কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ১৫০ নম্বরে নয়, ১২০-এ, নম্বর বণ্টন কীভাবে
Published: 11th, February 2025 GMT
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার নম্বর কমানো হয়েছে। ১৫০–এর স্থলে ১২০ নম্বরে এ পরীক্ষা দেবেন আবেদনকারী শিক্ষার্থীরা। কীভাবে এ নম্বর বণ্টন হবে, তা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ–সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি, আবেদন করুন দ্রুত১ ঘণ্টা আগেবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় ১২০ নম্বরের ভিত্তিতে প্রার্থীদের মেধা স্কোর নির্ণয় করা হবে। এ ক্ষেত্রে এসএসসি/ ‘ও’ লেভেল বা সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত/হিসাবকৃত (চতুর্থ বিষয়সহ) জিপিএ-কে ২ দিয়ে গুণ এবং এইচএসসি/ ‘এ’ লেভেল বা সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত/হিসাবকৃত জিপিএ-কে ২ দিয়ে গুণ করা হবে। এ দুইয়ের যোগফল ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বর থেকে প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে যোগ করে ১২০ নম্বরের ওপর মেধা স্কোর নির্ণয় করে তার ক্রমানুসারে মেধাতালিকা তৈরি করা হবে। ‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেল পরীক্ষায় প্রাপ্ত লেটার গ্রেডের পয়েন্ট জিপিএ—এ=৫.
আগে প্রকাশিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে ১৫০ নম্বরের ওপর মেধা স্কোর নির্ণয় করে তার ক্রমানুসারে মেধাতালিকা তৈরি করা হবে উল্লেখ করা হয়েছিল। এটি পরিবর্তন করে ১২০ নম্বর করা হলো।
আরও পড়ুনপ্রাথমিকের শিক্ষকদের বেতন গ্রেড বৃদ্ধি, বিদ্যালয়কে লাল–হলুদ ও সবুজ শ্রেণিতে ভাগ করার সুপারিশ১৪ ঘণ্টা আগেভর্তি পরীক্ষা কবে—কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। আগামী ১৯ এপ্রিল ‘সি’ ইউনিট সকাল ১০টায় ও ‘এ’ ইউনিট বেলা ৩টায় এবং ২৫ এপ্রিল বিকেল ৪টায় ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
আগ্রহী প্রার্থীরা ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাইলে।
আরও পড়ুনকানাডার অটোয়া ইউনিভার্সিটির বৃত্তি, স্নাতকোত্তরে বছরে ৭৫০০ ও পিএইচডিতে ৯০০০ ডলার৪ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
যশোরের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুতের (রস সংগ্রহের উপযোগী করা) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে চৌগাছা উপজেলার হায়াতপুর গ্রামে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনুর আক্তার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, রস-গুড় সংগ্রহের জন্য গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি খেজুরগাছ প্রস্তুত করা হবে। এ বছর জেলায় অন্তত তিন লাখের বেশি গাছ প্রস্তুত করা হবে। যশোরে খেজুরের রস ও গুড়ের ১০০ কোটির বেশি টাকার বাজার রয়েছে। অন্তত ছয় হাজার কৃষক এই পেশায় যুক্ত।
যশোরের খেজুর গুড় জিআই পণ্য হলো যেভাবে
২০২২ সালে চৌগাছার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (বর্তমানে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট) ইরুফা সুলতানা খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য সংরক্ষণে খেজুর গুড়ের মেলা, গাছিদের প্রশিক্ষণ, গাছি সমাবেশ, গাছিদের সমবায় সমিতি গঠন, খেজুরগাছ রোপণ ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন। একই বছর জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির জন্য যশোরের খেজুর গুড়ের আবেদন করেন তিনি। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সেটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পায়।
শতকোটি টাকার বাজার ধরতে ব্যস্ত গাছিরা
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যশোরের প্রায় ছয় হাজার গাছি খেজুরগাছের রস থেকে পাটালি গুড় উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে খেজুরগাছ প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছে। গাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। খেজুরগাছ সংরক্ষণ, রোপণ, গাছিদের প্রশিক্ষণ, প্রণোদনাসহ নানাভাবে সহযোগিতার মাধ্যমে গুড় উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজার সম্প্রসারণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যশোর জেলায় খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫টি। এর মধ্যে রস আহরণের উপযোগী গাছের সংখ্যা ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি। গাছ থেকে ৩ কোটি ৭১ লাখ ৩ হাজার লিটার রস ও ২ হাজার ৭৪২ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারদর অনুযায়ী প্রতি লিটার রসের দাম ৩৫ টাকা ও গুড়ের কেজি ৩৪০ টাকা। সেই হিসাবে রস ও গুড়ের বাজার দর ৯৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রামের গাছি আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমার দাদা খেজুরগাছের রস থেকে পাটালি গুড় বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। দাদার সঙ্গে বাবাও যুক্ত ছিলেন। বাবার পেশায় আমিও যুক্ত হয়েছি। বাবা আর আমি এবার ৩০০টি খেজুরগাছ থেকে রস-গুড় তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। গতবছর ভালো দাম পেয়েছি। এবারও ভালো দাম পাব বলে আশা করি।’
গাছিরা জানান, কার্তিক মাস শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই খেজুরগাছ ছেঁটে রস ও গুড় তৈরির প্রস্তুতি শুরু করেন তাঁরা। শীত মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষকদের অন্যতম আয়ের উৎস এটি। এখানকার কারিগরদের দানা পাটালি তৈরির সুনাম রয়েছে। পাটালি ও ঝোলা গুড় তৈরি ছাড়াও চাষিরা শীতের ভোরে ফেরি করে কাঁচা রস বিক্রি করেন। কাঁচা রস প্রতি মাটির ভাঁড় ১৫০-২০০ টাকা, দানা গুড় ৩৫০-৪০০ টাকা আর পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হয়।
অনলাইন প্ল্যাটফর্ম কেনারহাটের উদ্যোক্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর আমাদের কাছে ভোক্তার চাহিদা ছিল সাড়ে ছয় হাজার কেজি পাটালি গুড়। সরবরাহ করতে পেরেছিলাম দুই হাজার কেজি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অতিবৃষ্টি, শীত কম হওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী পাটালি গুড় সরবরাহ করতে পারিনি। এ বছর ইতিমধ্যে অর্ডার আসতে শুরু করেছে।’