লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে নিজ দলের কর্মীকে পেটানোয় কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন বিএনপির এক নেতা। অভিযুক্ত বিএনপি নেতার নাম জহিরুল আলম। তিনি ফারহাদ হোসেন নামের যুবদলের এক নেতাকে পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।

এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে রায়পুর উপজেলা বিএনপি থেকে জহিরুল আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। তাঁকে তিন দিনের মধ্যে নোটিশের লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।

অভিযুক্ত জহিরুল আলম উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। আর ফরহাদ হোসেন উপজেলার বামনী ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য। তিনি বামনীর ১ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি।

গতকাল রাতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহ আহম্মদ ও সদস্যসচিব শফিকুর রহমান ভূঁইয়ার স্বাক্ষরে এই নোটিশ দেওয়া হয়।

নোটিশে বলা হয়, জহিরুল গত সোমবার যুবদল নেতা ফরহাদকে প্রকাশ্যে মারধর করে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। এ জন্য কেন তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়।

ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘টাকা লেনদেনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জহিরুল আলমের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তিনি আমাকে হোটেলে প্রকাশ্যে মারধর করেন। ঘটনাটি আমি দলের সিনিয়র নেতাদের জানিয়েছি।’

জানতে চাইলে জহিরুল আলম বলেন, ‘কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জবাব দেওয়া হবে। যুবদল নেতাকে মারধরের অভিযোগ সঠিক নয়।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ উপজ ল য বদল

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ

বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।

দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।

পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।

বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’

সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসী

সম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।

এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।

সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।

রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ