রাজনৈতিক দলগুলোকে ৭ দিনের সময় দিলে সরকার
Published: 3rd, November 2025 GMT
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ জমা হওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতা নিরসনে অন্তর্বর্তী সরকার আর কোনো উদ্যোগ নেবে না বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
তিনি বলেন, “এখন রাজনৈতিক দলগুলোকেই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে মতৈক্যে পৌঁছাতে হবে। এজন্য এক সপ্তাহ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।”
আরো পড়ুন:
জকসু নির্বাচন নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ ছাত্র সংগঠনগুলোর
‘হুক্কা’ প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পেল জাগপা
সোমবার (৩ নভেম্বর) উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, “সরকার এরই মধ্যে বহুবার আলোচনা আয়োজন করেছে। এখন আমরা চাই, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের উদ্যোগে বসে ঐকমত্যে পৌঁছাক। সরকারের পক্ষ থেকে নতুন করে কোনো উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা নেই।”
তিনি আরো বলেন, “যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন, তারা গত ১৫ বছর একসঙ্গে সংগ্রাম করেছেন, নির্যাতন সহ্য করেছেন। আমরা আশা করি, তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা ও পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে আলোচনার মাধ্যমে একটি ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দেবেন।”
আসিফ নজরুল জানান, এরই মধ্যে একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছে, সরকার সেই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে মতৈক্যে পৌঁছে তা সরকারকে জানাতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা অপেক্ষা করব, এরপর অবশ্যই সরকার সরকারের মতো অ্যাক্ট করবে।”
এর আগে শুরুতে আসিফ নজরুল উপদেষ্টা পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আজ জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কর্তৃক প্রণীত জুলাই সনদ এবং এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপনের প্রচেষ্টার জন্য এবং বহু বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।”
“উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ চূড়ান্তকরণ এবং এতে উল্লেখিত গণভোট আয়োজন ও গণভোটের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে লক্ষ্য করা হয় যে, ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘদিন আলোচনার পরও কয়েকটি সংস্কারের সুপারিশ বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। এছাড়া, গণভোট কবে অনুষ্ঠিত হবে ও এর বিষয়বস্তু কী হবে, এসব প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে; সে জন্য সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।”
উপদেষ্টা বলেন, “এ প্রেক্ষিতে গণভোটের সময় কখন হবে, গণভোটের বিষয়বস্তু কী হবে, জুলাই সনদে বর্ণিত ভিন্নমতগুলো প্রসঙ্গে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবগুলোর আলোকে জরুরি ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সভা অভিমত ব্যক্ত করে।”
ঢাকা/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দল উপদ ষ ট উদ য গ গণভ ট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব
কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তবে কারা, সেটা স্পষ্ট করেননি তিনি।
আজ শনিবার বিকেলে রংপুর নগরের সেন্ট্রাল রোডে জাপা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শামীম হায়দার পাটোয়ারী এ মন্তব্য করেন।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দল ইতিমধ্যে ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে বা স্বাক্ষর করে একধরনের ফাঁদে পড়ে গেছে। কিছু রাজনৈতিক দল বলছে, ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে। এখানে প্রতারক ও প্রতারণা শব্দটি উচ্চারিত হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো এ রকম সংস্কার চাইনি।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ঐকমত্য তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে জাপা মহাসচিব বলেন, কমিশন ৫৬টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি দলকে বাদ দিয়েছে। যে দলগুলো সেখানে গেছে, তাদের মধ্যে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে মতবিরোধ আছে। এক ভাগকে ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ করেছে। অন্য আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে পরে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করেছে।
বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বলে দাবি করেছেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। কারণ, নির্বাচিত সরকার সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করেছে ও নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। এই মুহূর্তে দেশে যে প্রশাসনিক কাঠামো আছে, তার ব্যাপারে তথ্য উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন, তাঁরা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কথামতো প্রশাসন সাজিয়েছে, তার সঙ্গে এনসিপি আছে। এই তিন দলের বাইরে অন্য কোনো দল যদি ভোটে আসে, এই প্রশাসনিক কাঠামো সেই দলকে সুষ্ঠু ভোট হতে দেবে না।
গণভোটের দাবি নজিরবিহীন উল্লেখ করে শামামী হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সংবিধানে এই মুহূর্তে গণভোট কোনো প্রভিশনে নেই। বর্তমানে গণভোটের যে দাবি উঠেছে, সংসদে পাস হওয়ার আগে এই দাবি বাস্তবায়ন হলে ঐকমত্য কমিশনকে সংসদের মর্যাদা দেওয়া হবে। ঐকমত্য কমিশন সার্বভৌম নয়, নির্বাচিত নয় ও সংসদ নয়। সংসদকে এড়িয়ে গিয়ে কোনো আইন পাস করা হলে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে।
এ সময় জাপার কো–চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, রংপুর জেলার আহ্বায়ক আজমল হোসেন, সদস্যসচিব হাজী আবদুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামানসহ জাপা ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।