞ্চাশ রানের জুটি। তবে আমানজোত কৌরের সরাসরি থ্রোতে ব্রিটস রানআউট হওয়ার পর থেকেই বদলে যায় ম্যাচের চিত্র। এরপর তরুণ পেসার শ্রী চারাণী প্রথম ওভারেই এলবিডব্লিউ করেন আনেকি বোশকে।
বল হাতে উজ্জ্বল ছিলেন শেফালি ভার্মা। তিনি দ্রুত আউট করেন সুনে লুস ও মারিজান কাপকে। সবশেষে দুর্দান্ত বোলিং করেন অলরাউন্ডার দীপ্তি শর্মা। যিনি ৩৯ রানে নেন ৫ উইকেট। তার স্পেলেই ভেঙে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার মিডল অর্ডার।
যদিও উলভার্ট একাই লড়েছেন। করেছেন ১০১ রান। তবু ৪৫.
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
৪২ বছর পর নিউ জিল্যান্ডের কাছে হোয়াইটওয়াশ ইংল্যান্ড
১৯৮৩ সাল আবার মনে করাল ইংল্যান্ড। নিউ জিল্যান্ডে গিয়ে সেবার ইংল্যান্ড ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল। ৪২ বছর পর একই অভিজ্ঞতা হলো এবার তাদের।
আগেই সিরিজ নিশ্চিত করা নিউ জিল্যান্ড এবার আরো চেপে ধরেছিল ইংল্যান্ডকে। তবুও লড়াই করে ওয়েলিংটনে অতিথিরা ২২২ রানের পুঁজি পায়। হোয়াইটওয়াশের মিশনে থাকা নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটিং তেমন ভালো হয়নি। লো স্কোরিং ম্যাচ জমে উঠে। শেষ পর্যন্ত ৪৪.৪ ওভারে হাতে ২ উইকেট রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় কিউইরা। ১৯৮৩ সালের পর প্রথম নিউ জিল্যান্ড ইংল্যান্ডকে ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ করল।
টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ইংল্যান্ড চরম বিপর্যয়ে পড়ে। ৯৭ রানে ৬ উইকেট হারায় তারা। ১০২ রানে তাদের শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান জস বাটলার (৩৮) আউট হন। তখন ধারণা করা হচ্ছিল অল্পতেই গুটিয়ে যাবে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
কিন্তু সেখানে ঢাল হয়ে দাঁড়ান ব্রাইডন চার্স ও জেমি ওভারটন। দুজন ৫৮ রানের জুটি গড়েন। যেখানে ব্রাইডন আক্রমণাত্মক ক্রিকেট উপহার দিয়ে ৪ ছক্কা ও ১ চারে ৩০ বলে ৩৬ রান করেন। ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ রানের জুটি আসে তাদের ব্যাটেই।
শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ওভারটন আউট হন ৪১তম ওভারে। ৬২ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ৬৮ রান করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এর আগে জেমি স্মিথ (৫), বেন ডাকেট (৮), জো রুট (২) ও হ্যারি ব্রুক (৬) দ্রুত আউট হন। দলের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেন পাঁচ নম্বরে নামা জ্যাকব মিচেল। তবুও ১১ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।
নিউ জিল্যান্ডের বোলিং ছিল নিয়ন্ত্রিত। ৬৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সেরা ছিলেন ব্লায়ার টিকনার। ৩ উইকেট পেয়েছেন জ্যাকব টাফি। ২টি পেয়েছেন জ্যাক ফলকস।
জবাব দিতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৭৮ রান পায় কিউইরা। ডেভন কনওয়ে ৩৪ ও রাচীন রাভিন্দ্রা ৪৬ রান করেন। এরপর ছন্দ হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় স্বাগতিকরা। কিন্তু ডার্ল মিচেলের অনবদ্য ৪৪ ও শেষ দিকে মিচেল স্টানারের ২৭ রানে নিউ জিল্যান্ড লড়াইয়ে ফেরে। শেষ দিকে জ্যাক ফলকসের ১৪ ও ব্লায়ার টিকনারের ১৮ রানে নিউ জিল্যান্ডের জয় নিশ্চিত হয়।
ইংলিশদের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন ওভারটন ও স্যাম কারান।
এই সিরিজে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং একটুও ভালো হয়নি। প্রথম ম্যাচে ২২৩ ও দ্বিতীয়টিতে ১৭৫ রানে গুটিয়ে যায়। নিউ জিল্যান্ড জয় পায় যথাক্রমে ৪ ও ৫ উইকেটে। শেষ ম্যাচে খানিকটা প্রতিদ্বন্দ্বীতা গড়লেও হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারেনি ইংল্যান্ড।
বল হাতে ৪ উইকেট ও ব্যাটিংয়ে ১৮ রান করে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন টিকনার। ১৭৮ রান করে সিরিজ সেরা ডার্ল মিচেল।
ঢাকা/ইয়াসিন