প্রথম আলোরও একটা ঐকমত্য সনদ আছে, আর তা আছে আমাদের হৃদয়ে
Published: 3rd, November 2025 GMT
প্রথম আলো প্রকাশের আগে আমাদেরও একটা ঐকমত্য সনদ তৈরি হয়েছিল। সেটা কাগজে কাগজে লেখা হয়নি। তা লেখা হয়েছিল হৃদয়ে হৃদয়ে, তাই আজও তা সতেজ, সজীব, সক্রিয় ও জীবন্ত রয়ে গেছে।
সে আজ থেকে ২৭ বছর আগের কথা। আমি তখন পক্বকেশ নই, এমনকি কাঁচাপাকা বাবুও নই। আমরা সবাই তরুণ। ভোরের কাগজে আমরা কাজ করি। আগে ছিলাম আজকের কাগজে। ভোরের কাগজ-এর ফিচার সম্পাদক হিসেবে আমাকে সম্পাদক মতি ভাই (মতিউর রহমান) দায়িত্ব দিয়েছিলেন নতুন কিছু করার। আমরা ‘মেলা’ নামের একটা সাপ্তাহিক ফিচার ক্রোড়পত্র করেছিলাম।
এরপর বললেন, শনিবারে সার্কুলেশন কমে। দেখো তো আরেকটা কিছু করা যায় কি না। আমরা অবসর নামের একটা ১৬ পাতার ম্যাগাজিন বের করতে শুরু করি। চিঠিপত্রে ‘পত্রকলাম’, ফোনে পাঠকদের মত সরাসরি নিয়ে জরিপ করা—নানা নতুন কিছু করার উন্মাদনায় তখন আমরা ভেসে যাচ্ছিলাম।
এ সময় ভোরের কাগজ-এর তৎকালীন প্রকাশক ১৯৯৬-এর নির্বাচনে সরকারদলীয় এমপি নির্বাচিত হলেন। আমাদের সম্পাদক দুর্ভাবনায় পড়লেন। বললেন, দলীয় এমপির কাগজ তো দলনিরপেক্ষ রাখা যাবে না। আমরা স্বাধীন কাগজ করব।
মাহ্ফুজ আনাম তখন ডেইলি স্টার-এর সম্পাদক। তিনি মতি ভাইকে নিয়ে গেলেন লতিফুর রহমানের সকাশে। মতি ভাই আমাদের ডেকে বললেন, চলো, আমরা নতুন কিছু করি!
আমরা আজকের কাগজ থেকে এসেছি ভোরের কাগজ-এ। আবার একটা নতুন প্রতিষ্ঠানে যেতে হবে! সবার কাঁধ ঝুলে পড়ল, একসঙ্গে বলে উঠলাম—‘আবার!’
মতি ভাই বললেন, এই কাগজ হবে সম্পূর্ণ স্বাধীন। সম্পূর্ণ দলনিরপেক্ষ!
তখন সাজ্জাদ শরিফ, উৎপল শুভ্র, সুমনা শারমীন আর আমি—আমরা মতি ভাইকে প্রশ্ন করলাম, এই কাগজ কি মালিকের প্রভাব থেকেও মুক্ত থাকবে?
মতি ভাইয়ের জবাব, ‘হ্যাঁ। কাগজে কী ছাপা হবে না হবে, লতিফুর রহমান সাহেব তা জানতে চাইবেন না।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র রহম ন আম দ র বলল ন
এছাড়াও পড়ুন:
কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব
কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তবে কারা, সেটা স্পষ্ট করেননি তিনি।
আজ শনিবার বিকেলে রংপুর নগরের সেন্ট্রাল রোডে জাপা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শামীম হায়দার পাটোয়ারী এ মন্তব্য করেন।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দল ইতিমধ্যে ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে বা স্বাক্ষর করে একধরনের ফাঁদে পড়ে গেছে। কিছু রাজনৈতিক দল বলছে, ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে। এখানে প্রতারক ও প্রতারণা শব্দটি উচ্চারিত হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো এ রকম সংস্কার চাইনি।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ঐকমত্য তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে জাপা মহাসচিব বলেন, কমিশন ৫৬টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি দলকে বাদ দিয়েছে। যে দলগুলো সেখানে গেছে, তাদের মধ্যে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে মতবিরোধ আছে। এক ভাগকে ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ করেছে। অন্য আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে পরে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করেছে।
বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বলে দাবি করেছেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। কারণ, নির্বাচিত সরকার সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করেছে ও নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। এই মুহূর্তে দেশে যে প্রশাসনিক কাঠামো আছে, তার ব্যাপারে তথ্য উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন, তাঁরা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কথামতো প্রশাসন সাজিয়েছে, তার সঙ্গে এনসিপি আছে। এই তিন দলের বাইরে অন্য কোনো দল যদি ভোটে আসে, এই প্রশাসনিক কাঠামো সেই দলকে সুষ্ঠু ভোট হতে দেবে না।
গণভোটের দাবি নজিরবিহীন উল্লেখ করে শামামী হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সংবিধানে এই মুহূর্তে গণভোট কোনো প্রভিশনে নেই। বর্তমানে গণভোটের যে দাবি উঠেছে, সংসদে পাস হওয়ার আগে এই দাবি বাস্তবায়ন হলে ঐকমত্য কমিশনকে সংসদের মর্যাদা দেওয়া হবে। ঐকমত্য কমিশন সার্বভৌম নয়, নির্বাচিত নয় ও সংসদ নয়। সংসদকে এড়িয়ে গিয়ে কোনো আইন পাস করা হলে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে।
এ সময় জাপার কো–চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, রংপুর জেলার আহ্বায়ক আজমল হোসেন, সদস্যসচিব হাজী আবদুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামানসহ জাপা ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।