যুবদল নেতাকে পেটানোয় বিএনপি নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ
Published: 12th, February 2025 GMT
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে নিজ দলের কর্মীকে পেটানোয় কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন বিএনপির এক নেতা। অভিযুক্ত বিএনপি নেতার নাম জহিরুল আলম। তিনি ফারহাদ হোসেন নামের যুবদলের এক নেতাকে পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে রায়পুর উপজেলা বিএনপি থেকে জহিরুল আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। তাঁকে তিন দিনের মধ্যে নোটিশের লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
অভিযুক্ত জহিরুল আলম উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। আর ফরহাদ হোসেন উপজেলার বামনী ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য। তিনি বামনীর ১ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি।
গতকাল রাতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহ আহম্মদ ও সদস্যসচিব শফিকুর রহমান ভূঁইয়ার স্বাক্ষরে এই নোটিশ দেওয়া হয়।
নোটিশে বলা হয়, জহিরুল গত সোমবার যুবদল নেতা ফরহাদকে প্রকাশ্যে মারধর করে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। এ জন্য কেন তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়।
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘টাকা লেনদেনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জহিরুল আলমের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তিনি আমাকে হোটেলে প্রকাশ্যে মারধর করেন। ঘটনাটি আমি দলের সিনিয়র নেতাদের জানিয়েছি।’
জানতে চাইলে জহিরুল আলম বলেন, ‘কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জবাব দেওয়া হবে। যুবদল নেতাকে মারধরের অভিযোগ সঠিক নয়।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।